
শারদ সংখ্যা’২২
সম্পাদকীয়
শারদ আবহ প্রকৃতি জুড়ে। নিম্নচাপের কালো মেঘের সম্ভাবনা সরিয়ে জানলা দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছে ঝলমলে রোদ্দুর। শিউলি ঝরছে টুপটাপ ভোরের বুকে, নীল আকাশে রোদ-মেঘের লুকোচুরি, বাতাসে আনমনা ছাতিমের গন্ধ। দেবীপক্ষের সূচনা হয়ে গেছে। উমা আসবে ঘরে তার পুত্র কন্যাদের হাত ধরে। শারদসাহিত্য এখন আর শরৎ-সাহিত্য নেই, বাণিজ্যিক নানা কারণে তা এখন গ্রীষ্ম-বর্ষার সাহিত্য। নব্য কবি-সাহিত্যিকদের লেখা তো শারদ সংখ্যায় দেখাই যায় না। তাই বর্তমান তরুণ সমাজের মনে শারদসাহিত্যের স্বাদ আকর্ষণ নেই। লেখক-পাঠকদের মেলবন্ধনও নেই। প্রায়শ দেখা যায় প্রকাশিত শারদ সংখ্যাগুলো যেন বঙ্গ সংস্কৃতির ঐতিহ্য রক্ষা করার প্রাণান্তকর চেষ্টা করে চলেছে। কিন্তু মানুষ বিমুখ।
যাঁরা সাহিত্য ভালবাসেন, তাঁরা উন্মুখ হয়ে থাকেন শারদ সাহিত্যের জন্য। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ছাপা শারদ সংখ্যার সাথে পাল্লা দিয়ে তাদের হাতে হাতে ডিজিটাল শারদ সংখ্যা। যেখানে খুশি যখন খুশি মোবাইল ফোনেই পড়ে ফেলছে প্রিয় শারদ সংখ্যা। ইরাবতী এই শারদ আবহে আপনাদের জন্য নিবেদন করছে গল্প-উপন্যাস-সাক্ষাৎকার-অনুবাদ সাহিত্য-প্রবন্ধ সহ সাহিত্যের সুবিশাল এক ভাণ্ডার শারদ সংখ্যা ২০২২ এখন কেবল আপনার ক্লিকের অপেক্ষায়। আশা করি ইরাবতীর এই প্রচেষ্টা পাঠকের ভাল লাগবে।
ইরাবতী টিমকে সার্বিক সাহায্য ও সহযোগিতা করেছেন লেখক ও সম্পাদক মোহিত কামাল,বিতস্তা ঘোষাল এবং অঞ্জলি সেনগুপ্ত । এই শারদ সংখ্যায় বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে ভারতীয় ভাষার অনুবাদ ঘিরে যার সবটা দেখেছেন বিতস্তা ঘোষাল। নিজের সম্পাদিত অনুবাদ পত্রিকার মতোই তিনি সবটুকু দিয়ে ইরাবতী শারদ সংখ্যার অনুবাদ বিভাগকে সমৃদ্ধ করেছেন। শত ব্যস্ততার মাঝেও শব্দঘর সম্পাদক মোহিত কামাল সাজিয়ে তুলেছেন এই সংখ্যার গল্প বিভাগ। অন্যদেশ সম্পাদক অঞ্জলি সেনগুপ্ত সুদূর ইংল্যান্ড থেকে লেখা সংগ্রহ থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ কাজটাকে সুচারু করে তুলেছেন। প্রতিষ্ঠিত তিন সম্পাদকের অকৃত্রিম এই স্নেহ ও ভালবাসার কাছে ইরাবতী কৃতজ্ঞ।
ইরাবতীর চলায়, ছন্দে অনেক ত্রুটি থেকে গিয়েছে, অনেক না পারা রয়েছে–এসব স্বীকার করে নিচ্ছি নতমুখে। আমরা চেষ্টা করে চলেছি ভালো কিছুর জন্যে। আমাদের সে চেষ্টায় অসংখ্য গুণীমুখ নিজেদের শ্রম, লেখনীসহ অকুণ্ঠ ভালোবাসা তুলে দিয়েছেন নিঃস্বার্থে। সে সমস্ত পেয়ে আমরা ঋদ্ধ, কৃতজ্ঞ। লেখক, পাঠক, শুভান্যুধ্যায়ী সকলের কাছে এই আর্শীবাদ পেতে চাই “আমাদের ইরাবতী যেন হয়ে ওঠে এক অখণ্ড ইতিহাস, ভবিষ্যৎতের।”
অলকানন্দা রায়
সম্পাদক, ইরাবতী ডেইলি ওয়েবম্যাগ
