| 14 ডিসেম্বর 2024
Categories
সঙ্গীত

ইরাবতী সঙ্গীত: এজমালি সংগীত । গোলাম মুরশিদ

আনুমানিক পঠনকাল: 5 মিনিট

পঞ্চকবির গান বলে পরিচিত বাংলা গানের যে-ধারা, তার সূচনা হয়েছিলো রবীন্দ্রনাথে, সমাপ্তি নজরুল ইসলামে। মাঝখানে তিনজন—দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, রজনীকান্ত সেন আর অতুলপ্রসাদ সেন। এই পাঁচজন ছিলেন একই সঙ্গে কবি, সুরকার এবং গায়ক। তবে সমমানের কবি অথবা সুরকার নন। এঁদের মধ্যে গান লিখেছিলেন নজরুল ইসলামই বেশি—প্রায় তিন হাজার। রবীন্দ্রনাথ দু হাজারের বেশি। বাকি তিনজন দু-তিন শো করে। গানের আঙ্গিক ও শ্রেণী বিচারে তিনজনই নিজের নিজের বৈশিষ্ট্য রেখেছিলেন। প্রশ্ন হচ্ছে; তাঁদের সমকালে অর্থাৎ ১৮৮০-এর দশক থেকে ১৯৩০-এর দশক—এই ষাট বছরে অন্য কেউ কি গান রচনা করেননি? ইতিহাস না-জেনেও এক কথায় এর উত্তর দেওয়া যায়: করেছেন বৈকি!
সে সময়ে গানের চাহিদা ছিলো। প্রযুক্তিও বিস্তার লাভ করছিলো। বিশ শতকের শুরুতেই কলকাতায় এসেছিলো গ্রামোফোন রেকর্ডের কম্পেনি। তাও একটা কম্পেনি নয়। একাধিক কম্পেনি। তাদের মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলতো—সে খবরও জানা যায়। আলোচ্য কালে নতুন থিয়েটারও প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। কলকাতার প্রথম রেডিও স্টেশন কাজ করতে আরম্ভে করেছিলো ১৯২৭ সালে। আর সবাক চলচ্চিত্রের যাত্রা শুরু হয় ১৯৩১ সালে। সারা বছর নানা অনুষ্ঠানও লেগে থাকতো। এসবের চাহিদা মেটানোর জন্যে নতুন নতুন গানের প্রয়োজন হতো। এ ছাড়া, সৃজনশীলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে গান রচনা করতেন কবিরা।

নজরুলের সমকালে গানে কিছু নতুন পরিভাষাও শোনা যায়। যেমন, ‘কাব্যগীতি’। এই শব্দটা প্রথমবারের মতো ব্যবহার করেন নজরুলের বন্ধু দিলীপকুমার রায়, ১৯২৭ সালে। রবীন্দ্রনাথের কিছু গানের স্বরলিপিও এই নামে প্রকাশিত হয়েছিলো। নজরুলও পরে তাঁর গানের শ্রেণীকরণ করার জন্যে এ শব্দটা ব্যবহার করেছেন। কিন্তু বিষয়টা সত্যি সত্যি খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে না-হওয়ায় শব্দটি গানের চলতি পরিভাষা থেকে বাদ পড়ে যায়। দিলীপকুমার কথাটা ঠিক কী অর্থে ব্যবহার করেছিলেন, সেটা পরিষ্কার নয়। কারণ সব গানই এক শ্রেণীর কবিতা। প্রায় সব গানেই ছন্দ থাকে, পংক্তির শেষে অন্ত্যমিলও থাকে। সুতরাং ‘কাব্যগীতি’ কথাটা নতুন কোনো অর্থ প্রকাশ করে না। তবে মনে হয় কথাপ্রধান এবং কাব্যিক রসে পূর্ণ গান বোঝাতে গিয়ে শব্দটা ব্যবহৃত হয়ে থাকবে।

আরও একটা নতুন শব্দ ব্যবহৃত হয়েছিলো—‘রাগপ্রধান’ গান। নামটা দিয়েছিলেন আকাশবাণীর সংগীতবিশারদ সুরেশচন্দ্র চক্রবর্তী, ১৯৩৭ সালে। রাগপ্রধান গান বলে তিনি যদি বোঝাতে চেয়ে থাকেন যে, এ হচ্ছে সেই শ্রেণীর গান, যাতে সুরের ক্ষেত্রে রাগরাগিণীকে প্রাধান্য দেওয়া হয়, তা হলে কথাটা প্রায় অর্থহীন। কারণ সেকালের প্রায় সব গানই কমবেশি রাগরগিণী-ভিত্তিক হতো। রবীন্দ্রনাথ, দ্বিজেন্দ্রলাল, অতুলপ্রসাদ, নজরুল—সবার গান সম্পর্কেই এ কথাটা সত্য। তবে এ হচ্ছে এমন এক ধরনের গান, যাতে তান-বোলতান তো আছেই, তদুপরি আছে আলাপ এবং উচ্চাঙ্গ সংগীতের আরও কিছু অলংকার, সেগুলোকে রাগপ্রধান গান বলা হয়। এ গানগুলো গেয়েও থাকেন সাধারণত উচ্চাঙ্গ সংগীতের শিল্পীরা। যেমন, নজরুলের এ ধরনের কিছু গান গেয়েছেন জ্ঞানেন্দ্রপ্রসাদ গোস্বামী, ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়, শচীনদেব বর্মণ প্রমুখ। তারাপদ চক্রবর্তীও রাগপ্রধান গান গেয়েছিলেন। নজরুলের লেখা গান হলে এসব গানের সুরের কাঠামোটা বেঁধে দিতেন স্বয়ং নজরুল, কিন্তু তান-বোলতানে স্বাধীনতা নিতেন এই গায়করা।
নজরুলের পরে চল্লিশের দশকে তো বটেই, পঞ্চাশের দশকেও এই দু ধারার গান রচিত হয়েছিলো। কিন্তু এ গানগুলো একই ব্যক্তির সৃষ্টি নয়—গীতিকার গান লিখেছিলেন, সুরকার সুর দিয়েছিলেন আর গায়ক-গায়িকা গানগুলো গেয়েছিলেন। তবে কোনো কোনো গানের সুরকার এবং গায়ক একই ব্যক্তি। একটা দৃষ্টান্ত দেওয়া যাক। তুলসী লাহিড়ী ওকালতী করতে করতে হঠাৎ গান ও নাটক-সিনেমার জগতে আসেন। এই কক্ষচ্যুতির ঘটনা ঘটে ১৯২৮ সালে তিনি রংপুর থেকে কলকাতায় বেড়াতে এলে। তিনি গায়ক ছিলেন না, কিন্তু গান রচনা করতেন। তাঁদের বাড়িতে গান-বাজনার চর্চাও হতো। কলকাতায় এলে ওস্তাদ জমীরউদ্দীন খানের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এবং তাঁর লেখা একটি গান রেকর্ড করেন ওস্তাদ জমীরউদ্দীন খান। জমীরউদ্দীন খান ছিলেন এইচএমভি-র ট্রেনার। নজরুল তাঁর কাছে গান শিখেছিলেন এবং তাঁকে নিজের ওস্তাদ বলে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। গানের সংকলন ‘বনগীতি’ নজরুল তাঁর নামে উৎসর্গ করেছিলেন ১৯৩২ সালে।
গানের জগতে এসে তুলসী লাহিড়ী প্রায় হাজারখানেক গান রচনা করেন। তা ছাড়া, এইচএমভি এবং মেগাফোন কম্পেনিতে সুরকার এবং সংগীত-পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। তিনি কয়েকটি নাটকও রচনা করেন। তার মধ্যে ‘ছেঁড়া তার’ আজও স্মরণীয় হয়ে আছে। নাটকের সঙ্গেই নয়, সিনেমা-জগতের সঙ্গেও তাঁর ব্যাপক যোগাযোগ ঘটেছিলো চিত্র-পরিচালক ও অভিনেতা হিসেবে। বস্তুত, তুলসী লাহিড়ী একাই বহু ভূমিকা পালন করেন।
কিন্তু নজরুল ইসলামের পর গানের জগৎ অনেক ভাগে বিভক্ত হয়। এই ভূমিকাগুলো বিভিন্ন জন ভাগ করে নেন। একে অর্থনীতির ভাষায় বলা হয় শ্রম বিভাজন—ডিভিশন অব লেবার। এর কারণ এমন প্রতিভাবান লোক সংগীত জগতে কমই এলেন, যাঁরা একই সঙ্গে গীতিকার, সুরকার এবং গায়ক। অন্য দিকে, রেকর্ড কম্পেনি, বেতার, নাটক ও সিনেমার জন্যে গানের চাহিদা ক্রমশ বাড়তেই থাকলো। এর ফলে অতঃপর এক দল লোক থাকলেন, যাঁদের কাজ হলো কেবল গান লেখা—সৃজনশীলতার কারণে নয়, প্রয়োজনের তাগিদে। অন্য এক দল দায়িত্ব নিলেন সুর দেওয়ার। গানগুলো গাওয়ার কাজ নিলেন আর-এক দল। আর এঁদের সঙ্গে বাদ্যযন্ত্র বাজানোর দায়িত্ব পড়লো চতুর্থ এক দলের ওপর।

আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে, এর ফলে বুঝি দক্ষতা বৃদ্ধি পেলো। অন্তত এ ধরনের বিভাগের ফলে হাতে-কলমের কাজে দক্ষতা বাড়ে বৈকি! কিন্তু গান কারখানায় তৈরি হয় না। গানের বেলায় দক্ষতা বাড়ে না। কারণ গানের রচয়িতা আপন সৃজনশীলতার অনুপ্রেরণায় তাঁর গানে যে-ভাবটি ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেছেন, সুরকার এবং গায়কের হৃদয়ে সেই একই ভাব সঞ্চারিত না-ও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে গানের ভাব ও সুরের মধ্যে সংগতি না হওয়ারই সম্ভাবনা। তার থেকেও সংগতির অভাব হতে পারে ভাব ও গায়কের প্রকাশভঙ্গির মধ্যে। একটি যতি অথবা ‘পজ্’ও গানের অর্থ পাল্টে দিতে পারে।
নজরুল যখন বলতে গেলে দু হাতে লিখছিলেন, সমস্যাটা তখন থেকেই দেখা দেয়। তিনি গানের পর গান লিখেছেন; সেই সঙ্গে সুর দেওয়ার এবং সুরটাকে হবু গায়ককে শিখিয়ে দেওয়ার দায়িত্বও ছিলো তাঁর। মোট কথা, তিনি একা সব কাজ সামলাতে পারছিলেন না। তখন তিনি অন্যদের সুর দেওয়ার জন্যে আহ্বান জানালেন। লোকও পেলেন যাঁরা আগে থেকেই গ্রামোফোন কম্পেনিতে কাজ করছিলেন। যেমন, কমল দাশগুপ্ত, সুবল দাশগুপ্ত, শৈলেশ দত্তগুপ্ত সুরকার হিসেবে কাজ করতেন। এঁদের মধ্য থেকে নজরুলের সবচেয়ে পছন্দ হলো কমল দাশগুপ্তকে। সেই কমল দাশগুপ্ত নজরুলের লেখা ১৬৪টা গানে সুর দিয়েছিলেন। কমল দাশগুপ্ত লিখেছেন যে, সুরটা কেমন হবে, নজরুল সেটা বুঝিয়ে দিতেন। এসব গানের সুর দিতে দিতে কমল দাশগুপ্ত নজরুলের ভঙ্গিটি বেশ আয়ত্ত করে ফেলেছিলেন।
গীতিকার হিসেবে যাঁরা তখন পরিচিত ছিলেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন সজনীকান্ত দাস (১৯০০), প্রেমেন্দ্র মিত্র (১৯০৪), শৈলেন রায় (১৯০৫), অজয় ভট্টাচার্য (১৯০৬), বাণীকুমার (১৯০৭), সুবোধ পুরকায়স্থ (১৯০৭); অনিল ভট্টাচার্য (১৯০৯), নিশিকান্ত (১৯০৯), প্রণব রায় (১৯১১) প্রমুখ। ব্র্যাকেটের মধ্যে দেওয়া তাঁদের জন্ম-সাল থেকে দেখা যায় যে, তাঁরা সবাই নজরুলের সমকালীন, অথবা সামান্য ছোটো। গান লিখতেন, কিন্তু সুরকার ছিলেন না। তাই সুরকার ডাকতে হতো।
এই প্রসঙ্গে একটা আশ্চর্য যোগাযোগের কথা বলি। সজনীকান্ত দাসের একটা সাপ্তাহিক পত্রিকা ছিলো—‘শনিবারের চিঠি।’ তাতে প্রায়ই নজরুলের গালমন্দ করা হতো। নজরুলের কবিতা ও গানের প্যারডি প্রকাশিত হতো। কিন্তু দুজনের মধ্যে সাক্ষাৎ পরিচয় ছিলো না। নজরুল ছিলেন উদার প্রকৃতির মানুষ। দুজনের যে-দিন পরিচয় হলো, সেদিনই আধ-ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের সম্পর্ক তুমি থেকে তুই-এ গিয়ে পৌঁছলো। নজরুলের অত্যন্ত জনপ্রিয় গান ‘কে বিদেশী বন-উদাসী বাঁশের বাঁশি বাজাও বনে’র একটা প্যারডি লিখেছিলেন সজনীকান্ত। তার মধ্যে চরিত্র হননের প্রয়াসও ছিলো। তা সত্ত্বেও নজরুল এই প্যারডিতে সুর দিয়েছিলেন।
এ রকমের অদ্ভুত যোগাযোগ ছাড়া সাধারণ এবং স্বাভাবিক যোগাযোগও ঘটতো। তা ছাড়া, অনেক সময়ে গীতিকার, সুরকার এবং গায়কের পারস্পরিক বোঝাপড়ার দরুন একটা টীম ওয়ার্কও গড়ে উঠতো। যেমন, নজরুল ইসলাম দীর্ঘদিন রেকর্ড কম্পেনিতে কাজ করায় কমল দাশগুপ্ত, সুবল দাশগুপ্ত, নিতাই ঘটক প্রমুখ সুরকার এবং আব্বাসউদ্দীন, ইন্দুবালা, আঙুরবালা, ধীরেন দাস প্রমুখ গায়ক-গায়িকাকে নিয়ে চমৎকার বোঝাপড়া সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন। তাঁর গানের ভাষা এবং সুরের বৈশিষ্ট্য সমসাময়িক গীতিকার ও সুরকারদের এতোটাই প্রভাবিত করেছিলো যে, তাঁদের অনেক গানকে নজরুলগীতি বলে ধারণা হতো। যেমন, প্রণব রায়ের লেখা এবং কমল দাশগুপ্তের সুর দেওয়া ‘কতদিন দেখিনি তোমায়’, ‘তোমার আকাশে এসেছিনু হায়’ ও ‘আমি যদি কভু দূরে চলে যাই’ গান তিনটি সাধারণত শ্রোতাদের কাছে নজরুলগীতি বলেই পরিচিত। তেমনি তুলসী লাহিড়ীর ‘আজি নিঝুম রাতে কে বাঁশী বাজায়’ এবং ধীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের ‘চোখ মুছিলে জল মোছে না’ গান দুটিও সুপরিচিত নজরুলগীতি বলে।
মোট কথা, ১৯৩০-এর দশকে অসংখ্য গীতিকার, সুরকার এবং গায়ক-গায়িকা মিলে এমন একটা বিশাল গানের জগৎ গড়ে তুলেছিলেন, যার কোনো দৃষ্টান্ত তার আগে পর্যন্ত ছিলো না। এই দশকেই নজরুল রবীন্দ্রনাথের গানের ভাষা, সুর এবং ভাব ভেঙে দিয়ে নতুন ধরনের গান সৃষ্টি করেন। সে গানে রবীন্দ্রনাথের গানের ভক্তি, শুচিতা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নেই, কিন্তু দেহগন্ধী প্রেম আছে, বানানো বিরহের বিষণ্নতা আছে, আছে উচ্চকণ্ঠ হৈহুল্লোড় এবং উপভোগের লঘু আনন্দ। গীতিকারদের কথা আগেই বলেছি। প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত গানের চাহিদা বাড়িয়েছে। সেই সঙ্গে প্রযুক্তি ক্রমবর্ধমান গানের জগতের চাহিদা মিটিয়েছে।
১৯৩০ এবং ৪০-এর দশকের চাহিদা কৃষ্ণচন্দ্র দে, আঙুরবালা, ইন্দুবালা, কমলা ঝরিয়া, কানন দেবী, কুন্দনলাল সায়গল, কে মল্লিক, পঙ্কজকুমার মল্লিক, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, দেবব্রত বিশ্বাস, ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়, জ্ঞানেন্দ্রপ্রসাদ গোস্বামী, তারাপদ চক্রবর্তী, শচীনদেব বর্মণ, উমা বসু, সন্তোষ সেনগুপ্ত, যূথিকা রায়, জগন্ময় মিত্র, মৃণালকান্তি ঘোষ প্রমুখ গায়ক-গায়িকাকে পর্দার আড়াল থেকে মঞ্চের পাদপীঠে নিয়ে এসেছে। এঁদের সঙ্গে সুরকার যাঁরা এগিয়ে এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন হিমাংশু দত্ত, রাইচাঁদ বড়াল, পঙ্কজ মল্লিক, কৃষ্ণচন্দ্র দে, রবীন চট্টোপাধ্যায়, সুধীরলাল চক্রবর্তী, অনিল বাগচী, কমল দাশগুপ্ত, অনুপম ঘটক, সুবল দাশগুপ্ত, শৈলেশ দত্তগুপ্ত, শচীনদেব বর্মণ প্রমুখ।
১৯৪০-এর দশকে গানের জগতের চেহারা বদলে যাওয়ার অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কারণ ঘটে। প্রথমত, নজরুল দৃশ্যপট থেকে সরে যান। দ্বিতীয়ত, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ চলতে থাকে। তৃতীয়ত, স্বাধীনতা আন্দোলনের ফলে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গন ক্রমশ অশান্ত হয়ে ওঠে। চতুর্থত, বামপন্থী আইপিটিএ অথবা গণনাট্য সংঘের আন্দোলন জোরদার হয়। এ ছাড়া, দেশবিভাগের ঠিক আগে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা অভূতপূর্ব সহিংসতা নিয়ে দেখা দেয়। তারপর দেশবিভাগ এবং দেশত্যাগ বিরাট সমস্যা হয়ে দেখা দেয়। এসব ঘটনা মানুষের মনকে প্রবলভাবে নাড়া দেয়। এবং তার ছাপ পড়ে ৪০এর দশকের গানে।

 

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত