| 25 এপ্রিল 2024
Categories
ব্রহ্মপুত্র ও বরাকের গল্প

ব্রহ্মপুত্র ও বরাকের গল্প: পূর্ণগ্রাস। মিথিলেশ ভট্টাচার্য

আনুমানিক পঠনকাল: 5 মিনিট

ঘাস বোঝাই চটের বস্তা বঙ্কুর শাটার নামানো দোকানের সিঁড়িতে রেখে তাতে মাথা দিয়ে ড্রেনের ঢাকনার ওপর পা মেলা শুয়েছিল মনতাই। আদল গা, পরনে আধময়লা নীল রংয়ের চেকলুঙি। মুখের কালো মুখোশ থুতনিতে নামানো, হঠাৎ করে তাকালে মনে হবে একগুচ্ছ সৌখিন দাড়ি।

পাশের দোকান থেকে দু’প্যাকেট চিপস কিনে ঘরের দিকে যেতে গিয়ে অলকেশের চোখ পড়ে পা’টান করে শোয়া মনতাইয়ের ওপর। ওকে দেখে মুখে একটু হাসি টেনে অলকেশ্ বলে, আরে মনতাই যে!

অয়। ভালো আছোনি-মনতাইও স্মিত হেসে জবাব দেয়।

আছি। বেশ কদিন থেকে তোমার কথা ভাবছিলাম…

কেনে?

মাছের জন্য। এখন বুঝি আর মাছ ধরো না?

না। অখনো নদীতে বড়শি বাওয়ার সময় অইছে না।

তাহলে কর কী?

আমার দুইটা গরু আছে। তারারে লইয়া দিন কাটাই-তারারে হিনান করাই, জাবনা দেই আর বেইল পড়লে দুধ খিরাই’-

বাহ, খুব ভাল,- অলকেশ প্রশংসার সুরে বলে।

আপনে কেমন আছইন দাদা? মনতাই জানতে চায় এবার।

আছি, ভাল আছি…।

কথা বলতে গিয়ে অলকেশ লক্ষ করে মনতাইয়ের চাপা ঠোঁট দু’খানা পানের শুকনো রসে রাঙানো। তখন তার মনে পড়ে এখন তো রমজান মাস-তাই মনতাইকে জিজ্ঞাসা করে, তুমি রোজা রাখো না মনতাই?

রাখি তো দাদা!

তোমার ঠোঁট কেন লাল তবে?

ওহ্, পাতা খাওয়ার বাদে পান সুপারি চিবাইছলাম, তার চিন্ রই গেছে-কথার শেষে মনতাই একটু হাসে।

বেশ ক’দিন থেকে তোমাকে মনে পড়ছিল-আজ দেখা হয়ে গেল-ভালো থেকো,

-বলে সামনে এগোয় অলকেশ।

গলিপথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে মনতাই’র কথা ভাবে অলকেশ। ত্রিশ বছেরেরও বেশি সময় হয়ে গেল এই শহরতলিতে এসে ঘর বেঁধেছে অলকেশও তার অতি ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ক’জন। ওদের দেখে পরিচিত-অপরিচিত অনেকেই এসেছে এখানে। প্রধান সড়কের কাছে বহুদিন থেকে পড়ে থাকা উঁচু নিচু বিশাল এলাকা বর্তমানে শহরের অনেক গণ্যমান্য, বিশিষ্ট ব্যক্তির হটস্পট! অলকেশদের গড়ে ওঠা নতুন কলোনির চারপাশে বিস্তর গরীব-গুর্বো হিন্দু, মুসলমান, বিহারি, উড়িয়া আর চাবাগিচার ছাঁটাই শ্রমিকদের ছড়ানো-ছেটানো বসতি।

বলতে গেলে এখানে শুরুর দিন থেকে ওই গরীব-গুর্বো, গতর খেটে খাওয়া লোকদের সঙ্গে পরিচয় অলকেশের-মনতাই-হরি-মুরলি-রায়না-মাখনা-কালা-বাবুল-নাজু,-আরো অনেক-অনেক-।আর শুধু পরিচয় না, সুখ-দুঃখ, হাসি কান্না, বিবাদ-বিসম্বাদের ছন্দোবদ্ধ অঙ্গাঙ্গী জীবন।

মনে পড়ে অলকেশের বিরানব্বুই ইংরেজির এক দাঙ্গা ও গুজব বিধ্বস্ত শীতার্ত সময়ের কথা। গোটা শহর ও শহরতলী যখন মিথ্যা গুজবের তাণ্ডবে থরহরি কম্পমান তখন কোনো এক সন্ধ্যাবেলা পাশের কফিউরা টিলার মুসলমান পাড়ার ঘরের বউ-ঝি ও বাচ্চাকাচ্চারা হঠাৎ ‘আইছে’ ‘আইছে’ চিৎকার শুনে আতঙ্কিত হয়ে ছুটে এসেছিল অলকেশদের ঘরে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য! ওরকম হঠাৎ হুলুস্থুলে তার বউ ও মেয়ে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল।

