ইরাবতী সাহিত্য: জুবায়ের দুখু’র একগুচ্ছ কবিতা
লিলুয়া বাতাস
বনের ভেতর
শালগাছের সারি।
বাতাস বইছে
লিলুয়া বাতাস বইছে
সারা মধ্যাহ্ন জুড়ে
তোমার রোদে শোকাতে দেয়া
ভেজা কেশের সুগন্ধ মাখিয়ে।
মা-পাখি
পাখিটি ,
যেন কবে কোথা থেকে
উড়ে এসেছিল
এই নীড়ে–
একচিলতে সুখের আশায়।
ঋণ
এই ঘরে
সারাদিন উড়ে বেড়ায়
যে পাখি ঘোমটা টেনে
তার কাছে ঋণ আছে–
শিমুল ফুলের ছায়ায় ঘুমিয়ে থাকা
আমাদের পিতা,
মৃত আব্দুল লতিফ ফকির।
শীতলতা
প্রাচীন লগ্নের মতো সন্ধ্যা নামে। পাখিরা বাড়ি ফেরে। আমার আম্মা চুলায় রাতের ভাত রান্ধে। গরম ভাত থেকে যে ধোঁয়া বের হয়। শৈশবে ভাবতাম ওইসব ধোঁয়া, কুয়াশা হয়ে যায় শীতকালে। যেন লতাপাতায় মোড়ানো শীতলতা।
মৎস্যকবি
শীতলক্ষ্যা নদীতে একবার একজন কবির একটা জনপ্রিয় কবিতা হারিয়ে গেল। তখন আমি ডুবুরির কর্ম করতাম। আমাকে ডেকে আনা হলো কবিতা উদ্ধারে। কবিতা উদ্ধারে জলে ডুব দিতেই মাছেরা আমাকে অভিবাদন জানায়– ভাবে আমিই সেই কবিতার লেখক।
মাছেরা আমাকে তাদের রাজ্য ঘুরে দেখায়। তারপর নিয়ে যায় মৎস্যরাজ সভায়। মৎস্যরাজার যুগান্তকারী পদক্ষেপ আমি সেখানকার জাতীয় কবি হই– নাম মৎস্যকবি।
এরপর অনেক আয়ুকাল শেষ– ভাঙলো আমার ভ্রম, মনে হলো সেই কবির কথা। যার কবিতা খুঁজতে এসে আমি মৎস্যকবি। তার চোখ কি আমাকে’সহ তার কবিতা ফিরে পাবার স্বপ্ন এখনো দেখে? নাকি তার কোনো নতুন উপন্যাসে আমাকে মাছের খাদ্য হিসেবে চালিয়ে দিয়েছে?
মৎস্যকবি-২
মৎস্যকবি হওয়ার পর শুধু মনে হয়, পৃথিবীতে একজন কবির সঙ্গে পরিচয় ছিল আমার। নাম জুবায়ের দুখু। লিখত না কোন অমৃত কবিতা– অথবা, পাঠক তৃপ্ত এমন কোন পঙ্খি। সে ছিল পৃথিবীতে আমার খুব নিকটের বন্ধু। তার কথা মনে হলেই নিজেরে কবি কবি লাগে না।
মানিক বৈরাগী says:
কবিতা ভালো লেগেছে