ইরাবতী গল্প: ডাকাতের মুখোমুখি । কৃষ্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
বেলা দশটা।
তীব্রবেগে ছুটে চলেছে আমাদের গাড়ি। ইস্পাতের গন্ধমাখা রাজপথ ছুঁয়ে, ছায়াঘেরা মায়াময় নির্জনতা মাখতে মাখতে আমরা পেরিয়ে চলেছি মাইলের পর মাইল।
গাড়ির ভেতর কলবল করে কথা বলে চলেছে সবাই। আনন্দে ভরপুর সকলেই। শুধু আমার মনের মধ্যে এক অদ্ভুত দোলাচল। হতাশা ও আনন্দের এক মেলবন্ধন।
আচ্ছা, কোন মানুষের জীবনে একইসঙ্গে দুঃখ আর আনন্দ সমানভাবে জায়গা করে নিলে তার ঠিক কেমন অনুভূতি হয় ?
বুঝিনি। বোঝা সম্ভবও ছিল না। কারণ সেই অনুভূতি বিশ্লেষণ করার বয়স তখনও হয়নি। শুধু একেকবার মনটা করুণ বিষণ্ণ হয়ে যাচ্ছে, আবার পরক্ষণেই অজানা এক আনন্দের লোভে সে শোক ভুলে খুশীতে উজ্জ্বল হয়ে যাচ্ছি।
সেদিন ছিল দোল। আমার জীবনের প্রথম রঙ-না-খেলা দোল। তাই মাসীদের গাড়ি করে যখন দূর্গাপুর থেকে রওনা হয়েছিলাম বাঁকুড়ার দিকে, তখনও পিচকারি, বেলুন আর মঠ-ফুটকড়াইয়ের শোকে মুহ্যমান হয়ে আছি। শুধু একটাই আশা সেই মুষড়ে পড়া মনে মাঝেমাঝে প্রলেপ লাগিয়ে যাচ্ছিলো — সে আশা ইতিহাসকে চাক্ষুষ করার আশা, সে আশা গ্রামের গন্ধ বুকভরে নেবার আশা।
বাঁকুড়ার এক অখ্যাত গ্রাম, সে গ্রামের নামও এখন আর মনে নেই, দামোদর নদের গা ঘেঁষে সেই অশ্রুত গ্রামেই মাসীদের এক আত্মীয়র বাড়ি। আমাদের প্রোগ্রাম ছিল, দূর্গাপুর থেকে সকাল সকাল বেরিয়ে সোজা বিষ্ণুপুর ঘুরে বিকেল নাগাদ সেই গ্রামে পৌঁছবো।
সেইমতোই বেরিয়ে পড়া। তারপর সারা দুপুর বিষ্ণুপুরের এখানে ওখানে ইতিহাসের স্পর্শ, এ-মন্দির থেকে সে-মন্দিরে টেরাকোটার মাধুর্যে পাগল হয়ে যাওয়া, মাঝে ট্যুরিস্ট লজের চমকপ্রদ লাঞ্চ, সে এক অবিস্মরণীয় স্মৃতি। ভরপুর মন নিয়ে যখন বিষ্ণুপুর থেকে আমরা বেরোলাম, তখনই পাঁচটা বেজে গেছে।
শান্তুকাকু ছিল আমাদের ড্রাইভার। প্রায় আমাদের আত্মীয়ের মতোই। মেসোমশাইয়ের চিন্তিত মুখ দেখে সে যেন বরাভয়ের ভঙ্গীতে বললো, ‘ছোড়দা, এত চিন্তা করছেন কেন ? এ শর্মা যখন আছে, কোন চিন্তা নেই।’
আর সত্যিই তাই। তারপর কি করে যে ম্যাজিকের মতো সে একঘন্টার মধ্যে সেই অচেনা গ্রামের চৌহদ্দিতে এনে পৌঁছে দিলো, এখনও অবাক হয়ে ভাবি।
তারপরে আর কি ! লোকজনকে জিজ্ঞেস করে বাড়িটা খুঁজে পেতে আর কতক্ষণ ! আর সে বাড়ি তো যে-সে বাড়ি নয়, রীতিমতো চকমিলানো বাড়ি। তার চৌহদ্দির মধ্যে দশটা ধানের গোলা, গরু-মোষের গোশালা, পেছনে দিঘী আর তিনদিক ঘেরা বাগান। জানা গেল, মাসীদের এই আত্মীয়রাই ছিল এ গ্রামের জমিদার, আর এখন এরাই হল এই অঞ্চলের সবচেয়ে বর্ধিষ্ণু পরিবার।
তখন টেলিফোন ছিল না, কাজেই আগে থেকে খবর দেবার কোন প্রশ্ন নেই। আর গ্রামঘরে তো রাত আটটার মধ্যে খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়া একটা অলিখিত নিয়ম। সুতরাং সেই সন্ধেবেলা হঠাৎ আমাদের সাত-আটজনের আবির্ভাবে তারা তো রীতিমতো বিপাকে। কিন্তু কি অদ্ভুত সেই মানুষদের আন্তরিকতা ! প্রায় রাজকীয় আয়োজনে তারা আমাদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করলো সেই অপ্রস্তুত অবস্থাতেও !
ভয়ংকর ঘটনাটা ঘটলো সেই রাত্রেই।
তখন নতুন করে আমাদের জন্য শুরু হয়েছে রান্নাবান্না। আর বাইরে শুরু হয়েছে তুমুল বৃষ্টি। মস্ত দালানে চলছিলো গল্পগুজব ও আড্ডা। বড়রা গল্প করছে আর আমরা ছোটরা শুনছি।
গ্রামের রাত। আটটা-নটা বাজতেই সব শুনশান। সেই নির্জন রাত্রে একথা-সেকথার মধ্যে খুব স্বাভাবিকভাবেই চলে এলো ভূত ও ডাকাতের কথা। আর তখন সেই বাড়িরই এক বৃদ্ধ ভদ্রলোকের কাছ থেকে শোনা গেল তাঁর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা। বহুদিন আগে এই বাড়িতেই যেবার ডাকাত পড়েছিল, সেই লোমহর্ষক বিবরণ তাঁর মুখে শুনতে শুনতে গায়ের লোম যেন খাড়া হয়ে উঠছিল।
তখন এটা ছিল জমিদার-বাড়ি। এক গভীর রাত্রে হানা দিয়েছিল ডাকাতের দল। সামান্য এক দারোয়ান কিছুই করতে পারেনি। তারা লুঠপাট করে নিয়ে গেল প্রচুর সোনাদানা, টাকাপয়সা। সেদিন সেই নৃশংস ডাকাতদল ছেলে-বুড়ো-মহিলা কাউকে বাদ দেয় নি। চূড়িসমেত এক মহিলার হাত কেটে নিয়েছিলো কনুই থেকে। এক বাচ্চার কান্নায় বিরক্ত হয়ে তাকে টেনে নিয়ে ছুঁড়ে দিয়েছিলো উঠোনে। বাড়ির কর্তা, বৃদ্ধ জমিদার ভানুপ্রতাপ বাধা দিতে গেলে বন্দুকের কুঁদো দিয়ে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দিয়ে শেকলবন্দী করে রেখেছিলো কাছারী ঘরের ভেতর।
শুনতে শুনতে যেন শিউরে উঠছিলাম। ডাকাত দলের এই ভয়ংকর নৃশংসতা সম্পর্কে তার আগে কোন ধারণাই ছিল না। তাই এইসব সত্যি ঘটনা শুনে একটা অজানা আতঙ্ক যেন ক্রমেই চেপে বসছিলো মনের ভেতর। আর সেই আতঙ্কের রেশ থাকতে থাকতেই ঘটে গেল সেই হাড় হিম করা ঘটনা।
তখন সাড়ে-দশটা বেজে গেছে। খাওয়া শেষ হতে শান্তুকাকু আমাকে নিয়ে একটু বাইরে বেরোলো। সম্ভবত বড়দের লুকিয়ে একটু ধূমপান করবে বলে।
দুজনে পায়চারী করতে করতে গ্রামের মাটির রাস্তা ধরে হাঁটছি। একথা সেকথায় সময় কেটে যাচ্ছে। সরু কাঁচা মাটির রাস্তা, দুধারে মাটির বাড়ি। কোথাও খড়ের চাল, কোথাও বা টালির চাল। এই গ্রামের মধ্যে যদিও ইলেকট্রিসিটি এসেছে, কিন্তু গোণাগুণতি কয়েকটি বাড়ি ছাড়া সে-আলো নেবার মতো সামর্থ্য এ-গ্রামের বেশির ভাগ মানুষেরই নেই। তার ওপর এই গভীর রাতে গ্রামের প্রায় সবাই ঘুমে অচেতন। তাই গোটা গ্রামেই যেন গভীর থমথমে অন্ধকার।
আমরা হাঁটতে হাঁটতে ক্রমশ চলে এলাম গ্রামের প্রান্তে। এখানে সার দেওয়া দুধারের বাড়িগুলো ক্রমশ শেষ হয়ে গেছে মাঠের সীমানায়, আর রাস্তাটা শেষ হয়ে শুরু হয়েছে আলপথ। দূরের দিকে তাকালে দেখা যায়, অনেকটা জমির পর ফাঁকা মাঠ, তারপর আরও দূরে প্রায় মাইলখানেক পিছনে বয়ে চলেছে দামোদর নদ। বিশাল চওড়া সেই দামোদরের পর এই অন্ধকারে আর নজর চলে না।
আমরা সেখানেই দাঁড়িয়ে গেলাম। সেই নির্জন গ্রামের প্রান্তে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছি, অজস্র ঝিঁঝিঁপোকার ডাক, মাঝে মাঝে আশেপাশের দু-একটা গাছে পাখিদের ঝটপটানি, এমন সময় হঠাৎ দুজনেই ভয়ংকরভাবে চমকে উঠলাম। সেই দূরে মাঠের মধ্যে প্রায় দামোদরের তীরে, যেন একসঙ্গে পাশাপাশি অনেকগুলো আগুন হঠাৎই জ্বলে উঠলো। সেইসঙ্গে দূরের আকাশ কাঁপিয়ে দিয়ে যেন ভেসে এল একসঙ্গে অনেক লোকের আকস্মিক চিৎকার। আর তারপরেই সেই আগুনগুলো যেন সার বেঁধে দৌড়ে আসতে লাগলো আমাদের দিকে।
পলকে একটা অসম্ভব সম্ভাবনায় বুকের ভেতরটা হিম হয়ে গেল। কিসের আগুন ওগুলো ? মশাল ? তাহলে ওরা কারা ? এদিকেই বা হঠাৎ দৌড়ে আসছে কেন ?
ভাল করে কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখি শান্তুকাকু খপ্ করে চেপে ধরলো আমার হাত। তারপরেই চেঁচিয়ে উঠলো আতঙ্কে শিউরে ওঠা গলায়, ‘ওরে ডাকাত পড়েছে রে, ডাকাত !!’ আর তারপরেই আমাকে টেনে নিয়ে পেছন ফিরে লম্বা দৌড়।
আচ্ছন্নের মতো ছুটতে ছুটতে কখন এসে ঢুকেছি বাড়ির সদর দরজায়, তা জানি না। শান্তুকাকু তখন বিকৃত গলায় চেঁচাচ্ছে ‘ডাকাত, ডাকাত’ বলে, আর কোনরকমে দেউড়ির মস্তবড়ো খিলটা আটকাবার চেষ্টা করছে। দেখি, শান্তুকাকুর সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। চোখমুখ বিবর্ণ।
ওদিকে তখন চিৎকার শুনে বাড়ির লোকেরা দৌড়ে এসেছে সদর দেউড়ির কাছে। তখন শান্তুকাকুর মুখ দিয়ে কোন কথা বেরোচ্ছে না। আমি কোনরকমে বললাম যে দামোদরের দিক থেকে অনেকগুলো লোক মশাল নিয়ে এদিকেই দৌড়ে আসছে। মনে হয় এ গ্রামেই ডাকাত পড়তে চলেছে।
শোনামাত্র সকলের মুখ আচমকা কেমন বিবর্ণ হয়ে গেল। একটা অজানা আশঙ্কায় সকলেই হতচকিত। কেউ কেউ যেন বিশ্বাস করতে চাইছে না, আবার শান্তুকাকুর চেহারা দেখে ঠিক অবিশ্বাসও করতে পারছে না।
কিন্তু সেটা দু-এক মুহূর্ত মাত্র। তারপরেই দেখি, ছোট থেকে বড়ো, সবার মধ্যে কি এক অদ্ভুত তৎপরতা। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সবাইকে টেনে নিয়ে বাড়ির অন্দরমহলে ঢুকিয়ে ভেতরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হল। দু-একজন বয়োজ্যেষ্ঠ আলোচনা করতে লাগলেন কোথায় কি অস্ত্রশস্ত্র আছে তা বের করে রাখার জন্য। আমরা যারা আজকের অতিথি হয়েছি, তারা নির্বাক হয়ে সব দেখতে লাগলাম। আর সকলেই যেন মনে মনে এক অজানা আতঙ্কের মুখোমুখী হবার প্রতীক্ষা করতে লাগলাম। সেই মুহূর্তে মনে পড়ছিলো মাত্র দু-এক ঘন্টা আগের সেই ডাকাতের গল্পগুলো, তাদের নৃশংসতা আর নিষ্ঠুরতার ভয়াবহ কাহিনী।
এমন সময় ঐ বাড়িরই এক মহিলা, যাঁকে সন্ধে থেকে পিসীমা বলেই জেনেছি, পরামর্শ দিলেন ভেতরবাড়ির চিলেকোঠায় উঠে দেখার। আর তখনই জানা গেল, সেই চিলেকোঠা থেকে দামোদরের দিকটা দেখতে পাওয়া যায়।
কথামাত্রই কাজ। বেশ কয়েকজন মিলে সঙ্গে সঙ্গে চললো চিলেকোঠার দিকে। এক অবারিত কৌতূহলে আমিও তাদের সঙ্গী হলাম।
সেখান থেকে আবার দেখা গেল সেই দৃশ্য। অন্ধকার মাঠের মধ্যে সত্যিই পনেরো-কুড়িটা মশাল জ্বলছে প্রায় একমাইল দূরে। আমরা যেখানে দেখেছিলাম সেখানেই। কিন্তু এখন তারা এদিকে ছুটে আসছে না, এক জায়গায় গোল হয়ে ঘুরছে, আর মুখে হো-ও-ও-ও করে শব্দ করছে।
এই দৃশ্য দেখার পর সকলেই নির্বাক। কারুর মনে সামান্য সন্দেহ থাকলেও তা এখন ঘুচে গেছে। এখন সকলেই আতঙ্কে আর শিহরণে বিবশ। কোন সন্দেহ নেই, একটা ডাকাতের দল ঐ মাঠে জমায়েত হয়েছে। ওরা এখন ডাকাতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর ধারেকাছে যখন একমাত্র এই গ্রামটাই আছে, সুতরাং এটাই যে ওদের লক্ষ্য, সে বিষয়েও কোন সন্দেহ থাকে না।
সকলে সন্ত্রস্ত মনে এসব কথা আলোচনা করতে করতেই হঠাৎ দেখা গেল, গোল হয়ে ঘোরা শেষ করে তারা আবার সার বেঁধে দাঁড়িয়েছে। তারপর আগের মতোই চিৎকার ছেড়ে আবার ছুটে আসতে লাগলো আমাদের দিকে। আর সঙ্গে সঙ্গে আবার যেন আমার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসতে লাগলো।
কিন্তু ও কি ? ওরা যে কিছুটা এসেই আবার দাঁড়িয়ে পড়লো ! তারপর আবার ছুটে যেতে লাগলো পেছনদিকে আগের জায়গায় ! অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না, শুধু মশালের আলো দেখে আমরা তাদের গতিবিধির আন্দাজ করছি। আগের জায়গায় ফিরে গিয়ে তারা আবার চক্রাকারে ঘুরতে লাগলো ঠিক আগের মতোই।
এ আবার কি ? ডাকাতদের প্রস্তুতি কি এরকমই হয় ? কতক্ষণ ধরে চলবে এই প্রস্তুতি ? না কি ডাকাতি করতে যাবার আগে ওরা কোন পুজো করছে এইভাবে ?
