শারদ অর্ঘ্য গল্প: মানববিষ । মোহিত কামাল
কড়া রোদ।
কপালে হাত রেখে সূর্যের দিকে তাকাল লিমা। সূর্য পশ্চিমে সামান্য ঢলে পড়েছে, তবু রোদের তীব্রতা কমেনি। খাঁখাঁ করছে চারদিক।
লিমা-র মনেও আগুন জ্বলছে, দাউ দাউ করে উঠছে ক্রোধ। ক্রোধের সঙ্গে মিশে আছে বিষাদ। দাঁতে দাঁত ঘষে সে। একরোখা তেজি এক ক্ষোভ জেগে উঠছে। চারপাশের কিছুই চোখে পড়ছে না। সে ছুটছে, ক্লান্তিহীন, জড়তাহীন।
তাকে যেতে হবে হাসপাতালে।
যত তাড়াতাড়ি যাওয়া যায় ততই মঙ্গল।
ইট বিছানো পথ মাড়িয়ে সে ছুটছে। দু পাশের মানুষজন অবাক হয়ে দেখছে তাকে। পরোয়া করছে না সে।
তার চুল উড়ছে এলোমেলো।
অজপাড়াগাঁর মেয়ে সে। কৈয়ারবিল ইউনিয়নে তাদের বাড়ি। নবম শ্রেণিতে পড়ে। চপল কিশোরীর সব চিহ্ন তার শরীরে ফুটে আছে স্পষ্ট। মিষ্টি মুখ, উজ্জ্বল শ্যামলা গায়ের রঙ। ঠোঁটে মিশে আছে অভিমানী মনের ঐশ্বর্য।
এ এলাকার মেয়েরা লুঙ্গির মতো করে থামি পরে। ওপরে শুধু ব্লাউজ। এটা ঘরোয়া পোশাক।
এভাবেই লিমা ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে। তবে একটা ওড়না ঘাড় পেঁচিয়ে ঘুরিয়ে এনে কোমরে গিঁট দিয়েছে।
নবম শ্রেণির ছাত্রী হলেও তার শরীর বেশ বাড়ন্ত। স্পষ্ট শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে পারে। ছাত্রী হিসেবেও নামকরা। অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছিল। সবাই তাকে চেনে, স্নেহ করে।
ছুটতে ছুটতে হাসপাতালে এসে থামে সে।
হাঁপিয়ে উঠেছে, ঘামছে। কপাল বেয়ে দর দর করে নেমে আসছে ঘাম। ওড়নার গিঁট খুলে ঘাম মুছে নিয়ে কিছুটা সহজ হয় সে। ডাক্তার খোঁজে। একজনকে পেয়েও গেল। এ মুহূর্তে তার কোনও লজ্জা নেই, দ্বিধা নেই। সরাসরি বলল, আমাদের বাড়ি যেতে হবে, স্যার। এক্ষুনি।
ডা. তৈয়ব একজন নবীন চিকিৎসক। অল্প কিছুদিন আগে নতুন চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। মেয়েটির মুখের দিকে তাকালেন। তাকিয়েই তার দাবির কাছে হার মানলেন।
তবু বললেন, খুব ক্ষিদে লেগেছে। এখনও খাইনি। তুমি বসো, চট করে খেয়ে আসি আমি।
না! এক্ষুনি যেতে হবে। লিমার গলায় অদ্ভুত জোর। জোরের ভেতর ওত পেতে আছে আবদার।
এমন করছো কেন? কার অসুখ?
বাবা… বাবা… আর বলতে পারল না লিমা।
তার ক্রোধমিশ্রিত মায়াবি চোখ থেকে টস টস করে নেমে আসছে বুকের সকল ক্ষোভ, কষ্ট, বিষাদ। অশ্রুভরা চোখে ফ্যালফ্যাল করে সে ডাক্তারের দিকে তাকাল বড় করুণভাবে।
মেয়েটির মায়াবি টান অগ্রাহ্য করতে পারলেন না ডা. তৈয়ব। ক্ষিদের কথা ভুলে গিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলেন।
লিমার ভেতরে হঠাৎ উচ্ছ্বাস জেগে উঠল। কিশোরীর চঞ্চলতা জেগে উঠল। ছুটে গিয়ে দুটো রিকশা নিয়ে আসে। দ্রুত যেতে হবে। তার বাবা সংকটে আছে।
লিমাদের বাড়ির পাশে এসে রিকশা থামে।
বাঁ পাশে বড় একটা বিল।
জমিতে ধানের কচি চারাগুলো মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। সবুজে সবুজে একাকার পুরো বিল। ঝিরঝির বাতাস বইছে। সবুজের ছোট ছোট ঢেউ বয়ে যাচ্ছে ক্ষেতে, উত্তর থেকে দক্ষিণে।
বিলের পরই রয়েছে একটা মসজিদ, সামনে ছোট একটি মাঠ, মাঠের পাশে পুকুর। শান বাঁধানো ঘাট। পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল এক বটবৃক্ষ।
মসজিদের সামনে, পেছনে, পুকুরপাড়ে অসংখ্য মানুষ। টুপি মাথায় জড়ো হয়েছে সবাই।
ব্যাপার কী?
এত মানুষের সমাগম কেন?
ধক করে উঠল তৈয়বের বুক।
রিকশা থেকে নেমে ধানক্ষেতের আইলের ওপর দিয়ে অভ্যস্ত পায়ে দ্রুত হাঁটা শুরু করেছে লিমা। ওইটুকু পথ হেঁটেই যেতে হবে।
ডা. তৈয়ব অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলেন মেয়েটির দিকে। তার আচরণ বিস্ময়কর।
লিমা এবার পেছন ফিরে তাকাল। চোখের ইশারায় ডাক্তারকে দ্রুত আসার জন্য তাগাদা দিয়েই হাঁটা শুরু করল আবার।
মসজিদের কাছে এসে চোখ কপালে উঠে গেছে তৈয়বের।
এক লাশ ঘিরে জড়ো হয়েছে অসংখ্য মানুষ।
সাদা কফিনের পায়ের দিকে খোলা, মুখও খোলা।
পাঁচটা গিঁট দেওয়া একটা করে দড়ি ডান পায়ের প্রতিটা আঙুলের সঙ্গে বাঁধা। প্রতিটা দড়ি সাত হাত লম্বা। দড়ির শেষ প্রান্ত একটা বড় গামলায় রাখা হয়েছে। গামলাতে রয়েছে কালো পানি।
একজন বৈদ্য, মাঝারি বয়স, জটপাকানো ঝাঁকড়া চুল, নাভি পর্যন্ত সাদাকালো দাড়ি, দড়ির ওপর দিয়ে হাত টেনে নিচ্ছে গামলা পর্যন্ত।
বিষ নামাচ্ছে।
দেখার মতো দৃশ্য। অসংখ্য কৌতূহলী চোখ গিলে খাচ্ছে দৃশ্যটা। সবার বুক টিবটিব করছে। কখন লাফিয়ে উঠবে লাশ; তা দেখার আশায়!
দুজন মাওলানা মাথার কাছে বসে আছেন। দোয়া-দরুদ পড়ছেন। কারও মুখে কোনও শব্দ নেই, পুরো এলাকা নিথর-নিস্তব্ধ।
গতকাল লিমার বাবা কুদ্দুস মিয়াকে সাপে কেটেছে। আজ সকালের দিকে সে মারা গেছে।
হঠাৎ করে দেখা গেল কফিনের পায়ের দিকে সাদা কাপড় ভিজে উঠেছে, ছোপ ছোপ রক্তে লাল হয়ে গেছে।
রক্ত দেখে ইমাম সাহেব ঘোষণা দিলেন, কুদ্দুস মিয়া মরেনি। বেঁচে আছে। মড়া থেকে লাল রক্ত বেরুতে পারে না। সাপে কাটলে মানুষ মড়ার মতো পড়ে থাকে। দুই-তিন দিন পরও সাপে কাটা লাশ জিন্দা হয়েছে। নজির আছে।
ইমামের ঘোষণা শুনে হইচই পড়ে গেছে। গ্রামজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। বৈদ্য নিয়ে এসে প্রাণান্তকর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। লাশ জিন্দা বানানোর কৌশল দেখার জন্য হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়েছে।
লিমার কানেও গিয়েছিল এ সংবাদ।
বাবার মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল সে। মানুষের শোরগোল শুনে আচমকা তার চেতনা ফিরে আসে। দ্রুত গেছে হাসপাতালে। ডাক্তার নিয়ে এসেছে। এখন দাঁড়িয়ে আছে বটগাছের তলে, একটু দূরে।
পাড়ার মোড়ল ছালেহ মোল্লা এগিয়ে গিয়ে ডা. তৈয়বকে আগ বাড়িয়ে নিয়ে এলেন।
আফনে আইছেন, ভালা অইলো। আমরা তো বিপদের মধ্যে আছি।
কী হয়েছে? ব্যাপার কী! তৈয়বের কণ্ঠে বিস্ময়।
কুদ্দুস মিয়ারে সাপে কাটছিল গতকাইল। আইজ সহালে মইরা গেছে। দাফন করতে আইনা দেহি রক্তে ভিইজ্জা গ্যাছে সাদা কফিন। ইমাম ছাব কয় হে মরেনি, বাঁইচ্চা আছে। আফনে দেহেন, হে জেতা না মরা, কন।
তৈয়বের হাত-পা থরথর করে উঠল। তিনি নবীন ডাক্তার, অভিজ্ঞতার ঝুলি এখনও শূন্য। ঢিবঢিব বুকে এগিয়ে গেলেন লাশের দিকে। ভালো করে দেখলেন, বারবার।
মৃত্যুর সকল চিহ্ন স্পষ্ট। লাশ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। যেন সাদা কাগজ।
থমথমে মুখ নিয়ে উঠে দাঁড়ালেন ডাক্তার। ভিড় ঠেলে ফাঁকা জায়গায় এসে দাঁড়ালেন। একদম চুপ, কোনও কথা নেই তাঁর মুখে।
সকলেই তাঁর পিছু পিছু আসছে।
ছালেহ মোল্লা বলল, কন, বেবাকেরে হুনাইয়া কন কী অইছে।
তৈয়ব কিছুই বলছে না। স্থবির দাঁড়িয়ে আছে।
দূরে বটগাছের তলে তার চোখে গেল। লিমার উদ্বিগ্ন চোখ দেখতে পেল। অসংখ্য নারীও বটগাছের তলে জড়ো হয়েছে, সবাই ঘোমটা দেওয়া। মসজিদের কাছে মেয়েদের আসা নিষেধ।
সবাই ডাক্তারের মতামত জানার জন্য অধৈর্য হয়ে পড়েছে।
তৈয়বের মুখ গম্ভীর। কারও কোনও প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন না।
ইমাম বলেছেন মরেনি। ইমামের কথাকে মানুষ মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে। তাদের এই বিশ্বাসকে কীভাবে ভাঙবে তৈয়ব? তা ছাড়া এই নবীন ডাক্তারের কথাও তারা পুরোপুরি বিশ্বাস করবে কি-না, এ ব্যাপারেও তৈয়বের মনে সন্দেহ জাগে।
আবার মৃতদেহের কাছে গেলেন। আবারও নিজের প্রতি আস্থা বেড়ে গেল। কফিনের পায়ের কাপড় খুলে ঊরু পর্যন্ত দেখলেন।
পায়ের দিকে তাকিয়ে হাঁ হয়ে গেলেন।
অসংখ্য ব্লেডের জখম দেখতে পেলেন তিনি। পুরো ডান পায়ের ঊরু পর্যন্ত কুচিকুচি করে কাটা।
সন্দিগ্ধ চোখে ওপরের দিকে তাকালেন। সবার মুখ দেখে প্রতিক্রিয়া বোঝার চেষ্টা করলেন।
পাড়ার জোয়ান পুরুষ কাশেম আলি এগিয়ে এসে ডাক্তারের প্রশ্নভরা চোখের জবাব দিল।
এগুলো ব্লেডের দাগ। বিষ নামাইবার চেষ্টা হইছে গতকাইল।
আর কোনও প্রশ্ন না-করে আর কিছু না-বলে ডাক্তার উঠে এগিয়ে যেতে লাগলেন সামনে। এক হাতে ধরেছেন ছালেহ মোল্লার হাত। আলাদা করে তাকে বললেন, এতো মৃত মানুষ!
তাইলে দাফন কইরা ফালাই?
এ প্রশ্নের কোনও জবাব দিলেন না তৈয়ব। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে নিলেন মোড়লকে।
তারপর ধানক্ষেতের আইলের ওপর দিয়ে দ্রুত হাঁটতে লাগলেন রাস্তায় অপেক্ষমাণ রিকশার দিকে।
বেশ খানিকটা পথ হেঁটে এসে দাঁড়াল তৈয়ব। পেছনে ফিরে দেখল দৌড়ে আসছে লিমা।
মেয়েটির বাবা মারা গেছে, অথচ কোনও শোকের চিহ্ন নেই তার মুখে। মুখের পেশি কঠিন হয়ে আছে, চোখ থেকে বের হচ্ছে এক ধরনের শক্ত মনোভাব।
কাছে এসে লিমা প্রশ্ন করল, বাবা কি মারা গেছেন? কঠিন জিজ্ঞাসা, সহজ ভঙ্গি।
হ্যাঁ।
সাপের বিষে? লিমার আচমকা প্রশ্ন শুনে ডাক্তার হোঁচট খেলেন আবার।
কেন? এ প্রশ্ন করছো কেন?
কারণ, আমার মনে হয় সাপের বিষে বাবা মরেনি। কাশেম আলি আর আমার সৎমা বাবারে মেরে ফেলেছে।
বলো কী! সৎ মা? কাশেম আলি?
ঠিকই বলছি।
কীভাবে বুঝলে?
বিষ নামানোর নাম করে বাবার পায়ে ব্লেড চালিয়েছে তারা। প্রায় এক গামলা রক্ত বের করে ফেলেছে শরীর থেকে। আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে গেল বাবা।
তুমি বাধা দাওনি?
দিয়েছি। চিৎকার করেছি, তারা আমার কথা শোনেনি।
কাশেম আলিটা কে?
পাশের বাড়ির জোয়ান পুরুষ। বিয়ে করেনি এখনও।
তুমি ওদের সন্দেহ করছো কেন?
কারণ আছে।
কী কারণ?
লিমা জবাব দিতে পারছে না। অদ্ভুত চোখে ডা. তৈয়বের মুখের দিকে তাকাল সে। হঠাৎ করে তার মুখের ভাষা হারিয়ে গেছে, মুখাবয়বে জেগে উঠেছে এক ধরনের ঘৃণা।
কিছু বলছো না কেন?
লিমা আবারও ডাক্তারের মুখের দিকে তাকাল। তার ভেতর বেপরোয়া ভাব জেগে উঠেছে। যে-কথা স্বাভাবিক অবস্থায় কোনও কিশোরীর পক্ষে কিছুতেই বলা সম্ভব নয়, তাই-ই ও বলতে শুরু করল দাপটের সঙ্গে :
আমার আপন মা নেই। ছোটবেলায় মারা গেছেন। বাবা ফিশিং ট্রলারের নাবিক। প্রায়ই সমুদ্রে যেত মাছ ধরতে। প্রায়ই রাতে বাড়ি ফিরত না। মাঝরাতে ওই সময় প্রতিদিন দরজায় হালকাভাবে তিনটা টোকা পড়ত। টক টক টক। আমার সৎ মা খুব সুন্দরী, জোয়ান। পা টিপে টিপে উঠত। দরজা খুলে বাইরে যেত। যাবার আগে একবার ভালো করে দেখে নিত আমাকে। আমি ঘুমের ভান করে মটকা মেরে থাকতাম।
কাশেম আলি মাকে আগ বাড়িয়ে নিত। চুপি চুপি যেত গোলাঘরের পেছনে। জায়গাটা বেশ সুন্দর, নিরিবিলি। পা টিপে টিপে একদিন আমি আবছা অন্ধকারে কাছ থেকে লুকিয়ে তাদের দেখি। ছি! কী জঘন্য আমার সৎমা। মা বলে ডাকতে আমার শরীর ঘিন ঘিন করে ওঠে। প্রথম দেখার পর আর কখনও তাকে মা বলে ডাকিনি।
তুমি প্রতিবাদ করোনি?
লজ্জায় মরে যাই আমি। এসব কথা কি বলা যায়? রাগে ক্ষোভে আমি ক্রমশ বদলে যেতে থাকি। বাবার জন্য কষ্ট হতে থাকে। নিজের ভেতরেও কষ্ট। নীরবে কেবল দেখে যাই, কিছুই বলতে পারি না কাউকে।
নীল কষ্টের ছাঁচ জেগে উঠল লিমার মুখে। এ কেবল কষ্ট নয়, বিষ। কঠিন জীবনের নীল যন্ত্রণা। সাপের বিষকেও হার মানায়।
তাহলে কি সাপে কাটার কথা সত্য নয়?
জানি না। গতকাল সকালে বাবা পুকুরঘাটে গেল। হঠাৎ চিৎকার দিয়ে আমাকে ডাকতে লাগল। আমি ছুটে গেলাম। সৎমাও ছুটে গেল। বলল, বিষ! বিষ! লিমা, মনে অয় সাপে কাটছে।
‘মনে অয়’ কথাটা বলেছে। ভালো করে তিনি দেখেননি কিসের কামড় ছিল। আমি বাবাকে ধরে নিয়ে এলাম উঠোনে। মা চলে গেল পাশের বাড়িতে। কিছু হলে তিনি ছুটে যান সেখানে। কাশেম আলিকে নিয়ে এলেন।
বাবা কাশেম আলিকে খুবই বিশ্বাস করত। খুবই স্নেহ করত। মনে হয়, নিজের ভাইয়ের চেয়েও বেশি ভালোবাসত। কাশেম আলিও ধূর্ত। বাবাকে সব সময় খুশি রাখত, যেন বাবা কিছু বুঝতে না-পারে।
তারা কাজে লেগে যায় ব্লেড নিয়ে। সুযোগটা কাজে লাগায়। তারপর এই ঘটনা। এখন আপনি বলেন, বাবা কি সাপের বিষে মারা গেছে?
না, আমার তা মনে হয়নি। মনে হয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই তিনি মারা গেছেন।
তাহলে তো এটা খুন।
হ্যাঁ, এটি অস্বাভাবিক মৃত্যু। তবে ময়নাতদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর আসল কারণ ধরা পড়বে।
লিমার হাত-পায়ের পেশি আচমকা কম্পন দিয়ে উঠল। শরীরের লোম খাড়া হয়ে গেল, পুরো দেহ হঠাৎ করে কঠিন পাথরে পরিণত হয়ে গেল।
ভুলে গেল যে সে গ্রাম্য কিশোরী।
হঠাৎ করে ছোটা শুরু করেছে লিমা।
সে ছুটছে থানার দিকে। তাকে পুলিশের কাছে যেতে হবে। খুনের বদলা নিতে হবে, বিচার চাইবে সে।
ডাক্তার তাকে কিছু একটা উপদেশ দিতে চাচ্ছিলেন, থামতে বললেন। থামছে না সে। ছুটছে। সম্মুখে এগিয়ে যাচ্ছে ঝড়ের বেগে।

জন্ম ২ জানুয়ারি ১৯৬০ খ্রিঃ তিনি একজন কথাসাহিত্যিক, সম্পাদক ও মনোশিক্ষাবিদ। শিশু সাহিত্য বিষয়ে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ১৪১৮ বঙ্গাব্দে শিশু একাডেমি প্রদত্ত অগ্রণী ব্যাংক শিশু একাডেমী শিশুসাহিত্য পুরস্কার এবং কথাসাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।