| 28 মার্চ 2024
Categories
প্রবন্ধ সাহিত্য

ট্র্যাজিক ফ্যাতাড়ু, ম্যাজিক ফ্যাতাড়ু | নবারুণ ভট্টাচার্য

আনুমানিক পঠনকাল: 6 মিনিট

 

 

নানা টাইপের গলতাবাজি, জালি ও খজড়ামির যে ননস্টপ হর্রা চলেছে তার মধ্যে ঘ্যাম ঘ্যাম সব পাবলিক যখন ল্যাঙট পরে আখড়ায় নেমে পড়েছে তখন সোশ্যাল ল্যাডারের তলায় যারা কেঁচো-কেন্নোর মতো থাকে তারা জাঁদরেল স্নেকদের দেখাদেখি যে নিজেরাও নানা রকম ধান্দার মতলবে মশগুল হয়ে উঠবে, সেটা বলাই বাহুল্য৷ খেলাটার নাম যে সাপ-লুডো সেটা সবাই জেনে ফেলেছে৷ মই ধরতে পারলে তো কথাই নেই৷ সাপ হলেও চলবে৷ এই টাইমটার স্লোগান হল- গপাগপ্, ঘপাঘপ্৷ এই ফলারের লোভ ও খিদে যে আমাদের অতিপরিচিত ডি এস-কেও তাতিয়ে তুলবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই৷ আমাদের চেনা অন্য দু’জন ফ্যাতাড়ুর মধ্যে মদন ও পুরন্দর, সম্পূর্ণ অন্য কারণে এই ঝাঁকের কই হয়নি৷ পুরন্দর ভাট, একে ব্যর্থ কবি, তায় আবার এক্স-হাফ-নকশাল৷ সে এ সব নিয়ে মটকা ঘামায় না৷ ওদের লিডার মদন সবিশেষ বিচারবুদ্ধি ধরে এবং ভালো করেই জানে যে চার দিকে গজিয়ে ওঠা গ্যাঁজলা দেখে ব্রয়লারের দলে ভিড়ে গেলে কেব্ল ফল্ট ছাড়া কিছুই ভাগ্যে জুটবে না৷ প্লাস বেশি তেড়িবেড়ি করলে অতীব ক্ষমতাধর ফ্যাতাড়ু কমিউনিটি থেকে কাচি হয়ে ছাঁটমাল বনে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা এবং সেটা হলে আম, ছালা, হাঁড়ি, তবিল- সবই ভোগে চলে যাবে৷ পুরন্দরের একটি রিসেন্ট কাব্যপ্রয়াসে এই ব্যাপারটাই মোলায়েম ও মোক্ষম স্টাইলে পাকড়াও হয়েছে৷ ‘চারিধারে ঠগ ও ছেনাল বুনিয়াছে শত মায়াজাল৷ ভিড়েছো কি তলাবে সদলে বরং বাঁচিতে যদি চাও ভুলে যাও ধান্দার ভাও ছিপে ছিপে টেনে যাও মাল ধিকিধিকি ঠুকে যাও তাল ভুলিও না বঙ্গবীর-বঙ্গবীরাঙ্গণা চারিধারে ঠগ ও ছেনাল বুনিতেছে শত মায়াজাল৷’ প্ল্যানটা আগেই ছকা ছিল৷ ডি এস-এর বউ ছেলেকে নিয়ে বর্ধমানে বাপের বাড়ি৷ মদন আর পুরন্দর সকাল সকাল ডি এস-এর বাড়ি পৌঁছে যাবে৷ তার পর দিনভর খানাপিনা মৌজমস্তি হবে৷ ফ্যাতাড়ুদের যেমন হামেশাই হয়ে থাকে৷ হাঁটতে হাঁটতে পুরন্দর বলল- – একটা খবর তোমায় দিয়ে রাখি মদনদা৷ আমাদের পাড়ায় নাড়ু নামে একটা পাতাখোর টাইপের পাবলিক আচে, বুজলে? সারা দিন স্টুডিও পাড়ায় ঘুরঘুর করে৷ দু-একটা ফিল্মে ক্রাউড সিনে