| 19 এপ্রিল 2024
Categories
খবরিয়া

নারায়ণগঞ্জে নামাজের সময় মসজিদে এসি বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৩৭

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি মসজিদের আধা ডজন শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ‘একসঙ্গে বিস্ফোরিত হয়ে’ অর্ধশতধিক মানুষ আহত বা দগ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার রাতে এশার নামাজের পরপর সদর উপজেলার পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে বলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম জানান।
 
তিনি বলেন, রাতে এশার ফরজ নামাজের পর অনেকে সুন্নত নামাজ পড়ছিলেন, তখনই বিকট শব্দে ওই মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটে।
 
দগ্ধদের মধ্যে ৩৭ জনকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। বাইতুস সালাত জামে মসজিদের ইমাম আবদুল মালেক (৬০) এবং মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেনও (৫০) আছেন ওই ৩৭ জনের মধ্যে।
 
ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ভর্তি হওয়া প্রায় সবার অবস্থাই ‘আশঙ্কাজনক’।
 
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে শুক্রবার রাতে এশার নামাজের পর এসি বিস্ফোরিত হয়ে অন্তত ৪০ জন দগ্ধ হয়েছেন।নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে শুক্রবার রাতে এশার নামাজের পর এসি বিস্ফোরিত হয়ে অন্তত ৪০ জন দগ্ধ হয়েছেন। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ফতুল্লা থানার পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় মসজিদের ভেতরে অর্ধশতাধিক লোক নামাজ পড়ছিলেন।
“এর মধ্যে হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণ ঘটলে ভেতরে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। বিস্ফোরণের ধাক্কায় মসজিদের থাই গ্লাস উড়ে গিয়ে পড়ে। ভেতরে যারা ছিলেন, প্রায় সবাই কমবেশি দগ্ধ হয়েছেন। মসজিদ থেকে বেরিয়ে এসে বহু মানুষ রাস্তায় জমে থাকা পানিতে গড়াগড়ি খাচ্ছিলেন গায়ের আগুন নেভানোর জন্য।”
 
রাত পৌনে ৯টার দিকে ওই মসজিদে আগুন লাগার খবর পাওয়ার কথা জানিয়ে ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা কামরুল আহসান বলেন, তাদের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
 
ফায়ার বিগ্রেডের উপ পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন বলেন, “দেড় টনের ৬টি এসি ছিল। সবগুলো একসাথে বিস্ফোরিত হয়েছে। এসিতে ব্যবহৃত ফ্রেয়ন গ্যাসের অস্থিত্ব আমরা মসজিদের ভেতরে বাতাসে পেয়েছি। এর পেছনে অন্য কোনো ঘটনা আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
 
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে বলে জনান তিনি।
 
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে শুক্রবার রাতে এশার নামাজের পর এসি বিস্ফোরিত হয়ে আহতদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে শুক্রবার রাতে এশার নামাজের পর এসি বিস্ফোরিত হয়ে আহতদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নেভানোর পর সেখানে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদের নিচতলার এসিগুলো যেন পুড়ে, গলে গেছে। সবগুলো জানালার কাচ উড়ে গেছে, কোনো কোনো জানালা ফ্রেমসহ উপড়ে গেছে দেয়াল থেকে। ফ্যান, বিদ্যুতের তার ও প্যানেল বোর্ডও দেখা গেছে পোড়া অবস্থায়।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু হোসেন জানান, বিস্ফোরণের পর ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বহু মানুষ সেখানে ভিড় করেন কী হয়েছে বোঝার জন্য।
 
মোহাম্মদ রনি নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, তিনি মসজিদের বাইরে বহু মানুষকে গড়াগড়ি খেতে দেখেছেন, তাদের শরীর ছিল পোড়া। স্থানীয় বাসিন্দারা এবং ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তাদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
 
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন এবং পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমসহ র‌্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
 
ওই মসজিদের কাছাকাছি বাসা, এরকম বেশ কয়েকজন অভিযোগ করেছেন, ওই এলাকায় তিতাসের গ্যাসের পাইপে ‘লিকেজ’ ছিল বহু দিন ধরে। মসজিদের ভেতরে গ্যাস জমে কোনোভাবে কিছু ঘটেছে কি না, সেই সন্দেহের কথা বলেন তারা।
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আরেফিন বলেন, “ওই মসজিদের সামনে তিতাস গ্যাসের লাইনে লিকেজ আছে, এটা আমরাও দেখেছি। আসলে কী ঘটেছে, সেটা তদন্ত করে তারপর বলা যাবে।”

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত