ঈগল সুরতে যে শোনে–১
সন্ধ্যার কাঁচপাখি; ডুবে গেছে সমুদ্রে,
জাহাজের মতো মেঘ রয়েছে আজ—
যোগাযোগ নেই; ধ্বংস নেই; অনুভব
তার বিচরণ করে সুউচ্চ নীলে—যতো
ব্যথা ছিল-, গ্রহণ করেছি-হৃদয়ে—,পূর্ণ
করেছি; নিজ স্বচ্ছ-হ্রদ, ক্রন্দনঘন; শাদা
মোমের মতোন একা—। তারার বিন্যাসে
অন্ধকার ছড়িয়ে যাচ্ছে, এখানে কিছুই নেই
আপন সুঘ্রাণ ছাড়া। এ হলো—নিহত পাখির
বসন্ত—যার মেঘভর্তি জনপদ, মৃত্তিকা সুবর্ণ
করে উড়ে চলেছে—; একটিই প্রার্থনাগীতালি
সু-স্বরে ডাকে। এখনও বৃষ্টির ন্যায়ে মনে পড়ে,
চিত্রল ঈগলের অন্দরমহল। শ্রীগোলার দৃষ্টিতে—
ঘুরে চলেছে, নিজেরই সমাধিতল; বিপুল কার্নিস,
একটি পেয়ালা হাতে ঝুঁকে রয়েছে বৃক্ষ,
ডাল-পালা ভর্তি আরও পাখি। সকলে মনে;
অপার আনন্দে, সুই – সুতো ‘র চিহ্ন ফেলছে;
ভূ-খণ্ড ও পর্বতে; হরিণ স্বত্বা’র—। উড়ে যাচ্ছে রক্তাক্ত
তীরের পিছু পিছু, চন্দ্রাক্ষর—ঈগলের অন্দরমহল।
ঈগল সুরতে যে শুনে–২
পুরুনো গুল; গোধূলির ম্রিয়মাণ নিটোল রেখা—
প্রতিম’ মুহুর্তে সিংহের গাঁও ডাকে—, সুমিষ্টতা ছিল
নীলা- প্রস্থ – রাধা, রুবির অন্তরে। মহাবিশ্বের থেকেই
নিমগ্ন-ধ্বনি-কার্পাস বয়ানেও এসেছে, শুনি; আবর্তন
কীর্তির সত্তায় ছড়িয়ে রাখা দাউদের নিঃসঙ্গ স্বরনালী।
ময়ূরপুস্প; অধরচেরা নক্ষত্রেরা—ছিল শুভ্রতা মাখা;
ভাঙা বারান্দার রেশম ওরা। গভীর কালো পর্দা থেকে
বিযুক্ত শৈলী, যেন এক মদ-পদ্ম-তি, শিফনের শাদা পাল।
ভাঙা দেয়ালের মতোন সুউন্নত একঝাঁক কবুতর;
একদিকে ঐরাবত-সহ- গতির। জিপসি পল্লবের মতো
প্লাটিনাম গন্ধ্যা বুলবুলের বাঙ্কার ঘিরে ফিরি।
কুন্তল রূপোর পুচ্ছ’য় মিলিত হচ্ছে, জাফরি’র পিঙ্গল বর্ণনা।
ভাঙা দেয়ালের মতোন সুউন্নত একঝাঁক কবুতর;
একদিকে ঐরাবত-সহ- গতির।
ঈগল সুরতে যে শুনে–৩
সকরুণ রেহেল গুটিয়ে নিতেই, তুলোর মতো মাছেরা,
হীরার চক্ষুকে- ঘিরে রাখে; ধীরে-ধীরে। শিখা-শীতল
আয়না এখন, মুক্তোঝরানো প্রাচীর ইষ্টক।আপন
মৃত্তিকা হতে টেনে নিয়েছে পারদ স্বভাব, নখের নিচে
নাভিশ্বাস অশ্রুজল উড়ছেই—;’অনেক অনেক নার্গিস
খুঁটে শেষে ঘুমিয়ে রও ঈগল।’ আদম সম্মানিত এক বৃক্ষের গল্প,
এবার তোমাকে বলি। নিবিষ্টমনে তার কুন্তলে ছিল
আমারই শিশুরঙ; আদম সম্মানিত এক কুঁড়ি ফোঁটানো
ঋতুর দৃশ্যে চলি। ঘুমিয়ে রয়েছো ঈগল, অন্দরে শত
সহস্রাধিক ময়ূর-কর্ণ তোমার, তাহলে নিজেরই
নূহ-আয়ূবে-আর প্রজ্জোল নামের ঝর্ণায় ও
সুবার্তায় থাকি। ‘সকলি তা জানো না, ‘জামা জড়ানোই শেষ কথা নয়,
পিপাসাচিহ্ন তুলোর হাওয়ায়—নিজেকে নিমজ্জিত রাখি।
‘ যখন লাল জালাল’র কবিতা খানি বয়ে চলেছে রোজ।’
আরো পড়ুন: পারিসা ইসলাম খান’র কবিতা
ঈগল সুরতে যে শোনে–৪
“চাতকের ডাকে বৃষ্টি হয়, নাকি বৃষ্টি হয় বলে চাতক
ডাকে সেটা এখনও অনির্ণেয়।” মৌন থাকবেন এবং
পায়ের তলায় মৃত্তিকাকে উর্বর করে দিচ্ছে ড্রাগনের
আগুন। ক্লান্তনগ্নদগ্ধ জোনাকের স্বরলিপি, তোমাদের
বলা যাবে না, ফলে স্কিন-রেকর্ডিং— শূন্য বৃত্তি; হ্যাঁ,
এই সুক্ষদেহ, প্রতিভা—তোমাকেই সঁপিলাম। অনন্ত মহানভে
আর কোন সমাচার নেই— রোষে আর কে বাড়িয়ে দেয়
দুটি হাত; দাউদকে দেখিবার মাত্র। ইফ্রান ও সারার সমাধিফলকের
শান্ত জলে আজও ধূলোপড়া মুখ ভেসে ওঠে, নির্মাণের জাহাজ সমাগত।
ঐ অগ্নিকুণ্ড থেকে জলের পুতুল; কালো রাঁজহাস পুনরায় এসেছে।
মূল; বিকর্ষক কুমারীর শয্যা— আজ সমাগত দুঃখদিনে,
তার আশ্রয় কে লবে, মেষদিগের কেউ তা বুঝিল না। তিথি
বিদায়ের বলয়ে মাতৃগর্ভ; ভূমন্ডল; পঞ্চপ্রাণ খেলা করে।
ক্রিয়াদ্বন্দ্ব রহিত করে, আপনার কূল মিলেছে!
ঈগল সুরতে যে শুনে–৫
পরিব্রাজক—ফলের কথক—’রাঁ’,
সাঁই পরওয়ার, আপনি রক্ত ঢালুন।
পৃথিবীতে; চকচকে ও বিপন্ন বর্ষাতির
মতোন; একপাশে প্রণয়ী’রা অনপেক্ষমান।
স্বরগমন; বিদ্যুতরন্ধ্রে- স্বর্পের ছায়ার মতোন
বিকালবেলা এসেছে। আমাদের অপেক্ষা,
সাগরস্রোতা; বাস্পিয়যান পারাবত—লক্ষাধিক
মেঘের একান্নবর্তী, হেঁ সিংহশ্রাবণী; ঘুরেফিরে
ক্লান্ত রূপচোর, ঈগল সাক্ষাতে নীরব হও।
হৃদয়—জাহাজ, ধূপদাহ সন্ধ্যা অথবা—
কার্যনিপুণ রোকাইয়ার চেয়েও ওর ছেঁড়া রুটি
ভালো—। যেদিকে পিঁপড়ে—প্রার্থনা—পিপলস,
টিয়ারং দ্যুতিময় একটি নতমুখী আঘাত করে—
চুন সুরকিবাঁধাই স্মৃতিফলকের নিকটে।
যেন ক্রোদেরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত যোকাবের পুত্র।
সঙ্গীত পল্লব নিয়ে; পাখিটির; বিস্তারিত জানাবে—।
ঈগল সুরতে যে শুনে–৬
প্রনয়ীগন—’তোমাদের পিতা ফিরবে না’।
তার শূন্যনাম; অংশ; ছায়াকলা; গোপন দোয়ার নিয়ে—
স্পর্শে গলা বরফ দ্বীপ, একটি বুদ্ধ-স্থ গৃহ,
ক্ষয়; রক্তাপ্লুত ক্ষতির সংগ্রহশালা—, ফিরবে অনেক রূপে।
তবে, তোমাদের ফেলে রেখে তিনি চলেছেন—
জেগে উঠেছেন একটি উজ্জলতর ঘুমচূর্ণ
জেনিক হ্রদের প্রদেশে। তাই মাছেরা
পরস্পরের ব্যাধিগ্রস্ত যুদ্ধে ক্লান্ত। অগ্নি কি
তার বীজানুবর্তি নারীদের দূর করেছেন এখনও?
এই হিমতূণ—নিদ্রাগত সোনালী-দিগভ্রান্তি’র
মৌজা নিয়েই বিভোর শবজ্বালা—ধাবিত ডানা—
ভ্রম্মপ্রিয় ধাতব আকাশ পদ্ধতি—সমাগত।
সাজানো কাঠের আসন; কাগুজে আলাপের বাগানে,
বসো। পরিগ্রহ কর টঙ্কলীলা; মেষময়ূরের চাঁদ,
এই মোহলাগা প্রাপক ঠিকানা। সমান্তরাল ধ্বনির
কোন অপেক্ষা থেকে —জ্ঞানবান
যুবকেরা ভালো। কেননা, সূর্যের বিহারে-
নিজের চন্দ্রজামাটি ওরা তাপ ছাড়াই পোড়াতে পারেন।
তারই উদগত ধোঁয়ায়, তুমি-আমি; ‘আনব্লেজড বিলিভার’-
চলেছে-, ভাষাহীন বিহারে। জন্মেছিল দীনবস্থায় যে দেশ—
চিরধরা পাতার মতোন প্রাচুর্যের অনাগত, দৈবঘটনা;
পদার্থের স্বর; এই ভাবতে ভাবতে ফিরে আসছে পৃথিবীতে—
কল্লোলিত নীরবতার সুরতি শাখাটি।
ঈগল সুরতে যে শুনে–৭
কবুতর অন্দরমহল হলো—
ভেতরে প্রবেশ করুক ঘোড়ারা।
অফেলিয়া ভাসছে; সহস্ররূপে
পাঁপড়ি—ফোঁটা জরুরী—নিমগ্ন
কলি, রও; পাপেটিং ইচ্ছে রাখার
লালে। সুতীব্র প্রস্তুতি—ঘাই; অনেক
ইনসোমেনিয়াক ছোঁরা—শূন্য ফ্রেম।
দূরবীনিত সত্যের জয় এখানেই।
ভায়োলেট স্বর্গ—হাওয়াই শব্দমালা,
ডেথ রিডেম্পশন। একটি বৃক্ষের;
অযুত পারাবত, চক্ষুশালা, সন্ধ্যালয়ের
গোলাপ। মূল নেই, শেকড়লীন—এক
অশ্বজাহাজ—জিপসি সেরেন, হুশিয়ার।
কবি ও গদ্যকার।
আরও লিখছেন, লিরিক, ছোটগল্প, রিপোর্ট।
নির্মাণ করেছেন শর্টফিল্ম।
প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: ‘দীর্ঘ দিঘির বর্ণনা’–ক্রিসমাস’২০২১।