| 29 মার্চ 2024
Categories
কবিতা সম্পাদকের পছন্দ সাহিত্য

ভাস্কর চক্রবর্তীর একগুচ্ছ কবিতা

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট
তাপমাত্রা
 
দু-একটা শব্দ নিয়ে সময়গুলো বেশ চেনা যায়। যেমন, ডানা।
যদিও আমাদের কবিতা থেকে
ঐ ডানাকে এবার আমরা ছেঁটে দিয়েছি। স্পর্শ শব্দটাকে
আমরা ভালবাসার জন্য সরিয়ে রেখেছি, বৃত্তকে
ফেলে রেখে এসেছি রাস্তায়। দ্যাখো ছোকরা আমি
বলতে চাই; আগুন আগুনের মতো ব্যবহার করবে
জল জলের মতো___
ম্যাডাম চক্রবর্তী যেমন লেখেন ঠিক তেমনিভাবেই লিখবেন তিনি;
অ্যাসিড আর ওঁ শান্তি… সময়, আমাদের নয়…
 
 
 
 
জিরাফের ভাষা ৪৮
 
এইসব সারেগামা পেরিয়ে তোমার কাছে দু-ঘন্টা বসতে ইচ্ছে করে।
আমার তৃতীয় চোখ হারিয়ে গিয়েছে।
সিঁড়ি দিয়ে যে উঠে আসছে আজ আমি তার মুখও দেখিনি।
তোমাকে দু:খিত করা আমার জীবনধর্ম নয়
চলে যেতে হয় বলে চলে যাচ্ছি, নাহলে তো, আরেকটু থাকতাম।
 
 
 
 
জিরাফের ভাষা ২৩ 
 
এই রাত আর এই অন্ধকার তুমি তার মুখোমুখি একা ।
শান্ত একটা হাওয়া আর রেডিয়ো চালিয়ে কেউ ঘুমিয়ে পড়েছে ।
যে জীবন পেলে তুমি কেমন লাগছে সে জীবন ?
কষ্টকর ? খুব একা ? খুব বেশি একা ?
যেখানে পায়ের ছাপ পড়ে দেখি সেখানেই রক্ত ফুটে ওঠে ।
 
 
 
 
চৌ-রাস্তায় দাঁড়িয়ে আমরা চারজন 
 
‘এদিকে স্বর্গের পথ’ — বলে একচক্ষু নারী হঠাৎ হারিয়ে গেল—
চৌ-রাস্তায় দাঁড়িয়ে আমরা চারজন হেসে উঠলাম— এ-ওর মুখের
দিকে, তাকিয়ে আমরা হেসে উঠলাম
যেন স্বর্গে যাবো বলে
সেই ভোরবেলা— অদ্ভুত ছাতা হাতে আমরা বেরিয়েছি, পায়ে
আশ্চর্য চপ্পল
 
এ-ওর শরীর নিয়ে গন্ধ শুঁকছি সন্ধেবেলা— সন্ধেবেলা
এ-ওর বুকের মধ্যে উঁকি মেরে কোথায় দুঃখ পাপ
লুকোনো টাকার মতো রয়ে গেছে, কোথায় ঈশ্বর
টুপি খুলে হাঁটু মুড়ে
বসে আছেন, চেয়ে দেখছি—
পোস্ট-মাস্টারের মেয়ে শুধুমাত্র জুতোজোড়া নিয়ে বাড়ি থেকে চলে গেছে
তার সঙ্গে গোলাপি যুবক — তারা স্বর্গে যাবে
 
আমাদের স্বর্গ নেই স্যারিডন আছে
 
 
 
 
 
আনন্দ
 
মৃত্যুর পরেও, আমি কবিতা লিখে
পাঠিয়ে দেব তোমাদের।
সারাজীবন অদ্ভুত একটা মেয়ের কাছে
তোমরা চিঠির পর চিঠি লিখবে।
আর ঘুষোঘুষি করবে।
আর হাওয়া এসে
ধাক্কা মারবে তোমাদের ফাঁকা জীবনে।
তোমরা ভালোবাসার কথা কিছুই জানোনা।
তোমরা আনন্দের কথা কিছুই জানোনা।
সারা সকাল আমি
কবিতা লিখবো। সারা দুপুর আমি
কবিতা লিখবো। আর সারাদিন
নীল একটা
হাওয়া বইবে আমার জন্যে। আর পাখিরা
আমার জন্যে উড়তে উড়তে
নিয়ে আসবে কলকাতার খবর।
 
 
 
 
 
আঁধার বিষয়ে
 
যে বিকেলে জ্বর আসে সেই বিকেলের মতো তুমি এসে দাঁড়িয়ে রয়েছো। ঘড়ির ভেতর দিয়ে রক্তের রেখার মতো সময় চলেছে। -আমি কি অসুখ থেকে কোনোদিন উঠে দাঁড়াব না?আজো রাত জাগাজাগি হয়। শরীর মিলিয়ে যায় নরম শরীরে।-আমি শুধু আমার পৃথিবী দেখে যাই…। চারপাশে কেমন হাজারো আলো জ্বলে আছে,তবু এমন আঁধার আমি জীবনে দেখিনি।
 
 
 
 
 
আঠাশে মে, আমার জীবনের
 
আঠাশে মে, আমার জীবনের সুন্দরতম
দিন হও তুমি
এই সাতাশে মে-র সন্ধেবেলা আমি
অন্ধকারে বসে লিখতে চাইছি
তুমি কুয়োর বালতির মতো নাচতে নাচতে
নীচে নামো, আর আমার জন্যে নিয়ে এসো
মসৃণ পবিত্রতম জল
নিয়ে এসো অভিমান পুরস্কার আর পতাকা
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত