Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,মঈনুস সুলতানের কবিতা

তৃতীয় বর্ষপূর্তি সংখ্যা: মঈনুস সুলতানের কবিতা

Reading Time: 2 minutes
 
 
 
 
 
 
 
 
বর্ণের বন্দিশ
 
মিহি রোদ্দরে পত্রালীস্নাত এ বিকেল সত্যিই রহস্যময়
পিঞ্জিরার অর্গল খুলে আমাজনের তিনটি খেচর
ফিরে এসেছে প্রতিবেশীর আঙিনায়,
পাখিগুলো মাতছে না আজ বিলম্বিত কাকলিতে—
রিক্ত করেছে যা.. ব্যক্ত করতে চেয়েছো যে মৃদু-স্বর
তুমিও স্বস্তি পাবে কিছু কথা না বলায়,
সূর্যমুখির কোরক কুঁকড়ে আছে আসন্ন শীতে—
রূপালি বাষ্পে জনমের বিভায় এ অপরাহ্ণ হয়ে আছে প্রভাময়;
 
এমনি এক বেলাশেষে
থনলাছাপ নদীটি ফিরে গিয়েছিলো উৎসমূলে
স্রোতজলের উল্টোরথে,
সিঁড়ি বেয়ে নেমে এসে শিরিষ শোভিত প্রাঙ্গনে
তুমিও পা বাড়িয়েছিলে কপিলাবস্তুর পথে.. ..
 
বাঁকানো সেতুটি পাড়ি দিয়ে নেমে যাও
ওপাড়ে উপত্যকা.. ফিরো না আর,
মাড়িও ঘাস সাবধানে
দূর্বাতৃণের অন্তরালে উৎকন্ঠিত হয়ে আছে ঘাসফড়িং এর পরিবার;
মিহি রোদ্দরে পত্রালীস্নাত এ বিকেল সত্যিই রহস্যময়,
খানিক পরে দ্যাখো— বর্ণের বন্দিশে ভরে যাবে আকাশ
জমে উঠবে গোধূলির প্রণয়,
ছড়িয়ে যাবে দ্রুত লয়ে সহস্র রাগের বিষ্ফোরণ—
দৃশমান হবে প্রচ্ছন্ন অদৃশ্য.. শ্রুতও হবে অজস্র যুগের বিষ্মরণ,
প্রতিটি মুহূর্তের সচেতনতায় সিদ্ধ এ অপরাহ্ণের নিঃশ্বাস।
 
 
 
 
 
হারানো দিনের দ্বীজেনগীতি
 
আজটেক পঞ্জিকার মতো শ্যাওলার সাবুজিক আস্তরণে
ক্রমশঃ প্রচ্ছন্ন হয়েছে ওঠছে আয়ুরেখা,
ইচ্ছা হয়— দিব্যজ্যোতির তালাশে হেঁটে যাই মেরুদিগন্তে
জ্যোর্তিময় অরোরার ফের যেন পাই দেখা,
দাঁড়াই আগুন পাহাড়ের ছাইভষ্মে সমৃদ্ধ উপত্যকায়
কিলিমানজারোর উষ্ণিশে মদিরায় সিক্ত মসলিনে আঁকা গোধূলি,
কয়সান গোত্রের শিশুদের হাত থেকে যেন কেড়ে নেয়া না হয়
ভলকানিক রকে গড়া ডাংগুলি;
প্রার্থিত পূর্ণিমায় জলতলে শুভ্র প্রসূন ছড়িয়ে প্রসন্ন হোক প্রবাল
কালাহারির সজল বালুকায় ফুটেছে যে বিরলপ্রজ উদ্ভিদ—
তার পত্রালীতে সংক্রামিত হোক কুয়াশার ইন্দ্রজাল,
বাকি আছে যে কটি বর্ষা— শরতের ধূপঋদ্ধ সমীর
বিলাসখানি মোম পুড়ে পুড়ে সৃষ্টি হোক বিশুদ্ধ মঞ্জীর
অনুরণনে ছড়াক কপূর্রতীথি,
না হয় শোনা যাক আরেক বার হারানো দিনের দ্বীজেনগীতি।
 
 
 
 
 
 
 
ফ্লোরিডার নীলাভ বাটারফ্লাই
 
সুই ফুঁড়ে বাহু থেকে সিরিঞ্জটি সরাতেই
আমার চেতনায় ছড়ায় কল্পনার স্বর্গসবুজ উপদংশ,
দেখি—উত্তর মেরুতে আটকা পড়েছে তিমি শিকারী জাহাজ
তুষার ঝড়ে জবুথবু পেঙ্গুইন— কায়ক্লেশে বিস্তার করছে বংশ।
 
নোনাজলের স্ফটিকনীল পাথরে ওয়ালজ নৃত্যে
মাতওয়ারা হয় কাঁচের দেবদূত,
বাদ্যযন্ত্রের মতো ঝংকারময় নারী
পরেছে ফেনার পোষাক
মুখখানা তার মৎস্যকন্যার মুখোশে নিখুঁত।
 
তাকিয়ে থাকি ধুন ধরে
শোণিতে শ্বেতকণিকার মতো প্রবাহিত হয়
সুফি শায়েরীর ধারা,
লন্ঠনের আলোয় কবেকার কোন কৈশরে
পাঠ করেছিলাম চে গুয়েভারা।
 
দৃশ্যের সুরা-চন্দ্রিম ভোঁজে তিয়াসে হই উদভ্রান্ত
শালুক ফোটা দিঘির কোথাও
সঞ্জীবনের জলসিক্ত আর্দ্রতা নাই,
ক্রমাগত ব্যাথাবিনাশী ড্রাগসে পথশ্রান্ত—
আমার জীয়ৎ কালেই বিলুপ্ত হলো যে
ফ্লোরিডার নীলাভ বাটারফ্লাই।
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>