Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,চৈতালী চট্টোপাধ্যায়

শারদ সংখ্যা সাক্ষাৎকার: ইরাবতীর মুখোমুখি কবি চৈতালী চট্টোপাধ্যায়

Reading Time: 6 minutes

রাগরাগিণীর ঘরে জন্ম চৈতালী চট্টোপাধ্যায়ের। মা শচীনকর্তার ভাগ্নি বিভাস কুমারী দেববর্মণ। ত্রিপুরা রাজপরিবারের মেয়ে। বাবা তীব্রভাবে সৎ, কল্পনাপ্রবণ হরিপদ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। চৈতালী বর্ণপরিচয়ের দ্বিতীয়ভাগ না পড়ে, নিজেই যুক্তাক্ষর শিখে নিয়েছিলেন। বইয়ের সরবরাহ যোগাতে যোগাতে ক্লান্ত বাবা-মাকে ক্ষান্ত করতে ছোট মেয়েটি উল্টোভাবে ধরে বই পড়ত, সময় বেশি লাগবে বলে। যাপনে ছিল, আজও আছে কবিতা আর তীব্র অনিশ্চয়। উত্তর কলকাতার সরু গলি, উঠোন, ময়ূরের খাঁচা, রুপোলি মাছ ছিটকে-আসা গঙ্গাজলের কল, রোমান ক্যাথলিক স্কুলের চ্যাপেল ও অর্গানের অনুষঙ্গ, এসবই ভাসতে ভাসতে তাঁর কবিতার অভিমুখী হয়। বিষয় পদার্থবিদ্যা হলেও বিষয়ান্তর, সাহিত্য। আর, পেশা ছিল প্রখ্যাত বিজ্ঞাপন সংস্থায় কপিরাইটিং। বহুল প্রচারিত সব সংবাদপত্রে একের পর এক লিখে চলেছেন নানাকিছু। কবিতা,গল্প ও প্রবন্ধবই প্রকাশ পেয়েছে অভিজাত প্রকাশনা থেকে। পেয়েছেন সরকারি (কেন্দ্রীয় ও পশ্চিমবঙ্গের), বেসরকারি বিভিন্ন সম্মাননা। ২০২০ সালে ১১ জানুয়ারি চৈতালী চট্টোপাধ্যায়কে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি প্রবর্তিত বিভা চট্টোপাধ্যায় স্মারক সম্মান অর্পণ করা হয়েছিল বাংলা কবিতায় তাঁর সামগ্রিক অবদান স্মরণে রেখে। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শৌনক দত্ত।


Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,চৈতালী চট্টোপাধ্যায়

তুমি কবিতার মানুষ। তোমার কাছ থেকে কবিতার কথা জানতে চাই। কবিতাকে কিভাবে দেখো তুমি?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: বহুবার এ-প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। এখন ক্লিশে লাগে। কবিতার মানুষ মানে কী।বহুজন,এক অক্ষরও কবিতা লেখেন না, কিন্তু কবিতার মধ্যেই তাদের বাস, যাতায়াত থাকে। আমার হাসি কান্নার রিফ্লেকশন পড়ে কবিতায়।সে আমার আনন্দ অপমানের মেনিফেস্টো। কিন্তু আমার মনে হয়,ব্যক্তিক আমিকে যদি ছাপিয়ে যায় সেটা, তবে অন্যরাও মনে গেঁথে নিতে পারবে। নীল আকাশের নীচে ভাঙা বাড়ির কার্নিশে একটা নয়নতারা ফুটে আছে। কিংবা আমার মেয়ের সদ্য ঘুমভাঙা মুখ, সবকিছুই কবিতা সাজায় আমার জন্য।

জীবনের শুরুতে কারা তোমার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছিলেন?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: বলাই বাহুল্য, রবীন্দ্রনাথ। হ্যাঁ,খানিকটা, অবনীন্দ্রনাথও বটে। তারপর যদি জীবনানন্দ, বুদ্ধদেব বসু, সুধীন্দ্রনাথ,প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত, শক্তি চট্টোপাধ্যায়,শঙ্খ ঘোষ, ভাস্কর চক্রবর্তী,এই এঁদের নাম করতে হয়,সে তো অনেক পরে! এনিওয়ে,এই প্রশ্নটা হওয়া উচিত ছিল, কবিতা লেখার শুরুতে…

প্রথম কবিতা লেখার গল্পটা শুনতে চাই?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: গল্প নেই কোনো।কবে প্রথম কবিতা লিখলাম আমি,সে তো অচেতন প্রয়াস, সচেতনভাবে কবে‍,তাও মনে নেই। তবে হ্যাঁ, যখন সবে লেখা ছাপা হচ্ছে টচ্ছে, তখন একটা সিরিজ লিখেছি, বিজ্ঞাপনের মেয়ে,সেটা খুব মনে আছে। একটা ঘোরের মধ্যে দিনগুলো রাতগুলো কাটত।একা একা ঘুরে বেড়াতাম, কখনও সন্ধের ঝোঁকে মেট্রোগলি, যাদুঘরের ফুটপাত। কখনও -বা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে সময় ফুরোনোর অলৌকিক ঘন্টাধ্বনি শুনতাম। কখনও কবরখানায় মুখ থুবড়ে পড়ে -থাকা পরী দেখতাম।মনেও নেই সবটা…

পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করে কবিতায় কাটিয়ে দেয়ার গল্পটা কি?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: স্কুলে থাকাকালীন বাংলা ও ফিজিক্স একসঙ্গে ভালোবেসেছি আমি‌। কবিতা লিখতাম। ফিজিক্যাল অপটিক্সও পড়তাম। কোথাও কোনও বিরোধ নেই তো! পদার্থবিদ্যার দ্বিতীয় চ্যাপ্টার,এমন শিরোনামও দিয়েছি কবিতায়। ফিজিক্স নিয়ে পড়ব,স্বপ্ন ছিল। কিন্তু সাহিত্যকে বাদ দিয়ে চলব,এমনটা ভাবিনি কখনও। ‌

এত বছর পরে যদি কবিতা লেখার প্রস্তুতির কথা বলতে বলি কোন তরুনের প্রতি কি বলবে? কিভাবে শুরু করা উচিত?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: এ কি কোনও কর্পোরেটের ট্রেনিং,না জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় বসার জন্য তৈরি হওয়া? কবিতা লেখার প্রস্তুতি কাউকে আদাজল খেয়ে নিতে হয় নাকি!লোকে আপনিই লেখে। সমসাময়িক বা পূর্বতন লেখকের প্রচুর লেখাপত্র পড়ে নিজেরই ঔৎসুক্যে।ছন্দ বিষয়ক লেখালেখিতে চোখ দেয়।এসবই ভালোবাসা।প্যাশন। আলাদা করে প্রস্তুতি আবার কী!

তোমার কবিতা যাপন মুহূর্ত বা রচনার মুহূর্ত জানতে ইচ্ছে করে…কবিতায় তোমার নিবিষ্ট যে ভ্রমণ… একান্ত যে বিচরণ সেগুলোর কথা।

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: একেকটা লেখার রচনার মুহূর্ত একেকরকম। লিখতে গেলে মহাভারত হয়ে যাবে।সবসময় ভ্রমণেই থাকি।অ অপমান ছুঁড়ে দেয়।আ আনন্দ হয়ে লুফে নেয়। এই এমনটাই।কবিতাভ্রমণ বলে তার শিরোনাম দিতে আমি নারাজ।

