বীরেন মুখার্জীর কবিতাগুচ্ছ

Reading Time: 2 minutes

মানুষ এক সম্পূরক মহাবিশ্ব

পুনরায় আছড়ে পড়লে কল্লোলিত ঢেউ

জলের রেখায় ফোটে ক্ষণজন্মা আলো

বিপুল বৈরাগ্য ধুয়ে সমুদ্র ও সন্ধ্যাতারা

সময়ের দোহারে ভাসায় নিখিলের ঘুম!

সূচক্র পারদে আঁকা নীলকণ্ঠী রাত এক-

ভেঙে পড়ে চোখে। ভাঙে অধিবিদ্যা-বোধ;

তবু বিরহখচিত, ঘনশ্যাম এই রাত

অরণ্য নির্জনে ডাকে- সাধুসঙ্গহেতু;

চারু, ধারণা অক্ষরে যদি লেখা হয় কোনওদিন

মাত্রাবৃত্ত শ্লোক, নিরূপিত আলোক প্রবাহে

ঠিক ভেঙে দেবো অচলায়তন- অদৃশ্য প্রস্তর

কেননা, মানুষ এক সম্পূরক মহাবিশ্ব!

 

 

রাত্রিনামা

অনুপম সেই সন্ধ্যা, ওরা ভেবেছিল- অন্ধ আমি; তাদের চৌকষদল আমার গোত্র খুঁজে পায়নি। নামকরণেও ব্যর্থ হয়েছিল রাজপুরোহিত, আর, তাদের পাশে দাঁড়িয়েও নির্বিকার আমি, শুনছি- দূরে কোথাও ঘোষিত হচ্ছে তুমুল রাত্রিকথা!

এভাবেই লেখা হলো রাত্রিনামা- উপসর্গের আড়ালে!

আড়চোখে গোধূলি এঁকে ফিরে গেলে- বিদগ্ধ সারস, ভেবেছি বহুদিন- বিমর্ষ যে সন্ধ্যায় জন্ম হয়েছিল আপাত সত্যের, সেখানেও কি গোপনে লেখা ছিল অন্ধতার কাহিনি?

সভ্যতা সেঁচেও দেখেছি, চোখ থাকা সত্ত্বেও কেউ কেউ অন্ধ অজগর। সুতরাং অনুপম সন্ধ্যায় ভাবনার আসমানে উড়ে যেতে দোষ নেই-

প্রবল রক্তপূর্ণিমায়

ভাবছি, তোমার কাছেই রেখে যাবো মরা শরতের আবছায়া রোদ, ‘তিতলি’ কম্পিত আশ্বিনের চৌকস একটি রাত্রি; গন্তব্যে যেতে যেতে স্রোতবাহী নদীকে বলব: একবার অন্তত বিলাপ করতে দিও- হে মহামান্য, তোমার ভাঙা তীরে ফুটতে দিও অগণিত আর্তের- ক্রন্দনফুল!

দিব্যচোখেই দেখতে পাচ্ছি, আমাদের নদীগুলো মিথের নারী, বালুবরণী, নির্জন ও নিঃসঙ্গ; পাশে ছদ্মবেশী অক্টোবর- মমতাবিচ্যুত ব্যাধের মতন নিপূণ মৃত্যু কাঁধে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, নৈতিকতার জিহ্বা তার সদম্ভে দুলছে প্রবল রক্তপূর্ণিমায়…

আশ্রয় আভাসে দারুণ হুলুস্থূল- দূরমাঠে; ভাবছি, আসন্ন শীতকালে তোমার নৈতিকতা অটুট থাকবে তো!

.

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>