আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট
জীবন
জনমভরের কত কথা থাকে মানুষের।কোথাও
হাঁটুজলের নদী পেরোতে গিয়ে মানুষের চোখের
সাদায় এক ব্যথা জেগে থাকে।জাগরণ থেকে ঘুমে ফিরতে গিয়ে কথার খেপলা জাল অন্যমনস্কতার
ভেতর ঢুকে পড়ে।অথচ দীর্ঘ কোন সেতু পেরোতে
আজকাল তো খুব বেশি সময় লাগে না!গ্রামদেশের
কাকতাড়ুয়া পাহারা দেয় বেগুনক্ষেত।নুতন জলের
প্রবাহে সতেজ শিং মাগুরের ঝাঁক আবহমানের
দৃশ্যের কিনারেই বুঝি মানুষকে টেনে নিয়ে আসে।জনমভরের কথায় কথায় কি তীব্র হয়ে ওঠে মানুষের
জীবন!
গান
গোপন গানের মধ্যে যে কান্না তাকে টেনে আনি
আমার অসম্পাদিত জীবনের ভিতর।পাখির ডাকের
কাছে কত যে ঋণ আমার!
হারিয়ে যাওয়া নদীনালা,সন্ধ্যের মাঠে অপেরা বাজে
হিমবর্ন মেয়েটির কাছে যাবো,তাকে পাঠ করাটা
জরুরী
অনেক বছর পর সাঁতার ফিরে আসছে।
চোখের জল থেকে সরিয়ে আনছি লবণ।
একটা সূচিপত্রহীন জীবন চেয়েছি।
কাঠের চেয়ারে বসে শান্তিতে ভাত খাবার ইচ্ছে
আমার
প্রকৃত উন্মাদ কখনো অস্থির হন না।
নাগরদোলা থেকে পড়ে গিয়ে মাথা ফেটে গিয়েছিল
একবার
এরপর থেকে বিষন্নতা আমার প্রিয় শব্দ।
হেডলাইটের আলোয় ভেসে যাওয়া রাস্তা
সামান্য ঝড়ে ভেঙে পড়া সুপারিগাছের ছায়ায়
মাছ ও মাছি নিয়ে শেষবার কথা হয়েছিল
আমাদের
ভোরের তাঁবু
কেন বারবার ফিরে আসছো ভোরের তাঁবুর কাছে!
মাঠ থেকে কুড়িয়ে আনি সাপের খোলস।
দর্শক আসনে বসে থাকা জাদুকর এখন পুতুলনাচ
দেখছেন
রোগা ঘোড়ার আস্তাবলে কেউ আর প্রদীপ জ্বালায়
না
পানপাত্র হাতে নিয়ে দেখি পতাকার ছায়া।
তবে সেতার বাজুক,আমরা সনেট পড়ি।
আর হস্তশিল্পীদের গ্রামে বিলি করা হোক
চুইংগাম
শ্রাবণ
মৃত কোকিলের বুকে রক্ত দেখে খুব কান্না এসেছিল।
তারপর শ্রাবণ মাস এসে পড়লো।
নদী পুকুরের জলে আমি কেবল আলো
খুঁজলাম
ঝাকিজালে মাছ উঠছে।
এদিকে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা।
গল্পের চূড়ান্তে বরণডালা ভেসে
যায়
গানস্যালুট
গোপন ডেরা থেকে যুদ্ধ জয়ের খবর দিচ্ছি।
কলোনির মাঠে সভা ডেকেছেন বৃদ্ধ গাওবুড়ো
গানস্যালুটের পরিবর্তে তন্ত্রমন্ত্রের গান।
সবজি কাটার ছুরি নিয়ে সবাই ঢুকে পড়ছে সবুজ
উদ্যানে

জন্ম ১৯৭০, ০৩ জানুয়ারি. নয়ের দশকে লিখতে আসা এ কবি উত্তরের লোকজীবনের সাথে জড়িয়ে আছেন তীব্র ভাবে. ত্রিশ বছরের বেশী সময় ধরে কবিতা, গদ্য সহ বিভিন্ন ধারায় অনায়াস যাতায়াত করেছেন. বাংলা ভাষার প্রায় সব কাগজে নিয়মিত লেখালিখি করেছেন, করছেন. ১৯৯৬ সালে তাঁর প্রথম কবিতাবই প্রকাশিত হয় কবিতা পাক্ষিক থেকে. গুরুত্বপূর্ণ কবিতা ও গদ্যের বইগুলো- ধানবাড়ি গানবাড়ি, মাহুত বন্ধু রে, নির্বাচিত কবিতা, বিবাহ বাজনা, নাচঘর, উত্তরজনপদবৃত্তান্ত, মাতব্বর বৃত্তান্ত, ভাঙা সেতুর গান. পেশায় শিক্ষক এ কবি ভালোবাসেন রবিশস্যের খামার বাড়ি, সাদা ঘোড়া আর যৌথ যাপনে চাঁদের আলোয় কবিতা আড্ডা, লোকগানের আমেজ।