| 25 এপ্রিল 2024
Categories
গল্প সাহিত্য

গল্প: আজ নীতুর বিয়ে । মোস্তাফা কামাল

আনুমানিক পঠনকাল: 6 মিনিট

নিলুফার জেসমিন আদুরে কণ্ঠে মেয়েকে ডাকেন৷ নীতু, এই নীতু!

বলো মা৷

আজ তোকে দেখতে আসবে৷

আজ আমাকে দেখতে আসবে!

হুম৷

কে, কে দেখতে আসবে?

পাত্রপক্ষ৷

কী বলো!

অবাক হয়েছিস মনে হয়?

অবাক হবো না? আগে তো কিছু বলোনি৷

ডেটই চুড়ান্ত হলো আজ৷ আগে বলব কী করে! যা, আগেভাগে গোসল-টোসল সেরে আয়৷ তোকে আজ সুন্দর করে সাজাবো৷

সাজানোর কী দরকার?

সাজানোর কী দরকার মানে! পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে, একটু সাজাবো না?

না, কোনো দরকার নেই৷ আমি যেমন তেমনই যদি পছন্দ হয় বিয়ে হবে৷ না হলে নাই!

আরে! মানুষ একটু সাজুগুজু করে না! করে তো!

করে৷ কিন্তু আমার সাজতে ভালো লাগে না৷ তবে এর জন্য মানসিক প্রস্তুতি দরকার৷ সেজন্যই তোমার আগে থেকে বলা উচিত ছিল৷

আগে থেকে বলতে পারলে তো বলতামই৷ শোন মা, রাগ করিস না৷

ঠিক আছে রাগ করব না৷

তাহলে যা, ভালো করে ফ্রেস হয়ে নে৷

তা, তোমরা আমার বিয়ে নিয়ে এত তাড়াহুড়ো কেন করছ?

সময়মতো বিয়ে দেয়া যে আমাদের কর্তব্য মা! তোর বয়স হয়েছে৷ এখন তোর নিজের একটা সংসার হবে৷

কিন্তু কেউ যদি আমাকে বিয়ে করতে রাজি না হয়? তখন কি করবে? তখন কী আমাকে সাগরে ভাসিয়ে দেবে? এর আগেও তো বেশ কয়েকটা পাত্রকে দেখিয়েছ৷ দেখে যায়৷ যাওয়ার পর আর কোনো খোঁজ থাকে না৷ আমাকে আর কত ছেলের সামনে হাজির করবে? তাছাড়া শুধু ছেলে হলে কথা ছিল৷ ছেলের চোদ্দগুষ্টি এসে দেখে৷ হাত-পা টিপে টিপে দেখে৷ চোখ দেখে, চুল দেখে, কান দেখে৷ দেখা আর শেষ হয় না৷

আমার সোনা মা কী বলে! যা, এবার ছেলে পছন্দ না করলে আর পাত্র দেখাবো না৷ এবার খুশি?

নীতু কোনো কথা বলে না৷ মুচকি মুচকি হাসে৷ তারপর নিলুফার জেসমিন বলেন, আর শোন, তোকে সাগরে ভাসাবো কোন দুঃখে৷

তোর বাবার যা আছে তা দিয়ে আমাদের চার জনের সংসার বেশ ভালোই কাটবে৷ কিন্তু ছেলেমেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হলে তাকে বিয়ে দেয়া যে মা-বাবার কর্তব্য মা!

মা, তুমি বাবাকে বলো, আমার বিয়ে নিয়ে তার চিন্তা করতে হবে না৷ আমি তোমাদের ছেড়ে থাকতে পারব না৷ আমাকে দিয়ে সংসার হবে না৷

কেন হবে না?

আমি তোমাদের ছেড়ে কোথাও যাবো না৷

ঠিক আছে যাবি না৷ তাই বলে বিয়েও করবি না?

না৷ করব না৷ আসলে আমি কারও ওপর নির্ভরশীল হতে চাই না৷

কেন নির্ভরশীল হবি তুই? আমি কি তোকে কোনো হেল্প করি? তুই তো নিজের কাজ নিজে করিস৷ বিয়ে হলেও তাই করবি!

তোমার কি ধারণা, আমাকে জেনেশুনে কেউ পছন্দ করবে?

করবে না কেন? তুই আমার মেয়ে বলে বলছি না, তোর মতো গুণী মেয়ে কয়টা আছে! তোর গান শুনলে যে কোনো ছেলে তোকে বিয়ে করতে রাজি হবে৷

কী যে বলো মা! এখনকার দিনে কেউ গুণের বিচার করে!

করবে না কেন? অবশ্যই করবে৷

আমি তোমাকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, সবাই বলবে, এ মেয়ে তো চোখে দেখে না! জেনেশুনে কেন আমি বিষ পান করব? আরও কী বলবে বলি?

কী বলবে?

বলবে, যে মেয়ে চোখেই দেখে না, তার রূপগুণ ধুয়ে কি পানি খাবো!

আগেই তুই এসব নেগেটিভ কথা কেন বলছিস? ছেলে যদি তোকে পছন্দ করে!

ছেলে করলেও ছেলের মা-বাবা করবে না৷

যার সঙ্গে সংসার করবি সে পছন্দ করলেই তো হলো!

না মা৷ হয় না৷ সব কিছুই একটা ছেলের ওপর নির্ভর করে না৷ তার পরিবার আছে না! ছেলে তার পরিবারের মতামতের ওপর গুরুত্ব দেবে না?

দেবে৷ তুই দেখিস, ছেলে রাজি হলে তার মা-বাবাও রাজি হবে৷

কী জানি৷ আমি ঠিক বিশ্বাস করতে পারছি না৷

কিন্তু আমার মন বলছে, ছেলে তোকে খুব পছন্দ করবে এবং বিয়ে করতে রাজি হবে৷

তোমরা কি ছেলের খোঁজখবর নিয়েছ?

হুম৷ ছেলের খোঁজখবর না নিয়েই কি তোকে বিয়ে দিতে রাজি হয়েছি?

ছেলে দেখেছ?

না৷ তোকে যখন দেখতে আসবে তখনই তো দেখতে পাবো৷

হুম৷ ছেলে কী করে?

ছেলে সরকারি চাকরি করে৷ দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক৷ ফার্স্ট ক্লাশ জব৷

সত্যি?

একশো ভাগ সত্যি৷

তাহলে তো আরও রাজি হবে না৷

কেন?

তার মতো ছেলে আমাকে কেন বিয়ে করবে?

কারণ, তুই অসম্ভব একটা ভালো মেয়ে৷

মা, তোমার কাছে আমি অনেক ভালো মেয়ে৷ কিন্তু অন্যরা কি তোমার চোখ দিয়ে আমাকে দেখবে?

শোন, যারা ভালোমানুষ তাদের মনও কিন্তু ভালো হয়৷ তারা ভালোকে ভালোই বলে৷

কী জানি৷

তুই চিন্তা করিস না তো! তুই ভালো মেয়ে৷ তোর কপালে ভালোই জুটবে৷

দোয়া করো৷ তাই যেন হয়৷

এবার যা৷ গোসল করে আয়৷ আজ নিজের হাতে তোকে আমি সাজাবো৷

নীতু আর কোনো কথা বলল না৷ সে গোসল করার জন্য কাপড়- চোপড় নিয়ে বাথরুমে ঢুকল৷ নীতু-র মা নিলুফার জেসমিন ঘরদোর গোছানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন৷ কিছুক্ষণ পর নীতুর বাবা রফিকুল হক মাছ- মাংস নিয়ে বাসায় ঢুকলেন৷ অতিথি আপ্যায়নে তাঁর কোনো জুড়ি নেই৷

২.

পাত্রপক্ষ নীতু-কে দেখতে এসেছে৷ পাত্রের নাম নাসির উদ্দিন৷ সে ছাড়াও তার মা-বাবা, ভাই-বোন, খালা-ফুফুও নীতুদের বাসায় গেছে৷ তারা নীতুকে দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন৷ ভেতরের ঘরে নীতুকে সাজানো হচ্ছে৷ বসার ঘরে আগত অতিথিরা নীতু-কে নিয়ে ভাবে৷

নাসির উদ্দিন মাথা নিচু করে বসে আছে৷ সে মনে মনে বলে, লোকে বলে, প্রথম দর্শনেই প্রেম৷ মেয়েটাকে যদি প্রথম দেখাতেই ভালো লাগত!

নাসির উদ্দিনের বাবা বশির উদ্দিন ভাবেন, মেয়ের বাবা তো বেশ স্মার্ট৷ মেয়েও নিশ্চয়ই দেখতে সুন্দর হবে৷ শুনেছি, মেয়ে নাকি খুব গুণবতী৷ আমার ছেলের যদি পছন্দ হয় আজকেই বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করে ফেলব৷

নাসির উদ্দিনের মা আনিসা বেগম ভাবেন, আমার ছেলে যা খুঁতখুঁতে স্বভাবের! পছন্দ হয় কিনা কে জানে! একবার শুধু বললে হয়, পছন্দ হয়েছে৷ কিছুতেই দেরি করা যাবে না৷ ওর বাবাকে বলব, আজই যেন বিয়ের কাজ সেরে ফেলে৷

নাসির উদ্দিনের ফুফু ইফফাত আরা মনে মনে বলেন, বাসাবাড়ি দেখে তো ভালোই মনে হচ্ছে৷ মেয়েটাকে পছন্দ হলে হয়৷ নাসির উদ্দিনের খালা নার্গিস বেগমের ভাবনাও এমনই৷ এসব ভাবনা মিলিয়ে যাওয়ার আগেই নীতুকে নিয়ে হাজির হলেন তার মা নিলুফার জেসমিন৷ নীতুকে দেখে সবার চেহারা উজ্জ্বল হয়ে উঠল৷ একসঙ্গে সবাই বললেন, বাহ!

নিলুফার জেসমিন নীতুর কানের কাছে মুখ নিয়ে বললেন, সবাইকে সালাম করো মা৷

নীতু সবাইকে সালাম করল৷ তারপর নিলুফার জেসমিন মেয়েকে নিয়ে সোফায় বসলেন৷

এ সময় নার্গিস বেগম বললেন, আপনাদের মেয়ে মাশাল্লাহ খুব সুন্দর৷ আমরা শুনেছি, আপনাদের মেয়ে নাকি অসম্ভব গুণবতী৷ আবার খুব সুন্দর গানও জানে!

নিলুফার জেসমিন বললেন, জি ঠিক শুনেছেন৷ আপনারা কি ওর গান শুনতে চান?

সবাই একসঙ্গে বললেন, অবশ্যই অবশ্যই৷

নিলুফার জেসমিন বললেন, মা নীতু! সবাই তোর গান শুনতে চাচ্ছে৷

নীতু কোনো কথা না বলে সে গান শুরু করল৷ ‘আমার এ পথ চলাতেই আনন্দ৷’

নীতুর গান শুনে সবাই যারপরনাই অভিভূত৷ খালি গলায় এত সুন্দর করে গান গাওয়া যায়! এমন কথাও কেউ কেউ বললেন৷ পাত্র তো নীতুকে দেখেই পছন্দ করে ফেলেছে৷ গান শোনার পর সে রীতিমতো নীতুর ভক্ত হয়ে গেছে৷ তার চেহারা দেখেই তা বোঝা যাচ্ছে৷ পাত্রের মা-বাবা উভয়েই কিছুক্ষণ পর পর ছেলের দিকে তাকান৷ তার মনোভাব বোঝার চেষ্টা করেন৷ তার হাসিমাখা চেহারা দেখে যা বোঝার তা বুঝে নেন৷


আরো পড়ুন: অচেনা । আফসানা বেগম


গান শেষ হওয়ার পর রফিকুল হক বললেন, আপনারা চা-নাশতা খান৷ আর আমার মেয়ের কাছে কিছু জিজ্ঞাস্য থাকলে প্রশ্ন করেন৷

বশির উদ্দিন বললেন, না না৷ আমাদের তেমন কোনো প্রশ্ন নেই৷

রফিকুল হক আবারও বলেন, অন্য কারও কি কিছু জানার আছে? থাকলে প্রশ্ন করেন৷

আনিসা বেগম বললেন, আপনাদের মেয়েকে আমাদের পছন্দ হয়েছে৷ শুধু পছন্দ বললে কম বলা হবে৷ খুব পছন্দ হয়েছে৷

রফিকুল হক সবাইকে আবারও নাশতা নিতে বলে তিনি কারও কারও কাছে নাশতার প্লেট তুলে দিলেন৷ সবাই তখন নাশতা খাওয়া শুরু করল৷ খাওয়া-দাওয়ার শেষ পর্যায়ে রফিকুল হক বললেন, আমার একটা কথা আছে৷

উপস্থিত সবাই তখন বলে উঠলেন, জি জি বলেন৷ আপনার কী কথা?

রফিকুল হক বললেন, আমার মেয়েকে তো আপনাদের পছন্দ হয়েছে?

সবাই বললেন, জি জি৷

আমার মেয়ে সত্যিই খুব ভালো একটা মেয়ে৷ অসম্ভব গুণবতী৷ কোনো দিকে তার কোনো ত্রুটি নেই৷ কিন্তু তার একটি সমস্যা আছে৷

বশির উদ্দিন বললেন, কী সমস্যা ভাই বলেন?

রফিকুল হক বললেন, আমার মেয়ের একটি এবং একটিই সমস্যা৷ সেটা হচ্ছে, সে অন্ধ৷ চোখে দেখে না৷ ছোটোবেলা থেকেই মানে জন্মান্ধ৷ আমরা অনেক চেষ্টা করেও কিছু করতে পারিনি৷ তাই বলে আমার মেয়ে বসে থাকেনি৷ কবির একটি লাইন তার জীবন ঘুরিয়ে দিয়েছে৷ কবি বলেছেন, অন্ধ হলে কি প্রলয় বন্ধ থাকে? এটাই ছিল তার মূলমন্ত্র৷ সে নিজের চেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়েছে৷ একটা পরিবারকে সামলানোর জন্য যা যা করা দরকার তা সে নিজেই করতে পারে৷ সে চোখে দেখে না ঠিকই; কিন্তু পৃথিবীর সব আলো যেন তার পায়ের কাছে মাথা নত করে আছে৷

বসার ঘরে কত লোক! অথচ যেন পিনপতন নীরবতা৷ হঠাৎ যেন একটি শোকের ছায়া নেমে এলো৷ কারো মুখে কোনো কথা নেই৷ সবাই যেন একটা ঘোরের মধ্যে আছে৷ সেই ঘোর কাটতে না কাটতেই নাসির উদ্দিন মাথা ঘুরে পড়ে গেলো৷ তাকে নিয়ে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়লেন৷ নীতুদের বাড়িতে রান্নাবান্নার সব আয়োজন যেন জলে গেলো৷ পাত্রপক্ষ খাওয়া-দাওয়ার পর্বে না গিয়ে নাসির উদ্দিনকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন৷

৩.

নাসিরউদ্দিন সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরার পর সে তার মা-র কাছে জানতে চায়, মা, তোমরা যে পাত্রী দেখতে গেলে তার কি হলো?

কি আর হবে? আর তো কোনো কথা হয়নি!

কেন?

কীভাবে হবে? তোর যা অবস্থা হয়েছিল!

আসলে কী হয়েছিল মা?

হঠাৎ তুই মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিস? তারপর একেবারে অজ্ঞান! চোখেমুখে মাথায় পানি দিলাম৷ কিছুতেই কিছু হলো না৷ কী আর করা, হাসপাতালে নিয়ে গেলাম৷

তারপর?

তারপর আর কী? জ্ঞান ফিরল৷ ডাক্তার সাহেব বললেন, অতিরিক্ত মানসিক চাপে এমনটি হয়েছে৷

তাই?

হুম৷

মা, তোমার মেয়ে পছন্দ হয়েছে?

হয়েছে৷ কিন্তু হলে কী হবে! মেয়েটা যে দেখতে পায় না৷

তাতে সমস্যা কি?

সমস্যা কী মানে! আমরা জেনেশুনে এ রকম একটা মেয়েকে বউ করে আনবো?

মা, সে যদি তোমার মেয়ে হতো? তাহলে কি তুমি এভাবে বলতে? খারাপ লাগতো না?

ওসব কথা রাখ তো!

তার মানে ওই মেয়ের ব্যাপারে তোমার মতামত নেগেটিভ?

হ্যাঁ৷

বাবার কি মত?

তার মতও একই৷ রাজি না৷ তোর বউ জন্মান্ধ হলে সন্তানাদিও তাই হবে৷ বুঝতে পারছিস?

কেন?

কারণ জেনেটিক৷

মা, সবক্ষেত্রেই কি এটা হয়?

মা-বাবার বেশিরভাগ প্রভাব সন্তানের ওপর পড়ে৷

তাই বলে মেয়েটার বিয়ে হবে না?

হবে না কেন? নিশ্চয়ই অন্য কোনো ছেলে করবে৷

তাহলে আমি করলে সমস্যা কী?

বাবা, আমরা এই বিয়েতে রাজি না৷ তুই ভালো করে চিন্তা কর৷ শুধু আবেগ নিয়ে নয়, বাস্তবতাও তোকে ভাবতে হবে৷ বাস্তবতার নিরিখে তোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷

নাসির উদ্দিন আর কোনো কথা বলল না৷ সে তার মা-র কাছ থেকে নিজের রুমের দিকে রওয়ানা হলো৷ আনিসা বেগম ছেলের দিকে তাকিয়ে রইলেন৷

৪.

বশির উদ্দিন বাইরে থেকে বাসায় এলেন৷ তিনি বাসায় আসামাত্র নাসির উদ্দিন তার কাছে এগিয়ে যায়৷ তার কাছে জানতে চায়, বাবা, আমরা যে মেয়েটাকে দেখে এলাম তার ব্যাপারে তোমার মত কী?

বাবা, আর কী বলব বাবা? সবই তো ঠিক ছিল৷ কিন্তু…

কোনো কিন্তু নয় বাবা৷ আমি ওই মেয়েকেই বিয়ে করব৷

বলিস কি!

হ্যা বাবা৷ এটাই আমার সিদ্ধান্ত৷ তুমি মেয়ের বাবাকে জানিয়ে দাও৷

তোর মা-খালাদের মতামত নিয়েছিস?

বাবা, সংসার তো আমি করব, নাকি?

তারপরও…

বাবা, আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি৷ এ সিদ্ধান্তের কোনো নড়চড় হবে না৷ তুমি এখনই মেয়ের বাবাকে ফোন কর৷

তোর মা’র সঙ্গে কথা বলে নিই!

কথা বলতে চাইলে বলতে পারো৷ তাতে আমার সিদ্ধান্তের কোনো নড়চড় হবে না৷

বশির উদ্দিন ছেলের দিকে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলেন৷

৫.

অবশেষে নীতুর বিয়ের ফুল ফুটেছে৷ আজ নীতুর বিয়ে৷ নীতুদের বাড়িতে বিয়ের সানাই বাজছে৷ সানাইয়ের সুরে পাড়া-প্রতিবেশীরা জেগে উঠেছে৷ অনেক দিন ঝিমিয়ে থাকার পর নীতুদের পাড়ার সবাই যেন আনন্দে আত্মহারা৷ এ আনন্দ নীতুর জন্য; নীতুর বিয়ের জন্য৷ প্রতিবেশীরা যে নীতুকে এত ভালোবাসে তা সে আজ টের পেলো৷ সবার সঙ্গে নীতু আজ আনন্দের সাগরে ভাসতে শুরু করল৷

 

 

 

 

সংগ্রামী মা মাটি মানুষ পত্রিকা ২০১৬ পূজা সংখ্যায় প্রকাশিত

 

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত