ইয়াব্বড়-বড় অঙ্কের ক্যালকুলেশন করা কোনও একটুখানি সময়ের ব্যাপার নয়। তার জন্য খাতার পাতায় লেখা হোক বা কম্পিউটারে লেখা কিংবা ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা— এইসবই সাধারণত উপায় হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অঙ্কের অনেক প্রতিভাধর ব্যক্তি হয়তো এই ধরনের প্রক্রিয়াকে অনেকখানি সংক্ষিপ্ত করেছেন তাঁদের মেধা দিয়ে। কিন্তু ‘মানব ক্যালকুলেটর’ কিংবা ‘মানব কম্পিউটার’? এই উপাধিটা বোধ হয় শকুন্তলা দেবীর জন্যই ব্যবহার করা হয়েছিল। কারণ, মুহূর্তমাত্র সময় না নিয়ে তিনি মুখে-মুখেই বলে দিতেন বড়-বড় ক্যালেকুলেশন, যদিও তাঁর প্রথাগত কোনও শিক্ষা ছিল না।
বেঙ্গালুরুর কন্নড় পরিবারে জন্ম নেওয়া শকুন্তলা দেবী মাইসোর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের এই অসামান্য সংখ্যাগণনার ক্ষমতা প্রথম প্রদর্শন করেন। তখন তাঁর বয়স ছয় বছর। পরে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আর্থার জেসন তাঁকে নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি জানিয়েছিলেন ১৯৮৮ সালে শকুন্তলা দেবীকে নিয়ে নিরীক্ষার সময় তিনি ৬১,৬২৯,৮৭৫ এর ৩ বর্গমূল এবং ১৭০,৮৫৯,৩৭৫ এর ৭ বর্গমূল করতে দিয়েছিলেন। জেসন প্রশ্নগুলি নোটবুকে লেখার আগেই শকুন্তলা দেবী বলে দেন সেগুলোর সঠিক উত্তর। এই অসাধারণ ক্ষমতার জন্য তিনি পরবর্তীকালে ‘গিনেস বুক অব ওয়র্ল্ড রেকর্ডস’— এ স্থান করে নেন। ২০১৩ সালে প্রয়াত হন এই বিস্ময়-প্রতিভা।