নেমেওচে৷ ও-ই বলছিল কতাটা৷ – কী? – ওই যে চিটফান্ডগুলো কেলিয়ে পড়েচে, সেই কারণে চল্লিশটার বেশি ছবি নাকি মায়ের ভোগে৷ একেবারে কান্নাকাটি পড়ে গেচে৷ – জোচ্চোরের বাড়ি ফলার খেতে গেলে এ রকমই হবে৷ – এক-এক সময় ভাবি মদনদা, ভুক্কাড় হলেও আমরা কিন্ত্ত ভালোই আচি৷ খাচ্চি কম, কিন্ত্ত কাউকে শালা ঠকাচ্চি না, কারও ভাত মারচি না৷ – সেই তো৷ ফ্যাতাড়ুরা কোনও জালির মধ্যে নেই৷ অথচ চাইলে আমরা লাখ লাখ টাকা হাতাতে পারি৷ ওভারনাইট৷ – কী ভাবে? – ভেরি ইজি৷ উড়ে উড়ে যাব৷ বড়ো বড়ো ফ্ল্যাটবাড়ির টঙে সব কোটিপতি থাকে৷ হয়তো মাল-ফাল খেয়ে নোট গুনতে গুনতে ঘুমিয়েই পড়ল৷ প্লাস হিরে, সোনা- গয়নার বাক্স৷ সব হাতাতে পারলে এক রাত্তিরেই শালা রাজা৷ কিন্ত্ত করব না৷ – ফ্যাতাড়ুরা কি কিচুই ঝাড়ে না? – ওই টুকটাক, চপ-ফপ, দু-চারটে ভালো মালের বোতল, তা-ও ভেরি রেয়ার৷ মনে রাকবে, আমাদের আসলি কাজটা হল মালদারদের লাইফটা ক্যাঁচড়া করে ঘেঁটে দেওয়া৷ ঘেঁটে দাও, দিয়ে কেটে পড়৷ ড্যামেজ, ড্যামেজ৷ – আচ্ছা ডি এস-এর কী হয়েচে বলতো? – কেন? – সব সময় একটা মনমরা মনমরা ভাব৷ কাউকে আওয়াজ দিচ্চে না৷ হুলিয়া পাকাচ্চে না৷ সুইসাইড-ফুইসাইড না করে বসে৷ ডিপ্রেশন হলে লোকে আজকাল বেমক্কা ঝুলে পড়চে বা নিট ফলিডল মেরে দিচ্চে৷ – ও সব ভেব না৷ ডি এস যা তেঁটিয়া মাল! ও করবে সুইসাইড? পেঁয়াজ, তার পর গিয়ে তরকারিপাতির দামটা একটু পড়তে দাও৷ দেকবে মাল ফের খোলতাই হয়ে উটবে৷ তবু আমাদের উচিত ও ম্যাদা মেরে যাচ্চে দেকলেই একটু বুস্টার দিয়ে দেওয়া৷ এই বাংলা বাজারে কখন যে কী হয় কিছুই বলা যায় না৷ কেউ জানত সারদা বা রোজ ভ্যালি দাঁত কেলিয়ে চিতপটাং হয়ে যাবে? ও সব গলতায় আবার মালকড়ি রাখোনি তো? – খেপেচ! ঘর ভাড়া গুনতেই পাইন ফেটে দরজা হয়ে যাচ্চে৷ – তা যা বলেচ৷ – কী হবে বলো তো? – দ্যাকো ভায়া, তোমরা তো আবার কলি-ফলি মানো না৷ এ তো পহেলা ঝাঁকি হ্যায়, কাশী মথুরা বাকি হ্যায়৷ ঘুঘুচক্করের খেলা আরও জমবে৷ পুজোটা ভালোয় ভালোয় কাটলে হয়৷ ডি এস-এর একতলা বাড়ির দরজায় পৌঁছে মদন আর পুরন্দর তাজ্জব হলে গেল৷ নড়বড়ে দরজার উপরে গজাল দিয়ে একটা কালো টিন লাগানো যেটা কস্মিনকালেও ছিল না৷ তার উপরে ত্যাড়াব্যাঁকা করে হলদে রং দিয়ে লেখা, ‘জগদম্বা স্পোর্টিং ক্লাব’ দরজার ও পারে বিকট জোরে এফ এম-এ রেডিও মির্চি বাজছে৷ তত্‍সহ নাক ডাকার আওয়াজ৷ দরজাটা ঠেলতেই ক্যাঁ করে শব্দ করে খুলে গেল৷ ঘরে বাল্ব জ্বলছে৷ ডি এস, সবুজ আবীর মাখা, লুঙ্গি পরে নাক ডাকিয়ে ঘুমোচ্ছে৷ ভাঙাচোরা একটা রেডিও তারস্বরে বেজে চলেছে৷ ঘরের কোণে তড়কার ভাঁড়৷ আধখাওয়া রুটির টুকরো৷ খালি পাঁইটের বোতল৷ শালপাতা৷ বিস্তর পিঁপড়ে৷ ডি এস ঘুমের মধ্যেই কুঁচকি চুলকোল৷ তার পর আঁউ আঁউ করে কী সব বিড়বিড় করতে লাগল৷ মুখে আলতো হাসি৷ পুরন্দর বলল- – ডিলিরিয়াম হচ্চে৷ – হওয়াচ্চি ডিলিরিয়াম৷ এক টুকরো কাগজ পাকিয়ে ডি এস-এর নাকে সুড়সুড়ি দিল মদন৷ খিক খিক করে হেসে উঠে ডি এস-এর ঘুমটা ভেঙে গেল৷ ধড়মড়িয়ে উঠে বসল৷ – অ্যাঁঃ কে? কে? – কে এ বার ভালো করে বুজবে৷ অলরেডি তো একটা পাঁইট সাঁটিয়ে দিয়েচ৷ – না, না, অল্প একটু ছিল৷ সকালে মেরে দিলুম৷ – তা এখন তা হলে আর খাবে না! – খাব না মানে? এখন তো বেশি করে খাব৷ ছ’লাখ টাকার মালিকরা সকাল থেকে মাল খায়৷ অবশ্য তোমাদের মতো ফালতু লোম্বা এ সব জানবে কী করে? – ছ’লাখ টাকা কার? – কার আবার? আমার৷ – মানে সিক্স লাখস? – ইয়েস৷ – ব্যাঙ্ক ডাকাতদের দলে ভিড়েচ নাকি? – নো৷ – তবে? – ন্যায়্য পথে ছ’লাখ টাকা কামিয়ে ফেলেচি বলতে পার৷ যদিও হাতে আসেনি৷ – বুজলাম না! – রোসো৷ মুতে এসে বুজিয়ে দিচ্চি৷ – যাও৷ পুরন্দর ঘাবড়ে গিয়েছে৷ – ব্যাটা নিঘ্ঘাত্‍ লটারি-ফটারি মেরে দিয়েচে৷ – ওকে তো জন্মেও লটারির টিকিট কাটতে দেকিনি! – তবে যে ভাবে বলচে মনে হচ্চে কিচু একটা হয়েচে৷ কারণ পাঁচও নয়, সাতও নয়, বলচে ছয়৷ হোয়াই? – আসুক৷ বের কচ্চি৷ ডি এস ফিরে এল৷ এসে লুঙ্গির গিঁটটা শক্ত করে বাঁধতে বাঁধতে বলল- – ন্যানো গাড়িটাই নিয়ে নেব৷ বুজলে৷ বিলিতি মাল ছাড়া খাব না৷ ডেলি পাঁঠা, মুরগি৷ তোমরাও চড়বে৷ খাবে৷ ছ’লাখ বলে কতা৷ হুঁ হুঁ বাবা, এর নাম হল ডি এস৷ ডিরেক্টর স্পেশাল৷ – পেয়ে গেচ? – কী? – ছ’লাখ? – আসচে৷ – লটারি? – না৷ – ডাকাতিও না? – নো৷ – তবে? – বলচি৷ মাল ঢালো৷ গলাটা না ভেজালে হচ্চে না৷ পুরন্দর ব্যাগ থেকে বাংলার বোতল বের করে৷ ঢালা হয়৷ স্টার্ট হয় চার্জিং৷ ডি এস মদনের একটা চারমিনার ধরায়৷ মদনও চুমুক মারার আগে পাঞ্জাবির পকেট থেকে বের করে দু-পাটি ফলস দাঁত পরে নিয়েছে৷ – টাকাটা তিন খেপে পাব৷ বুজেচ? দুই, দুই, দুই করে৷ তিন দু’গুনে ছয়৷ একেবারে কড়কড়িয়া নোট৷ – তো, তোমার ওই তিন খেপের টাকাটা আসবে কোতা থেকে? – আসবে, যে সে জায়গা নয়৷ একেবারে গভরমেন্টের ঘর থেকে৷ – কোন গভরমেন্ট? – কেন, আমাদের গভরমেন্ট৷ দিদির৷ – তা তোমায় দিতে যাবে কেন? – বলচি৷ কান খুলকে শুন লেও৷ ফার্স্ট দু’লাখ! ডি এস চোখ বন্ধ করে ভাবছে৷ ঠিক হাসছে না৷ কিন্ত্ত গাবদা থোবড়াটায় একটা হাসি হাসি গন্ধ লেগে৷ – কী হল? ঘাপটি হয়ে গেলে যে৷ – বলচি৷ চোখ বুজে সিনটা এক বার ভেবে নিলাম৷ শুনে আবার ঘাবড়ে যেও না৷ বাড়ির পেছনেই মুতখানার পার্কটা দেকেচ তো? – দেকেচি৷ হাফ ন্যাড়া একটা নিমগাছ আর একটা ভাঙা বেঞ্চি রয়েচে যার পিঠ নেই৷ – গুড, গুড৷ ওই পার্ক থেকেই রোলারুলি কান্না শোনা গেল! – কার? – আমার বউ আর ছেলের৷ – কেন? – আগে পুরোটা শুনবে তো৷ আমি পড়ে আচি৷ ডেডবডি৷ বেঞ্চির তলায়৷ মুকে গ্যাঁজলা৷ পাশে খালি বোতল৷ – ডেডবডি মানে? – মানে পটলিফায়েড৷ বউ ছেলে হাঁউমাঁউ করে বুজিয়ে দেবে যে চোলাই খেয়ে ফিনিশ৷ সিম্পল কেস৷ এ বার জানো তো চোলাই খেয়ে মরলে দু’লাখ৷ ব্যস, ফার্স্ট পক্কড়ের দু’লাখ ঘরে ঢুকে গেল৷ – বাল৷ হবে না৷ – কেন হবে না? হোয়াই? চোলাই খেয়ে মরেচি৷ মরিনি৷ মটকা মেরে পড়ে আচি৷ হোয়াই হবে না? – বলচি৷ ফার্স্টেই পুলিশ এসে চ্যাংদোলা করে কাঁটাপুকুর নিয়ে যাবে৷ ফাঁড়াই করবে, সেলাই করবে৷ অন্তেরা, নাড়িভুঁড়ি সব বের করে টেস্ট করবে৷ রিপোর্ট দেবে৷ এগুলো ভেবেচ? ডি এস ঘাবড়ে গিয়েছে – আমি তো ভাবলুম ভিড়ভাট্টা কেটে গেলে উঠে ধাঁ হয়ে যাব৷ – দ্যাকো, তুমি খজড়া হতে পার, কিন্ত্ত তোমার চেয়ে ডবল সব খজড়া উপরে বসে আচে৷ – ঠিক আচে৷ ঠিক আচে৷ দু’লাখ ছেড়ে দিলুম৷ বাকি চার লাখে কেউ খাবলা মারতে পারবে না৷ দু’লাখ না হয় ভগবানের দিব্যি করে দিলাম৷ – এর পরের দু’লাখের পক্কড়টা শুনি৷ – ঘ্যামা প্ল্যান এটা৷ দরজাতেই গাঁক গাঁক করে জানিয়ে রেখেচি – কী জানিয়েচ? – কেন, দ্যাকোনি? অত বড়ো বড়ো করে লেখা৷ জগদম্বা স্পোর্টিং ক্লাব৷ জানো নিশ্চয়ই, ক্লাব হলেই দু’লাখ করে দিচ্চে৷ – তোমার ওই ঢপের ক্লাবকে দিতে যাবে কেন? কী খেলা হয় এখানে? – বললেই হল৷ বল খেলা হয়৷ ক্রিকেট হয়৷ ডাংগুলি হয়৷ লুডো হয়৷ – জানো এর জন্যে এনকোয়ারি হবে৷ কে তোমার ক্লাবের মেম্বার? কোন দাদা ব্যাক করচে তোমার জগদম্বা স্পোর্টিংকে? এ ছাড়াও অডিট রিপোর্ট-ফিপোর্ট, হাজারটা হ্যাপা৷ আর তোমার পাড়ায় খোঁজ নিলেই জেনে যাবে যে গোটাটাই চপ৷ তকন ফ্রড কেসে পড়ে জেলের ঘানি টানবে প্লাস অ্যারেস্ট হওয়ার পর বেধড়ক ক্যালানি তো আচেই৷ – তা হলে এটাও হবে না? – না৷ – তার মানে বলচ যে দুই দুই চার লাখ হাওয়া? – হাওয়া৷ এর পরের দু’লাখের ধান্দাটা শুনি এ বার! – এটা কেউ ঠেকাতে পারবে না৷ হয়ে বসে আচে একেবারে৷ হেব্বি ছক৷ – দুটো তো শুনলুম৷ লাস্টেরটা শুনি৷ – এটা সলিড প্ল্যান৷ বর্ধমানে আমার শ্বশুরবাড়িতে একটা জং-ধরা, কুঁদোফাটা একটা দোনলা বন্দুক আচে৷ সেই সায়েবদের টাইমের মাল৷ হেভি ওয়েট৷ তুমি বা পুরন্দর পিঠে নিলে দাঁড়াতে পারবে না৷ ওই মালটা এনে স্যাটাস্যাট একটু তেলন্যাকড়া দিয়ে রগড়া দিয়ে দেব৷ তার পর গটমট করে থানায় ঢুকে বড়োবাবুর টেবিলে রেকে বলব- আমি সার আর মাওবাদী করব না৷ তাই বন্দুক জমা দিতে এসেচি৷ একন দিদি একটু হেল্প করলে একটা কীত্তনের দল খুলব৷ বুড়োবুড়ি টেঁসে গেলে গাইতে গাইতে যাব৷ বড়োবাবু সিন্দুক খুলে দু’লাখ টাকা দিয়ে দেবে৷ – বড়োবাবু সিন্দুক না খুলে লক-আপ খুলে পোঁদে এক লাথ মেরে তোমাকে ঢুকিয়ে দেবে৷ – কেন? আমি মাওবাদী হতে পারি না? – পার না৷ মাওবাদীরা তোমার মতো ভ্যাঁসকা মাল নয়৷ ওরা কী চালায় জানো? – কী? – এ কে ফর্টিসেভেন, ইনস্যাস রাইফেল, আরও কত কী৷ তোমার ওই মান্ধাতার আমলের দোনলা মালটা বরং লোহার দরে ঝাড়লেই কয়েকটা টাকা পেতে পার৷ পুলিশকে গান্ডু বানাবে তুমি? উল্টে বেধড়ক ক্যালানি খেয়ে চালান হয়ে যাবে৷ লাস্ট দু’লাখটাও হল না৷ এ বারে হাতে হ্যারিকেন নিয়ে তোমার ওই মুতখানার পার্কে গিয়ে বসে থাকো৷ ডি এস ভ্যাঁ করে কেঁদে উঠল৷ – হল না৷ ছ’লাখ হল না৷ সব গেল! স…ব গেল! হল না৷ আ…মা…র ন্যানো গাড়ি হল না৷ ডুকরে ডুকরে অনেকক্ষণ ধরে কেঁদে-টেঁদে শেষে ফোঁপাতে লাগল ডি এস৷ পুরন্দরেরও চোখে জল৷ – এ বার থামো৷ চলো, ঝটাঝট বোতলটা ফিনিশ করে আমরা বেরিয়ে পড়ি৷ তার পর ফাঁকা পেলে উড়ে যাব নিজেদের খেয়ালে৷ একটা কতা ডি এস তোমাকে আজ বলচি মনে রাকবে৷ – কী? – ছ’লাখ কেন, ছ’কোটি বা ছ’হাজার কোটি টাকার মালিকও অনেক আছে৷ কিন্ত্ত তারা কেউ ফ্যাতাড়ু নয়৷ পারবে শালারা আমাদের মতো ফ্যাঁত্‍ ফ্যাঁত্‍ সাঁই সাঁই করে উড়তে? পারবে? কথাটা মানলে? ডি এস ফোঁপাতে ফোঁপাতেই মাথা নেড়ে জানায়- হ্যাঁ৷

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত