| 20 এপ্রিল 2024
Categories
অনুবাদ অনুবাদিত গল্প

অনুবাদ গল্প: কেরোসিনের দুর্গন্ধ । অমৃতা প্রীতম

আনুমানিক পঠনকাল: 6 মিনিট

অনুবাদক: মনোজিৎকুমার দাস

লেখক পরিচিতি : অমৃতা প্রীতম ( ১৯১৯ – ২০০৫ ) পাজ্ঞাবী তথা ভারতীয় সাহিত্যের অন্যতমা মহিলা কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার ও প্রাবন্ধিক। তাঁর লেখা বইয়ের সংখ্যা শতাধিক। তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থের নাম আজ এখন ওয়ারিস শাহ নু . যা পাঞ্জাবের লোককাহিনীর উপর ভিত্তি করে লেখা। তাঁর লেখা বিখ্যাত উপন্যাসের নাম পিঞ্জর। নারীবাদী লেখিকা হিসাবে তিনি বিশেষ ভাবে খ্যাত। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কাব্য, উপন্যাস ছোটগল্পের রচয়িতা হিসাবে বিশ্বসাহিত্যাঙ্গনে তিনি সমধিক পরিচিত। তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ইংরেজি-সহ বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়েছে। তিনি সুনেহে কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্য একাডেমী পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়াও তিনি তাঁর সাহিত্যকর্মের জন্য একাধিক পুরস্কার লাভ করেন। প্রাপ্ত পুরস্কারের মধ্যে জ্ঞানপীঠ পুরস্কার অন্যতম। ১৯৬৯ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী এবং ২০০৪ সালে পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত করা হয়। একই সালে তিনি ভারতীয় সাহিত্য অ্যাকাডেমীর ফেলো মনোনীত হন। ২০০৫ সালের ৩১ অক্টোবর লোকান্তরিত হন। পাঞ্জাবী ভাষায় তার লেখা নিরুপমা দত্তের ইংরেজি ভাষায় অনুবাদকৃত গল্পটি Stench of Kerosene-কে কেরোসিনের দুর্গন্ধ নামে বঙ্গানুবাদ করা হলো।


 

গুলেরি তার প্রতিবেশীর বাড়ির বাইরের ঘোড়াটিকে চিনতে পারল। ঘোড়াটি তার পিতামাতার গ্রামের।

গুলেরির বাবা-মা থাকে চাম্বায়। তার স্বামীর গ্রাম থেকে কয়েক মাইল দূরে একটা উঁচু জমি থেকে রাস্তাটি বাঁকিয়ে খাড়াভাবে পাহাড়ের দিকে নেমে গেছে। এদিক থেকে দেখা যায় চম্বা।

গুলেরি যখনই বাড়িতে অসুস্থ থাকত তখনই তার স্বামী মানক তাকে নিয়ে ওই পর্যন্ত যেত। সে সূর্যের আলোতে চম্বার ঘরবাড়িগুলোকে স্পষ্ট দেখতে পেত, তাদেখে তার মনটা আনন্দে নেচে উঠত।

প্রতি বছর একবার ফসল তোলার পরে গুলেরি তার বাবা-মায়ের সাথে কিছু দিন কাটিয়ে আসত। তারা তাকে চাম্বায় আনতে লাকরমন্ডিতে একজন লোক পাঠাত। তার দুই বান্ধবীর চাম্বার বাইরের ছেলেদের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল । বছরের একই সময়ে তারাও বাপে বাড়িতে আসত। মেয়েগুলো প্রতি বছর একত্রে মিলিত হবার জন্য অপেক্ষা করত।

প্রতিদিন তারা তাদের সাংসারিক কাজর্কমের অভিজ্ঞতা বলত। আনন্দ ও দুঃখ বেদনার কথা বলে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দিত। তারা একসাথে রাস্তায় ঘুরাঘুরি করত।

তারপর হতো ফসল কাটার উৎসব। মেয়েরা অনুষ্ঠানের জন্য নতুন পোশাক তৈরি করত। তারা রঙবেরঙে দোপাট্টা পড়ত। ফসল কাটার উৎসবের মেলা থেকে তারা কাচের চুড়ি ও রূপার কানের দুল ও আংটি কিনত।

গুলেরি সবসময় ফসল কাটার দিন গুনত। শরতের হাওয়া যখন বর্ষার মেঘের আকাশ পরিষ্কার করে দেয় তখন সে চাম্বাতে তার বাবা-মায়ের বাড়ি ছাড়া আর কিছু ভাবত না। সে রোজ তার গবাদি পশুকে খাওয়াত।

সে তার স্বামী শ্বশুরশাশুড়ির জন্য খাবার রান্না করত।

তারপর তার বাবা- মায়ের গ্রাম থেকে কারোও তার জন্য আসতে কতক্ষণ সময় লাগবে ভাবত। সে আনন্দে মাকে আদর করে, তার বাবার চাকর নাতুকে শুভেচ্ছা জানায়। সে পরের দিন চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়।

গুলেরিকে তার উত্তেজনা শব্দে প্রকাশ করেনি: তার মুখের অভিব্যক্তিই যথেষ্ট ছিল। তার স্বামী মানক তার হুক্কা টেনে নিয়ে চোখ বন্ধ করে হুক্কা টানে। গুলেরির মুখের ভাব দেখে মনে হয় সে তামাক পছন্দ করে না, তাই মনে হয় সে তার স্ত্রীর মুখের ভাব সহ্য করতে পারে না।

তারপর পরের বছর আবার মেলা এসে যায়। গুলেরি তার স্বামীকে জিজ্ঞেস কবে, “তুমি চম্বার মেলায় আসছো তো?”

গুলেরি আকুতির সুরে বলল, “একদিনের জন্যই না হয় এসো। ”

মানক তার হুক্কা পাশে রেখে কোন জবাব দিল না।

“তুমি আমার কথার জবাব দিচ্ছ না?” গুলেরি একটু উষ্মার সঙ্গে বলল। “আমি কি তোমাকে অন্যকিছু বলছি।”

“গুলেরি অনুযোগের সুরে বলল।” আমি জানি তুমি কী বলতে চাচ্ছো।

গুলেরির স্বামী বলল। “আমি বছরে একবার মাত্র বাবা-মায়ের ওখানে যাই। এবার তুমি যেতে বারণ করছো।” গুলেরি বলল। “শুধু এই সময়।” মানক বলল।

“তোমার মা যেতে নিষেধ করেননি।তবে তোমার কেন আপত্তি।” গুলেরি শিশুসুলভ কণ্ঠে বলল।

“মা” — মানক তার কথা শেষ করল না।

বহু প্রতিক্ষিত সকালে, গুলেরি ভোরের অনেক আগেই প্রস্তুত হলো। তার কোন সন্তান ছিল না এবং তাই তাদের স্বামী পিতামাতার কাছে রেখে যেতে বা তাদের সাথে নিয়ে যেতে কোন সমস্যা হয়নি। নাতু মানকের বাবা-মায়ের কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার সাথে সাথে ঘোড়ার জিন ধরে। তারা তার মাথায় হাত বুলিয়ে আশীর্বাদ করল।


আরো পড়ুন: একটি রুমাল, একটি আংটি ও একখানা চালুনি। অমৃতা প্রীতম


মানক বলল, “আমি তোমার সাথে কিছু পথ আসব”।

গুলেরি খুশি হয়ে রওনা দিল। তার দোপাট্টার নিচে সে মানকের বাঁশি লুকিয়ে রেখেছিল।

খাজিয়ার গ্রামের পরে, রাস্তাটি খাড়াভাবে নেমে গেছে চাম্বা পর্যন্ত। সেখানে গুলেরি তার দোপাট্টার নিচ থেকে বাঁশি বের করে মানককে দিল। সে মানকের হাতটা নিজের হাতে নিয়ে বলল, “এখন এসো, তোমার বাঁশি বাজাও!” কিন্তু মানক, চিন্তায় পরাজিত হয়নি। “কেন তুমি তোমার বাঁশি বাজাও না?” গুলেরি জিজ্ঞেস করলো, শান্ত স্বরে। মানক তার দিকে বিষণ্ণ দৃষ্টিতে তাকাল, তারপর বাঁশিটা ঠোঁটে রেখে অদ্ভুত এক যন্ত্রণাময় হাহাকার বাজিয়ে চলল।

“গুলেরি, চলে যেও না”, সে তাকে অনুরোধ করল। “আবারও জিজ্ঞেস করছি, এবার যাবে না”। সে তাকে বাঁশি ফিরিয়ে দিল। আমি বাজাতে পারছি না।

“কিন্তু কেন?” সে জিজ্ঞেস করল. “তুমি মেলার দিন এসো, আমরা একসাথে ফিরবো। আমি কথা দিচ্ছি।”

মানক কিছু বলল না।

তারা রাস্তার পাশে থামল। নাতু গুলেরি দম্পতিকে একত্রে রেখে ঘোড়াটিকে কয়েক পা এগিয়ে নিয়ে গেল।

মানকের মনের মধ্যে সাত বছর আগের সেই সময়টার কথা মনে পড়ল।

সে এবং তার বন্ধুরা চাম্বাতে ফসল কাটার উৎসবে যেত এই রাস্তা দিয়ে। এই মেলাতেই মানক প্রথম গুলেরিকে দেখেছিল এবং তারা একে অপরের সাথে তাদের হৃদয়ের কথা বিনিময় করেছিল।

মানকের মনে পড়ে মানক একা গুলেরি সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তার হাত ধরে বলেছিল, “তুমি দুধের কাঁচা ভুট্টার মতো”।

“গবাদিরা পাকা ভুট্টা খেতে যায়”, গুলেরি একটা ঝাঁকুনি দিয়ে তার হাত ছেড়ে দিয়ে উত্তর দিয়েছিল। “মানুষ বেশি ভালো লাগে ভাজা। তুমি যদি আমাকে চাও, যাও, বাবার কাছে আমাকে চাও।”

মানকের আত্মীয়দের মধ্যে বিয়ের আগে কনে-দাম ঠিক করার রেওয়াজ ছিল। মানক ঘাবড়ে গেল কারণ সে জানত না গুলেরির বাবা তার কাছ থেকে কী দাম চাইবে। কিন্তু গুলেরির বাবা সচ্ছল ছিলেন এবং শহরে থাকতেন। তিনি শপথ করেছিলেন যে তিনি তার মেয়ের জন্য টাকা নেবেন না, তবে তাকে একটি ভাল পরিবারের একজন যোগ্য যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেবেন।

গুলেরির বাবা মানকের কথাবার্তা ও চেহারা সুরত দেখে সন্তুষ্ট হয়ে সিদ্ধান্ত নেয় মানকে সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে। খুব শীঘ্রই, গুলেরি মানকের বিয়ে হলো। মানক গুলেরির হাতে হাত রেখে উল্লসিত হতে দেখা গেল। মানক সাত বছর আগে কথা ভাবছিল।

তুমি স্বপ্ন দেখছ নাকি। “গুলেরি তার কাছে জানতে চাইল।

মানক উত্তর দিল না। ঘোড়াটি অধৈর্য হয়ে উঠল এবং গুলেরি তার সামনের যাত্রার কথা ভেবে চলে যাওয়ার জন্য উঠল। “আপনি কি এখান থেকে কয়েক মাইল দূরে নীল-বেল কাঠ জানেন”? তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “কথিত আছে যে এর মধ্য দিয়ে যায় যে কেউ বধির হয়ে যায়”।

হ্যাঁ

“আমার কাছে মনে হচ্ছে যেন তুমি ব্লুবেল কাঠের মধ্য দিয়ে চলেছ; আমি যা বলি তা তুমি শুনতে পাচ্ছ না।”

“ঠিক বলেছো গুলেরি। তুমি আমাকে যা বলছো আমি কিছুই শুনতে পাচ্ছি না” একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মানক উত্তর দিল।

দুজনেই একে অপরের দিকে তাকাল। কেউই অন্যের চিন্তা বুঝতে পারেনি।

“আমি এখনই যাবো। তোমার বাড়ি ফেরা ভালো ছিল। তুমি অনেক দূর এসেছ”, গুলেরি অকৃত্রিম ভাবে বললো।

“তুমি এত দূর হেঁটে এসেছো। এখন ঘোড়ায় উঠাই ভাল”, মানক জবাব দিল।

“এই নাও তোমার বাঁশি”

“তুমি এটা সঙ্গে নিয়ে যাও।”

“মেলার দিনে এসে বাজাবে?” গুলেরি হেসে জিজ্ঞেস করল। তার চোখে সূর্যের আলোয় মানক মুখ ঘুরিয়ে গুলেরি হতভম্ব হয়ে, কাঁধ ঝাঁকিয়ে চম্বার রাস্তা ধরল। মানক তার বাড়িতে ফিরে গেল।

সে ঘরে ঢুকে তার চৌকির উপর নিঃশব্দে বসলো।

“তুমি অনেক দিন দূরে আছো”, তার মা চিৎকার করে বলল। “তুমি কি চাম্বা গিয়েছিলে?”

“শুধু পাহাড়ের চূড়া পর্যন্ত।” মানকে ভারী কণ্ঠে বলল, “কেন বুড়ির মত বকবক করছ?” মাকে কড়া গলায় বলল,”মানুষ হও” মানকে বলল।

মানক পাল্টা জবাব দিতে চেয়েছিলেন, “তুমি একজন নারী; কেন তুমি — !” কিন্তু সে চুপ করে রইল।

মানক ও গুলেরির বিয়ে হয়েছে সাত বছর, কিন্তু গুলেরি আজ পর্যন্ত সন্তানের জন্ম দেয়নি। মানকের মা একটি গোপন সংকল্প করেছিলেন : “আমি এমনটা অষ্টম বছরের বেশি যেতে দেব না”।

অষ্টম বছরে মানকের মা সিদ্ধান্ত কার্জকর করার জন্য, সে মানককে দ্বিতীয় স্ত্রী পাওয়ার জন্য ৫০০ টাকা দিয়ে অপেক্ষা করেছিল।মানক জানত, গুলেরি যখন তার বাবা-মায়ের কাছে গিয়েছিল তখন মানক নতুন পাত্রী আনতে যেতে হবে।

তার মায়ের প্রতি মানক আজ্ঞাবহ সে তার মায়ের কথা মেনে চলে। মানকের শরীর নতুন স্ত্রী লাভে জন্য সাড়া দেয়। কিন্তু তার হৃদয় মন এতে সায় দেয় না।

তারপর একদিন ভোরবেলা সে তার হুক্কায় ধূমপান করছিল এমন সময় তার এক পুরানো বন্ধু পাশ দিয়ে গেলে মানক তাকে জিজ্ঞেস করল, ” ওহ ভবানী, এত সকালে কোথায় যাচ্ছিস?”

ভবানী থামল। তার কাঁধে একটি ছোট বাণ্ডিল ছিল। “বিশেষ করে কোথাও নয়”, তিনি এড়িয়ে গিয়ে উত্তর দিল।

“তুমি নিশ্চয়ই কোনো না কোনো জায়গায় যাচ্ছো,” চিৎকার করে বলল মানক। ভবানী মানকের হাত থেকে হুক্কা কেড়ে নিল। “আমি মেলার জন্য চাম্বা যাচ্ছি”, সে শেষ পর্যন্ত উত্তর দিল।

ভবানীর কথা মানকের হৃদয়ে সূঁচের মত বিঁধে গেল।

“আজ কি মেলা?”

“এটা প্রতি বছর একই দিনে হয়”, ভবানী ক্ষীণভাবে উত্তর দিল। “তোমার কি মনে নেই, সাত বছর আগে আমরা একই পার্টিতে ছিলাম?” ভবানী আর কিছু বলল না কিন্তু মানক অন্য লোকের তিরস্কারে সচেতন এবং সে অস্বস্তি বোধ করল। ভবানী হুক্কা নামিয়ে রেখে তার বাণ্ডিল তুলে নিল। সে বান্ডিল থেকে বাঁশি বের বাজাতে লাগল। মানককের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সে চলে গেল। ভবানী অদৃশ্য হওয়া অবধি মানকের কান বাঁশির শব্দের দিকে রইল।

পরদিন বিকেলে মানক যখন তার ক্ষেতে তখন সে ভবানীকে ফিরে আসতে দেখেছিল কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে সে অন্য দিকে তাকাল। সে ভবানীর সাথে কথা বলতে বা মেলার কিছু শুনতে চায়নি। কিন্তু ভবানী ওপারে এসে মানকের সামনে বসলো। তার মুখ ছিল বিষণ্ণ, আলোহীন।

“গুলেরি মরে গেছে”, চাপা কণ্ঠে বলল ভবানী।

“কি?”

“সে যখন তোমার দ্বিতীয় বিয়ের কথা শুনল, তখন সে তার জামাকাপড় কেরোসিনে ভিজিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।”

এ খবর শুনে যন্ত্রণায় কাতর হয়ে নিঃশব্দে মানক শুধু তাকিয়ে থেকে অনুভব করল তার নিজের জীবন জ্বলছে।

দিন যেতে লাগলো। মানক আবার ক্ষেতে তার কাজ শুরু করল। খাবার দিলে খেত। সে কখন চেয়ে খাবার খেত না। সে যেন একজন মৃত মানুষের মতো হয়ে গেল। এ অবস্থায় তার দ্বিতীয় স্ত্রী একদিন বলল,” আমি তার স্ত্রী নই, আমি এমন একজন যাকে সে বিয়ে করেছে।”

কিন্তু খুব শীঘ্রই সে গর্ভবতী হল, এতে মানকের মা তার নতুন পুত্রবধূকে নিয়ে এখন বেশ খুশি। সে মানককে তার স্ত্রীর অবস্থার কথা বলল, কিন্তু সে এমনভাবে তাকাল যেন সে বুঝতে পারেনি।

মানকের স্ত্রীর গর্ভে একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে; এবং তার মা, আনন্দিত, ছেলেটিকে স্নান করিয়ে, তাকে সুন্দর পোশাক পরিয়ে মানকের কোলে বসাল। মানক তার কোলের সদ্যোজাত শিশুর দিকে তাকিয়ে রইল। সে অনেকক্ষণ বোধগম্যহীন অবস্থায় থাকায় তার মুখ যথারীতি, অভিব্যক্তিহীন। তারপর হঠাৎ মনে হল তার শূন্য চোখ ভয়ে ভরা।

তারপর মানক চিৎকার করতে লাগল। “ওকে নিয়ে যাও!” সে উন্মত্তভাবে চিৎকার করে বলল, “ওকে নিয়ে যাও! কেরোসিনের দুর্গন্ধ আসছে।”

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত