| 20 এপ্রিল 2024
Categories
গীতরঙ্গ

ইরাবতী সাপ্তাহিক গীতরঙ্গ: মিষ্টিকথা । তুষার বসু

আনুমানিক পঠনকাল: 9 মিনিট

দোকানের শোকেসে থরেথরে সাজিয়ে রাখা নানাবর্ণের শোভনীয় লোভনীয় মিষ্টান্ন দেখে যার রসনায় রস সঞ্চারিত হয় না এমন বাঙালির সংখ্যা বোধহয় হাতে গোনা যায়৷ বাঙালির এই মিষ্টিপ্রীতি কতদিনের তার সন্ধানে গেলে আমাদের হাতের সামনে প্রায় কোনও তথ্যই নেই৷ ভারতবর্ষের প্রাচীন সাহিত্যে এবং প্রাচীন বাংলা সাহিত্যে আমিষ ও নিরামিষ খাদ্যদ্রব্যের পর্যাপ্ত উপস্থিতি থাকলেও মিষ্টান্নের উল্লেখ খুবই কম৷ রামায়ণে যা পাওয়া যায় তার প্রধান উৎস হলো দধি বা দই৷ ‘দধি কুল্যাস’, ‘রসাল’ বা ‘পায়স’ এগুলির প্রধান উপকরণ দই৷ এছাড়া শর্করা বা চিনি ও গুড় মিষ্টান্নের আর এক উপাদান৷ মিছরির অন্য নাম ছিল ‘গৌদা’ বা ‘গৌডা’, যার থেকে গুড় শব্দটির উদ্ভব৷ এছাড়া খান্ডব, রাগ-খান্ডব শর্করা বা চিনি দিয়েই তৈরি হতো৷ অম্লরস দিয়ে দুধ কাটিয়ে ছানা তৈরিতে সামাজিক নিষেধ ছিল, তাই ক্ষীরের তৈরি মিষ্টান্নই সর্বত্র প্রচলিত ছিল৷ 

মধ্যযুগে এসে আমরা প্রথম ছানার সন্ধান পাই৷ চৈতন্য চরিতামৃতে দেখা যায় সুখাদ্যরূপে ছানার আদর ছিল৷ ছানা তৈরির ব্যাপক প্রচলন সম্ভবত পোর্তুগীজদের সংস্পর্শে আসার পর৷ আজকের দিনে সুসজ্জিত মিষ্টান্ন ভান্ডারে আমরা যেসব খাবার সাজানো দেখি সেগুলির মধ্যে পুরাতন কালের চিহ্নও হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না৷

মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারীকে আমরা প্রধানত ময়রা বা হালুইকর নামেই চিনি৷ ময়রা শব্দের উদ্ভব মোদক শব্দটি থেকে, যার অর্থ আনন্দবর্ধনকারী৷ সুতরাং মিষ্টান্নের জনপ্রিয়তা সহজেই অনুমান করা যায়৷ হালুইকর শব্দের অর্থ যে হালুয়া তৈরি করে৷ আরবী ‘হলবাঈ’ থেকে হালুয়া শব্দের উৎপত্তি৷ আমরা হালুয়া বলতে বুঝি ঘিয়ে ভাজা সুজিকে চিনির রসে ফোটানো খাদ্যদ্রব্য৷ কিন্তু সুজি ছাড়া অন্যান্য উপাদান দিয়েও হালুয়া তৈরি হয়৷ সে যাই হোক মিষ্টির কারিগরদের এমনই দু’টি অভিধা আমরা বাংলায় পাই৷

বাংলায় প্রচলিত মিষ্টান্নকে আমরা প্রধানত দু’টি ভাগে ভাগ করতে পারি, বেসন, ময়দা ইত্যাদির দ্বারা প্রস্তুত মিষ্টান্ন এদং দুগ্ধজাত মিষ্টান্ন৷ ‘মিষ্টান্ন’ শব্দটি থেকেই মিঠাই শব্দের উদ্ভব৷ বাংলার দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে (পুরুলিয়া- বাঁকুড়া) ‘মিঠাই’ নামে যে খাদ্যদ্রব্যটি পরিচিত তা পুরোপুরি হিন্দুস্থানী৷ ঘিয়ে ভাজা বেসনের বোঁদে চিনি বা গুড়ের রসে নেড়ে গোল করে পাকানো৷ তাকেই মিঠাই বলে৷ মিঠাই প্রস্তুতির প্রধান উপকরণ বোঁদে৷ বুঁদ মানে ফোঁটা৷ ঝাঁজরির মধ্যে দিয়ে চালগুঁড়ি মিশ্রিত বেসনের গোলা ফোঁটা ফোঁটা তপ্ত ঘিয়ে ভাজা হয়ে চিনির রসে ফেলা হলে যে মিষ্টান্ন তৈরি হয় তাই বুঁদি বা বুঁদিয়া৷ বাংলায় বোঁদে৷

বোঁদের সঙ্গেই যার নাম  জড়িয়ে আছে সেটি হলো মিহিদানা৷ ১৯০৪ সালে লর্ড কার্জন বর্ধমানের জমিদার বিজয়চাঁদ মহতাবকে মহারাজা খেতাব দিতে বর্ধমানে যান৷ তাঁর বর্ধমান ভ্রমন উপলক্ষ্যে বিজয়চাঁদ ভৈরবচন্দ্র নাগকে একটি বিশেষ মিষ্টি প্রস্তুত করার আদেশ দেন৷ ভৈরবচন্দ্র মিহিদানা ও সীতাভোগ নামের দুটি মিষ্টান্ন সৃষ্টি করেন৷ বর্ধমানের সেই মিহিদানার খ্যাতি আজও অম্লান৷ কিন্তু মান অনেক নেমে গেছে৷ মাত্র দু’একটি দোকান ছাড়া সেই মিহিদানার স্বাদ আজ দুর্লভ৷ মহিষাদলের মিহিদানাও বিখ্যাত৷ 

হলদে ও লাল  দু’রঙের বোঁদের সঙ্গে খোয়াক্ষীর, বাদাম, কিসমিস, জায়ফল, জৈত্রী মিশিয়ে গোল্লা পাকানো হয়৷ তার নাম দরবেশ৷ দরবেশ কথাটা ফারসী৷ দরবেশের আলখাল্লার বর্ণবৈচিত্র্য থেকেই কি এর নামকরণ? মিহিদানার প্রকারভেদ মতিচুর৷ মতিচুর কি মুক্তাচূর্ণ? খুব মিহি, প্রায় বালির মতো বেসনের পাক থেকে গোলাকৃতি মিষ্টিই মতিচুর৷

মিহিদানার প্রসঙ্গে সীতাভোগের কথা মনে পড়বে৷ তবে এতে বেসন নেই৷ ময়দা, কিছু ছানা আর সবেদা বা সফেদা (চালের গুঁড়ি) দিয়ে তৈরি৷ তবে বোঁদের মতো ফোঁটা ফোঁটা নয়, ঝুরিভাজার মতো লম্বা লম্বা মন্ড চিনির রসে ফুটিয়ে সীতাভোগ তৈরি হয়৷ এই সীতাভোগই বাসন্তী রঙে রাঙিয়ে ছানার পোলাও নামে বিক্রি হয়৷ বর্ধমানের মিহিদানার মতোই সীতাভোগেরও প্রচুর সুখ্যাতি৷ সীতাভোগ বোধহয় বাঙালির মোদকপ্রতিভার নিদর্শন৷ 

বেসন বা ময়দার তৈরি মিষ্টির মধ্যে বোধহয় সর্বাধিক পরিচিত খাবার জিলিপি৷ জিলিপি একটি নিখিল ভারতীয় মিষ্টান্ন৷ ভারতের সর্বত্রই  এর দেখা মেলে৷ হিন্দীতে এর নাম ‘জলেবী’৷ এর মূলে কোনও আরবী-ফারসী শব্দের যোগ আছে কিনা জানা নেই৷ জিলিপির একটি অভিজাত সংস্করণ অমৃতি৷ চৈতন্য চরিতামৃতে অমৃতির উল্লেখ থাকলেও জিলিপির নাম নেই৷ পশ্চিমবঙ্গে জিলিপি নিয়ে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে৷ নাড়াজোলের মুগের জিলিপি, পানিফলের আটার জিলিপি ইত্যাদি৷

শনপাপড়ি আর একটি বেসনের তৈরি মিষ্টি৷ শনপাপড়ির শন এসেছে সোহন<(শোভন) শব্দ থেকে৷ শণের মতো তন্তু এবং সোনার মতো রঙ থাকলেও শণ বা সোনা থেকে নামটা আসেনি৷ শনপাপড়ির প্রধান উপকরণ বেসন, ঘি ও চিনি৷ ভালোমতো পাক করে গরম এবং নরম মণ্ডটিকে একটি পেরেক বা হুকে আটকে বার বার টানা হয়৷ ফলে মণ্ডটি ক্রমশ সুতোর মতো আকৃতি পায়৷

ময়দা দিয়ে তৈরি মিষ্টির মধ্যে প্রথমেই নাম করতে হয় গজার৷ ময়দায় ময়ান দিয়ে মেখে ঘিয়ে কড়া করে ভেজে কড়া রসে ফেলে তুলে নিতে হয়৷গজা তৈরির এই হলো মুখ্য প্রক্রিয়া৷ হিন্দী ‘গোঝা’৷ ছোট অর্থে গুঝিয়া বা গুজিয়া৷ কিন্তু বাংলার গুঁজিয়ার সঙ্গে গজার মিল খুঁজতে যাওয়া বোকামি৷ গজার নানান প্রকারভেদ আছে৷ খাস্তা গজা, জিভে গজা, কাঠি গজা ইত্যাদি৷

‘বালুশাহী’ গজার শ্রেণিতেই পড়বে৷ শাহ্ ফারসী শব্দ, এর অর্থ রাজা বা সম্রাট৷ বালু নামে কোনও রাজা বা বাদশাহের নাম কি এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে? ময়দার ভিতরে মেওয়ার পুর ভরে ঘিয়ে ভেজে কড়া চিনির রসে ডুবিয়ে নিতে হয়৷ এ প্রসঙ্গে বাবরশা নামে একটি মিষ্টির কথা মনে পড়ে গেল৷ পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষীরপাইতে এই মিষ্টির প্রচলন আছে৷ ময়দার পাতলা গোলা সূত্রাকারে ফেলা হয় ফুটন্ত ঘিয়ের কড়ার মধ্যে রক্ষিত একটি তারের পাত্রে৷ ভাজা বস্তুটি তুলে নিয়ে কড়া চিনির রসে ফেলে তুলে নেওয়া হয়৷ আগে মধুর মধ্যে ডুবিয়ে নেওয়া হত৷ এডওয়ার্ড বাবরশ নামে এক সাহেবের নাম জড়িয়ে আছে এর সঙ্গে৷ প্রায় বাবরশার মতোই মালপোয়ার জনপ্রিয়তা যথেষ্ট৷ তবে মালপোয়া মূলত বঙ্গীয় খাদ্য নয়৷ বৃন্দাবনের ভক্ত বৈষ্ণবদের হাত ধরে এই সুখাদ্যটি গৌড়ীয় বৈষ্ণবসমাজে প্রবেশ করে৷ কিন্তু চৈতন্য চরিতামৃতে মালপোয়ার উল্লেখ নেই৷ মালপোয়ার ‘মাল’ শব্দটি ফারসী৷ আর পোয়া এসেছে সংস্কৃত ‘পূপ’ থেকে৷ পূপ মানে পিঠে৷ মালপোয়া আমাদের গুড়পিঠেরই উন্নত সংস্করণ৷ ময়দার সঙ্গে ঘন দুধ মিশিয়ে পাতলা করে গুলে নিয়ে গরম ঘিয়ে ভেজে চিনির রসে ফেলা হয়৷ ‘ক্ষীরের চপ’ নামে একটি খাবার একালে বেশ জনপ্রিয়৷ এটি প্রায় বালুশাই এর মতোই৷ তবে চিনির রসটা অত কড়া থাকে না, তাই নরম হয়৷ ক্ষীরের চপে যেক্ষীর থাকতেই হবে এমন কথা নেই৷ প্রায়শই বাসি সন্দেশ ইত্যাদি সুগন্ধি মশলা মিশিয়ে পাক করে নেওয়া হয়৷ তারই পুর দিয়ে ক্ষীরের চপ বা মিষ্টি সিঙ্গাড়া তৈরি হয়৷এর আরেকটি রকমফের দেখা যায়, যার নাম ‘লবঙ্গ-লতিকা’৷

গজার আগেই যে মিষ্টিটির নাম উচ্চারিত হয় তা হলো ‘খাজা’৷ বস্তুত খাজা গজার থেকে প্রাচীনতর৷ চৈতন্য চরিতামৃতে খাজা, তিলেখাজার উল্লেখ থাকলেও গজার উল্লেখ পাওয়া যায় না৷ খাজা হল ময়দার লেচিকে কয়েক পাটে বেলে নিয়ে ঘিয়ে ভেজে কড়া চিনির রসে ফেলে তুলে নেওয়া একপ্রকার মিষ্টি৷ তবে পুরীর খাজার সঙ্গে বঙ্গীয় খাজার গঠনগত পার্থক্য আছে৷ পুরীর খাজা হলো ময়দার তালকে কয়েক পাটে বেলে নিয়ে টুকরো করে ঘিয়ে ভাজা৷ আর বঙ্গীয় খাজা অনেকটাই ঢাকাই পরোটার ক্ষুদ্র সংস্করণ৷ এর নাম হয়তো ছিলো ‘চাঁদশই’৷ অধ্যাপক বিজনবিহারী ভট্টাচার্য এমনটাই জানিয়েছেন— “কলকাতায় এখন যাকে খাজা বলি তার নাম ছিল চাঁদশই৷ না কি চাঁদশাই? হয়তো প্রথমে ছিল চাঁদশাহী! তার থেকে চাঁদশাই”৷ তিলেখাজা খাজারই একটি বিশেষ ধরণ৷ চিনির রস ফুটিয়ে একেবারে মন্ডের আকৃতি দেওয়া হয়৷ সামান্য ঠান্ডা হলে সেটিকে একটা পেরেকে লাগিয়ে ক্রমাগত টানা হতে থাকে শনপাপড়ির মতো৷ তারপর সোজা একটি পাটির উপর রেখে সামান্য শক্ত করা হয়৷ সেই লম্বা আকৃতিকে টুকরো করে খোসা ছাড়ানো তিলের মধ্যে রাখা হয়৷ বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার তিলের খাজা বিখ্যাত৷ পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদও তিলের খাজা তৈরির জন্য সুখ্যাত৷

ছানা ও ক্ষীরজাত মিষ্টান্নের কথা বলতে গিয়ে প্রথমে ভাজা মিষ্টির কথা দিয়েই শুরু করা যাক৷ এ পর্যায়ে পানতুয়ার নামটাই আগে আসবে৷ পানতুয়া শব্দটির ব্যুৎপত্তি নিয়ে একটু গন্ডগোল আছে৷ ‘পান’ এসেছে হিন্দী ‘পানি’ থেকে তাতে সন্দেহ নেই৷ তার কারণ আদি রূপ ছিল পানিতুয়া৷ বাংলা ধ্বনিতত্ত্বের নিয়মেই তা পানতুয়ায় পরিণত হয়েছে৷ কিন্তু ‘তুয়া’র উৎপত্তি কোথা থেকে? সম্ভবতঃ ফারসী ‘তবা’ শব্দ থেকে এর উৎপত্তি৷ ‘তবা’র অর্থ তলা৷ এক্ষেত্রে পানি অর্থে যদি রস ধরা হয়, তাহলে একটা অর্থ করা যেতে পারে যে, যে মিষ্টি রসের নিচে বা তলায় থাকে৷জ্ঞানেন্দ্র মোহনের অভিধানে পানতুয়ার অর্থ ব্যাখ্যা করা হয়েছে— “যা রসে ভিজিয়া খুলির তলায় পড়িয়া থাকে৷ ছানা ও সফেদা দ্বারা প্রস্তুত ও ঘিয়ে ভাজা এবং চিনির রসে ভিজানো মিষ্টি বিশেষ৷” পশ্চিমা পানতুয়ার আদি উপকরণ ছিল ক্ষীর, ছানা নয়৷ ক্ষীরের পানতুয়া জমাট ও ভারি হওয়ার কারণেই তা রসের তলায় ডুবে থাকে৷ তারই নাম ‘গোলাপজাম’ বা ‘গুলাবজামুন’৷ এই পানতুয়াই ‘লেডিকেনি’রূপে বাংলায় নবজন্ম লাভ করল ভীমচন্দ্র নাগের হাত ধরে৷ বাংলার গভর্নর লর্ড ক্যানিংএর স্ত্রী লেডি ক্যানিংএর নাম অনুসারেই তা ‘লেডিকেনি’রূপে বিখ্যাত হয়ে উঠল৷ তবে তাতে গোলাপী আতরও যুক্ত হতো৷লেডিকেনি এবং পানতুয়া দু’টিতেই বড় এলাচের দানা দেওয়ার প্রচলন আছে৷

লম্বাটে আকৃতির পানতুয়াই ল্যাংচা৷ বর্ধমানের শক্তিগড় ল্যাংচার জন্য বিখ্যাত৷ শিমূলতলা কিংবা তারাপীঠের ল্যাংচারও সুখ্যাতি শোনা যায়৷ ল্যাংচা তৈরিতে ছানা ও সফেদার সঙ্গে অন্যান্য বস্তুরও মিশ্রণ দেওয়া হয়৷ এমনকি রাঙালুসিদ্ধও মেশানো হয় বলে জনশ্রুতি আছে৷ ল্যাংচার উৎপত্তি ও নামকরণ নিয়ে মতভেদ আছে৷ শোনা যায় যিনি এই মিষ্টিটি বানিয়েছিলেন তিনি খোঁড়া বা ল্যাংড়া ছিলেন৷ সেই কারণেই এইরকম নামকরণ৷ তবে এটির কোনও প্রামান্য ভিত্তি নেই৷

কালো রঙের লেডিকেনির নাম কালোজাম৷ অবশ্য একে গোলাপজামের রকমফের হিসেবেও দেখা যেতে পারে৷ কালোজামে ক্ষীরের পরিমাণ বেশি থাকে, সেই সঙ্গে এতে চিনি মেশানো হয়৷ চিনি মেশানোর উদ্দেশ্য কালো রঙ করা৷ এতে কোনও রাসায়নিক রঙ দেওয়া হয় না৷ ছানাকে জিলিপির আকৃতি দিয়ে ভেজে রসে ফেলা হলে তার নাম হয় ছানার জিলিপি৷ নিখুঁতি একরকমের কুচো পানতুয়া৷ লম্বাটে গড়নের ছোট আকৃতির এই মিষ্টান্নটির বাইরে একটু শক্ত হয় এবং ভিতরটা নরম৷ নদীয়ার শান্তিপুরের নিখুঁতি বিখ্যাত৷ এছাড়া জনাই, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া প্রভৃতি অঞ্চলেও নিখুঁতির প্রচলন আছে৷ চ্যাপ্টা গড়নের চৌকো আকৃতির পানতুয়া হল চিত্রকূট৷ বিবাহের তত্ত্বে চিত্রকূটেরস্থান পাকা৷ নামটি ভাল, কিন্তু নামকরণের তাৎপর্য জানা নেই৷ প্রস্তুতকর্তার নামও অজানা৷

এবারে ঘিয়ের কড়া নামিয়ে রসের কড়া চড়ানো যাক৷ রসে ফোটানো মিষ্টির প্রথম নামটিই হলো রসগোল্লা৷ সুখ্যাতিতে এবং জনপ্রিয়তায় বাংলার মিষ্টান্নকুলের শিরোমণি রসগোল্লা৷ উৎপত্তির এবং আবিষ্কর্তার অধিকার নিয়ে তুমুল লড়াই চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে৷ প্রধান দাবিদার পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা৷ যদিও সম্প্রতি রসগোল্লার জি, আই, ট্যাগ পশ্চিমবঙ্গই লাভ করেছে, তবু একথা অস্বীকার করা যায় না যে বরিশালের পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া রসগোল্লার প্রাচীনতম প্রাপ্তিস্থান৷ পোর্তুগীজদের সময় থেকেই সেখানে এই মিষ্টান্নটি ক্ষীরমোহন বা রসগোল্লা নামে পরিচিত৷ আবার অনেকের মতে নদীয়া জেলার ফুলিয়ার হারাধন মান্না রসগোল্লার আবিষ্কারক৷ কলকাতার বাগবাজারের নবীনচন্দ্র দাস স্পঞ্জ রসগোল্লার আবিষ্কারক৷ খ্যাতিতে নবীনচন্দ্রই রসগোল্লার কলম্বাস নামে অভিহিত৷ রসগোল্লা তৈরি হয় ছানাকে সুজি, ময়দা ইত্যাদির সঙ্গে মেখে নিয়ে গোলাকার আকৃতি দিয়ে নিয়ন্ত্রিত তাপে রসে ফুটিয়ে৷ প্রক্রিয়া এবং উপকরণের তারতম্যে রসগোল্লার রূপ বদলায়, স্বাদ বদলায়, নামও বদলায়৷ 

রাজভোগ রসগোল্লার বৃহত্তর রূপ৷ এর পাক সাধারণত কড়া হয়৷ ভিতরে ক্ষীরের পুর দেওয়া হয়৷ রসগোল্লার পর্যায়ে আর একটি বিশিষ্ট নাম কমলাভোগ৷ ছানা তৈরির সময় কমলালেবুর খোসা দিয়ে দুধ ফোটানো হয় আর ছানার সঙ্গে মেশানো হয় কমলালেবুর রস৷ হলুদ রঙ করার জন্যে জাফরান বা কেশর দেওয়া হয়৷ মাদারিহাটের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী ননী পাল কমলাভোগের স্রষ্টা৷

কড়াপাকের শুকনোা রসগোল্লা- যার উপর চিনি ছড়ানো থাকে, তার নাম দানাদার৷ ভারত ও বাংলাদেশে এটি একটি জনপ্রিয় মিষ্টি৷ ক্ষীরমোহন, চমচম, ছানাগজা, ছানার মুড়কি, ছানাবড়া— এসবই রসে পাক করা ছানার মিষ্টি৷তবে পশ্চিমবঙ্গে প্রচলিত ক্ষীরমোহনের সঙ্গে বাংলাদেশের উলিপুরের ক্ষীরমোহনের যথেষ্ট পার্থক্য আছে৷ পশ্চিমবঙ্গের ক্ষীরমোহন শুকনো রসগোল্লারই প্রকারভেদ৷ চ্যাপ্টা গোলাকৃতি এই মিষ্টান্নটিও বিয়ের তত্ত্বের আবশ্যিক উপকরণ৷ অন্যদিকে উলিপুরের ক্ষীরমোহন ক্ষীরের রসে ভেজানো মিষ্টিবিশেষ৷ ফরিদপুরের সুধীর ময়রা উলিপুরে এসে এই মিষ্টান্নটির প্রবর্তন করেন৷ যা আজও যথেষ্ট জনপ্রিয় এবং সুস্বাদু৷ ল্যাংচার মতোই গোলাকার লম্বাটে রসগোল্লাই চমচম৷

বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ি এলাকায় উৎপন্ন এই মিষ্টিটি বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে৷ ছানাগজা চৌকো আকৃতির দানাদার৷ ছানার মুড়কিও ক্ষুদ্রাকৃতি নরম দানাদার৷ বাংলার মিষ্টিজগতে ম্যামথের মর্যাদা ছানাবড়ার৷ মুর্শিদাবাদের লালবাগ এলাকায় প্রায় দু’শো বছর আগে ছানাবড়ার উৎপত্তি নিমাই মন্ডলের হাতে৷ পরবর্তীকালে বহরমপুরের খাগড়ার পটল সাহার হাত ধরে ছানাবড়ার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে বাংলায়৷ একসময় রূপোর থালায় একমন-দেড়মন সাইজের ছানাবড়া সাজিয়ে নবাবরা অতিথিদের অভ্যর্থনা জানাতেন৷ আজও বহরমপুরের কারিগররা অনায়াসে বিশ-তিরিশ কেজির ছানাবড়া তৈরি করে দিতে পারেন, যা দেখলে চক্ষু ছানাবড়া হতেই পারে৷ অবশ্য ষোড়শ শতাব্দীর সাহিত্যেও ছানাবড়ার উল্লেখ পাওয়া যায়৷

এই প্রসঙ্গে আরও দু’টি মিষ্টির নাম উল্লেখ করতে হয়, সে দু’টি হলো সরভাজা ও সরপুরিয়া৷ এই মিষ্টান্নদুটির বয়স বেশি নয়৷ মাত্র একশো বছর৷ কৃষ্ণনগরের নেদের পাড়া এলাকার অধর চন্দ্র দাস সরপুরিয়া ও সরভাজার আবিষ্কারক৷ কথিত আছে অধরবাবু রাত্রে ঘরের দরজা বন্ধ করে এই মিষ্টিদু’টি তৈরি করতেন, যাতে না এর প্রস্তুত প্রণালী চুরি হয়ে যায়৷কিন্তু কালক্রমে তা সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে৷ ময়দা, বেকিং পাউডার, গুঁড়ো চিনি, দুধের সর, ঘি, মেওয়া একসঙ্গে মেখে একটি মিশ্রণ তৈরি করতে হয়৷ সেটিকে চৌকো চৌকো করে কেটে ঘিয়ে বা তেলে বাদামী করে ভেজে নিয়ে রসে ফেলা হয়৷ এভাবেই তৈরি হয় সরভাজা৷ দুধের সর স্তরে স্তরে জমা করে ভেজে নেওয়া হয়৷ মোটা ভাজা সরের দু’টি স্তরের মাঝে মেওয়া দিয়ে ভর্তি করা হয়৷ তারপর টুকরো করে কেটে নিয়ে চিনি মেশানো দুধের মধ্যে রাখা হয়৷ এটিই হলো সরপুরিয়া৷

সন্দেশ কথাটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হলো সংবাদ৷ কিন্তু শব্দার্থ পরিবর্তনের ধারায় কালক্রমে সন্দেশের নতুন অর্থ জন্ম নিল – মিষ্টান্ন৷৷ তবে মিষ্টান্ন অর্থে সন্দেশ শব্দের ব্যবহার প্রাকচৈতন্য যুগ থেকেই৷ শ্রীকৃষ্ণকীর্তনেও মিষ্টান্ন অর্থে ব্যবহৃত৷ চৈতন্য চরিতামৃতে একাধিকবার উল্লেখিত হয়েছে৷ যেমন—

“তবে স্বরূপ গোঁসাঞি তাঁকে কহিল বচন৷

অষ্ট কৌড়ির খাজা সন্দেশ কর সমর্পণ৷৷”

তবে সেই সন্দেশ যে আজকের প্রচলিত সন্দেশ তা বোধহয় নয়৷ তখন সন্দেশ তৈরি করতে ক্ষীর ব্যবহার করা হতো৷ ছানার তৈরি সন্দেশের আবির্ভাব সম্ভবত অষ্টাদশ কিংবা ঊনবিংশ শতকে৷হালকা আঁচে ছানা ও চিনির মিশ্রণকে পাক করে ছানার সন্দেশ তৈরি হয়৷ এই মূল প্রক্রিয়াকে সামনে রেখে উপাদানের তারতম্য এবং প্রস্তুত প্রণালীর তারতম্যে নানারকম সন্দেশ তৈরি করা হয়৷ কলকাতায় সন্দেশের জন্য বিখ্যাত দোকানগুলি হলো ভীম চন্দ্র নাগ, গিরিশ চন্দ্র দে ও নকুড় চন্দ্র নন্দী, বলরাম মল্লিক ও রাধারমণ মল্লিক, নবকৃষ্ণ গুঁই, মাখনলাল দাস এন্ড সন্স প্রমুখ৷

সন্দেশেরই একটি রকমফের মণ্ডা৷ সন্দেশ আগে না মণ্ডা আগে, এ নিয়ে বিতর্ক চলতেই পারে, কারণ প্রাচীন বাংলা সাহিত্যে মণ্ডার উল্লেখ পাওয়া যায়৷ কৃত্তিবাসী রামায়ণে, ধর্মমঙ্গলে, চৈতন্য চরিতামৃতে মণ্ডা সুপরিচিত ও সমাদৃত মিষ্টান্ন৷ পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে মণ্ডা এখনো সশরীরে বিরাজ করছে৷ বাংলাদেশের ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মণ্ডা বা শেরপুরের মণ্ডার খ্যাতি আছে৷ তমলুকের খেঁজুরে গুড়ের মণ্ডাও বিখ্যাত৷

‘পিণ্ড’ থেকে পেঁড়া হওয়া উচিত৷ হিন্দীতে পেড়া বলা হয়, বাংলায় চন্দ্রবিন্দুর আগম হয়েছে৷ খোয়া ক্ষীর, চিনি এলাচ, পেস্তা বাদাম ইত্যাদির মিশ্রণকে পাক দিয়ে পেঁড়া তৈরি হয়৷ পেঁড়ার উদ্ভব সম্ভবত মথুরায়৷ পরে তা ভারতের অন্য প্রদেশে এবং বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে৷ মথুরা, বেনারস, হরিদ্বার প্রভৃতি স্থানের পেঁড়ার নিজ নিজ বৈশিষ্ট্য আছে৷

মনোহরা পশ্চিমবঙ্গের এক অতি জনপ্রিয় মিষ্টান্ন৷ ছানা ও চিনির মিশ্রণের সন্দেশের উপর চিনির শক্ত প্রলেপ দেওয়া গোলাকৃতি এই মিষ্টান্নটির উদ্ভব সম্পর্কে নানান গল্প প্রচলিত আছে৷ হুগলী জেলার জনাইয়ের মনোহরা বিখ্যাত৷ মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার মনোহরারও খ্যাতি আছে৷ আজকাল কলকাতায় খেঁজুরে গুড়ের বা চকলেটের আস্তরণ দিয়েও মনোহরা তৈরি হয়৷

কালাকাঁদ একরকম ক্ষীরের বরফি৷ এর হিন্দীরূপ হলো ‘কলা কন্দ’৷ এই কন্দ শব্দটি আরবী থেকে এসেছে মিষ্টি অর্থে৷ কালাকাঁদ খুব প্রাচীন মিষ্টান্ন নয়, তবুও এর জনপ্রিয়তা কম নয়৷ নদীয়ার শিমুরালির কালাকাঁদের সুখ্যাতি আছে৷

‘বরফি’ কথাটি চৌকো আকারের মিষ্টান্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়৷ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ক্ষীরের, বেসনের কখনো কখনো ছানার,  কাজু বাদামের বা সন্দেশেরও বরফি হয়৷ ঠান্ডা হলে সন্দেশ জমে যায়৷ তারপর ছুরি দিয়ে চৌকো রুইতনের আকৃতিতে কাটা হয়৷ জল জমে বরফ হয়, সন্দেশ জমে বরফি হয়েছে৷ জমাট বাঁধার জন্যই এই নামকরণ৷

কাঁচা ছানাকে চিনির রসে ফেলে যে সন্দেশ তৈরি হয়, তাই কাঁচাগোল্লা নামে পরিচিত৷ এটির উদ্ভব নাটোরের লালবাজারের মধুসূদন পালের হাতে৷ এ সম্পর্কে একটি গল্পও প্রচলিত আছে৷ পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ বসিরহাট অঞ্চলের কাঁচাগোল্লারও যথেষ্ট সুনাম আছে৷ তবে নাটোরের কাঁচাগোল্লার ইতিহাস দ্বিশতাধিক বর্ষের৷

নরমপাকের সন্দেশকে অতিরিক্ত পাক করে শক্ত সন্দেশ বানানো হলে তা হয় কড়াপাকের সন্দেশ৷ এর স্থায়িত্ব বেশি বলে অনেকে কড়াপাকের সন্দেশ পছন্দ করেন৷ কলকাতার অনেক দোকানেই কড়াপাকের সন্দেশ পাওয়া যায়৷ উপকরণের রকমারি ব্যবহার, আকৃতি ও সজ্জার চমৎকারিত্বে সন্দেশের বিচিত্র সম্ভার গড়ে উঠেছে৷ ‘আবার খাবো’, ‘আম সন্দেশ’, ‘ডিম সন্দেশ” ‘গোলাপী সন্দেশ”, ‘চকোলেট সন্দেশ’, ‘স্টীম সন্দেশ’, ‘জলভরা সন্দেশ’ প্রভৃতি তারই কয়েকটি মাত্র৷ 

মিষ্টান্নের বৈচিত্র্যময় জগতে ‘মোয়া’ একটি বিশেষ ধারা৷ খইয়ের সঙ্গে গুড় মিশিয়ে পাক করার পর তাকেই নাড়ুর মতো গোল আকৃতি দেওয়া হয়৷ গুড়ের মোয়া, চিঁড়ের মোয়া, মুড়ির মোয়া, খইচুর প্রভৃতি মোয়ার রকমফের৷ দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার জয়নগরের খেঁজুরে গুড়ের মোয়া অতি পরিচিত এবং জনপ্রিয় মিষ্টান্ন৷ জানা যায় জয়নগরের নিকটবর্তী বহরু গ্রামের জনৈক যামিনীবুড়ো নিজের জমির কনকচূর ধানের খই ও নলেন গুড় দিয়ে মোয়া তৈরি করেন৷ স্বয়ং শ্রীচৈতন্যদেব নাকি সেই মোয়া খেয়ে সন্তুষ্ট হন৷ ক্রমে এই মোয়া অতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে৷ ব্যবসায়িকভাবে  মোয়া উৎপাদনের জন্য ১৯২৯ সালে জয়নগরের পূর্ণচন্দ্র ঘোষ ওরফে বুঁচকিবাবু এবং নিত্যগোপাল সরকার কারখানা ও দোকান স্থাপন করেন৷

বাংলার নিজস্ব ঘরোয়া খাবার নাড়ু৷ সংস্কৃত ‘লড্ডুক’ শব্দ থেকে হিন্দীতে লাড্ডু এবং বাংলা লাড়ু বা নাড়ুর উৎপত্তি৷ বাংলায় নাড়ু বলতে প্রধানতঃ নারকেলের নাড়ুই বোঝায়৷ নারকেল কুরিয়ে তার সঙ্গে গুড় অথবা চিনি মিশিয়ে পাক করা হয়৷ নারকেল ছাড়াও তিল, চালের গুঁড়ো, মুগ, সর, বেসন প্রভৃতি উপকরণ সহযোগেও নাড়ু তৈরি হয়৷ নারকেল নাড়ুরই একটি উন্নত রূপ হলো চন্দ্রপুলি৷ নারকেলবাটা, দুধ  ও চিনি দিয়ে তৈরি হয়৷ নরম অবস্থায় কাঠের, পাথরের বা পোড়ামাটির ছাঁচে ফেলে অর্ধ চন্দ্রাকৃতি আকার দেওয়া হয়৷ পদ্মাপুরাণে বেহুলার বিবাহের ভোজে চন্দ্রপুলি পরিবেশন করা হয়েছিল এতথ্য জানা যায়৷ সুতরাং চন্দ্রপুলির প্রাচীনতা সম্পর্কে কোনও সন্দেহ নেই৷

বাংলার মিষ্টান্ন সংস্কৃতির একটি স্বল্প পরিচিতি তুলে ধরার চেষ্টা করলাম৷ এর বাইরেও রয়ে গেলো আরও অনেক জানা-অজানা মিষ্টান্নের স্বাদ৷ রসে-বশে থাকা বাঙালির শেষপাতে মিষ্টিমুখ করার প্রবণতা থেকেই এই মিষ্টান্ন সংস্কৃতির জন্ম৷ অন্য প্রদেশ থেকে ধার করেও বাংলা তার নিজের মতো করে অনেক মিষ্টান্নকেই গ্রহণ করেছে৷ তার অসংখ্য উদাহরণ আছে৷ আজও বাংলার এই মিষ্টান্ন জগতের পরিধিকে ক্রমশ বাড়িয়ে তোলার অবিরাম প্রচেষ্টায় রত বাংলার মিষ্টান্নের মধুকরের দল৷ তাদের সেই প্রচেষ্টা জারি থাকুক আর আমরা ইতরজনেরা তার রসামৃত পান করতে থাকি, কারণ সকলেই জানে যে ‘মিষ্টান্নমিতরে জনাঃ’৷

 

 

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত