ভারতের মুসলিমরাই বিশ্বে ধর্মীয় সম্প্রীতির নজির স্থাপন করতে পারে : দালাইলামা

Reading Time: 2 minutes

তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দালাইলামা বলেছেন, বিশ্বে ধর্মীয় সম্প্রীতির উজ্জ্বল নজির স্থাপন করতে পারে ভারতের মুসলমানরা। গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ইরান ও সৌদি আরবে শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করলেও আমি কখনো ভারতে এ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে কোনো সমস্যা বা দ্বন্দ্ব তৈরি হওয়ার খবর পাইনি।

দালাইলামা বলেন, বহু বৈচিত্র্য সত্ত্বেও ভারত একটি ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। তিনি এ সময় সরকারকে ধর্ম বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট ড. রাধাকৃষ্ণ এর আগে আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন। সেটি যদি সম্ভব হয়ে থাকে, তাহলে কেন এমন একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা যাবে না, যেখানে সব ধর্মের মানুষই অংশগ্রহণ করবে।

গুরুগ্রামে একটি ক্রিকেট মাচকে কেন্দ্র করে মুসলিম পরিবারের ওপর হিন্দুদের হামলার ব্যাপারে তিনি বলেন, সব ধর্মেই কিছু বিভ্রান্ত লোক রয়েছে। এ সময় তিনি বলেন, বৌদ্ধদের মধ্যেও এমন কিছু লোক রয়েছে। কিন্তু তারা কখনোই পুরো ধর্মের মডেল হতে পারে না। ২১ শতকের শান্তির জন্য আমাদের অবশ্যই গুরুত্বের সাথে চিন্তা করা উচিত এবং ভারত এক্ষেত্রে বিশ্বে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে দালাইলামা নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্টা আরর্ডার্নেরও প্রশংসা করেন। ১৫ মার্চের ক্রাইস্টচার্চ হামলার পর পুরো ঘটনাকে যেভাবে তিনি সামাল দিয়েছেন এবং দেশটিতে বাস করা মুসলমানদের প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন নির্বাসিত এই নেতা। তিনি বলেন, বিশ্ববাসী কেবল মুগ্ধ বিস্ময়ে তার এসব কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করেছে।

শান্তিতে নোবেল পাওয়া এই নেতা জেসিন্ডা আরডার্নকে বিস্ময়কর এক নারী বলে অভিহিত করে জানান, এই ধরনের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে জেসিন্ডা যেভাবে ঠান্ডা মাথায় পুরো পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছেন তা এককথায় অভাবনীয়। এক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদেরও উচিত তার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করা।

দালাইলামা বলেন, সন্ত্রাসী হামলার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি তিনি অহিংসা, সহানুভূতি এবং অন্যদের প্রতি সম্মান জানানোর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনেন। এই ঘটনা থেকে বলা যেতে পারে সহিংসতাকে সামলানোরও পদ্ধতি আছে এবং ক্রাইস্টচার্চে যা ঘটেছে তা আসলে খুবই বেদনাদায়ক।

১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে এক শ্বেতাঙ্গ উগ্রবাদীর হামলায় ৫০ মুসল্লি নিহত হন। ২৮ বছর বয়সি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্টকে এই হামলার পর গ্রেফতার করা হয়। শান্তির দেশ হিসেবে পরিচিত নিউজিল্যান্ডে ভয়াবহ এই হত্যাযজ্ঞে স্তম্ভিত হয়ে যায় বিশ্ববাসী। এসময় অত্যন্ত সাহসিকতা ও মানবিকতার সঙ্গে পুরো পরিস্থিতি সামলান ৩৮ বছরের জেসিন্ডা আরডার্ন। নিজেকে বিশ্বের সেরা মানবিক নেতা হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।

সূত্রঃ জিনিউজ

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>