ডাকাত তো কোনদিন দেখিনি, তাই তাদের ধরণধারণও কিছু জানি না। কিন্তু ডাকাত নিয়ে অনেক গল্প তো পড়া আছে, তারা তো পুজো করে তাদের ডেরায়, এইভাবে খোলা মাঠে তো পুজো করে না ? তাহলে কিরকম ডাকাত এরা ?
এইসব ভাবতে ভাবতে কখন সেই পিসীমা উঠে এসেছেন চিলেকোঠায়, টের পাইনি। এসে খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে দেখলেন ডাকাতগুলোর ধরণধারণ, তারপর হেঁকে উঠলেন, ‘ওরে মুখপোড়ারা, ওগুলো ডাকাত তোদের কে বললো ?’
সকলে অবাক হয়ে তাকালাম পিসীমার মুখের দিকে। পিসীমা হেসে উঠে বললেন, ‘ওরে ওটা তো হিন্দুস্থানীদের চাঁচর ! কাল হোলী আছে, তাই আজ ও ব্যাটারা মাঠে চাঁচর করছে। দ্যাখ্ না, দ্যাখ্, একটু পরেই চাঁচরে আগুন লাগাবে। এই নিয়ে তোরা রাতদুপুরে হুলুস্থুলু বাধালি বাবা ?’
অবাক চোখে তাকিয়ে দেখি, সত্যি যেন পিসীমার কথামতোই সেই মশালগুলো গোল হয়ে ঘুরতে ঘুরতে মাঝের কোন বস্তুতে আগুন লাগালো, আর তারপর সেই আগুনটা ক্রমশ বড়ো হয়ে উঠতে লাগলো। সেইসঙ্গে লোকগুলোর চিৎকারও ক্রমশ বাড়তে থাকলো, আর আমার মনে হতে থাকলো যে, লোকগুলো যেন চিৎকার করে আমাদের অকারণ ভয়ভীতিকেই বিদ্রূপ করে চলেছে।
সেই রাত্রে আমি ভালো করে ঘুমোতেই পারিনি। একেকবার মনে হচ্ছিল যে, কেন সত্যিই ডাকাত পড়লো না, তাহলে তো জীবনে এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে পারতাম ! আবার তার পাশাপাশি মনে হচ্ছিল যে, কিছু কিছু অভিজ্ঞতা প্রত্যক্ষ না হওয়াই ভালো, কল্পনাতেই তার বিবরণ যেন বেশি উপভোগ্য।

কথাসাহিত্যিক
জন্ম ১৯৬৪। পেশায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। অথচ শিল্প, সাহিত্য আর সংস্কৃতি নিয়েই তাঁর বেঁচে থাকা। তাই অসংখ্য ছোটবড় পত্রিকায় তাঁর বিভিন্ন ধরণের লেখা প্রকাশের পাশাপাশি বিভিন্ন মঞ্চে মঞ্চস্থ হয়ে চলা নাটক ও নৃত্যনাট্য রচনা ও সুরারোপের মাধ্যমেও বিচ্ছুরিত তাঁর প্রতিভা। লেখেন ছোটবড় সকলের জন্যই। প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১১, যার মধ্যে ‘দুর্দান্ত দশ’, ‘পাতায় পাতায় ভয়’, ‘ভূতের বৃন্দাবন’, ‘গুহা গোখরো গুপ্তধন’ প্রভৃতি গ্রন্থগুলি ইতোমধ্যেই পাঠকসমাজের কাছে সমাদৃত হয়েছে। তাঁর রচিত ও সুরারোপিত অপেরা-নাটক “আলাদিন” বেশ কয়েকবার মঞ্চস্থ হওয়া ছাড়াও হাওড়ার একটি নাট্য কর্মশালায় ব্যবহৃত হয়েছে। একসময় সম্পাদনা করেছেন সাহিত্য পত্রিকা “আলো অন্ধকার”। পেয়েছেন কয়েকটি পুরস্কার, যার মধ্যে ‘কিশোর ভারতী সাহিত্য পুরস্কার”, “সংশপ্তক পুরস্কার” প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।