| 18 এপ্রিল 2024
Categories
কবিতা সাহিত্য

তিনটি কবিতা । নুসরাত জাহান

আনুমানিক পঠনকাল: < 1 মিনিট
একদিন
একদিন ঠিক পুরো পাগল হয়ে যাব। 
তারপর সব ট্রাফিক সিগন্যালের লালবাতি 
লাঠির বাড়িতে ভেঙ্গে ফেলে 
দেশান্তরী হয়ে যেতে পারি। 
এর পর তোরা আর কেউ 
আমাকে খুঁজে পাবি না।
একদিন ঠিক পুরো সাগর হয়ে যাব।
তারপর উম্মত্ত জলোচ্ছ্বাসে 
সব তছনছ করে ধুয়েমুছে নিয়ে 
মরু হয়ে যেতে পারি।
এর পর তোরা আর কেউ
আমাকে খুঁজে পাবি না।
একদিন ঠিক প্রবল ভালোবাসা হয়ে যাব।
তারপর তীব্র অনুভবে ছুটে ছুটে
রক্তকণিকায় আলোড়ন তুলে
হৃদয় ভেঙে দিতে পারি।
এর পর তোরা আর কেউ 
আমাকে খুঁজে পাবি না।

আরো পড়ুন: মৃদুল দাশগুপ্তের কবিতা


নিমফুল
বসন্তরোগে নিমপাতা ওষুধ, আর নিমফুল?
সে বোধহয় বসন্তকালের শোভা!
ভাবনার আকাশে নিমফুল ফুটে থাকে 
গুচ্ছ গুচ্ছ তারা হয়ে।
হালকা সুরভিতে মোহাবিষ্ট হয়ে থাকা দুচোখ
আর মেলে থাকা পাপড়িতে নিমপাতা।
বিকট জ্যামে রিকশা আটকে গেলে
আকাশ দেখার অবকাশ হয়।
গাঢ় সবুজ পাতার ফাঁকে ফুলের থোকা
হাতছানি দিয়ে ডাকাডাকি করে
সই পাতাবে বলে…
নিমপাতার বাতাস মাখি বারোমাস,
শুধু নিমফুল গোলাপ হয়ে আসে না।
তাই শাহবাগের মোড়টাও পর পর লাগে।
আচ্ছা, বিয়েতে নিমফুলের গয়না যদি পরি,
কেমন হবে?

আরো পড়ুন: মেঘ অদিতির কবিতাগুচ্ছ


ভাবনা
ইট-কংক্রিটের জঙ্গলে বসে,
নিশুতি রাতের বুকে কান পেতে
সাগরের গর্জন শুনি।
অস্ফুটস্বরে কানে কেউ ফিসফিস করে,
“জীবন এত ছোট কেনে?”
আমার জবাব দিতে ইচ্ছে করে,
ছোট? জীবন যদি ছোটই হবে,
আমার প্রতিটা রাত কেন একেকটা
আলাদা আলাদা জীবন মনে হয়?
কেন মনে হয়, প্রতি রাতে
আমি আলাদা কেউ, আকাশ আলাদা?
কেন সমুদ্রের প্রত্যেকটা ঢেউ
একেকটা জীবন হয়ে পরাণে আছড়ে পড়ে?
কেন ঝিনুকের গহীনে মুক্তো নামের জীবন 
শীতল হয়ে বেঁচে থাকে আজীবন?
কেন জলের মতো তীব্রতা স্রোত ভাঙে
জীবনে ভালোবাসা হয়ে?
মাঝে মাঝে মনে হয় শঙখের মতো
তোমার বুকে কান পাতলে
সমুদ্র এসে যায় কংক্রিটের শহরে।
জীবন এসে দাঁড়ায় দোর গোড়ায়, প্রতি রাতে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত