৩১
সে আলো তারার নাকি কোনও
একলা টাওয়ার দাঁড়িয়েছে অন্ধকারে
তবু তাকে তারা ভেবে সুখ পাই
পতনের কোনদিকে সিঁড়ি, একথা ভেবে আর আশ্চর্য হই না দিগন্ত। তাছাড়াও সিঁড়ি মানে শুধুই কী উঠে যাওয়া, নামা নয়! এই যে এত হাই ভোল্টেজ স্পার্ক নেমে এল, এও কী শারীরিক হয়ে উঠবার এক সংকেত নয়! শরীর ও সমর্পণের পাশেই একটা গ্র্যান্ড পিয়ানোর চিৎকার শুয়ে থাকে। তুমি কী নামে ডাকবে তাকে বল, ভিসুভিয়াস, আগ্নেয় পাথর ভরা এই দেহ, জল চায়
৩২
মাটির তলায় বসে এই লেখা
সারফেসে জল ঢেলে দেখো
একদিন উঠে আসবে রং
সরাসরি হাওয়া দিলে ভয় পাই। রোদের ট্যাটুতে সব লিখে রাখা, লিখে রাখা আবহাওয়া, ধারাবাহিক শোক। আনত বিচ্ছেদের চিহ্ন মুছে ফেলে ইউটোপিয়ান এক কলোনির দিকে চলে যাব, এমত খোয়াইশ ছিল, ফুটন্ত স্যুপের থেকে মাশরুম তুলে নিয়ে মুখে পুরে ভেবে নেব প্রেমিকের জিভ। ফজরের আধবোজা চুল্লিতে সেঁকে নেব খয়েরি হৃদয়। ঘড়ির কাঁটার থেকে ঘাম নেমে আসে, কুসুমিত ডিম যথা রঙ্গিলা ছবিলা এই সঁইয়া আমার, মোসে বোলে না, আমি স্পর্শ-দূষণ থেকে ছিটকে সরিয়ে নিই হাত, আর হাত থেকে ঝরে যায় দিন ক্ষণ ঘটমান বর্তমান
৩৩
জল নিয়ে কোনও কথা বলছি না
আমার তোয়ালে চুরি করে নিল
ও কোন যাদু চৌকিদার
বিরহের কোনও ইমোজি হয় না দিগন্ত। বেতমিজ এ জিগর থেকে খুন ঝরে। রাত আড়াইটেয় যখন অভ্রান্ত সেই ছুরি ঢুকে যায়, আর সম্পূর্ণ আঁজলা জড়ো করেও যখন আমি ধরে রাখতে পারছি না নদীর প্রলাপ, আমার শীতকালের ভেতর বৃষ্টি ভরে দিতে দিতে কে হেসে ওঠে, কোন বাউদিয়া আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় একটা বিলুপ্ত লোকগানের দিকে, আর ঘুমের উরুতে বসিয়ে দিচ্ছে নিপুণ দংশন। এ যেন অব্যর্থ সেই হাতবোমা, যাকে দাঁত দিয়ে ছিঁড়তে ছিঁড়তে তুমি নিজেই বারুদ হয়ে জ্বলে যাচ্ছ
৩৪
ও তো উড়বে বলেই জল
তোমার অঞ্জলিতে ফাঁক ছিল
ফাঁকি ছিল! হয়তো ছিল না
লেফাফা খুলে দেখি কত কত বাষ্পের দাগ ইতস্তত কাগজের গায়ে। যাকিছু মুছতে মুছতে এই চলা, ওগো দেউনিয়া, তোমার ঘরত আমার অন্ন ছিল না। আমি তো ভাতুয়া প্রজা, আমি তো সেবাদাস মাত্র, এসকল মিথ্যে খোয়াব নিয়ে চিঠি লিখি। চিঠি লিখি পুষ্করিনি ডট কমে। উত্তর আসে না। তবু বসে থাকি। শুধু বসে থাকি। এই তেল মাখা বাঁশ, এই পিছল আঘাটা, ট্র্যাপিজের দড়িটুকু সার। রিংমাস্টার হে, ঘনঘোর ঘটমানতায়, আমি শুধু বেদনার উল্টোপিঠে বসিয়ে চলেছি সেই চিরায়ত লৌকিক কুঠার। তবু কেন মাঝে মাঝে ভার্মিলিয়ন, এই বেতমিজ রং থেকে ভেসে আসে চিৎকার
কবি ও গদ্যকার।
প্রকাশিত কবিতাবই-
১। বেদপয়স্বিনী(২০০৬), কৃত্তিবাস প্রকাশন।
২। খেলাহাট(২০০৮), সপ্তর্ষি প্রকাশন।
৩। দ্রাক্ষাফলের গান(২০০৮), যাপনচিত্র প্রকাশন।
৪। ঢেউ এবং সংকেত(২০১৮), সৃষ্টিসুখ প্রকাশন।
৫। জিপার টানা থাকবে(২০১৯), সৃষ্টিসুখ প্রকাশন।
৬। অন্ধ আমার আলোপোকা(২০১৯), ধানসিড়ি প্রকাশন।
৭। সাপ ও সিঁড়ির সংলাপ(২০২১), ক্রৌঞ্চদ্বীপ প্রকাশন।
৮। রৌদ্রগণিকার পথ(২০২২), আদম প্রকাশন।
৯। নির্বাচিত কবিতা(২০২৩), আলোপৃথিবী প্রকাশন।
প্রকাশিতব্য কবিতাবই: (বিজন গুম্ফার দিকে, সৃষ্টিসুখ প্রকাশন)
প্রকাশিত উপন্যাস: মাশান রহস্য(২০২০), সৃষ্টিসুখ প্রকাশন।
২০০৮সালে ‘কৃত্তিবাস’ পুরস্কার পেয়েছেন প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘বেদ পয়স্বিনী’-র জন্য।