অনিন্দিতা গুপ্ত রায়ের একগুচ্ছ কবিতা

Reading Time: 2 minutes

আজ ৮ মে কবি অনিন্দিতা গুপ্ত রায়ের জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার তাঁকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।


ফেয়ারওয়েল

না থাকার ভেতর রঙ ঝরাতে থাকা সেই যে পাথর

যাকে বাঁধ দিয়ে একপাহাড় আলো

আর আমরা মরে যাচ্ছিলাম

স্পর্শহীন, চুম্বনহীন

আয়নার ভেতর থেকে একেকটা চিহ্ন বেড়িয়ে এসে

ক্রমশই আকর্ষের অন্তরঙ্গ প্যাঁচে জ্যামিতিক

উপড়ে ওঠা এই চোখ

পায়ের পাতার পাশে নামিয়ে রেখেছি

বহুদূর পর্যন্ত বাতাস নোনতা হয়ে আছে

বিদায়দৃশ্যের শেষটায়

 

রোববার

কতটা সংশয়পথ উপচে উঠেছে ক্ষেত্রফল

বারুদের শিকড়বাকড়

মানুষের মত নামধারী কিছুটা গোপন, তাহাদের তফাতেরা

নিজের শরীর থেকে কাঁটাফুল ছাড়ানোর খেলায় আদিম

তার খুব কাছ দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনায়

এতদিনে বালি বালি অসহজ নীল

সম্ভাবনা নস্যাৎ করে জল

গড়ানের দিক থেকে উত্তলে

মাটির খনিজ থেকে মায়া এসে দুহাতে সরলরেখা

পাখিদের খুঁজে আনে ডানাদের নিরাময়ে

একেকটা রোববার এরকমই আলোর উড়ান

 

প্রত্যাখ্যান, একটি শব্দভার  

সেই অব্যর্থ লালশাকের মত সমস্ত সাদাগুলো রঙীন করে দাও। সামান্য আয়োজন সুস্বাদু করে তোল স্পর্শে। শুধু লবণ বেশি হয়ে গেলে কোরকেরা গ্রহণ করেনা—সেকথা চোখ থেকে নেমে আসা জল জেনেছিল।

 

আততায়ী
নিরুত্তরের দিকে একতরফা স্তব্ধতা। কতদূর এরকম ধোঁয়া হয়ে থাকতে পারি…প্রচ্ছদচিহ্নে। ভাবো এই জরুরি স্পেস্‌ ছাড়া আর কিছুমাত্র নই। মাত্রা যতি খুলে খুলে হামাগুড়ি দিয়ে এগোচ্ছে চিহ্ন। হাতআয়না জুড়ে চোখহীন কোটরকাহিনী। লাফ থেকে ছড়িয়ে পড়ছে উচ্চতা, হালকা একেকটা ধাক্কা। ভার্টিগো রাখছে গাছের আলতোয় শরীর, আলুলায়িত। হাতছানির কাছাকাছি ঘুরেফিরে শীতকাল, লঘু চালে। অথচ ভারি হয়ে ওঠা চশমার কাচ থেকে বাস্পবিতান। মৃত্যুসম্ভাবনার কথা কেউ ঘোষণা করেনি, এইমাত্র।

ডিসেম্বর
এক ফালি ডিসেম্বর
হাত বেয়ে নামছে, পারদস্তম্ভে
গাঢ় রঙ উপ্‌চানো থেকে পালক ভিজানো
শরীরের কুয়াশামহল
পাকদন্ডী টপকানোর গল্প খুঁজতে বেড়োয়
যেভাবে আলো
পিছন থেকে ডাকে, পিছনের দিকে
ভ্রমের অসুখে হাত রেখে
সেইসব সিঁড়িদের আলগোছে
নিরম্বু সারাদিন
রাতের তরলে ভিজে
একা একা মরে যেতে চাওয়া
অনেকদূর অবধি শিশির হয়ে আছে শহর, অস্পৃষ্ট
দ্রবণের স্বচ্ছতায়
নাছোড় বালিকণা — না ডুবি, না ভাসি
বিরল স্মৃতির পাশে হাঁটুমুড়ে কফিকাপ, পুরোনো কলম

দৃষ্টি
অনেকদূর অবধি শূন্য এঁকে
মাঝামাঝি থেমে থাকা রেখাগুলো
সারাদিন ধরে আত্মরক্ষার গল্প মেলে রাখে
তার নাম রাখি বৃত্ত
তার দশ দিক ঘিরে সুঁড়িপথের চলন
পাপড়ি খুলে খুলে
ইশারা ও ইঙ্গিত টুকে নেয়
সিঁড়িহীন একটা উত্তলের পিছলে
মায়োপিয়া জমে
কিছুটা ভেজা ভেজা দুপুরের
কেন্দ্র লক্ষ্য করে হাওয়া
আর হাওয়া ফাটিয়ে রঙ উড়ে গেলেও
সেইই সাদা; মানে না থাকা
যা চোখে দেখোনি তাকে তো না- ই বলবে

 

 

 

 

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>