ইরাবতী তৃতীয় বর্ষপূর্তি সংখ্যা
সম্পাদকীয়
ইরাবতী বয়ে চলা এক নদীর নাম। বাঁকে বাঁকে যার জমে থাকা অজস্র কথা-উপকথার ভীড়। স্রোতে যার চমকে ওঠে দুস্তর স্বপ্ন। আদিগন্ত ফসলী ক্ষেতে সৃজিত ফসল ঝিকমিক করে ওঠে অপত্য স্নেহের ধারা মানসীর চোখে। সেই মানসী ইরাবতী। ইরাবতী রায়। ০১ মে যাঁর জন্ম হয়েছিল কেবলই নিজেকে বিলিয়ে দেবার জন্যে। ঠিক নদীটির মতো। পৃথিবীর সবকিছু যার কাছে ছিল শ্রদ্ধার, স্নেহের ও ভালোবাসার। হোক সে মানুষ, প্রাণী কিংবা বৃক্ষ। কিশোরী বয়েসেই কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন অসামান্য পিতার ভূমিকা। বটবৃক্ষ যেন। ছায়া দিয়ে, মায়া দিয়ে যত্নে আগলেছেন পরিবার। তাই শুধু নয় আশেপাশের সব মানুষকেও ভালোবেসে তাদের জন্যে করেছেন দুহাতে। এমন কি চাকরী সূত্রে যেখানেই গেছেন মানুষের জন্য তাঁর হাত ছিল অবারিত। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে পরিবার ও পরিবারের বাইরেও প্রতিটি মানুষকে যেমন স্বপ্ন দেখাতে ভালোবাসতেন তেমনি সবার দেখা স্বপ্নও ছিল তাঁর একান্ত স্বপ্ন আর সেই স্বপ্নপূরণের জন্য ছিল তার অক্লান্ত পরিশ্রম। কোথায় যেন পড়েছিলাম নিঃষ্পাপ মানুষ পৃথিবীতে বেশিদিন থাকেন না। ইরাবতী রায়ও থাকেননি, প্রায় সবার স্বপ্ন পূরণ করেই পাড়ি জমিয়েছেন অনন্তলোকে। তাঁর অবর্তমানে স্মৃতি থেকে গেছে, নীলাঞ্জনে কখনো কখনো সেইসব স্মৃতি মেঘ হয়ে ঝরে পড়ে, কিন্তু সে ফেরে না। অভাব রয়ে যাবে, তার অস্তিত্ব, ত্যাগ ও কথা বয়ে বেড়ানোয় যন্ত্রণা আছে। থাকবে। ইরাবতী রায় বিশ্বাস করতেন, প্রাণের সাথে প্রাণ মেলানোর স্বপ্নে জেগে থাকায়। তাহলে? কত দুঃস্বপ্নের রাত পেরিয়ে, কিছু করতে চাওয়ার প্রাণান্ত ইচ্ছের হাত ধরে স্বপ্নকে সঙ্গী করে প্রাণে প্রাণ মেলানোর প্রয়াসেই জন্ম নিল ইরাবতী ডেইলি ওয়েবম্যাগ। ইরাবতী রায়ের মতই দেশ, গোষ্ঠী ভুলে একটি পরিবারের মত ২০১৯ সালে যাত্রা শুরু করে ইরাবতী ডেইলি ওয়েবম্যাগ তিন বছরে আজ প্রায় সাড়ে ছয় লাখ লেখক, পাঠকের পরিবার। এখানে আমরা সবাই রাজা। এখানে একটু বলে নিতে চাই, ইরাবতী ডেইলি ওয়েবম্যাগটির জন্ম ২০১৯ ফ্রেব্রুয়ারি ২১ হলেও এ বছর আমরা ঠিক করে নিয়েছি এবার থেকে ইরাবতী রায়ের জন্মদিনেই ওয়েবম্যাগের জন্মদিন পালন করা হবে। গত তিনটি বছরে ইরাবতীর চলায়, ছন্দে অনেক ত্রুটি থেকে গিয়েছে, অনেক না পারা রয়েছে–এসব স্বীকার করে নিচ্ছি নতমুখে। আমরা চেষ্টা করে চলেছি ভালো কিছুর জন্যে। আমাদের সে চেষ্টায় অসংখ্য গুণীমুখ নিজেদের শ্রম, লেখনীসহ অকুণ্ঠ ভালোবাসা তুলে দিয়েছেন নিঃস্বার্থে। সে সমস্ত পেয়ে আমরা ঋদ্ধ, কৃতজ্ঞ। লেখক, পাঠক, শুভান্যুধ্যায়ী সকলের কাছে এই আর্শীবাদ পেতে চাই “আমাদের ইরাবতী যেন হয়ে ওঠে এক অখণ্ড ইতিহাস, ভবিষ্যৎতের।”
তৃতীয় বর্ষপূর্তি সংখ্যা গল্প: সে থাকে পাশে । ফাহমিদা বারী
আনুমানিক পঠনকাল: 10 মিনিট রাত ক’টা বাজে এখন? দেড়টা নাকি দুটো? সুরভি বিছানায় গা এলানোর পর থেকেই এপাশ ওপাশ করে যাচ্ছে। ঘুমের চৌদ্দগুষ্টির দেখা নেই। অথচ…