| 29 মার্চ 2024
Categories
কবিতা সাহিত্য

আনন্দময়ী মজুমদারের কবিতা

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট

নিরাময়


নিরাময়ের বাগানে শিকড় থাকে। জন্মরাতে থাকে তার অনুল্লেখ পাঠ। প্রথম লাইব্রেরি। আমরা না পড়েও সব পড়ি। লাইব্রেরির প্রান্তে ফুটে থাকে নানা রং বিস্মরণ আর ছিন্নমস্তা ফুল।

সবার মতন, কর্তিত করতল আমরাও তাই সঙ্গে এনেছি অজানিত। কপালের টিপে, সিঁথির জ্যোৎস্নায় আর মেঘমল্লারে ফুটে থাকে আমাদের গায়ে সেই লাল। ক্ষতরস আমরা সুর বানিয়ে গাই, বইয়ে গুঁজে রাখি, খাই, কাকচক্ষু জলে ছেড়ে দিই টর্পেডো মাছ আর গোড়ালি ডুবিয়ে বসে থাকি। কেউ বলে না কোথায় সুদর্শন ঘ্রাণ চাপা পড়ে গেছে।

একদিন শাপগ্রস্ত আমাদের ঘরে এসে পড়ে তির। শব্দভেদ করতে গিয়ে চিনেছি বিদ্যুৎ। আমরা পাড় ভেঙে উঠে বিদ্যুতের চোখে চোখ রেখে অন্ধ নামি শতরঞ্চ খেলায়।

নশ্বর এপিটাফ বরফ জমা ছিল। গলে পড়ে জল শিরার ভিতর। আমরা কি এইভাবে দম নেব? এই কি সেই নদীর কিনার? শুরুর ভুবন? এভাবেই ঈশ্বর চাবি খুলে দেন? দেখতে দেন হরেক এলবাম, প্রিয়তম ঘাস, স্নেহের বাগান? চুলের মুঠি নাড়িয়ে ডাকেন? তার ছায়াপথ নদী ঘুরে আসা আমরা হই শব্দহীন চিলের চিৎকার।

 

 

 


নরাশ্ব


পেরিয়ে যাই শেষ অরণ্য।
বেগুনি পাতা যথা
উড়ে যেতে দেয় নাই
পৃথিবীর বিহ্বল হাত।

দেহ থেকে উদ্গত লাল
চোখে নামে সন্ধ্যার হাওয়া।
আন্দোলিত হয় শিকড়
স্নায়ুফল আর মাটির নক্ষত্ররা।
দেহ থেকে জরায়ু ঈথারে
ছড়িয়ে পড়ে মানবিক ছত্রাক
শব্দমায়া ওম।

আমি তো মৃত্যুর বোন
সঙ্গে নিয়ে নিরাময় চূড়া
করোটি বাগান
তীরের জ্যামিতি
মাটির সুতোয় বাঁধা
সরোবর চোখ।

আগুন এঁকে দিয়েছে
আমার রক্তগন্ডী।
আমার বুকে বিঁধে আছে
সাহসের শর, সেখানে শিশুর
কণ্ঠ পাই।
সেইসব অনুপান রাত
আমার ঘুম
পরিশ্রুত রাখে।

 

 


সুচেতনা


শব্দের পেছনে কোনো শব্দ নেই।
ঢেউয়ের পেছনে নেই কোনো ঢেউ।
এক অদৃশ্য শামুকে আমাদের সব সিন্দুক।
প্রশ্নের ঘরে আমরা খুঁজেছি পেয় জল।
কলস ভরে রেখেছে বৃক্ষ, মানুষ কি বৃক্ষের নাম?
মানুষ যে কলস রেখেছে তাকে কেউ সুচেতনা বলে।
সব অনুসারী রাহায় হটে যায়।
ঘাটবাঁধা নদী সে রাহা অবিশ্বাস করে।
শত্রু এখানে হারায়েছে অধ্যবসায়।
এই জল আমাদের তুলে আনে পিপাসার কূপ
থেকে আরেক তৃষ্ণায়।
একাকীর ঘর থেকে তরল একায়।
এই জল আমাদের বেড়ে দেয় রাত আর দিন,
মায়া করে, পালক আগলায়।
নদীময় দ্রাব্যতা এঁকে, খুলে সে দেখায়
অভিমু্‌খ, শাপগ্রস্ত রাত ব্যতিরেকে।

 

 

 

 

 

 

 

One thought on “আনন্দময়ী মজুমদারের কবিতা

  1. দিদির কবিতা পড়লাম। সব যে সঠিক বুঝেছি তা দাবী করবোনা, তবে রসাস্বাদন করতে পেরেছি অবশ্যই। শুভেচ্ছা রইলো আনন্দ দিদির জন্যে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত