Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,অমিত চক্রবর্তী

তৃতীয় বর্ষপূর্তি সংখ্যা: অমিত চক্রবর্তীর কবিতা

Reading Time: 2 minutes
হরণকাব্য
স্পর্শকাতর ভাবনা কিংবা অসাময়িক দিশা
এ কি আমার ব্যক্তিগত ড্রাগন
বালিতে দাগ কাটা গভীর, অদৃশ্য সান্ত্রী,
পেরোইনি গন্ডি ভয়ে?
 
তাই তাকে আসতে হয় হরণে।
 
আসা মানে ঠিক বাবুল বলে ঝাঁপিয়ে পড়া নয়,
কৌতূহলই বেশি সমাধানের থেকে,
বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি। যাত্রাশুরু
নদীর মত থতমত সে প্রথমে, ঢালু দিয়ে গড়াবে
না চড়াই বেয়ে পার্শ্বনদী,
তারপর সম্ভাবনা খুঁজে পায়, এক পোঁচে
এঁকে দেয় ধুলো এবং সূর্যাস্ত । কবিতা শোনায়
এবার পরস্পরস্পর্শী, গ্রামের বুড়োবুড়ি ঝগড়ায় বা
বস্তির নিজস্ব কলতলা গানে।
ইতিমধ্যে একটা প্রশান্তির ভাব এসেছে
অচলায়তনে, রনপা ছেড়ে সে রেডি তাই
নাচের সাজে,
ব্রেকড্যান্সিং চলছে পাড়ায়, তবলচি হাজির,
সিরিয়াস হরণকাব্য লেখা হচ্ছে
ঝাঁপতালে বা তরল পয়ারে।
 
 
 
 
 
হুডিনি বা ভেন্ট্রিলোকুইস্ট
 
তার হাত ভেবেছিল পিঠ ছুঁয়েছে আমার
আসলে অন্ধকারে মরা গাছকেও
প্রেমিক মনে হয়।
 
সেই পাশাপাশি দুলুনি,
 
সিলভার চুল, ব্রোঞ্জ হাসি। অন্ধকার এদিকে
রাজকীয় এখানে, আগলে রেখেছে ফাঁকফোকর,
অন্ধিসন্ধি, বেয়াড়া ভুলের বয়াম।
 
তবু আমাদের পিছিয়ে আসতে হয়। নির্ভুল,
যথাযথ হওয়ারও একটা কদর আছে, নিয়ন আলোতে
বা বাজি পোড়ানোয়, যদি আমাকে খোঁজো
রঙচটা তোরঙ্গ ছাড়া
আর কিছুই পাবে না। অন্ধকারে আমি কিন্তু
হুডিনি বা ভেন্ট্রিলোকুইস্ট, পলকে লুকিয়ে ফেলি
দোষগুণ, মিঠে ছাপ ফেলে আবার
 
উপযুক্ত হয়ে উঠি। তোমার দাবি মত।
সূক্ষ্ম প্রতিধ্বনির এই এক লোকঠকানো আবিষ্কার,
ঝুল মসি বা মনের কালি ভিড়ে করলেও,
পলকা চিকণ কমনীয় স্পর্শ।
 
 
 
 
 
একচিলতে জানলা
 
একচিলতে জানলা একবার উড়তে চেয়েছিল
খোলামেলা
দেখেছিল
ইলেকট্রিক তারে বসা সারিবদ্ধ চড়ুই
তাদের উপহাস, দলবাঁধা ঠাট্টা
এবং নিরীক্ষণ সেই জানলার
মানুষজনের নির্বোধ আস্ফালন
একচিলতে জানলার এখন উড়ুউড়ু মন
সর্বস্ব দেখেছে সে
ট্রেনের শার্সি দিয়ে
উন্মুক্ত ভাঙা পাল্লায়
আমি তাকে একবার ধানক্ষেত দেখিয়েছিলাম
এখন ফেরত আসি আমরা
লেভেল ক্রশিংয়ে
ফুল দিতে এসেছে বেঁচে থাকা
বন্ধু, বিড়বিড় করেছে প্রিয়জন
কেন যে তুই সাইকেল নিয়ে …
 
এক চিলতে জানলা কিন্তু জানত সব,
মারণের ক্ষিদে, সর্বভুক
জানত বেঁচে থাকাটাই একটা অ্যাক্সিডেন্ট
 
 
 
 
চিঠি নয়
চিঠি বা লম্বা টেক্সট চেয়েছিল দূরবর্তিনী, একটা নরমসরম
সংকল্প ঘোরে মাথায়, পালকস্পর্শ নমুনা,
আর সেই চাওয়া শেষ হলে পর, মনোহারিতার রেশ
পড়ে থাকে আমাতে, যেন ভুবনজুড়ে ক্ষেত্রতত্ব।
 
আমি লিখতে শুরু করি সাধারণ বিষয় নিয়ে, টুকিটাকি
ঘর গোছালির সামগ্রী, ভাঙা চিরুনী, একটা হেলে পড়া ট্যাবলেটের
বোতল, এইসব, যাতে কি না আর কারুরই বিশেষ কৌতূহল নেই,
একটা ঘরকন্নার ছবি বা পুতুল খেলার সিন, টেবিলের নীচে
ছেঁড়া শাড়ি দিয়ে তোলা উঁচু দেয়াল। প্রাইভেসির।
 
লেডিবাগ গুলো দ্যাখো ঘুরে ঘুরে কেমন
সব ফুল শুঁকে পাতার কাছে আসে
ভাঙা আকুতিতে। নিশ্চল। এইসব দেখি আমি।
আজ আর চিঠি নয়।
 
 
 
মেজদার প্রেমিকা
 
পুরো ভিজে এসেছিল সেবার, মেজদার সেই
নতুন প্রেমিকা, আমি কিন্তু বৃষ্টির প্রার্থনা
করিনি, বৃষ্টি ছিল না ম্যাপে আমার,
রেন ক্যাচারও পুঁতিনি – আমার
ক্রিকেট রয়েছে, বিকেলে ব্যাডমিন্টন।
 
পুরো ভিজে এসেছিল সেই সুন্দরী মেয়ে,
মুঠিস্তনা, ভেদ্য জেয়। জড়সড়
অপ্রতিভ দাঁড়িয়েছিল অসহায়।
এখন বড় বৌদির শাড়িতে তার
প্রাণ ফিরে আসে, জড় প্রতিমা দেখি
সপ্রতিভ আবার –
হেসেহেসে, কী রে বাবুল, কবে খুলবে
স্কুল?

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>