শতবর্ষে দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়

Reading Time: 5 minutes

অরুণাভ মিশ্র


১৯১৮ সালের ১৯শে নভেম্বর জন্মেছিলেন দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়। এখন তার শতবর্ষ পূর্ণ হলো। কলকাতাতেই জন্মেছিলেন তিনি। প্রসিদ্ধ বস্তুবাদী দার্শনিক, একজন প্রগতিশীল লেখক, আজীবন কমিউনিস্ট হিসাবে মার্কসবাদ লেনিনবাদে দৃঢ় আস্থার অভাব যাঁর কখনো ঘটেনি এমন মানুষ এবং একজন বামপন্থী জাতীয়তাবাদী হিসাবে শুধু বাংলা বা ভারতবর্ষ নয়, পৃথিবীর মানুষ তাঁকে দীর্ঘকাল স্মরণ করবেন। মোহান্ধতার তীব্র বিরোধী, জনবিজ্ঞান আন্দোলনের এ‍‌ই কাছের মানুষটিকে আজকের দিনে স্মরণ করা নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ, ভারতীয় দর্শনের প্রকৃত রূপ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে, যা বহু পরিশ্রমে দেবীপ্রসাদ তুলে ধরেছিলেন। ফলে আমরা চিনেছিলাম ভারতীয় দর্শনের ভেতরে বহমান বস্তুবাদী ফল্গুধারা! পশ্চিমী দার্শনিকেরা যে ভারতীয় দর্শনের আধ্যাত্মবাদী ও রহস্যময় রূপ তুলে ধরতেন, এ ছিল তার সরাসরি বিরুদ্ধতা। এছাড়া বিজ্ঞানের দর্শন ও বিজ্ঞানের ইতিহাস চর্চার মধ্য দিয়ে তিনি দেখিয়েছিলেন প্রাচীন ভারতবর্ষে কেমন করে বস্তুবাদী বৈজ্ঞানিক ভাবনাচিন্তার মানুষদের প্রকাশিত লেখাপত্রে তাঁদের বিরোধী আদর্শের ভাবনাকেও ঠাঁই দিতে বাধ্য করা হতো। এই নিয়ে যেসব লেখা ছাপা হয়েছিল দেবীপ্রসাদ তার মধ্যে থেকে অসার ভাববাদী যুক্তিহীন অংশ ছেঁটে ফেলে তার বৈজ্ঞানিক ও বস্তুবাদী সারটুকু তুলে নিতে পেরেছিলেন।
সাহিত্যচর্চার সঙ্গে দেবীপ্রসাদ যৌবনের শুরু থেকেই যুক্ত ছিলেন। কবি সমর সেনও তাঁর অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিলেন। এই সমর সেনের কাছেই তাঁর প্রথম মার্কসবাদী ভাবনার দীক্ষা হয়। পরে মার্কসবাদী ধারণা পোক্ত করেন বঙ্কিম মুখার্জি, রাধারমণ মিত্র, ভবানী সেনের (ভবানীশঙ্কর সেনগুপ্ত) কাছে। ভবানী সেনই তাঁকে প্রাচীন ভারতীয় দর্শনে মার্কসবাদকে প্রয়োগ করতে প্রেরণা জোগান। সে পথে তার প্রথম বড় প্রয়াস ‘লোকায়ত’।
*****
‘লোকায়ত’ তাঁর অন্যতম কাজ!
‘ভারতে বস্তুবাদ প্রসঙ্গে’ বইতে দেবীপ্রসাদ ব‍‌লেছেন,— লোকায়ত মানে বস্তুবাদী দর্শন। লোকায়ত মানে জনগণের দর্শনও। লোকেষু আয়তো লোকায়তঃ। জনগণের মধ্যে পরিব্যপ্ত বলেই নাম লোকায়ত। ব্যাখ্যা করে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী বলেছেন, ‘লোকায়ত মত লোকে আয়ত অর্থাৎ ছড়াইয়া পড়িয়াছে বলিয়াই এই নাম পাইয়াছে।’ সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত মন্তব্য করেছেন, নামটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হলো: ‘জনসাধারণের মধ্যে যার পরিচয় পাওয়া যায়।’ এই প্রসঙ্গে তিনি বৌদ্ধ ‘দিব্যাবদান’ এর নজির দেখিয়েছেন; গ্রন্থটিতে লোকায়ত শব্দ এই ব্যুৎপত্তিগত অর্থেই ব্যবহৃত।
‘লোকায়ত’-তে দেবীপ্রসাদ ব্রহ্মই একমাত্র সত্য এই ভাষ্যকে অস্বীকার করে দেখান- ‘প্রত্যক্ষ’ই মুখ্য জ্ঞানের আধার। তাঁর এই কাজ বহু পরিশ্রমে তিল তিল করে ভারতীয় দর্শন বিষয়ে যে ধারণা গড়ে তোলা হয়েছিল তাতে আঘাত হানে! ভারতীয় দর্শনের আধ্যাত্মবাদী ও রহস্যময়ী মূর্তিটি তাঁর অধ্যয়ন ও বিশ্লেষণে অনেকটাই বদলে যায়। মার্কসবাদী হিসাবে প্রাচীন দেহবাদের আলোচনায় তিনি ঐতিহাসিক বস্তুবাদের ধারণার প্রয়োগ করেন। তাঁর ‘ইন্ডিয়ান ফিলজফি: এ পপুলার আউট লাইন’ বইটির সমালোচনা প্রসঙ্গে বিখ্যাত দার্শনিক ডেল রিপ (Dale Riepe) লিখেছেন, ‘এতে হিউমের বিশ্লেষণাত্মক বিচক্ষণতার সঙ্গে লেনিনের অস্থির বাস্তবতার সমন্বয় ঘটেছে।’ বেদ সম্পর্কে তাঁর অনুশীলন দেখার, বেদের প্রথম দিকে, অন্ততপক্ষে ঋক্‌বেদে, ধর্মীয় সচেতনতার দিকটি একেবারে অনুপস্থিত!
দেবীপ্রসাদ পরে ‘হোয়াট ইন লিভিং অ্যান্ড হোয়াট ইন ডেড ইন ইন্ডিয়ান ফিলজফি’ নামে একটি বই লেখেন লোকায়তর প্রায় দেড় দশকেরও বেশি ব্যবধানে। সেখানে তিনি স্পষ্ট উদাহরণ তুলে দেখিয়েদেন অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও দর্শনে ভাববাদী এবং বস্তুবাদী দু’টি ধারাই বহমান ছিল। দেখিয়েছেন, মনুবাদীদের রক্তচক্ষু এড়াতে ব্রহ্মগুপ্ত বা বরাহমিহিরের মতো অনেককেই ভাষায় কারিকুরি করে চাতুর্য্যের সঙ্গে সত্যকে সাদা চোখে দেখা অর্থের আড়ালে গোপন করে প্রকাশ করতে হয়েছে। সামনের আড়াল ঘুচিয়ে ভেতরের সত্যকে তু‍‌লে আনা, আজ আর অসম্ভব হচ্ছে না!

 

উদ্দালক আরুণি ও উপনিষদে বস্তুবাদ!
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে ‘বিজ্ঞান ও সমাজ’ (History of Science and Society in Ancient India) নামে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বই লেখেন দেবীপ্রসাদ। সেখানে দেখি, তাঁর মতে, উদ্দালক আরুণি মানবসভ্যতার ইতিহাসে প্রথম প্রকৃতি বিজ্ঞানী। তিনি লিখেছেন, ‘উদ্দালক পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং পরিশ্রম ও অধ্যবসায় সহ পরীক্ষার পথে গেছেন প্রকৃতি ও মানুষকে বোঝার জন্য।’ ছান্দোগ্য উপনিষদের উদ্দালক আরুণি ও শ্বেতকেতুর কাহিনি প্রসঙ্গে দেবীপ্রসাদের এই উক্তি। সেখানে আরু‍‌ণি তার পুত্র শ্বেতকেতুকে বলছে, ‘মন অন্নের দ্বারা পুষ্ট হয়, প্রাণ জলের দ্বারা। আর বাক্‌ পরিপুষ্টি লাভ করে তেজের দ্বারা।’ শ্বেতকেতু বিষয়টি বুঝিয়ে বলতে বললে আরুণি তাকে পরীক্ষাটির কথা বলেছিলেন। বলেছিলেন তুমি পনের দিন কিছু আহার করো না। তবে জল পান করতে পার যত খুশি। প্রাণ জলের উপর নির্ভরশীল বলে তোমার প্রাণ সংশয় হবে না। পনের দিনের অভুক্ত শ্বেতকেতুকে তার বাবা আরুণি যখন ঋক, যজুঃ বা সামবেদ থেকে কিছু শ্লোক শোনাতে বললেন তখন শ্বেতকেতু জানালেন ওসব কিছুই তার মনে পড়ছে না। তারপর বেশ কিছুদিন ভালো করে খাওয়াদাওয়া করার পর অনায়াসে শ্বেতকেতু বেদের সব প্রশ্নেরই ঠিকঠাক উত্তর দিতে পারলেন। বোঝা গেল মন বা চেতনা ফিরে এসেছে অন্নের কারণে। দেবীপ্রসাদ বলেছেন আড়াই হাজার বছর আগে মন শব্দ দিয়েই চেতনা বোঝানো হতো। জয়ন্ত ভট্টও দেখিয়েছেন চার্বাক মতে অন্নপানাদি দ্বারা শরীর পুষ্ট হলে চেতনার উৎকর্ষ দেখা যায়; কিন্তু শরীরে পুষ্টির অভাব ঘটলে চেতনাও ক্ষুণ্ণ হয়। আরুণির পরীক্ষা অন্নের মতো ভূত বস্তুর অভাবে চেতনায় ক্ষয় প্রমাণ করে দিল। তাই চেতনার সঙ্গে ভূত বস্তুর কার্যকারণ সম্পর্ক স্বীকার করতে হবে। উপনিষদে আরুণির উপাখ্যান সে প্রমাণ দেয়। প্রাচীন ভারতে বস্তুবাদী ভাবনার এ এক বড় প্রমাণ।

ভারতীয় দর্শনের বহুমুখীনতা এবং ইতিহাসে বিজ্ঞান!
দেবীপ্রসাদ আরও দেখিয়ে‍‌ছেন প্রাচীন ভারতে বহুত্ববাদী ভাবনাচিন্তা ছিল; কখনোই একমুখী কোনও চিন্তাপ্রবাহ ছিল না। এই বহুমুখী চিন্তা চেতনার স্রোতই ছিল প্রাচীন ভারতের শক্তি। এই শক্তিই তাকে চিন্তার গভীরতায়, দর্শনে, বৈজ্ঞানিক জ্ঞানে উন্নত করেছিল। আজ সেই গৌরবময় সভ্যতার কথাকে ধর্মের বেসুরো ধ্বনিতে কেউ কেউ ঢাকতে চাইছে। ভারতের সভ্যতা গরিমাকে তারা ক্ষতিগ্রস্তই করছে বলা যায়।
আজ যখন প্রাচীন ভারতের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ও উন্নতি নিয়ে বহু বিতর্কিত কথা সামনে আসছে তখন দেবীপ্রসাদ স্মরণ গুরুত্বপূর্ণ। কেউ কেউ দাবি করছেন সমস্ত সভ্যতার আর বিজ্ঞানের পীঠভূমি এই ভারতবর্ষ। পুরানো শল্যবিদ্যা, উড়ান বিজ্ঞান, জৈব প্রযুক্তি প্রভৃতির ঠিক কতটা গ্রহণযোগ্যতা তা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন প্রাচীন স্টেম কোষ গবেষণা, ইন্টারনেট প্রভৃতির কথা। কারও দাবি বেদেই সব আছে। এ অবস্থায় দেবীপ্রসাদের বস্তুবাদী ভারতবর্ষ বিষয়ে জ্ঞানার্জন, লোকায়ত চর্চা এবং বেদের মধ্যে বস্তুবাদ সন্ধান আত্ম অনুশীলনের নতুন দরজা খুলে দেবে সন্দেহ নেই!
‘হিস্ট্রি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইন অ্যানসিয়েন্ট ইন্ডিয়া’ দেবীপ্রসাদের আর এক বিরাট কাজ। তিন খণ্ডে এই কাজ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮৬, ১৯৯১ আর তাঁর মৃত্যুর পর ১৯৯৬ সালে। তাঁর সব কাজের থেকে এটি ছিল আলাদা। নগরায়নের দুই পর্বের সঙ্গে বিজ্ঞানের অগ্রগমনের সম্পর্ক দেখিয়ে (প্রাচীন যুগের ক্ষেত্রে) দেবীপ্রসাদ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চর্চায় এক নতুন উদাহরণ তৈরি করলেন!
দেবীপ্রসাদের জীবনে মার্কস, এঙ্গেলস, লেনিন, গর্ডন চাইল্ড, জর্জ থমসন এবং যোশেফ নিডহ্যাম-এর গভীর প্রভাব ছিল। তাঁর কর্মজীবনের প্রায় তিন দশক কেটেছে কলকাতার সিটি কলেজে। সেই সময় ও পরে ভিজিটিং প্রফেসার হিসাবে কাজ করেছেন তিনি দেশের ও বিদেশের বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে। আকাদেমি অব সায়েন্সেস অব মস্কো’ তাকে ডি এস সি ডিগ্রি দেয়। বার্লিনের জার্মান আকাদেমি অব সায়েন্স প্রথম ভারতীয় হিসাবে তাঁকে তাদের সদস্যপদ দেয়। ইংরেজি ও বাংলা মিলিয়ে তাঁর প্রায় ৫৬টি বই রয়েছে। প্রত্যেকটি বই-ই লেখনীগুণে সমৃদ্ধ!

ছোটদের দেবীপ্রসাদ!
১৯৪০ থেকে ১৯৫০ এই সময়কালে মূলত এবং তারপরেও বেশ কতকগুলি ছোটদের জন্য বই লেখেন দেবীপ্রসাদ। এগুলো হলো জানবার কথা, এই দুনিয়ার চিড়িয়াখানা, সত্যের সন্ধানে মানুষ। সে যুগে মায়েরা বড়, ক্ষুদে শয়তানের রাজত্ব, বিজ্ঞান কি ও কেন, মনোবিজ্ঞান, শোন ব‍‌লি মনের কথা ইত্যাদি। ‘এই দুনিয়ার চিডিয়াখানা’ নামটা দেখলে মনে হবে বিবর্তন সংক্রান্ত বই। কিন্তু না, এটি প্রাণীবিজ্ঞানের মৌলিক কিছু বিষয়ের উপর লেখা। ‘সত্যের সন্ধানে মানুষ’ বইতে আছে দর্শন ও সভ্যতার ইতিহাস। ‘সে যুগে মায়েরা বড়’তে দেবীপ্রসাদ ছোটদের উপযোগী করে সহজ ভাষায় গল্প বলার ঢ‍‌ঙে সমাজ পরির্তনের ইতিহাস বলে গেছেন। পুরানো মাতৃপ্রধান সমাজ থেকে কিভাবে পিতৃপ্রধান সমাজে তার বদল হলো, সে কথা তুলে ধরা আছে বইতে। ‘ক্ষুদে শয়তানের রাজত্বে’ জীবাণুদের কথা। কিন্তু বলার ঢঙটি কি মনোরম! এছাড়াও বহু দর্শন ও ইতিহাস প্রসঙ্গে বই রয়েছে তাঁর বাংলা ভাষায়! ভারতীয় দর্শন, লোকায়ত দর্শন, পৃথিবীর ইতিহাস তাদের মধ্যে অন্যতম। তার ‘বিজ্ঞান কি ও কেন’ সহজ করে বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে বিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্যগুলো ধরিয়ে দেয়। দর্শনের গভীরে গিয়ে তুখোড় যুক্তি ও শাণিত বুদ্ধিতে যিনি বহু নতুন কথা এনে পণ্ডিত মহলকে তাক লাগিয়ে দেন তিনিই আবার এত সহজ সরল গল্পে কিশোর কিশোরীদের বিজ্ঞান আর ইতিহাস শেখান কোন মুনশিয়ানায় তা ভাবলে অবাক হতে হয়!

হিন্দু অনুশাসন, গোঁড়ামি আর বিজ্ঞানে অধোগতি!
দেবীপ্রসাদের মৃত্যু হয়েছে ১৯৯৩ সালের ৮ই মে। ২০১৮-র ১৯শে নভেম্বর পূর্ণ হবে তাঁর শততম জন্মবর্ষ। জীবনের শেষপর্বে বিজ্ঞানের ইতিহাস চর্চায় মূলত আত্মনিয়োগ করলেও তাঁর প্রথম পছন্দের জায়গা দর্শন, বিশেষত বস্তুবাদী ও মার্কসীয় দর্শনের সঙ্গে যোগাযোগ তিনি কখনোই বিন্দুমাত্র শিথিল করেননি। Lenin the Philosopher কিছুটা আগে (১৯৭৯) হলেও ‘ভারতে বস্তুবাদ প্রসঙ্গে’ বইটি একদম শেষদিকে (১৯৮৭) লেখা। সংশোধিত ও সংযোজিত হয়ে ১৯৯১ সালে এর দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়। প্রথমটির পরে বাংলা ও দ্বিতীয়টির ইংরেজি অনুবাদ করেছিলে দেবীপ্রসাদ। এই মানুষটিই দেখিয়েছেন প্রাচীন ভারতবর্ষে চরক এবং শ্রুস্রুত সংহিতার মতো গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও ভারতবর্ষে চিকিৎসা ও শল্যবিদ্যার বিকাশ না হওয়ার মুখ্য কারণ হিন্দু সামাজিক অনুশাসন ও‍ গোঁড়ামি। ভাববাদী দার্শনিক শিবিরের ‌আশ্রয়পুষ্ট এই অনুশাসন ও গোঁড়ামিই চরম বস্তুবাদী এই চিকিৎসাবিদ্যা ও শল্যবিদ্যার মধ্যে বিজ্ঞানবিরোধী ভাবাদর্শকেও যুক্ত করতে বাধ্য করেছিল। এ যেন বিজ্ঞান চর্চার জন্য মুক্তিপণ! ভূতেভ্য হি পরম যস্বাৎ নাস্তি চিন্তে চিকিৎসিতে অর্থাৎ বস্তুগুণই চিকিৎসার মূল,— একথা যারা বলেন, তাদের জন্য ভাববাদী শিবির সহজ চলার পথ করে দে‍বে একথা ভাবাই দুঃসাধ্য! তাই তা হয়নি।
আজ যখন আবার বিজ্ঞানের সত্যকে বিশ্বাসের আর কল্পনার আর পুরাণের গল্প দিয়ে প্রতিস্থাপনার চেষ্টা চলছে তখন দেবীপ্রসাদ চর্চা বড় প্রাসঙ্গিক হবে সন্দেহ নেই। অপবিজ্ঞানের শক্তিকে সরিয়ে রাস্তা করে নিতে আমাদের সেই পথেই হাঁটতে হবে!

 

 

 

 

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>