দুটি ছড়া । শকুন্তলা চৌধুরী
নববর্ষ
মনখারাপের চৈতী বিকেল,
হঠাৎ নিঝুম রাত…
বল্ দেখিতো — বৈশাখীতে,
কি তোকে দিই আজ?
এপার ওপার উজান-ভাঁটি —
মধ্যে হারায় আমের আঁটি,
বনপলাশী, মাতাল কোকিল,
‘নক্মীকাঁথার মাঠ’….
তবু থাকে বন্ধ মুঠি,
স্বপন-দোলা, জীয়ণ-কাঠি,
একূল-ওকূল দুকূল বাওয়া
জীবনতরীখান্ ৷
তোকে দিলাম স্মৃতির চাবি –
কাণাকড়ির ডোর,
সামলে রাখিস্ – পরশপাথর…..
রাতকে করে ভোর ৷৷
উজান
চল্ হাঁটি সেই পথে
তুই আমি এক সাথে —
কাশবনে ফুল কতো
হাত নাড়ে, দোল্ দোলে…
ডুব মারে কাঁচ জলে
মাছ-ধরা বক যতো ।
যূঁই ফুলে ঠায় ব’সে
ঝিম্-ধরা ঐ অলি —
তুই আমি একসাথে
চল্ আবার সেই গলি ।
মাছরাঙা নীল ডানায়
মুখ তুলে পথ জানায় —
চল্ হারাই সেই বনে
নাকছাবির পথ চিনে…..
হলুদ-রঙা ফুল-তোলা
সকাল, নাকি সাঁঝবেলা ?
পথ, পাখী, ফুল ডাকে –
চল্ এগোই ঐ বাঁকে —
চল্ হাঁটি চল্ হাঁটি
বন পেরোই মাঠ কাটি —
পথপাশের গাছ যতো
হাত নাড়ে হাত নাড়ে…
তুই আমি একসাথে
যাই দূরে যাই দূরে ।।

জন্ম কলকাতায়, বড় হয়েছেন বি. ই. কলেজ ক্যাম্পাসের প্রফেসরস্ কোয়ার্টারে। পড়াশোনা কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিয়ে এবং তথ্যবিজ্ঞানে পিএইচডি করার সূত্রে বিদেশগমন। কর্মসূত্রে বর্তমানে পরিবারসহ আমেরিকার মিশিগান প্রদেশের বাসিন্দা। ভারত, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা ও বাংলাদেশের বহু পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে শকুন্তলার কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস – সানন্দা, বাংলা ওয়ার্ল্ডওয়াইড, সাহিত্যকাফে, বাতায়ন, ইরাবতী, পরবাস, SETU ইত্যাদি তাদের মধ্যে কয়েকটি নাম। শকুন্তলার লেখা গান ভিডিওতে পরিবেশন করেছেন শ্রীকান্ত আচার্য, নচিকেতা চক্রবর্তী, রূপঙ্কর বাগচী, কায়া ব্যাণ্ড। সদ্য প্রকাশিত গ্রন্থ যাদব-কন্যা (সিমিকা প্রকাশনী)।