Categories
শারদ অর্ঘ্য কবিতা: নদীজন্ম । বেবী সাউ
আনুমানিক পঠনকাল: < 1 মিনিট
মনের মাঝে রয়েছে অন্তর
ঘরের মাঝে শূন্য তার ঘর…
শান্ত কোনো নদীর বুকে একা
লিখছ তুমি প্রস্থানের চোখ
হঠাৎ যদি পাখির ঠোঁটে ভাসে
জমিয়ে রাখা মৃত্যুহীন কোষ!
বলো, তাকেই ডাক পাঠাবে ভাদ্র ঘেঁষা রোদ!
নীলের কোলে জন্ম ভাসে একা
বকের ডানা মুচছে ক্ষত দাগ
কেমন করে অঙ্গ বয়ে যায়
শূন্য থেকে আঁকছ নীল খাতা
বলো, তাকেই ডাক পাঠাবে ভাদ্র মাসের রোদ!
শান্ত সেই নদীর বুকে একা
ঠোঁটের পাশে ঘুমিয়ে আছ ঠোঁট
তাকে কে আজ গল্প বলা-ছলে
শিখিয়ে দেবে মৌন কথকতা…
ভাদ্র রোদ! ডাক পাঠাবে তাকে?
চোখের মাঝে জমিয়ে রাখা কালি
তুমি তাকেই কাজল ভেবে বসো
প্রতিটি মেঘ শ্রাবণ কাল হলে
পদ্য লেখা শব্দ আছে কোনো?
ভাদ্র মাস, ডাক পাঠাও তাকে!
যমুনা সেই নদীর নাম হলে
রক্তনালা যুদ্ধে ভেসে যায়
অজেয় তোর কথার ছলনায়
মৃত্যু সব চু কিত কিত খেলে…
বলো, তাকেও ঊষর মরু ভেবে
রোজ কাঁদাবে ভরা ভাদর রোদ!
নির্জন সে, লাউয়ের ক্ষেতে হাঁটে
জড়ায় পায়ে হরিণ মায়া স্নেহ
এই দুপুরে হাতের পরে হাত
বলবে হেসে–‘ভাত বেড়েছি’…’ এসো!’
ভাদ্র মাস! উঠোনে আজ বসে…
রুখা শুখার লাল মাটির পথ
পায়ের ছাপে ক্ষত ফুটছে দেখো
শান্ত সেই নদীর বুক… একা…
ডিঙির দোলে কান্না ভাসে, প্রিয়!
তুমিই তাকে একবারটি ডেকো
‘গল্প লিখি’ ভরা ভাদর ‘এসো’…

কবি ও প্রাবন্ধিক। জন্ম ও বাস ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। মূলত কবিতা ও প্রবন্ধ লেখেন। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘বনঘাঘরা‘, ‘ইউথেনেশিয়া‘, ‘গান লেখে লালনদুহিতা‘, ‘ছয় মহলা বাড়ি‘, ‘একান্ন শরীরে ভাঙো‘। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলের এক লুপ্তপ্রায় লোকসঙ্গীত নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর গবেষণা গ্রন্থ- ‘কাঁদনাগীত: সংগ্রহ ও ইতিবৃত্ত‘।