অনুবাদ কবিতা: প্রয়াগ শইকীয়া’র অসমিয়া কবিতা । বাসুদেব দাস
১৯৫৮ সনে জন্ম। ১৯৮৬ সনে কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘পৃথিবী প্রেয়সী’প্রকাশিত হয়। পেশায় চিকিৎসক ডঃ শইকীয়ার দশটি কাব্যগ্রন্থ,তিনটি উপন্যাস,একটি গল্প সঙ্কলন,কাব্যোপন্যাস (সূর্যকথা, ২০০৪) রয়েছে। ‘প্রতীমা প্রেমীর গদ্য’, ‘নীলাভ বিস্তৃতি’ , ‘অনুভূত অন্ধকার’ কবির অন্যতম কাব্যগ্রন্থ।
অনুভূত অন্ধকার
তোমার নীরবতা আমাকে ভাবতে শেখাল হে অন্ধকার
অনুভব করলাম তোমার বুকের কোলাহল
উচ্চারিত আজকের প্রতিটি স্বরেই
এই অনুভূতির গুঞ্জন
তোমার স্পর্শ আমাকে জেদি হতে শেখাল হে অন্ধকার
তুমি যেন আমার জন্য অন্ধ হোমার
আমার জন্য আন মহাকাব্যের স্ত্রোত্র গাথার অপূর্ব উপহার
আর বেঁচে থাকার এক উদ্দেশ্যের অনুভূতি
আপেক্ষিক সত্য
সময় এক আপেক্ষিক সত্য
একে ওজন করা যায় না
ভালোবাসা এক অপূর্ব স্পর্শ
একে পার্থিব মুদ্রায় কেনা যায় না
তুমি আমার কাছে
একটা মাটিতে গড়া পৃথিবী
তোমার কাছ থেকে নেওয়া যায়
কিছুই যে দেওয়া যায় না
আরো পড়ুন: রাজীব বরদলৈ’র অসমিয়া কবিতা
একজন অসম্পূর্ণ মানুষ
জন্মসূত্রে আমি এক যন্ত্রণা পেয়েছি
ক্ষুধা কী কোনোদিন অনুভব না করা
অভাব কী কোনোদিন না বোঝা
এক মসৃণ জীবনের নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রণা
মানুষ বলে বলার জন্য
নিজেকে আজকাল আমার ভালো লাগে না
মানুষ নামের আমি এক অসম্পূর্ণ সংজ্ঞা
কারণ শ্রমের নামে আমি কোনোদিন
কপালের ঘাম মুছিনি
অভাবের নামে কোনোদিন
শুকনো পেটে কাতর হইনি
আমি ইচ্ছা করছি
অচিরেই শ্রমের কারাদণ্ড
আমাকে মানুষ করবে
একজন সত্যিকারের মানুষ
একজন সম্পূর্ণ মানুষ
আর তারপরেই আরম্ভ হবে
জীবনের আসল কবিতা
প্রয়োজন
অভাবেই জন্ম দেয় অনুসন্ধান
সময়ে সময়ে প্রয়োজন
অভাব আকাল
অনাবৃষ্টির মধ্য দিয়ে আসা মানুষটি
বৃষ্টির জন্য সজাগ
আকালের মধ্য দিয়ে আসা মানুষটি
শস্যের জন্য সজাগ
সময়ের মধ্য দিয়ে আসা মানুষটি
শান্তির জন্য সজাগ
সময়ের এই নিশ্বাস বন্ধ
প্রশ্নগুলিই তো মানুষকে
আজ পর্যন্ত করে রেখেছে গতিময়
নদী
কেবল শ্রুতির জন্য
নদী ভাসিয়ে নেয়
সময়ের অনন্য বিহঙ্গ
বাকময় করে
অতীত
বর্তমান
ভবিষ্যত
কেবল নদী ধারণ করে
সাগরময় সময়
সমরত্রস্ত পৃথিবী(!)
নদী আমাদের প্রেরণা
উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত অপরাজেয় নদী
সীমা পরিসীমা থেকে অখণ্ডিত নদী
নদীকে জিজ্ঞেস করে দেখ
পাবে
উর্বরা বিপুলা সম্ভবা-প্রশান্তি
অনুবাদক