আশরাফুল মোসাদ্দেকের অনুবাদে মায়া সারিশভিলির কবিতা

Reading Time: 2 minutes

আজ ১৬ আগষ্ট কবি আশরাফুল মোসাদ্দেকের জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার তাঁকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।


 

 

এক যে ছিলো আনন্দ

এক যে ছিলো আনন্দ।
আমি তার কোলে বসেছিলাম
এবং আমার চোখের ভিতর
সে কমলালেবুর খোসা ছড়িয়ে ছলকে দিয়েছিলো রস।
তারপর সে আমাকে ভুলে যায়
যখন সে একটি সিগারেট প্রজ্বলিত করে
কিন্তু আমি এখনো ভালোভাবে হাঁটতে পারি না
আমি তার কোল থেকে একপাশে সরে চলে আসি
এবং আমি কপোল দিয়ে তার জুতো চেপে দেই।
টেবিলের নিচে শব্দ কতো ভিন্ন
অতিথির স্বর
চাপা দেয়া শব্দ
চাপা দেয়া শূন্যতা।
অনাবৃত
অনাবৃত ছিলো আমার অক্ষিপল্লবগুলো
শুকিয়ে যায় পরিপূর্ণভাবে সিক্তকারী রসে।
এক যে ছিলো আনন্দ।

 

বৃত্ত এবং আয়তক্ষেত

এক শিশু হিসেবে আমি শুধুমাত্র এ’দুটো আকারে বিরাজমান ছিলাম:
বাইরে – বৃত্তাকার প্রাঙ্গণ শিশুদের খেলার মাঠ
ভিতরে – উচ্চ জানালাবিশিষ্ট গ্যালারির আয়তক্ষেত্র।
এর বাইরে ছিলো পীচকালো সুড়ঙ্গ…
আমি যখন গ্যালারিতে প্রবেশ করি
এক হাজার ড্রয়ার হঠাত খুলে যাবে একযোগে:
ড্রয়ারগুলো ঔষধ, পট্টবস্ত্র, মণিরত্ন, সিলকৃত কাগজপত্র ব্যতীত
আর তা থেকে বাতাসে মৃদু ঝাপটা দেবে কটুগন্ধ।
কিন্তু সকালে, খেলার মাঠের গোলাকৃতি
একটি ঘূর্ণাবর্ত ফেণায়িত হবে চিরহরিৎ ঝোপে
আর শিশুদের প্রবাহের নিচে, আনন্দ চিত্কারের সঙ্গে
শিশুদের মাটিতে মেশায় দেবদূতগণ দ্রুততার সাথে।

 

 

স্মৃতি

ধূসর অনেক বিশ্বাসযোগ্য।
ময়দার তালের মতো নরম হাতগুলো মানানসই নয়
অন্য বর্ণের শিখায়।
ওর কনুইয়ের উপর, আমার মা’র বাহু
দেখা যায় শুধুমাত্র ধূসর লম্বাচওড়া দেহে।
ওর আঙুলগুলো হয়েছে ময়দার মিষ্টি তালের মতো।
সিঁড়িপথের রেলিং ও ঝলসায়
যা কখনোই প্রস্তুত নয়।
এমনকি এখনই আমি এখান থেকে পড়ে যেতে পারি।

 

 

এটা এভাবে কাজ করতে পারে না

এটা এভাবে কাজ করতে পারে না
এমনকি যখন তুমি পুরো বনটি যখন নিলামে হাঁকো সর্বনিম্ন দর
কোথাও পাবে না তুমি একটিও মূল।
মাটিতে প্রোথিত না হলে, বিশ্ব
এক দিবাস্বপ্ন
শহরগুলো ভাসে উপরে আলকাতরার মতো
সাগরগুলো ঘাগু আসামি।
যদি পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যায়
গতিপথ থেকে বিচ্যুত হয়—
সুবিশাল খুরের আঘাতে
অনিয়ন্ত্রিতভাবে পিছলে যায়।
এবং অতি উৎসাহে কীভাবে আমরা খস পড়বো
আমাদের শরীর থেকে
একে একে প্রাচীণ শিরাসমূহে—
এবং শীঘ্রই পর্যাপ্ত
এমনকি মৌমাছিগণ হুল ফুটাতে পারে না আমাদের মৃৎশিল্পের শিশুদের
আর কখনো, শিশুরা প্রদর্শিত হয়
বিশাল পিয়ানোর উপর…

 

[জর্জিয়ার কবি মায়া সারিশভিলি ১৯৬৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শিক্ষাবিজ্ঞানে পড়াশুনা করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। প্রাত্যহিক জীবন বাস্তবতাই তার কবিতার উপজীব্য বিষয়। তিনি অল্পকথায় অনেক গভীর ভাব নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন। তার কবিতা পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তিনি Poetry International Festival Rotterdam 2007 সম্মেলনে যোগদান করেন। ২০০৮ সালে তিনি Saba Award লাভ করেন। তার কাব্যগ্রন্থের নাম Cxadis Gadafarva (Covering Reality) (২০০১), Microscope (২০০৭) ইত্যাদি।]

 

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>