 কাব্যরচনা তো একটা চ্যালেঞ্জ তা সেটা কতটা প্রতিভানির্ভর,কতটা প্রস্তুতিনির্ভর বলে মনে কর?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: কীসের চ্যালেঞ্জ? দুঃখিত,এ প্রশ্নের উত্তর জানা নেই আমার। আমি, নিরুপায়, লিখে চলি। আমি অসহায়ের মতো লিখে চলি।তার মধ্যে যদি আগুন জ্বলে,যদি প্রহরণ ঝিকমিকিয়ে ওঠে,সে কোনো প্রস্তুতিনির্ভর নয়।সে কোনো চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা নয়।ইনভয়েসের পেছনে,বা, যেকোনো ফাঁকা কিছু পেলেই লিখে রাখি, তারপর কয়েকটা দিন তাকে ভুলে যেতে চাই। শেষে, বারবার পড়ি। খুঁতখুঁতে -আমি, শব্দ পাল্টাই। নির্মাণ বদলাই।

প্রতিটি শিল্পের সাথে যাপন মিশে থাকে, জীবনের অভিজ্ঞতা থাকে-তোমার কী রকম? কবিতায় তোমার যাপন কতটা পায় পাঠক?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: ব্যক্তিগত যাপন,মানসযাপন,সবই মিশে যায় আমার লেখায়। তাকে কবিতা বলব কি। ঘোরতর সন্দেহ আছে।সে যাই হোক,যে মেয়েটি অলস জীবন কাটাচ্ছে,এ জীবন লইয়া কী করিব,যাকে ভাবাচ্ছে না, আমার অ্যান্টেনা তাকে ছোঁয় যেমন, তেমন কাচবসানো পাঁচিলের ওপর দিয়ে হেঁটে চলা মেয়েটিকেও ধরে ফেলে।যুদ্ধ, রাজনীতি, দুর্ভিক্ষ, অর্থনীতি সবই তো নিজের যাপন।তাই লিখি আমি।পাঠক কতটা পায়,সে তো পাঠক-ই বলবে!

তোমার কবিতার গভীরে একটা না পাওয়ার আবহ পাওয়া যায়। কোনো প্রেম,সময়ের জ্বালা, এর সঙ্গে লেখা না-লেখার সংযোগ… 

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: অতৃপ্তি সবটাই।তৃপ্ত মুহূর্তও মুহূর্তে শেষ হয়ে অন্য অতৃপ্তি শুরু হয়।মানুষ তো গজদন্তমিনারে বা শুনশান দ্বীপে বসে লেখে না। কিংবা,ফিজিক্যালি সেরকম অবস্থান হয়ও যদি, চেতনা তো বিস্তৃত পরিসর জুড়ে থাকে।
Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,চৈতালী চট্টোপাধ্যায়

তোমার কবিতার নির্মাণ ভাবনা বা বিনির্মাণ নিয়ে জানতে চাই?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: হ্যাঁ।আগে নির্মাণ জলের মতো গড়িয়ে আপনিই আসত। গদ্য কবিতা,সাতমাত্রার ছন্দ,পয়ার, সবকিছুই। এখন বুড়ি হচ্ছি, ভাবনার শেষে নির্মাণচিন্তাও মাথায় জাঁকিয়ে বসেছে। বিভিন্ন মিথ, পৌরাণিক উপাখ্যানকে ডিকনস্ট্রাক্ট করতে ভালো লাগে।

কবিতায় আছো কয়েক দশক ধরে শুরুর সেই সময় আর আজকের মধ্যে পার্থক্য কিভাবে দেখ?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: প্রচুর ছেলেমেয়ে কবিতা লিখছে। ভাষা ক্রমাগত বদলাচ্ছে। সময়কে অনুষঙ্গ হিসাবে নিচ্ছে সবাই। সবাই নেটস্যাভি,ফলত লেখায় সেসব আয়োজন বসে যায়।নানা স্মার্টনেস,প্রথাভাঙা শব্দ, সাহসী লেখাপত্র সব আছে। ভালো লাগে।ভয়ও করে। কবিতা বিমূর্ততা পার হয়ে বেশি তরলতার দিকে ঝুঁকছে না তো!

তোমার পারিবারিক একটা ঐতিহ্য আছে,রাজরক্ত বইছে তোমার শরীরে। তোমায় গানের গলাও অসাধারণ সংগীত নিয়ে তোমার ভাবনা… এ সম্পর্কে কিছু জানতে চাই। 

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: সুরের মধ্যেই বড় হয়েছি।ক্ষণে ক্ষণে সুর কেটে গেছে। তবুও।মার কাছে মামা শচীন দেব বর্মন,গুরু ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়ের গল্প শুনতাম,মার ছোটোবেলা জড়িয়ে।কত অল্পবয়সে মা এঁদের সঙ্গে প্রবাসে সঙ্গীত সম্মেলনে গিয়ে বসন্ত রাগ গেয়ে প্রথম হয়ে এসেছিলেন।আজ, লিখতে গিয়ে আবার গায়ে কাঁটা দেয়। গুনগুন -করা-গান,তাই আমাদের বাড়িতে ছিল,বাসর জাগায়ে আমি ছিনু একা, কিংবা, ফুলের দিন হল যে অবসান।
গান আমার মনকে নিয়ন্ত্রণ করত,প্রেমে পড়াত ‌,অস্থিরতা দিত, আবার,শান্তিও আনত।আজও আমার শরীর, মন গাননির্ভর।

সংগীতের সঙ্গে কবিতার কোনো প্রেম আছে কিনা?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: অবশ্যই। অবশ্যই।এই দেখ আমার একটা কবিতা :
খুব থেমে থেমে মন্ত্রোচ্চারণের মতো কেউ গাইছিল ‘নূতন প্রাণ দাও –’
আর কেউ ছিল না, ফাঁকা প্রেক্ষাগৃহে শুধু একজন,আলোগুলি অকারণ জ্বলছিল,
লুকিয়ে ভেতরে আনা পপকর্নের প্যাকেট উড়ছিল আর
সেই মড়ুঞ্চে নারীর ধারালো কঙ্কণের মতো দুচোখ কেমন গান শুনতে শুনতে
আপনাআপনি জলে ভরে এল। ঠিক তখন সুর উপচে এসে
‘প্রাণসখা’ শব্দটিকে ভিজিয়ে দিয়েই ফের গায়িকার গলায় ফিরলে
সে হাতের উল্টোপিঠে চোখ মুছল। তারপর উঠে দাঁড়াল আর
ছেড়ে -আসা মানুষদের ভালবাসতে চাইল তাদের জন্য ভাত রাঁধতে চাইল।
আবহমানের গান সেই থেকে ডাঙায় নদীতে অন্তরীক্ষে
(গান)
Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,চৈতালী চট্টোপাধ্যায়

নামী বিজ্ঞাপন-সংস্থা, নারী-পত্রিকা ও নিউজ ম্যাগাজিনে চাকরি-করা, চাকরি-ছাড়ার অনিশ্চয়তার সাথে কিভাবে মেলাবে বিজ্ঞাপনের মেয়ে, বিষাক্ত রেস্তোরাঁ, দেবীপক্ষে লেখা কবিতা তিনটি কাব্যগ্রন্থকে?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: অনিশ্চয়তা আমার ইউ এস পি।এটা তো লঘুচ্ছলে,বিজ্ঞাপনসংস্থার শব্দ ব্যবহার করে বললাম। কিন্তু মূলত, শুধু প্রথম দিকের তিনটি বই কেন, অনিশ্চয়তা আমার সবকটি কবিতা বই জড়িয়েমরিয়ে…

সারা পৃথিবীতে প্রযুক্তির অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। এর ছোঁয়া আমাদের দেশেও লেগেছে। কিন্তু এই প্রযুক্তি তো মানুষকে আরো বেশি অমানবিক করে তুলছে। আমাদের এখন আর কোনো গল্প নাই, আড্ডা নাই। তবে কি এই প্রযুক্তি মানুষের শেষ হাসিটুকু নিংড়ে নেবে? নাকি প্রযুক্তিসম্পন্ন সমাজে এটাই স্বাভাবিক? কবিতা ও প্রযুক্তির অগ্রগতিকে কিভাবে দেখ?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: প্রযুক্তি,প্রযুক্তির পথে এগোয়।প্রকৃত কবিতা যাবতীয় সোরগোল ও আলোর নির্যাসটুকু নিংড়ে নিয়ে নিজেকে আলাদা করে রাখে। নির্জনতা পায়।তাই বিরোধের অবকাশ নেই।অগ্রগতি কোথাও কবিতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবেই-বা কেন। বরং অগ্রগতির সঙ্গে সংপৃক্ত বিভিন্ন স্ববিরোধী ভাবনা,কবিতাকে ঋদ্ধ করতে পারে।নাশা-য় কর্মরত একজন বিজ্ঞানী তাঁর শান্ত অবকাশে হয়তো ল্যাম্প জ্বেলে হুইটম্যান খুলে পড়তে বসেন।

একজন কবির পঠন-পাঠন কেমন হওয়া উচিত বলে মনে কর?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: কিছুই নির্ধারিত করা যায় না আগে থেকে। আমি তো পঞ্জিকা থেকে শুরু করে রিডার্স ডাইজেস্ট হয়ে প্লে বয় পত্রিকা, হাতের কাছে যা পাই তাই পড়ি।সবকিছুই ধনী করে নিজের কবিতাভাণ্ডার।

সামাজিক মাধ্যম ও প্রযুক্তির অগ্রগতিতে প্রতিদিন একজন  চাইলে একশজন  কবির কবিতা পড়তে পারছে, এই অধিক পাঠ কি সেই কবির মনজগতে ও লেখায় প্রভাব ফেলছে বলে মনে কর?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: এ প্রশ্নের উত্তর সম্ভবত আগেই বলেছি আমি। দেশের রাজনৈতিক চালচিত্র,বিপন্নতা, আতঙ্ক,সবই সময়মতো কবিতায় তার ছায়া ফেলে যায়।

 

তোমার সমকাল এবং পরবর্তী দশকগুলোতে বাংলা কবিতা কী ছিল আর কী হয়েছে সেই সম্পর্কে তোমার ভাবনা জানতে চাই?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: উত্তরহীন।

জীবনানন্দ দাশের কবিতার ভাষা কি পরবর্তী বাংলা কবিতাকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: একেবারেই নয়। এমন প্রশ্ন করার কোনো কারণ নেই। জীবনানন্দ আমাদের বোধকে অনেকভাবে সম্পন্ন করেছেন।এ জীবন লইয়া কী করিব, ভাবতে শিখিয়েছেন। কবিতা পড়ার মুহূর্তগুলোতে ঐশ্বর্য ঢেলে দিয়েছেন।আহ্!

কবিতা ছাড়াও তোমার গল্প, প্রবন্ধ বা গদ্য সমান গতিশীল,কী ভাবে এবং কখন বুঝতে পারো যে একটা লেখা হয়ে উঠলো?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: সত্যি বলছি, আজও বুঝি না। দ্বিধাগ্রস্ত আমি এই ভাবনায়,যে, আমার লেখাটা আদৌ হয়ে উঠল কি হয়ে ওঠেনি…

তোমার প্রিয় বই? যা সব সময় কাছে রাখতে চাও?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: পুরো একটা লাইব্রেরির মধ্যে মুখ গুঁজে বসে থাকতে চাই।

প্রিয় কবি? প্রিয় ব্যক্তিত্ব?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: প্রচুর।

প্রিয় উপন্যাস?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: টমাস মানের ম্যাজিক মাউন্টেন। বুদ্ধদেব বসুর তিথিডোর।

ভবিষ্যতে কি মানুষ কবিতা লিখবেপড়বে? কবিতার কি আর প্রয়োজন হবে ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে?

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়: ভবিষ্যৎ জানে এসব দুরুহ প্রশ্নের উত্তর। আমি জানি না।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>