| 16 এপ্রিল 2024
Categories
অনুবাদ অনুবাদিত গল্প ধারাবাহিক

মহানগরের নয়জন নিবাসী (পর্ব-২৬) । ডঃ দীপক কুমার বরকাকতী

আনুমানিক পঠনকাল: 5 মিনিট

Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.comমিজোরামের আইজল শহরের পদার্থ বিজ্ঞানের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডঃ দীপক কুমার বরকাকতী (১৯৪৮) অসমিয়া সাহিত্যের একজন সুপরিচিত এবং ব্যতিক্রমী ঔপন্যাসিক। আজ পর্যন্ত আটটি উপন্যাস এবং দুটি উপন্যাসিকা, অনেক ছোটগল্প এবং প্রবন্ধ রচনা করেছেন। তাছাড়া শিশুদের জন্য দুটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তারই ইংরেজি ভাষার একটি নতুন দিল্লির চিলড্রেন বুক ট্রাস্ট থেকে ১৯৯২ সনে প্রকাশিত হয়। দেশ-বিভাজন, প্রব্রজন, ভেরোণীয়া মাতৃত্ব (ভাড়াটে মাতৃত্ব), ধর্ম এবং সামাজিক বিবর্তন ইত্যাদি তাঁর উপন্যাসের মূল বিষয়। আলোচ্য ‘মহানগরের নয়জন নিবাসী’উপন্যাসে ১৯৩২ সনে স্টালিনের বিরুদ্ধে লেলিনগ্রাডের নয়জন টলস্টয়বাদী গান্ধিজির অহিংসা নীতির দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে করা আন্দোলনের ছবি ফুটে উঠেছে। তাঁর ইংরেজি ভাষায় অনূদিত গ্রন্থ দুটি হল From Valley to Valley (Sahitya Akademi, New Delhi, 2010) এবং The Highlanders (Blue Rose Publishers, New Delhi, 2010)। বাংলা ভাষায় অনূদিত গ্রন্থ ‘স্থানান্তর’ (অর্পিতা প্রকাশন, কলকাতা, ২০০৭)। বাসুদেব দাসের অনুবাদে ইরাবতীর পাঠকদের জন্য আজ থাকছে মহানগরের নয়জন নিবাসীর পর্ব-২৬।


পরের নয় মাসের ভেতরে নাডিয়ালিঅ’নিড এবং মিখাইলকে চারবার দেখতে পেল। ওদের আদালতে নিয়ে আসার খবর ডিমিট্রিগরিন অনেক কষ্ট করে পাভল’ভ টেলপুগ’ভের মাধ্যমে যোগাড় করে আনল। মানুষটার প্রতি ওরাপ্রত্যেকেই কৃতজ্ঞ হয়ে পড়ল।

নাডিয়া আদালতে এলে সব সময়গ্রেবিল’ভ সঙ্গে আসত। তার থাকার জন্য মারিয়াএন্টনভ’না কাছেই একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল।নাডিয়ার সঙ্গে গ্ৰেবিল’ভ ছাড়াও কখনও আসত মারিয়া বা ডিমিট্রিগরিন। প্রথম দুবার মিখাইলকে দেখার জন্যও মারিনা এসেছিল ।

বিচারালয়ে সশস্ত্র সৈনিকের বেষ্টনীর মধ্যে মাথা নিচু করে নীরবে হেঁটে যাওয়া কয়েদিদের নিয়ে যাওয়া পথটির পাশে অন্য কিছু মানুষের সঙ্গে নাডিয়া এবং সঙ্গীরা দাঁড়িয়েছিল। সৈনিকদের মধ্যে কখনও পাভল’ভ টেলপুগ’ভকেও দেখা গিয়েছিল। কিন্তু প্রতিদিন এসেছিল ঘোলা চাহনির সার্জেন্ট নিকোলাইয়াগুটকিন। সুযোগ পেলেই  সার্জেনটিবাঁ হাতে মোচে হাত বোলাচ্ছিল। টলস্টয়বাদীদের অন্যান্য বন্দিদের সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।গ্ৰেবিলভ কিন্তু বুড়ো বাবা, কুজোচমন’ভ  মুচিকে দেখতে পাচ্ছিল না। মানুষগুলির বক্তব্য অনুসারে বাবাকে হয়তোবন্দি করে আনার সময় দর্জি খুড্রিক’ভেরমতো পথেই মারা গিয়েছিল।

প্রথমবার দেখা হওয়ার সময় নাডিয়ালি’অনিড এবং মিখাইলকে প্রথমে আস্তে করে এবং পরে একটু জোরে ডেকে ওদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেষ্টা করল। তাই বারবার ডিমিট্রি, মারিয়া এবং গ্ৰেবিল’ভ আসার কথা বলল। আরক্ষীর বেষ্টনীর মধ্যে যাওয়া ওরানির্বিকার হয়ে কেবল মাথা ঘুরিয়ে তাকাল এবং একইপদক্ষেপে নীরবে এগিয়ে গেল।

ডিসেম্বর মাসে বরফ পড়তে শুরু করার সময়কয়েকবার চেষ্টা করেও সে তাদের দেখতে পেল না। পরের বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সে ওদেরদ্বিতীয়বার দেখতে পেল। তখনও বরফ পড়ে থাকা পথের পাশে নাডিয়া অন্যের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিল। বরফ পরিষ্কার করে রাখা পথের মধ্য দিয়েনির্বিকার ভাবে হেঁটে যাওয়া বন্দিদেরনিয়ে যাওয়া হয়েছিল। নাডিয়ালিঅ’নিডকে ডেকে ডেকে নিজের পেটে হাত দিয়ে বলতে লাগল–’ দেখ লিঅ’নিড, আমি তোমার সন্তানের মা হতে চলেছি। দেখ।’

নাডিয়ার মুখ দিয়ে প্রতিটি শব্দে তীব্র শীতের ভেজা  বাতাবরণে বাষ্প বের হতে শুরু হয়েছিল।

এগিয়ে যাওয়া লিঅ’নিড এবং মিখাইলেরসামান্তরালভাবে সে পথের পাশে মানুষগুলির পাশ দিয়ে দ্রুত বেগে এগিয়েগিয়েছিল। দৌড়াতে শুরু করেছিল। কথা বলতে বলতে তার দুচোখদিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছিল।

দ্বিতীয়বার লিঅ’নিডকে দেখতে পাওয়ার আগে মারিয়ার ছেলে গেভরিলের জন্ম হয়েছিল।

সেই সময় গ্রেবিল’ভ হেঁটে গিয়ে ওদের গ্রামের খবর এনেছিল। ওদের গ্রাম আর গ্রাম হয়ে থাকে নি। প্রায় ঘরগুলিই আর দাঁড়িয়ে নেই। ভেঙে দেওয়াহয়েছে। করবী আর মিনিয়নেট ফুলের মাঝে মধ্যে উড়ে বেড়ানো অরিয়ল পাখি,ওদের ঘরের সামনের ছোটো বাগানটার লেশ মাত্রও আর নেই। একেবারেই চষে ফেলা হয়েছে। খবর পেয়ে নাডিয়ার মা ভেঙ্গেপড়ল। তার দিন তিনেক পরে মাছারমানভ’নার হৃদরোগে মৃত্যু হল।

মে মাস বরফ গলে গলে বসন্তের আগমন হল। তখন পর্যন্ত বেড়ে আসা পেটটা নিয়েনাডিয়া পথের পাশে মাথায়কাপড় বেঁধে লিঅ’নিডদের জন্য অপেক্ষা করে থাকতে লাগল। তার দুই চোখ কিছুটা ভেতরে ঢুকে পড়েছিল। পেটটার সঙ্গে তার বক্ষ দুটি পরিপুষ্ট হয়ে উঠেছিল। যখন ওরা এল, তখন পিটার যেলেনক’ভ সহ প্রতিটি টলস্টয়বাদীর বয়স বেড়ে গিয়েছিল বলে তার মনে হচ্ছিল।নাডিয়া শুকনো মুখে হাসি ছড়িয়ে দেবার চেষ্টা করে পেটটাতে হাত দিয়ে লিঅ’নিডকেচিৎকার করে করে বলল –’লিঅ’নিড, তোমার সন্তান। তোমার সন্তান লিঅ’নিড।’

সে বারবার লিঅ’নিডের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেষ্টা করল। তার কন্ঠ রুদ্ধ হয়ে পড়ল।

নাডিয়াওদের সঙ্গে বেশি দূর যেতে পারল না। কিন্তু লিঅ’নিডের সঙ্গে তার ছবি আঁকা ভিক্টর একছুর্স্কি ফিরে তাকিয়ে সন্তোষের হাসি হাসল বলে তার যেন অনুভূত হল। তার শুকনো মুখে হাসি ছড়িয়েপড়েছিল। সঙ্গে সঙ্গেদুচোখে জল গড়িয়েপড়তে লাগল। সে জায়গাতেই বসে পড়ল।গ্ৰেবিল’ভ দৌড়েগিয়ে তার কাছে পৌঁছাল।

তার তিনদিন পরে ইভানের জন্ম হল।

ইভানের জন্মের দু-মাস পরে নাডিয়া এবার ডিমিট্রিগরিনকে সঙ্গে নিয়ে আদালতের চৌহদেগিয়েছিল। নিস্তেজ দেহে কাপড়দিয়েঘিরে রাখা শিশু ইভানকেলিঅ’নিডের দিকে তুলে ধরে দেখিয়ে সে বলেছিল –’লিঅ’নিড এটা তোমার ছেলে– তোমার মতো।নামইভান-লিঅ’নিড’

সে হেঁটে কিছুটা দূরে এগিয়েগিয়েছিল। নিস্তেজ বলে মনে হওয়ালিঅ’নিডের মুখটা যেন কোমল হয়ে পড়েছিল।

সেটাই ছিল ওদের শেষ দেখা।

এক মাস আগে থেকেই ডিমিট্রিগরিন কিছু ভয়ঙ্কর খবরে এনেছিল। আগের বছর অর্থাৎ ১৯৩২  সনে স্টালিনের আমলে অসন্তুষ্ট তার দ্বিতীয় পত্নী আত্মহত্যা করেছিল । এখন এই নতুন বছরে দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা আরম্ভ করায় তাঁর শাসন বড় নিষ্ঠুর হয়ে পড়েছে । কিরভক থেকে শুরু করে কয়েকজন নেতার জনপ্রিয়তা বেড়ে চলায়  প্রত্যেককে  সন্দেহের চোখে দেখছে। সত্যি বা মিথ্যা বিরোধীদেরনিষ্কাশন করে দলটিকে নিজের মতো করে শোধন করতে শুরু করেছে ।

শেষবার দেখার সময় পথের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ডিমিট্রি  গরিনের কাছে পৌঁছাতেই পাভল’ভ  টেলপুগ’ভ তার দিকে না তাকিয়ে অনুচ্চ অথচ স্পষ্ট কন্ঠে বলতে লাগল–’ সময় খুব খারাপ হয়েছে। আমাকে হয়তো এখানে রাখবে না। তুমিও সাবধানে থেকো।’

ডিমিট্রিগরিন পথের পাশে মানুষের মধ্য দিয়েএগিয়ে যেতে চেষ্টা করল, পাভল’ভ টেলপুগ’ভের সঙ্গে কথা বলার জন্য নয়, কথা শোনার জন্য। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে দূরে আসতে থাকা নিকোলাইয়াগুটকিনের হুংকারে পথের পাশে মানুষগুলির মধ্যে ঠেলা ধাক্কা হওয়ায়ডিমিট্রি  গরিনের পথ রুদ্ধ হয়ে পড়ল।

দুই সপ্তাহ পরে ডিমিট্রিগরিন গুপ্ত খবর নিয়ে এল– পাভল’ভ টেলপুগ’ভকে শাস্তি প্রদান করে ভয়াবহ শীতে কাজ করা বন্দি এবং দাস শ্রমিকদের তদারক করার জন্য শ্বেত সাগরে বদলি করেছে।

ডিমিট্রিগরিনকে খবর দেওয়া মানুষ আর কেউ রইল না । লিঅ’নিডদের আর কেউ দেখতে পেল না । 

তিন মাস পরে ডিমিট্রিগরিনদেন্রদরজায় মধ্যরাতে একটি রহস্যময় টোকা পড়ল। দরজা খুলতেই মানুষটা যে পোশাকে ছিল সেভাবেই সশস্ত্র লোক ধরে বাইরের শীতের মধ্য দিয়ে কোনো অজ্ঞাত স্থানে ডিমিট্রিগরিনকেনিয়ে গেল।


আরো পড়ুন: মহানগরের নয়জন নিবাসী (পর্ব-২৫) । ডঃ দীপক কুমার বরকাকতী


নাডিয়াইভানকে কোলে নিয়ে মাঝে মধ্যে আদালতে গিয়েছিল। আদালতে নতুন নতুন মানুষ আনা হয়েছিল। সেইসবের মধ্যে দাড়িওয়ালা ধর্ম যাজক, ভালো সাজ পোশাক পরা সম্ভ্রান্ত মানুষ, মলিন হয়ে পড়া ভালো পোশাকের কুলাক এবং চিন্তাশীল ব্যক্তি বলে মনে হওয়াবন্দিও দেখা গিয়েছিল।বিচারপ্রক্রিয়া আগের মতোধীরগতিতে চলছিল না। আদালতে উপস্থিত হলেই কিছুক্ষণের মধ্যে রায়দান হয়ে যেত।

প্রথম অবস্থায় নাডিয়ার সঙ্গে গিয়েছিলমারিয়া এবং গ্রেভিল’ভ। শেষের দিকে বিমর্ষ হয়ে পড়ায়মারিয়া যাওয়াটা বন্ধ করেছিল। কেননা সে শুনতে পেয়েছিল কিছু নিষ্ঠাবানদলীয় কর্মীকেও নাকি সরকার বন্দি করে বিচার করতে শুরু করেছে।

নাডিয়ালিঅ’নিডদের বিচারের কথা কিছুই জানতে পারল না। বিচারালয়ে ‘লিঅ’নিড এডলার এবং অন্যান্য’ নামের কেসটা ৫৩২১২ নাম্বারদিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছিল। বিচার প্রক্রিয়ায়’ লেনিন গ্ৰাডেরনজন নিবাসী’ যে বিচারালয়ে থাকা সবাইকে অবাক করে মুক্তভাবে নিজের নিজের কথা বলে গিয়েছিল সেই কথাও নাডিয়া জানতে পারল না। পিটার যেলেনক’ভ মহাশয়টলস্টয়বাদের কথা বলেছিলেন। বাইবেল গ্রন্থে সেন্ট ম্যাথিওর পাপ কাজ রোধ করার জন্য প্রয়োজনীয়নিষ্ক্রিয় প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে গান্ধীপন্থা অবলম্বন করার কথা বলেছিলেন। ভিক্টর একছুর্স্কিটলস্টয়বাদের প্রেম-ভালোবাসাই যে জীবনের নীতি সে কথা বলে দেশে সামরিক শক্তির অপ্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন ।লিঅ’নিড এডলার টলস্টয়বাদের প্রেম ভালোবাসার জন্য টলস্টয়বাদী রূপে যোগদান করার কথা উদাত্ত কণ্ঠে বলে গান্ধীর অহিংস আন্দোলনে দেশে চলতে থাকা হিংসা দমন করার প্রচেষ্টার কথা বলেছিল। মিখাইল ভেসিলিয়েভ হিংসার বিরোধ করার জন্য গান্ধীপন্থাজনপ্রিয় করে তোলার প্রয়াসের কথা বলেছিল।ভলক’ভ রিয়াজনভ এবং ভ্লাডিমিরভেলিস্কওটলস্টয়বাদী রূপে গান্ধীর অহিংস আন্দোলনে বিশ্বাসী বলে দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছিল। য়ুরিফমিচেভ,শ্বিগানঝুছুপ’ভ এবং নিকোলাইচের্নভেও যে টলস্টয়বাদে আস্থা রেখে  নিজের নিজের জায়গাতেও অহিংস আন্দোলন করার প্রয়াস  করেছিল সে কথা না লুকিয়েঘোষনাকরেছিল।বাইরে থেকে এসে লেলিনগ্রাডের কলা- কৃষ্টি- সংস্কৃতির ঐতিহ্যে আকৃষ্ট হয়ে মহানগরটির নিবাসী হয়ে পড়া এই মানুষগুলির মুখে কোনো অনুশোচনার চিহ্ন ছিল না।

স্টালিনের বিশাল ছবির নিচে বসে থাকা বিচারপতি কয়েকদিনের বিচার প্রক্রিয়ার শেষে রায়দান লিপিবদ্ধ করতে লাগলেন । নাডিয়া সেই রায়দানের কোনো হদিশই পেল না।

নাডিয়া কিন্তু তিন বছরের মতো মাঝে মধ্যে গ্রেবিলভের সঙ্গে আদালতে যেতেই  থাকল। তার আশা ছিল হাসতে পারা,কাঁদতে পারা, দৌড়াতে পারা, সঙ্গে ইতিমধ্যে কথা বলতে পারা ইভানকেহয়তো সে লিঅ’নিডকে দেখাতে পারবে। কিন্তু সে পারল না। দেশের পরিস্থিতি খারাপ হল।১৯৩৪ সনের পহেলা ডিসেম্বর লেনিনগ্রাডের কমিউনিস্ট দলের মুখ্য ব্যক্তি এবং স্টলিনের  পরে দ্বিতীয় নেতা সার্গেমির’নভিছকিরভককে হত্যা করা হল। স্টালিন মৃতদেহেচুমুখেয়ে শোক প্রকাশ করল যদিও অনেকেই বুঝতে পারল যে স্টালিন নিজেকে নিষ্কন্টক করার এটাই হল শুরু। তার পরের বছর বহু পুরোনোনিষ্ঠাবানবলশেভিক কর্মী কামেনেভ এবং যিন’ভিয়েভকে সহ অনেককেই  বিচারের সামনে দাঁড় করিয়ে কারাগারে পাঠাল এবং তার পরের বছর –১৯৩৬ সনে পুনরায় বিচার করে অন্য চৌদ্দ জন আত্মত্যাগী রাজনৈতিক কর্মীর সঙ্গে তারা দুজনকেই ফায়ারিংস্কোয়াডের সামনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করল।

ইতিমধ্যে নাডিয়া খবর পেল টলস্টয়বাদের প্রথম প্রচারক ভ্লাডিমিরছের্টক’ভেরও সেই বছরেই মৃত্যু হয়েছে।

হতাশাগ্রস্ত হয়ে একদিন নাডিয়ামারিয়াকে বলল — তুই আমার অনেক উপকার করেছিস আর আমি তোকে কেবল বিরক্ত করেছি, দুঃখ যন্ত্রণা দিয়েছি। ডিমিট্রিগরিনকেও আমাদের জন্যই হারাতে হল। আমি আর তোর বোঝা হয়ে থাকতে চাই না।য়াকুরিমগ্ৰামে ফিরে যাব ভাবছি।’

মারিয়াগেভরিয়েলকে কোল থেকে নামিয়ে রেখে নাডিয়াকে ধরে কাঁদতে শুরু করল।–’ আমি আর কী বলব নাডুছা? আবশ্যক হলেই আসবি।’

নাডিয়াগ্ৰেবিলভকে  বলল– তুই আমাদের সঙ্গে গ্রামে যাবি গ্ৰেবিলভ?’

‘কেন যাব না নাডিয়া?আমি তোমাকে দুঃখের মধ্যে কখনও একা থাকতে দেব না।’

ইভানকে কোলে নিয়েনাডিয়া ভারী জুতো পরে  থাকা সাধারণ যুবক গ্ৰেবিল’ভের দিকে তাকিয়েরইল ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত