Reading Time: 2 minutesআজ ২৯ অক্টোবর কবি বেবী সাউ এর শুভ জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার কবিকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।
১.
এরপরেও সে ভাবাচ্ছে আমায়
কিছু অস্পষ্ট আলো ,
কিছু সমান্তরাল বক্ররেখা ছাড়া
এ মূহূর্তে যদিও আর কোন বিলাসিতা নেই
পাঁচিলের ওপাশে শিরীষ গন্ধ
নিমগাছে ডানাভেজা কাক
ভাবতে ভাবতে সূর্যাস্ত
আর আমার সফর শেষ ছাতিমতলায়!
২.
এই নাও, সন্ধ্যাদীপ।
রাতগন্ধের দেশে,
ফুটপাত ঘেঁষে ,
বিমর্ষ আঙুলে বুলাও
নীল রঙ পাখি
অন্ধকার ছুঁয়ে,
তখনি, দগ্ধ হোক তপ্তস্নাত রৌদ্রদিন।
৩.
রুমালে গন্ধ ভাঁজ করে রাখি। মুখোশের ঠোঙা নিয়ে, এগিয়ে রাখি ঠোঁট । তোর স্বাদ নিতে, ভুল করে পুরুষ ভেবে বসি কখনো সখনো।
এখানে, পুরুষ মানে, যা ভেবেছিল শকুন্তলা, যা ভেবেছিল নূরজাহান, একদা।
সাজানো রঙে যখনই মেঘ আঁকি, ক্যানভাস জুড়ে বসে থাকে একাকী বাথরুম। ভাঙাভাঙি গ্রিলে, তখন, ঝাঁঝরা হওয়া সকালের কথা। কাল রাতে পরিবর্তনের দিন ছিল। বুঝেছি, তুই কারো নস। না মেঘের নাকি বৃষ্টির, রোদ্দুরের হওয়া তো সম্ভবই নয়। তোর বুকে তখন, এলাচের গন্ধ। বুঝলাম, রেলিং ঘেরা ব্যালকেনি, কেমন বারান্দা হয়ে যায়!
এই আয়না নিয়ে আমি শহর দেখি। আর দৃষ্টি হারাতে হারাতে তোকে। একদিন দেখিস, খাতা, কিছু পেন, একটা গান নিয়ে তোর হাত ধরবো। সমস্ত শৈশবদের ঝুলিয়ে রাখবো ব্ল্যাকবোর্ডের গায়। বয়ঃসন্ধির টিপসই এ সেদিন ঠিক বারান্দা খুঁজে নেব!
৪.
থাক ‘ শব্দটা চিলেকোঠা প্রজাতি। পুরনো বইয়ের মলাট, ঝাঁপসা প্রচ্ছদ, নাকভাঙা পুতুল আর এক্কা দোক্কা কাল নিয়ে গুছানো সংসার, তার । ভাবি, শেষ মূহূর্তরাই চুপচাপ চিনে নেয় পুকুর পাড়, ল্যাম্পপোস্টের ধার, জমানো ইনবক্সের ভাঙাচোরা অবয়ব।
ক‘দিন পর, তুই ও। থাকতে, থাকতে …থাকতে …থাকতে …
অস্পষ্ট অক্ষর …
৫.
স্তব্ধতার পাঁজরে শুয়ে আছি,
ঘুমের ভেতর ভাসছে জলের গ্লাস,
রোদ চশমা,
চৌকানো দরজায় কালো বেড়াল।
কারা যেন দেওয়াল ভিজিয়ে গেল ,
কারা যেন ঘড়ির কাঁটায় বেঁধে দিল মাংসরঙ
শিল্পী তখন শরীর নিয়ে ব্যস্ত
তুলিতে লেগে ঘোড়াদের ছেড়ে যাওয়া লোম
হৃদযন্ত্র খুলে রেখে ভুলেছি
বিগত জন্মের জন্মঘোলা শোক!
@ ব্যাকব্রাশ @
বাস্তব
তোমাকে আহত ভেবে রেখে আসি নারীমাংস, রক্ত
সভ্যতা আমাকে রোজ খোঁচায়, ভয়ার্ত চোখে দেখি
উপকূল ভেঙে হেঁটে গেছে শ্বাপদেরা
তাহাদের পিয়াসী মনের কথা, তাহাদের লাজরক্ত
নকল ঘুমের মাঝে
ছেঁড়া বালিশের তুলো হয়ে ওড়ে
ধ্বনি ওঠে, রব ওঠে
‘এতে গন্ধে পুষ্পে নমঃ…’
এ্যাত দিনের স্বেদ স্বাদ
গুছানো লকারের চাবি
অথবা লালিত গোপন দেহসুত্র
নুন মাখা বিকেলের ভিড়ে
ভেসে যায়
তারপর ফুল
তারপর ধুপ
তারপর …তারপর!
…
স্তুতি বাক্য?
কি প্রয়োজন!
শোক প্রস্তাব বয়ে আনে পাখি।
জন্মসূত্র
শূন্যতায় দাঁড়িয়ে আছে প্রিয় অবয়ব ।
মনখারাপের বাকল আজ সন্ন্যাসীর গায়
কোন অবশিষ্টতা নেই ।
ভাঁজে ভাঁজে সাজানো শৈশব উধাও
স্হির আলস্যে ঘুম চোখ শীত
প্রতিমা-শিল্পীর দেহে কোন লাবণ্য নেই
এরপরও , ধোঁয়া -রং সরিয়ে জন্মসূত্র খুঁজছো —!
বিরহ
তোমার সপ্তম মেজাজে ছেড়েছি আমার হরিণী সত্তা ,
নির্বিকার হৃদয়ে পান করেছি এ যাবত সঞ্চিত অসুস্থতা…
লক্ষ্য
শকুনের ঠোঁটে আজ পড়ন্ত দুপুর ।
টানাপোড়ন দিন – রাত্রির
আগুনের ওমে সেঁকে নাও শেষ নৈঋত
গুছানো থাক ক্যানভাসের নীল
ক্লান্ত বিকেল , ডাকবাক্সের লুকানো অক্ষর
পায়ে পায়ে সরে যায় তির্যক কোণ
… তারপর , ঝিনুকের খোলে জমে যায় হেমন্ত
একা শুধু মেপে চলি
মহাবৃত্তের গোল ।
Related