তিনটি কুর্তা আর একটি সাইকেল

Reading Time: 2 minutes

আইআইটি দিল্লি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং‌ ডিগ্রি, হিউস্টন থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি ও পিএইচডি রয়েছে তাঁর। তবু আইআইটির প্রাক্তন অধ্যাপক অলোক সাগরের কাছে এসবই ছিল শুধুমাত্র জীবনের প্রথম কিছু ধাপ। তিনটি কুর্তা আর একটি সাইকেল— এটাই হল অলোক সাগরের এখনকার সংসার। গত ৩২ বছর ধরে তিনি রয়েছেন মধ্যপ্রদেশের প্রত্যন্ত এক আদিবাসী গ্রামে, সেখানকার মানুষের সেবা করার জন্য।

আইআইটি দিল্লিতে পড়ানোর সময় তাঁর হাতে তৈরি হয়েছে বহু পড়ুয়া। ভারতীয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনও ছিলেন তাঁর ছাত্র। একসময় সেসব ছেড়ে দিয়ে তিনি চলে যান মধ্যপ্রদেশের বেতুল ও হোশাংগাবাদ জেলার আদিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করতে। বহু বছর ধরে তাঁর ঠিকানা কোচামু নামে এক প্রত্যন্ত গ্রাম। ৭৫০ আদিবাসী পরিবারের বাসস্থান সেই গ্রামে। নেই বিদ্যুৎ বা পাকা রাস্তা। সম্বল শুধু একটি মাত্র প্রাইমারি স্কুল।

ওই এলাকায় ৫০,০০০-এরও বেশি গাছ লাগিয়েছেন অলোক। সাইকেলে চেপে গ্রামবাসীদের কাছে শিক্ষার আলোর পাশাপাশি গাছের বীজও পৌঁছে দেন তিনি।


আলোক সাগর

একবার ভোটের সময়ে স্থানীয় প্রশাসন অলোক সাগরকে এলাকা ছাড়তে বলেছিল। কারণ, নগ্নগাত্র-কটিমাত্র বস্ত্রাবৃত অলোক সাগর ভোটে কোনও গোলমাল বাধাতে পারেন। যদিও, প্রশাসন তখনও জানত না অলোক সাগরের আসল পরিচয়। অথচ অলোক ওই এলাকায় ৩২ বছর ধরে বসবাস করছেন।
শেষমেশ নিজের অ্যাকাডেমিক কেরিয়ার আর সার্টিফিকেটগুলোকে প্রশাসনের কর্তাদের সামনে মেলে ধরেছিলেন অলোক সাগর। চক্ষু চড়কগাছ হয়েছিল প্রশাসনিক কর্তাদের। কারণ, অলোক সাগরের সেই সার্টিফিকেটের মধ্যে ছিল আইআইটি দিল্লি স্নাতকোত্তর থেকে শুরু করে হিউস্টনের পিএইচডি। এমনই আরও সব প্রশংসাপত্র। কিন্তু, মধ্যপ্রদেশের এই প্রত্যন্ত পাহাড়ি অঞ্চলে অলোকের মতো কৃতী কী করছেন? প্রশ্নটা করেই ফেলেছিলেন প্রশাসনের এক কর্তা।

অলোক জানিয়েছিলেন, এই অঞ্চলে থাকা আদিবাসীদের জন্য বুনিয়াদি অর্থনীতি তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন। কারণ তিনি মনে করেন, যদি কিছু পাল্টাতে হয় তাহলে একদম ‘গ্রাসরুট’ থেকে কাজ করা প্রয়োজন। আর তিনি সেটাই করছেন বলে জানান অলোক।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>