ওই দিন সন্ধ্যায় খলুই ভর্তি মাছ নিয়ে অলকেশদের উঠানে হাজির হয়েছিল মনতাই। অপেক্ষা করছিল অফিস ফেরত দাদার জন্য আর তখুনি ওই আচম্বিত ঘটনা। সেও প্রথমে খুব হকচকিয়ে গেছিল তারপর সবাইকে সামলানোর কাজে লেগে গিয়েছিল। অলকেশের স্ত্রী ও মেয়েকে অভয় দিয়ে বলেছিল, বউদি, তুমি ভাতিজিরে লইয়া ঘরোর ভিতরে দরজা বন্দ করিয়া থাকো। আমি বাইরে আছি। এই বান্দারে ঘায়েল না করিয়া তুমরারে কেউ কিছু করতো পারত নায়!

ওরকম কত কত ছোট-বড় ঘটনা-।

মনতাই আর তার সঙ্গী তইবুর দুই তুখোড় বঁড়শিয়াল। হেমন্তের শুরু থেকে শীতের শেষ পর্যন্ত দু’জন বঁড়শি ও কখনো হাতজাল নিয়ে সকাল-দুপুর বা বিকালে ছুটে পূবদিকে কনকপুরের গা ঘেঁষে বয়ে যাওয়া বড়বক্র বরাক নদীর পাড়ে বা কোনো মস্ত বিল বা হাওরের দিকে। ছোট-বড় মাছ খলুই ভর্তি করে এনে পাড়াতেই এর-ওর বাড়িতে বিকি করে দুজনে। কত সুন্দর সুন্দর সব জ্যান্ত টাটকা মাছ। ঘোলা-ট্যাংরা, বাচা, গলদা চিংড়ি, বোয়াল, বরাকের অতি বিখ্যাত রাঙ্গা চোখ রই।

প্রায় দিনই মাছ নিয়ে প্রথমে চলে আসে অলকেশদের ঘরে।

বাবু, পরথম তুমি রাখিলাও, পরে অন্যর কাছে বেচমু-!

মনতাই ও তইবুর দু’জনেরই এক বায়না অলকেশের কাছে-।

বেশ ক’বছর আগে, ঘটনাটি এখনো ভুলতে পারেনি অলকেশ, একদিন দুপুরবেলা মনতাই এসে হাজির তার কাছেই বেশভূষা আজকের মতোই। আদল গা, পরনে লুঙি।শুধু আজকের মতো মুখোশ দিয়ে ঢাকা ছিল না মুখ!

কী ব্যাপার, মনতাই?

ঠেলা চালক পাতলা’র সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেবে কিনা অলকেশকে জিজ্ঞাসা করতে এসেছে মনতাই। পাতলা বা পেটলা-এ’নামেই কৃশকায় শ্যামবর্ণ ছেলেটি এলাকায় সবিশেষ পরিচিত। বলতে গেলে রোজগার শুরু করেছিল সে ঠেলা চালিয়েই। প্রথমে ঠেলা চালাতে সিমেন্ট-বালি-পাথরের মহাজন তেওয়ারির। তারপর টাকা জমিয়ে নিজেই ঠেলা বানিয়েছে। স্বভাব-চরিত্রও ভাল।

দাও না মেয়ে বিয়ে, ছেলে তো ভালই- তক্ষু্নি বলছিল অলকেশ।

আপনি যখন কইরা বাবু, তখন পাতলার হাতউ মেয়েরে দিমু…

হ্যাঁ হ্যাঁ, তাই দাও- দ্বিধাহীন কণ্ঠে আবার বলেছিল অলকেশ।

বাবু আপনে আর বউদিয়ে দোয়া করইন যে, আবেগ তপ্ত গলায় বলেছিল মনতাই।

।।২।।

এই ভয়ঙ্কর ভাইরাস সংক্রমণের দিনে-লকডাউনের প্রথম পর্বে অলকেশকে মাছ যোগান দিয়েছিল সেলিম-মনতাইয়ের ভাইপো-অলকেশের গাড়ির ড্রাইভার।

সাইকেলের দু’দিকের হ্যান্ডেলে সবজির ঢাউস থলে ঝুলিয়ে অলকেশের বাড়িতে প্রথম যে ঢুকেছিল, সে বোন্দাই কালা। মূলত সে রং মিস্ত্রি। কিন্তু লকডাউনের সময়ে পাড়া-বেপাড়ার মানুষেরা বাড়িঘরের কলি ফেরানোর কাজ শিকেয় তুলে বদ্ধ ঘরে বসে আছে ভয়ে-আতঙ্কে, তবে কালাদের মতো দিনমজুরেরা বাঁচে কেমন করে? তাইতো ভিন্নতর জীবিকার সন্ধান। কলিং বেল টিপে অলকেশকে ডেকেছিল কালা। আর ওকে দেখে সে তো অবাক।

কীরে তুই শাক-সবজি বিকি শুরু করলি  কবে?

বেশ দিন অইগেছে কাকু- পেটের দায়ে না বার অইয়্যা উপায় আছেনি!

তা কী সবজি এনেছিস?

দাড়াইন দেখাইয়ার-বলে হ্যান্ডল থেকে সবজির থলি দুটি নিচে নামায়। তারপর থলের ভিতরে হাত ভরে একে একে বার করতে থাকে পালই শাক, বেগুন, ভেন্ডি, চালকুমড়া, কাঁচালংকা। সবগুলোই অলকেশের পছন্দের সবজি। সে বেশ কিছু নিয়েছিল ওর কাছ থেকে। যাবার কালে কালা তাকে মোবাইল নম্বর দিয়ে বলেছিল, আমারে ফোন করলেউ অইব- ঘর থাকিয়া বাইরবা না কাকু। যেমন রং মিস্ত্রি থুড়ি বোদাই কালা, তেমনি খোদ সরকার বাহাদুর, পাড়া-পড়শি, দূর ও কাছের আত্মীয়-পরিজন সকলের মুখে এক কথা-নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘরের দরজা পার করবেন না। মনে পড়ল অলকেশের, একটু আগে যখন সে দোকানের কাউন্টারে দাঁড়িয়ে চিপস কিনছিল তখন করোনা নিয়ে দু’জন লোকের কথা কানে এসেছিল তার। অল্প দূরে দাঁড়িয়ে একজন আরেক জনকে বলছে, জানিস, কলির পর বলি-এখন বলির যুগ সব ধ্বংস হয়ে যাবে!

সত্যিই কী তাই? হাঁটতে হাঁটতে মনে মনে ভাবে অলকেশ। মানুষ ওসব পুরাণ কথাকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে কোনো বিচার-বিবেচনা ছাড়াই। তাইতো যুগ থেকে যুগে ‘অদ্ভুত আঁধার’ প্রলম্বিত হচ্ছে শুধু শুধু।

।।৩।।

ঘরে এসে ঢুকতেই মেয়ে অঙ্কিতা বলে, বাবু, তোমার একটা ফোন এসেছিল।

কে করেছিল?

বিকাশ কাকু, তোমার বন্ধু।

ও, সেই আতঙ্কগ্রস্তটা।

অলকেশের কথা শুনে মেয়ে হি হি করে হাসে।

কিছু বলেছে?

না, বললেন তুমি ফিরে এলে যেন ওকে ফোন করো।

ঠিক আছে, মোবালইটা এনে দে তো।

কয়েক মুর্হূতপর মেয়ে মোবাইল এনে বাবাকে দেয়, কিন্তু সরে যায় না, পাশেই দাঁড়িয়ে রয়। প্রায়দিন দুই বন্ধুতে নানা বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়, আর এখনতো করোনাকাল, কথায় কথায় দু’জনে ঠোক্কর লাগে-অঙ্কিতা ওসব বেশ উপভোগ করে। মোবাইল চালু করে অলকেশ বন্ধুকে শুধায়, কীরে, ফোন করেছিলি?

হ্যাঁ, বেশ কদিন হল তোর কোনো খবর পাইনি তাই ভাবলাম একটা ফোন করি।

ভাল করেছিস, আমিও ভাবছিলাম তোকে একটা ফোন করব।

প্রত্যুত্তরে বিকাশ বলে, আমার ফোন করার জরুরী কারণ আরেকটা- লকডাউন তো উঠেছে তাই ভাবলাম তোকে একটা কথা মনে পড়িয়ে দি’- 

কোন কথা রে-বিকাশের শেষ না করা কথার মাঝে অলকেশ জিজ্ঞাসা করে।

না, বলছিলাম আর কী, তোর তো চিরকাল হুটহাট করে বেরনো অভ্যাস, একটু সমঝে বুঝে বেরস।

তা ঠিক, তবে কাঁহাতক আর ঘরে বসে থাকা যায় বল?

তাতো জানি, তুই যে ঘরের ভিতরে বন্দী থেকে থেকে ছটফট করছিস বাইরে বেরনোর জন্য। তবে এখন চট করে অটো নিস না। তোর তো ভাগ্নে-ভাতিজার অভাব নেই তাও আবার ভিন্ন গোত্রের-আর হ্যাঁ তোর গাড়ির নতুন ড্রাইভার পেয়েছিস? কথাগুলো শুনে অবাক হয়ে যায় অলকেশ। আর শেষের প্রশ্নটা তো তাকে চমকে দেয়। তাই ফিরে সেও প্রশ্ন করে, নতুন ড্রাইভার কেন?

আমি তো পুরনো সবকে বিদায় করে দিয়েছি-ঝি-ড্রাইভার,-বিকাশ অক্লেশে বলে।

কেন শুনি?

বাহ্ রে  এ’কথাও তোকে বুঝিয়ে বলতে হবে-ওরা বাইরে থেকে বীজাণু বয়ে আনবে না ঘরে!

তোকে কেউ বলেছে বুঝি?

বলতে যাবে কেন, জানিস না কী ভয়ঙ্কর সংক্রামক ওই রোগ, ১ থেকে ৫, ৫ থেকে ১৫ তে ছড়ায় নিমেষে,- আতঙ্কিত কণ্ঠে বলে বিকাশ।

তা আর জানি না, কিন্তু আমি ভাবছি ওদের কথা, কোনো রুজি-রোজগার না থাকলে ওরা খাবে কোথেকে?

তার আমি কী জানি-ওদের বসিয়ে খাওয়ানো তো আমার পক্ষে সম্ভব নয়, তোর মতো কাইন্ড হার্টেড আমি হতে পারব না, আমার সাধ্যিই বা কতটুকু! বিকাশের কথা শুনে ব্যথা পায় অলকেশ। নিদারুণ ব্যথা। কথাটা তাকে ভিতরে ভিতরে গভীর আঘাত করে। আনেকেই তার দয়া-করুণার বহর দেখে ওরকম বলে, কখনো কটূক্তি করে, তীক্ষ্ণ খোঁচায় ভিতর রক্তাক্ত করে। তা’বলে বিকাশের কাছ থেকে ওরকম কাঠখোট্টা, নীরস কথা সে কখনো আশা করেনি!

এখানেই শেষ নয়।

২৪ ঘণ্টা বদ্ধ ঘরে শুয়ে বসে থাকতে গিয়ে সকল শ্রেণির মানুষ মোবাইল নির্ভর হয়ে গেছিল। ফেসবুক আর ওয়াটস অ্যাপের পাতা প্রতিদিন ঝুড়ি ঝুড়ি মন্তব্য, চুটকি, বার্তা ওসবে ভরে উঠেছিল। এমনি একদিন বিকাশের একটি পোস্টে চোখ আটকে গেল অলকেশের। শুধু আটকে গেলেই না, রীতিমত চমকে উঠেছিল সে। সিলেটি বাঙালিদের সাম্প্রদায়িকতা প্রসঙ্গে বিকাশ পোস্টিং দিয়েছিল কিছু কিছু সোকলড বুদ্ধিজীবী বাঙালি নিজেদের হিন্দুভাবে না! হিন্দু-মুসলমান দুই মিলিয়েই তো বাঙালি-সময়ের অন্যায্য দাবিতে এই তত্ত্বে বিকাশের ধারণা কী বদলে গেল তবে!

বিকাশের ভিতরের ওই দৈন্য প্রকাশ কী তবে বর্তমান পরিস্থিতি, পরিবেশর পরোক্ষ প্রভাব! নাকি ঘরে বসে থাকতে থাকতে সামাজিক বিচ্ছেদের প্রবল চাপে, অবসাদ-অবসন্নতায় করোনা আতঙ্কে বুদ্ধি বিভ্রম ঘটল বিকাশের- মারণ রোগ ঠেকানোর জন্য সবরকম সাবধানতা অবলম্বন করেছে সে-বাইরের জগৎ তার কাছে সম্পূর্ণ রুদ্ধ- ঘরের ভিতরে দিনের পর দিন রাতের পর রাত স্বেচ্ছা-বন্দী স্বামী-স্ত্রী।

ওসব কথা ভাবতে ভাবতে মাথাটা মুহূর্তে কেমন ফাঁপা, শূন্য হয়ে ওঠে।অনুভব করে অলকেশ চারপাশকে যেন এক আদিম অন্ধকার গ্রাস করে। জীবনের সমূহ স্পন্দন আলো-হাসি-গান-সুখ দুঃখ-কান্না-ব্যথা-বেদনা-বিরহ সব-সবকিছু নিমেষেই  ওই চারপাশ গজিয়ে ওঠা অদ্ভুত আঁধারে, বর্ণহীনতায় হারিয়ে যায়!

                               

                                                                                       

                                      

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত