Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,assamese poet Syed Parvez Hussain

অনুবাদ কবিতা: সৈয়দ পারভিজ হোসেনের অসমিয়া কবিতা

Reading Time: 2 minutes

 

সৈয়দ পারভিজ হোসেনের জন্ম ১৯৭৫ সনে।  সাম্প্রতিক অসমিয়া কাব্যজগতে একটি অতি পরিচিত নাম।পারভিজের কবিতা    বাংলা,হিন্দি,ইংরেজি,মালয়ালম এবং ফরাসি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।প্রকাশিত কাব্য সংকলন ‘স্বপ্নর কারাগার’।পারভিজ একজন    দক্ষ ফোটোগ্রাফারও। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রিত কবি হিসেবে কবিতা পাঠ করেন।


 

 

 

কথাগুলি এমনিতেই সহজ

 

নরবলি দিয়ে কেন ডাকছ ঈশ্বরকে

ঈশ্বর সন্তুষ্ট হলে বর দেবে আপনাকে

 

বর পেয়ে আপনি নিজেকে অমর ভাববেন

একটি সোনার সিংহাসন গড়াবেন

রুদ্ধ দেওয়ালের ভেতরে নির্মাণ করবেন একটি প্রাসাদ

দাস দাসীতে ভরে থাকবে তা

যেখানে মদিরার ফোয়ারা বইবে

তাতে ডুবে যাবার মতো একটা মজলিশ বসবে

আর মখমলের বিছানায় নিদ্রা যাবেন আপনি

 

দুর্ভিক্ষে মরবে দেশের নাগরিক

পঙ্গু হয়ে ছেঁচড়ে  বেড়াবে পথে

ওদের সমস্ত সম্পদ

থাকবে আপনার ঈশ্বরের হাতে

বৃহৎ কোম্পানির ফলকের নিচে

 

আর একদিন চিতার আগুনে রান্না ভোজ-ভাত খেয়ে

আপনি নিজেকে ঈশ্বর বলে ঘোষণা করবেন।।

 

 

 

 

উচ্চতা

 

মেঘেরও ক্লান্ত লাগে উড়তে উড়তে

রোদ-জ্যোৎস্নার সঙ্গে

লুকোচুরি খেলে

 

পাহাড়গুলি অপেক্ষা করে থাকে

নিজের জন্য নীরবে

গাছ-বন-শিল বুকে নিয়ে

আরও উচ্চ হওয়ার আশায়

 

পাহাড়গুলি নিজের সঙ্গে কথা বলে

কে কত উঁচু

আকাশের কোন তারাটি কত প্রিয়

কোন তারাগুলি নেমে আসবে নিচে

পাহাড়গুলিকে সঙ্গ দেবার জন্য

পাহাড়গুলি যে বড় নিঃসঙ্গ।

 

 

যেদিন রাজা চোর হল

 

ডাকতে ডাকতে মুরগিটা ক্লান্ত হয়ে পড়ল

সুর্য উদিত হল না

 

বাতাসে আগুন লাগার আগে

মানুষেরা মানুষ হয়েই ছিল

মিথ্যের পরিবর্তে সত্যিগুলি

বাতাসে ঝুলছিল

সুখের টলোমলো নৌকায় উঠে

দুঃখের সাগর পার হয়েছিল

একটা বাগানের মতো

রঙিণ হয়েছিল মানুষগুলি

 

যেদিন রাজা চোর হল

সেদিন চোরেরাও রাজা হল

সত্যের বুক ভেদ করে

সূর্য লুকিয়ে পড়ল

অন্ধকারে শক্র-মিত্র চিনতে না পেরে

একে অপরকে আঘাত করল

ঘরবগুলিতে আগুন দিয়ে আকাশ আলোকিত করল

চিতার অগুনে রাজা আহার তৈরি করল।

 

মধ্যবিত্ত

 

একটি বিশ্বাস অনেক ঈশ্বর

অনেক স্বপ্ন অল্প উপভোগ

একটি চাকরি দুটো থলে

একটি বিছানা দুটো মানুষ

একটি ঘর দুটো ছেলে-মেয়ে

একটি টিভি মুঠোতে পৃথিবী

একটি গাড়ি ব্যাঙ্কে ঝণ

দূরে শোভাযাত্রা বন্ধ দরজা

বাইরে রক্ত বন্ধ জানালা

একটি চিতা অনেক খড়ি

একটি জীবন শূন্য দুহাত।

 

 

নাস্তিক

 

ঈশ্বর মেনে নিতে পারে না

অন্য কোনো ঈশ্বরকে

বিষাদের দিনেও

বিলাপ করতে পারে না

কারও কাছে

 

আত্মস্তুতির দুর্গে যে বন্দি

খেলা খেলে দুর্ভিক্ষ এবং মহামারীর

পেশায় পুতুল নাচের বাজীকর তিনি

ভেলকি মেরে চমক দেখায়

খেলার শেষে সমস্ত কিছু মুছে ফেলে

বিদ্রোহীকে নরকে দেয়

তেলে ভাজে

উনুনে পোড়ে

খরিকায় সেলাই করে হৃদয়গুলি

ভূত্যকে স্বর্গে রাখে

অপ্সরার কোলে বসে মদিরা পান করার জন্য

যে ঈশ্বরকে মানে না

তিনি নাস্তিক

একজন নাস্তিকের ঠিকানা –ঈশ্বর।

 

টীকা –

খরিকা-টুথ পিক।

 

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>