Reading Time: 2 minutes
স্পর্শকাতর ভাবনা কিংবা অসাময়িক দিশা
এ কি আমার ব্যক্তিগত ড্রাগন
বালিতে দাগ কাটা গভীর, অদৃশ্য সান্ত্রী,
আসা মানে ঠিক বাবুল বলে ঝাঁপিয়ে পড়া নয়,
কৌতূহলই বেশি সমাধানের থেকে,
বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি। যাত্রাশুরু
নদীর মত থতমত সে প্রথমে, ঢালু দিয়ে গড়াবে
তারপর সম্ভাবনা খুঁজে পায়, এক পোঁচে
এঁকে দেয় ধুলো এবং সূর্যাস্ত । কবিতা শোনায়
এবার পরস্পরস্পর্শী, গ্রামের বুড়োবুড়ি ঝগড়ায় বা
বস্তির নিজস্ব কলতলা গানে।
ইতিমধ্যে একটা প্রশান্তির ভাব এসেছে
অচলায়তনে, রনপা ছেড়ে সে রেডি তাই
ব্রেকড্যান্সিং চলছে পাড়ায়, তবলচি হাজির,
সিরিয়াস হরণকাব্য লেখা হচ্ছে
হুডিনি বা ভেন্ট্রিলোকুইস্ট
তার হাত ভেবেছিল পিঠ ছুঁয়েছে আমার
সিলভার চুল, ব্রোঞ্জ হাসি। অন্ধকার এদিকে
রাজকীয় এখানে, আগলে রেখেছে ফাঁকফোকর,
অন্ধিসন্ধি, বেয়াড়া ভুলের বয়াম।
তবু আমাদের পিছিয়ে আসতে হয়। নির্ভুল,
যথাযথ হওয়ারও একটা কদর আছে, নিয়ন আলোতে
বা বাজি পোড়ানোয়, যদি আমাকে খোঁজো
আর কিছুই পাবে না। অন্ধকারে আমি কিন্তু
হুডিনি বা ভেন্ট্রিলোকুইস্ট, পলকে লুকিয়ে ফেলি
দোষগুণ, মিঠে ছাপ ফেলে আবার
উপযুক্ত হয়ে উঠি। তোমার দাবি মত।
সূক্ষ্ম প্রতিধ্বনির এই এক লোকঠকানো আবিষ্কার,
ঝুল মসি বা মনের কালি ভিড়ে করলেও,
একচিলতে জানলা একবার উড়তে চেয়েছিল
ইলেকট্রিক তারে বসা সারিবদ্ধ চড়ুই
তাদের উপহাস, দলবাঁধা ঠাট্টা
মানুষজনের নির্বোধ আস্ফালন
একচিলতে জানলার এখন উড়ুউড়ু মন
আমি তাকে একবার ধানক্ষেত দেখিয়েছিলাম
ফুল দিতে এসেছে বেঁচে থাকা
বন্ধু, বিড়বিড় করেছে প্রিয়জন
এক চিলতে জানলা কিন্তু জানত সব,
জানত বেঁচে থাকাটাই একটা অ্যাক্সিডেন্ট
চিঠি বা লম্বা টেক্সট চেয়েছিল দূরবর্তিনী, একটা নরমসরম
সংকল্প ঘোরে মাথায়, পালকস্পর্শ নমুনা,
আর সেই চাওয়া শেষ হলে পর, মনোহারিতার রেশ
পড়ে থাকে আমাতে, যেন ভুবনজুড়ে ক্ষেত্রতত্ব।
আমি লিখতে শুরু করি সাধারণ বিষয় নিয়ে, টুকিটাকি
ঘর গোছালির সামগ্রী, ভাঙা চিরুনী, একটা হেলে পড়া ট্যাবলেটের
বোতল, এইসব, যাতে কি না আর কারুরই বিশেষ কৌতূহল নেই,
একটা ঘরকন্নার ছবি বা পুতুল খেলার সিন, টেবিলের নীচে
ছেঁড়া শাড়ি দিয়ে তোলা উঁচু দেয়াল। প্রাইভেসির।
লেডিবাগ গুলো দ্যাখো ঘুরে ঘুরে কেমন
সব ফুল শুঁকে পাতার কাছে আসে
ভাঙা আকুতিতে। নিশ্চল। এইসব দেখি আমি।
পুরো ভিজে এসেছিল সেবার, মেজদার সেই
নতুন প্রেমিকা, আমি কিন্তু বৃষ্টির প্রার্থনা
করিনি, বৃষ্টি ছিল না ম্যাপে আমার,
রেন ক্যাচারও পুঁতিনি – আমার
ক্রিকেট রয়েছে, বিকেলে ব্যাডমিন্টন।
পুরো ভিজে এসেছিল সেই সুন্দরী মেয়ে,
মুঠিস্তনা, ভেদ্য জেয়। জড়সড়
অপ্রতিভ দাঁড়িয়েছিল অসহায়।
প্রাণ ফিরে আসে, জড় প্রতিমা দেখি
হেসেহেসে, কী রে বাবুল, কবে খুলবে
জন্ম সোনারপুর অঞ্চলের কোদালিয়া গ্রামে। ছাত্রাবস্থায় অনেক লেখা এবং ছাপানো কলকাতার নানান পত্রপত্রিকায়। ১৯৮২ সাল থেকে আমেরিকায়, প্রথমে উচ্চশিক্ষার জন্য পরে অধ্যাপনায়। এখন ক্যানসাস স্টেট ইউনিভারসিটি তে কলেজ অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের ডিন। সম্প্রতি প্রকাশিত কবিতা – বাক, কবিতা আশ্রম, ছায়াবৃত্ত, বম্বে Duck, যুগসাগ্নিক, অন্যনিষাদ, বাতিঘর অনলাইন, শারদীয়া খোঁজ, শব্দের মিছিল, মহাভারত, অপার বাংলা, উত্তর আমেরিকার পত্রিকা বাঙলা লাইভ, উদ্ভাস এবং আরো অনেক পত্রিকায়। ঋক প্রকাশনী আয়োজিত বিরহের কবিতা প্রতিযোগিতায় উচ্চস্থান। উত্তর আমেরিকার নিউ জার্সি অঞ্চলের পত্রিকা অভিব্যক্তির কবিতা বিভাগের সম্পাদক। প্রথম কবিতার বই “অতসীর সংসারে এক সন্ধ্যাবেলা” প্রকাশ পাচ্ছে এই সেপ্টেম্বরে (২০২১) রা প্রকাশনী থেকে।
Related