| 29 মার্চ 2024
Categories
ব্রহ্মপুত্র ও বরাকের গল্প

ব্রহ্মপুত্র ও বরাকের গল্প: শিরোনামহীন । কুমার অজিত দত্ত

আনুমানিক পঠনকাল: 5 মিনিট

 

অবিনাশ এমনই একটা সময়ে খবরওয়ালা যোগ দিল যখন কম্পিউটারের মেইল সার্চ দিয়ে বেরিয়ে আসছে রক্ত, তাজা তাজা রক্ত। সংখ্যালঘুদের স্বপ্নের ভিটেমাটি ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। এ ভাবেই কম্পিউটারের মেইল সার্চের মৃদু শঙ্কার মাঝে দিনরাত কাটছে অবিনাশের। 

অবিনাশের কপালে একটা বড় দাগ আছে। ক্ষতের দাগ। দাগটা এখন আইডেন্টিফাইং স্পট হয়ে গেছে তার। এ -চিহ্নটা তাকে খড়্গদা উপহার দিয়েছিল সেই  ছেলেবেলায়। তখন খড়্গদা অবিনাশদের বাড়িতে থেকে বাগিচার কাজ করত। সেই গত শতকের আশির দশকের আসাম আন্দোলনের সময় অবিনাশকে অতর্কিতে একটা পাথর ছুঁড়ে অন্তর্ধান হয়ে গিয়েছিল সে। এবং প্রায় এক বছর  পর ফিরে এসে কাঁদাকাটি শুরু করে দিয়েছিল অবিনাশের বাবার কাছে। তখন খড়্গদার বয়েস ছিল কুড়ি কি বাইশ। 

নলবারি জেলার এক অজ পাড়াগাঁয়ের গরিব কৃষক ঘরের ছেলে ছিল খড়্গদা। খড়গেশ্বর হাজরিকা। চোখে তার ছিল না কোনো স্বপ্নের চাঁদমারি। বিভ্রান্ত হয়ে অবিনাশের এই ক্ষতটাকে আরো বেদনাময় করে তুলতে উন্মত্ত হয়ে উঠেছিল সে। আসলে খড়্গদা ছিল সুঠাম দেহী, কর্ম -নিপুণ আর সৎ। অবিনাশের বাবা বুঝিয়েশুনিয়ে আশ্বস্ত করেছিলেন  ওকে 

দৃঢ় বাহু,বিশাল দেহ,চওড়া কাঁধ আর গাল ভরা বুক অব্দি ঝুলে থাকা লম্বা লম্বা শ্মশ্রুজটার অধিকারী খড়গেশ্বর হাজরিকা অবিনাশের কপালের এই ক্ষতচিহ্নটাকে নিশ্চিহ্ন করে দেবার কাজে অবিরাম প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে এখন। কিন্তু নিশ্চিহ্ন হয় না একেবারে…। মাঝে মাঝে খড়্গদা অবিনাশের খবরের অফিসে এলে দেখা করতে ভোলে না তার সঙ্গে। এলে প্রথমেই অবিনাশদের কুশল জিজ্ঞাসা করে। তারপর সজল চোখে তাকিয়ে থাকে অবিনাশের কপালের এই গভীর ক্ষতচিহ্নটার দিকে ।

।২।

অবিনাশের ছেলেবেলার এক বন্ধু ছিল, তাকে ডাব্বু বলে ডাকতো। সেদিন হঠাৎ গুয়াহাটি রেলওয়ে স্টেশনে দেখা হয়ে গেলো ওর সঙ্গে অবিনাশের। অবিনাশই ওকে প্রথম চিনতে পেরে কাছে ডাকল। ও একটা বেঞ্চিতে উদাস বসেছিল। অবিনাশ ওকে বাড়ি নিয়ে গিয়ে খাওয়াল-দাওয়াল । 

ডাব্বু ছিল জাতকবি। ছোটোবেলা থেকেই কবিতা লিখত। আর হঠাৎ হঠাৎ উধাও হয়ে যেত। ও ছিল এক ধরনের একসেনট্রিক। ওর চোখ দুটোর দিকে তাকালে অন্তর্লোক পর্যন্ত পৌঁছুনো যেত। ওর ওই অন্তর্লোকে  ছিল একটা স্বপ্নের ঘর। সেদিন  আরো ভালো করে দেখলো অবিনাশ ওর ওই চোখ দুটোকে। আগের স্বপ্নের ঘর নেই সেখানে। সেখানে জমে আছে একটা অশান্ত  ঝড়।  

বয়স পেরিয়ে গেছে ডাব্বুর, এখনো চাকরি হয়নি ওর। কবিতা লেখা ছেড়ে দিয়েছে।বাড়ি ফেরে নাই অনেকদিন …। উড়নচণ্ডির মতো ঘুরে বেড়ায়। আজ এই স্টেশন তো কাল ওই স্টেশন …। অবিনাশ টের পায় কম্পিউটারের মেইল সার্চের ভেতর যেন ধীরে ধীরে ঢুকে যাচ্ছে ডাব্বুর চোখের ওই ঘনীভূত ঝড়। 

।৩।

আজকাল খনাবাইদোকে খুব স্বপ্নে দেখে অবিনাশ। খনাবাইদো এখন কোথায়? ছেলেবেলায় অবিনাশের বাড়িতে দুধ দিতে আসত এক বোড়ো রমণী। নাম ছিল তার খনা। খনাবাইদো বলেই ডাকতো অবিনাশ। খুব কাছের হয়ে উঠেছিল সে তাদের। দুধ দিতে এসে তাদের সংসারের কাজে লেগে যেত মায়ের ঘরকন্নায়  হয়ে উঠত  অপরিহার্য একটা ভালোবাসার হাত। সারাদিন থেকে বিকেলে ফিরে যেত গ্রামে কতো আন্তরিক ছিল সে 

মাঝে মাঝে খনাবাইদো অবিনাশকে  নিয়ে যেত তার গ্রামের বাড়িতে। অবিনাশ সারা গ্রাম টইটই করে ঘুরে বেড়াত তখন। অবাক হয়ে দেখত গ্রামের ঘরবাড়ি, মানুষজন আর ধানের ক্ষেত।কতো কষ্টে জীবনযাপন করত  ওরা… কতো সরল। 

বড় হয়ে যখন কলেজ যেতে শুরু করল অবিনাশ তখনও যেত ওই গ্রামে। তখন অবশ্য খনাবাইদো দুধ দিতে আসত না। ওর বিয়ে হয়ে গিয়েছিল ওই গ্রামেরই এক বোড়ো মুনিশের সঙ্গে। মাঝে মাঝে ওর তখনকার বাড়িতেও যেত অবিনাশ। গেলে সহজে ছাড়ত না… নাছোড়বান্দা। সবাই মিলে আদর করত তাকে। গ্লাসভর্তি দুধ খাওয়াত। অবিনাশ অবাক হয়ে দেখত, ওরা কতো অভাবের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে অথচ মুখে হাসিটি ফুটেই আছে। 

চুটিয়ে কলেজ ইউনিয়ন করত তখন অবিনাশ। পৃথিবীর সামাজিক ও রাজনৈতিক বেগ-আবেগ আর উত্তাপ তার নতুন চিন্তা-চেতনায় আঘাত হানতো আর উন্মাদনা যোগাতো সেবামূলক কাজে। কলেজ ইউনিয়নের কয়েকজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে চলে যেত ওই বোড়ো  গ্রামে। গাছের ছায়ায় নয়তো বা নাম ঘরের চাতালে ছোটো ছোটো ছেলেমেযেদের জড়ো করে শেখাত বর্ণমালা। নৈশ পাঠশালা খোলারও পরিকল্পনা নিয়েছিল ওরা। কিন্তু আস্তে আস্তে সে-উদ্যমের পারা  নেমে আসতে শুরু করে ওদের। একজন একজন করে সদস্য কমতে থাকে, কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওদের মিশন অসম্পূর্ণই থেকে যায়। অবিনাশ আজ ভাবে সে-উন্মাদনা আর কিছু নয়, শৌখিনতা ছিল ওদের । 

এমন কিছু পুরুষ বা নারী তো থাকেন এ পৃথিবীতে যারা নিজেদের বিলিয়ে, নিজেদের নিংড়ে, নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেও কতজনের স্বপ্নের ঘরের দেউটি জ্বালিয়ে দিয়ে যান। অবিনাশ ভাবে, এ রকমই একজন পুরুষ মধ্যপ্রদেশের  আদিবাসী-প্রধান অঞ্চলে কিংবদন্তী হয়ে উঠেছিলেন গত শতকের শেষ পাদের কয়েক দশক জুড়ে সে-অঞ্চলের প্রতিটি আদিবাসীর স্বপ্নের ভিটেমাটি নির্মাণের শপথ নিয়ে একজন আদিবাসী কন্যাকে বিয়ে করে ওদের দেহাতি বনজ জীবনের সঙ্গে নিজেকে মিশিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। অবিনাশ এতোক্ষণ মহান ত্যাগী শংকর গুহ নিয়োগীর কথাই ভাবছিল। শংকর গুহ নিয়োগী মানেই একটা দৃষ্টান্ত, মহান ত্যাগের দৃষ্টান্ত। মহান ত্যাগ ছাড়া যে কোনো আদর্শকেই রূপায়িত করা যায় না তিনি সেটা প্রমাণ করে গেছেন। 

জরাসন্ধকে মনে পড়ছে অবিনাশের, মহাভারতের জরাসন্ধ। রাজ চক্রবর্তী। অনুভূতিশীল, খ্যাপাটে ও সুপুরুষ মহাবলী। তাঁর মতো ক্ষমতাশালী, শিবভক্ত আর  স্বাধীনচেতা সম্রাট আর্যাবর্তে অতি অল্পই ছিল তখন। তাঁর প্রজাদের স্বপ্নের ঘর তৈরিতে ক্ষমতার  হাত বাড়িয়ে প্রতিটি প্রতিজ্ঞা আর কথার মূল্য রেখেছিলেন তিনি. অথচ এই রাজাকে বধ করা হয়েছিল আচম্বিতে এবং প্রায় অসহায় অবস্থায়। পাণ্ডবদের স্বপ্নের ঘরকে নিষ্কণ্টক রাখার অদম্য অভিপ্রায়ে কৃষ্ণের চক্রান্তেই তাঁকে এমনভাবে হত্যা করা হয়েছিল। 

পঞ্চ-পাণ্ডব আর কৃষ্ণের ক্ষমতা ছিল না সম্মুখ সমরে তাঁকে পরাভূত করার। সে-ধরনের শৌর্যের অহংকার ছিল না ওঁদের। সে-কারণেই ছলনার আশ্রয় নিয়ে গুপ্তঘাতকের ভূমিকা পালন করেছিলেনে ওঁরা। সে-ভাবেই একদল কূট স্বার্থান্বেষী তাদের স্বপ্নের ঘর নিষ্কণ্টক রাখার প্রাণান্ত অপপ্রয়াসে ঘুমন্ত অবস্থায় হত্যা করে একালের জরাসন্ধ শংকর গুহনিয়োগীকে। খড়ের বিছানা রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল সেদিন তাঁর। এবং সে-রক্তই  গায়ে মেখে খনাবাইদোরা চোয়াল শক্ত করে শপথ নিয়েছিল সেদিন এই প্রতিজ্ঞা করে যে, তাঁদের স্বপ্নের সব ভিটেমাটি একদিন খুঁজে নেবেই তারা। তাই অবিনাশ তার কম্পিউটারের সার্চ মেইলে মাঝে মাঝেই দেখতে পায় একটা প্রতিজ্ঞার ঢেউ , আমরণ প্রতিজ্ঞা…।

।৪।

কৃষ্ণাদিকে ভোলেনি অবিনাশ। কৃষ্ণা ভরদ্বাজ।তাদের কলেজ ইউনিয়নের এক কালের সাধারণ সম্পাদক। যখন সে হাইয়ার সেকেন্ডারিতে তখনই দুই ক্লাস উপরে পড়ত কৃষ্ণাদি। বি এস সি দ্বিতীয়  সেমেস্টার। বাইওলজিতে অনার্স। দারুণ ডাকাবুকো মেয়ে ছিল কৃষ্ণাদি। চলনে-বলনে, নেতৃত্বে তুখোড়। মনকাড়া চেহারা। অনেকেরই হার্টথ্রব । 

ছেলেবেলা থেকেই কৃষ্ণাদিকে চিনতো অবিনাশ। তাদের বাড়ির পাশেই ছিল ওদের বাড়ি। ওদের বাড়িতে যাতায়াতও  ছিল। মায়ের সঙ্গে যেত। কৃষ্ণাদি গান গাইত,বাংলা গণসংগীত।ওরা গেলে গান শোনাতো সে।অবিনাশ মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকত কৃষ্ণাদির দিকে।কৃষ্ণাদির সুন্দর মুখটা আরো সুন্দর হয়ে উঠতো যখন সে গান গাইত।ওইসব দিনগুলোতে কতো যে গান শুনেছে অবিনাশ কৃষ্ণাদির ওই মিষ্টিমধুর গলায়। এতোই নেশা ধরে গিয়েছিল যে কোনো কোনো দিন  সে মাকে ছাড়াই চলে যেত কৃষ্ণাদির বাড়ি । ওর অবুঝ মন তখন থেকেই কৃষ্ণাদিকে কাছে পেতে চাইত। আবেগে ভেসে যেত। 

স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে যখন কলেজে উঠলো অবিনাশ তখনো কৃষ্ণাদির বাড়ি যেতে ভোলেনি সে। কৃষ্ণাদিও খুশিতে হেসে উঠত। গান শোনাতো ওকে। কৃষ্ণাদির বাড়ির লোকেরাও,বিশেষ করে মাসিমা, ওকে খুব আদর করতেন।গেলেই চা বানিয়ে খাওয়াতেন। স্কুল বেলায় মায়ের সঙ্গে যখন যেত তখন  হাতে ধরিয়ে দিতেন খইয়ের  মোয়া। 

কৃষ্ণাদি যে -গানটি মাঝে মাঝেই  শোনাতো  এখনো মনে আছে অবিনাশের, ‘ভারতবর্ষ সূর্যের এক নাম/আমরা রয়েছি সেই সূর্যের দেশে …। গানটি গাইতে গাইতে  কৃষ্ণাদি অবিনাশের দিকে  তাকিয়ে তাকিয়ে হাসত আর ইশারা করত তার সঙ্গে গলা মেলাতে। অবিনাশ গলা মেলাত । 

এভাবে চলতে চলতে কবে থেকে যেন অবিনাশ কৃষ্ণদির ন্যাওটা  হয়ে গিয়েছিল। কলেজে গিয়ে নেবাজ। কলেজের  সতীর্থরা আড়ালে বলত সাকরেদ। কৃষ্ণাদিও ইউনিয়নের সব কাজে তাকে সঙ্গে নিত। নিত্য  কলেজ ক্যান্টিনে কেবল ওকে নিয়েই চায়ের টেবিলে বসত। চা আর গরম গরম  চপ খাওয়াত।গল্প করত, গান গাইত। খুব কাছ থেকে অবিনাশ কৃষ্ণাদির শরীরের নানান মোহমযী বিভঙ্গগুলি চোখ ভরে উপভোগ করত আর ওই কাঁচা বয়সেই কল্পনা করত  যদি কারো সঙ্গে ঘর  বাঁধতে হয় তো বাঁধবে কৃষ্ণাদির সঙ্গেই। 

হঠাৎ একদিন কৃষ্ণাদি কলেজ এল না। না আসার কারণ কেউ বলতে পারেনি। অবিনাশের সেদিন কোনো ক্লাশেই মন বসেনি। কলেজ ছুটির পর এক  দৌড়ে  বাড়ি ফিরেছে সে।বাড়ি ফিরেই বজ্রপাত। কৃষ্ণাদি হাসপাতালে। ঘুম থেকে উঠেই নাকি চোখে আঁধার দেখেছে সে। নানান পরীক্ষার পর ডাক্তার রায় দিয়েছে, ব্রেনক্যান্সার। 

পরদিন কৃষ্ণাদিকে উড়িয়ে নিয়ে যাওযা হয় টাটা, মুম্বাই। ওখানে ডাক্তারের নিদান, কৃষ্ণাদির এই পৃথিবীর আলো-হাওয়া-রোদ নেওয়ার মেয়াদ আর মাত্র তিন মাস। 

ফিরে আসে কৃষ্ণাদি। অবিনাশ এক রাশ কুণ্ঠা নিয়ে গিয়ে দাঁড়ায় কৃষ্ণাদির কাছে। কৃষ্ণাদির মুখের দিকে তাকানো যায় না। এই কয়েকদিনের মধ্যেই ভেঙে পড়েছে কৃষ্ণাদির শরীর। মুখটা ওর থমথমে। অনেকটা নড়বড়ে পায়ে এগিয়ে এসে দাঁড়ায় সে অবিনাশের কাছে। অবিনাশের চোখমুখ স্থবির। কৃষ্ণাদি আচমকা অবিনাশকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করে। অবিনাশও কৃষ্ণাদির বুকে মুখ ডুবিয়ে কাঁদতে শুরু করেছিল সেদিন …। 

কৃষ্ণাদি চলে গেছে  না -ফেরার দেশে। অবিনাশ কৃষ্ণাদিকে বুকের ভেতর রেখে দিয়েছে অতি যত্নে। ওই জায়গাটি আর কাউকে দেয়নি সে। ওর প্রথম প্রেম। প্রথম উন্মাদনা। কতো উৎকণ্ঠা, কতো উদ্বেগ আর  কতো হৃদ-স্পন্দনে উদ্বেলিত হয়ে উঠেছিল তার প্রথম যৌবন।তার মনে হয়েছে  ওই প্রথম প্রেমই মানুষকে প্রথম শেখায় এই পৃথিবীকে ভালোবাসতে। ভালোবাসতে শেখায় খড়্গদা,ডাব্বু আর খনাবাইদোদের।তখনই বুঝি স্বপ্নের ঘর রচে মানুষ …। অবিনাশ ওর কৃষ্ণাদিকে এখনো ভোলেনি।  ওর খবরওয়ালা‘ –র কম্পিউটারের ফোটো-শপে  সাজিয়ে রেখেছে সে কৃষ্ণাদির হাসিভরা ছবিটা। 

 

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত