Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,নুহ

বাইবেলে মহাপ্লাবন

Reading Time: 2 minutes

বাইবেল অনুসারে নোয়াহ সৎকর্মশীল নবী। দুনিয়ায় মানুষের মধ্যে অত্যাচার এবং অনাচার বৃদ্ধি পেলে এলোহেম নোয়াহকে একটা নৌকা তৈরির নির্দেশনা দেন। নৌকাটা গফার কাঠ দ্বারা নির্মিত এবং বাইরে পিচ দেয়া যাতে তিনটা ডেক এবং অন্তঃস্থ প্রকোষ্ঠ ছিলো। এটা ৪৫০ ফুট লম্বা, ৭৫ ফুট চওড়া এবং ৪৫ ফুট উঁচু। এর প্রবেশ পথ একদিকে। বাইবেলীয় বর্ণনায় ভাসমান প্রকোষ্ঠটিকে বলা হয়েছে আর্ক (নোহা’স আর্ক), যা দ্বারা নূহের সিন্দুক বোঝায়। সিদ্ধান্ত নেন সকল কিছু ধ্বংস করার (জেনেসিস: ৬:৫-৭)। সময়মতো স্ত্রী-পুত্র এবং ঈশ্বরের অনুসারীদের নৌকায় উঠালেন নোয়াহ। তুললেন সকল জীবিত প্রাণীদের এক জোড়া করে।

প্রতিশ্রুত মুহূর্ত এলো। ভূপৃষ্ঠ ভেদ করে উঠলো পানি; ঝরলো আকাশ থেকে। ডুবে গেলো পৃথিবীর সবচেয়ে উচু পর্বতও। নৌকায় আশ্রয় না পাওয়া প্রত্যেকটা প্রাণী জীবনের ইতি ঘটেছে। পানি কমতে শুরু করে দেড়শো দিন পর থেকে। নোয়াহ তার নৌকা নোঙর করলো আরারাত পর্বতে। ভূমির অবস্থা জানতে একটা ঘুঘু ছেড়ে দিলো। প্রথম দফায় ব্যর্থ হয়ে ফিরলেও সাতদিন পর শুকনো মাটির সন্ধান দিতে পারলো ঘুঘুটা। পৃথিবী আবাদের জন্য নৌকা থেকে নামলেন নোয়াহ। নামলো সকল জীবিত প্রাণী। ঈশ্বর নিজে প্রতিশ্রুতি দিলেন দ্বিতীয় দফায় আর প্লাবন না দিতে (জেনেসিস ৮:২০-২২)।

সৎকর্মশীল আর জীবিত প্রাণীদের নৌকায় উঠালেন নোয়াহ; © Zac Kinkade

ওল্ড টেস্টামেন্টের বিবৃতির বাইরে এসে খ্রিষ্টধর্মেও নোয়ার মহাপ্লাবনকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তার প্রমাণ গসপেল অভ ম্যাথু ২৪:৩৭-৩৯ এবং গসপেল অভ লুক ১৭:২৬-২৭ এর বয়ান। খ্রিষ্টধর্মের কোনো কোনো পণ্ডিত নোয়াহর নৌকাকে খ্রিষ্টের মাধ্যমে প্রতীকায়িত করেন। যীশুই পরকালীন মুক্তির মাধ্যম। অবশ্য কেউ কেউ প্লাবনের পানিকে ব্যাপ্টিজমের সাথে তুলনা করেন। মহাপ্লাবনের পর যেমন পৃথিবী নতুন করে জন্ম নিলো; অনুরূপ ব্যাপ্টিজমের মধ্য দিয়ে ব্যক্তি নতুন করে জন্ম নেয়।


আরো পড়ুন: ভয়াবহ সব বন্যা


নুহ (আ.)-কে প্রভাবশালী নবী (আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত বা নির্বাচিত বিশেষ ব্যক্তি) হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে কোরানের ৩:৩৩, ১৭:৩, ৩৭: ৭৫-৭৯ আয়াতের মতো বহু জায়গায়। আছে নুহ নামে এক স্বতন্ত্র সূরা। আল্লাহর একত্ববাদের প্রচারক নুহের সময় মানুষ অতিমাত্রায় অবাধ্য আর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী হয়ে ওঠে। একটা শিক্ষা দেবার সিদ্ধান্ত নেন আল্লাহ। নুহ কে আদেশ দেয়া হয় বিশাল নৌকা বানানোর। সম্প্রদায়ের নেতারা কাণ্ড দেখে বিদ্রুপ করতে থাকে। তবুও অটল থাকলেন নুহ (আ.)। সমস্ত প্রাণীর এক জোড়া করে উঠালেন নৌকায়। শুরু হলো মহাপ্লাবন। নুহের পুত্র সহ সকল অস্বীকারকারী মৃত্যুবরণ করলো ডুবে। চল্লিশ দিন পরে জুদি পর্বতে নোঙর করলো নৌকা।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>