Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,dhakar-sthapatya irabotee-gitaranga-special

গীতরঙ্গ: ঢাকা শহরের স্থাপত্য । মূর্শেদূল মেরাজ

Reading Time: 5 minutes

সহজ কথায় বলতে গেলে ভৌগোলিক অবস্থান, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, সহজলভ্য উপকরণ, নির্মাণ কারিগরিবিদ্যা, স্থানীয় সংস্কৃতির প্রভাব, বহিরাগতদের প্রভাব, পৃষ্ঠপোষকতা ও রূচিবোধের উপর নির্ভর করে গড়ে উঠে যে কোন অঞ্চলের স্থাপত্যরীতি। এভাবেই অন্যান্য শহরের মতোই সময়ের সাথে সাথে পাল্টে পাল্টে ঢাকার স্থাপত্যরীতিও গড়ে উঠেছে।

আদিতে ঢাকার বাড়ি-ঘর মাটি, বাঁশ, কাঠ ও ছনের নির্মিত হলেও সুলতানী আমলে ঢাকার স্থাপত্যরীতিতে লাগে পরিবর্তনের ছোঁয়া। পরবর্তী মোগল ও ইংরেজ শাসনামলে স্থাপত্যরীতিতে আসে আধুনিকতা। স্থাপত্য নির্মাণে যুক্ত হয় নব নব উপকরণ। এ সময় যুক্ত হওয়া উপকরণের মধ্যে ইট, চুন, লোহা, রড, কাঠ, টালী, টিন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। সে সময় ঢাকায় নির্মিত বাড়িঘরে নানারূপ নকশা লক্ষ্য করা যায় তবে এসব নকশায় বিদেশী প্রভাব ছিল লক্ষণীয়।

এ অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে পলিমাটি ও পোড়ানোর সুবিধা থাকায় এখানকার স্থাপত্যরীতিতে ইটের বহুবিধ ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। ইটের গাঁথুনি ছাড়া প্যালেস্তারাতেও ব্যবহার করা হত ইটের ছোট ছোট টুকরা অর্থাৎ সুরকি।

সুরকির সঙ্গে চুন মিশিয়ে এক প্রকার পেস্টের মত তৈরি একটি ইটের উপর একটি ইট দিয়ে নির্মাণ করা হত দেয়াল-অট্টালিকা। দেয়াল মজবুত ও পুরু করার জন্য পাশাপাশি একাধিক ইটের ব্যবহারও লক্ষ্য করা যায়। পুরু দেয়ালের ঘরগুলো যেমন মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী তেমনি পুরু হওয়ার কারণে অত্যাধিক শীত বা গরম আবহাওয়ায় ঘরের অভ্যন্তরে অনেকটা স্বাভাবিক আবহাওয়া বিরাজ করত। সে সময় ইটের আকৃতি বর্তমানে নির্মিত ইটের চেয়ে আকারে ছিল ছোট।

সুলতানী আমল পেরিয়ে মোগল শাসন শুরু পর থেকে এ শহরে ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু হয় বাড়িঘরের সংখ্যা। প্রথম দিকে সরকারি ভবনের পাশাপাশি কেবল উপাসনালয়ের জন্যই পাকা দালান নির্মাণ করা হতো। পরবর্তীতে স্থানীয় ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ, আশপাশের অঞ্চল থেকে আগত জমিদার, শহরের নব্য জমিদার, বিদেশী অধিবাসীদেরাও দালানকোঠা নির্মাণ করতে থাকে।

এছাড়াও শহরে বিভিন্ন অংশে ধীরে ধীরে গড়ে উঠে বিভিন্ন পেশাজীবীদের ছোটছোট ইমারত। সাধারণের বাড়িগুলোর স্থাপত্যশৈলীতে তেমন কোন বিশেষত না ছিল না। সাদামাটা ধরনের এসব ঘরবাড়িগুলো সীমিত জায়গার মাঝে পাশাপাশি গড়ে উঠলেও শহরের জমিদার বাড়িগুলোর বেশিভাগই বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে বাগানবাড়িগুলো শহরের বিভিন্ন অংশে গড়ে উঠলেও সেগুলোও বেশিভাগই ছিল শহরে জ্বালের মতো ছড়িয়ে থাকা খাল বা লেকের পাশে।

উনিশ শতকের শেষাংশে ঢাকার গেণ্ডারিয়ার একটি সাধারণ বাড়ির বিবরণ পাওয়া যায় ঢাকার গৃহবধু মনোদা দেবীর ডায়েরীতে- “চারুর বাবা শ্রীযুক্ত নবকান্তবাবু তাঁর ঘরের বারেন্দায় একখানা চৌকির উপর এক ধারে বসিয়া পড়াশোনা করিতেছেন, ঘরখানা ছিল হোগলা পাতার বেড়া ও চাল ছিল ‘মাইলা’ নামক একরূপ বন তাহা দিয়ে ছাওয়া। ঘরের বারেন্দায় উঠিতে গেলে মাথা খুব নিচু করিয়া তবে ঘরের মধ্যে ঢুকিতে পারা যায়। তখনকার দিনে ঘরের রূপ এরূপই ছিল সাধারণ লোকদের। ভিত মাটির, তাহা খুব নিচু নিচু।”

ঢাকার আদি বসতবাড়ির কথা সেভাবে কোথাও পাওয়া যায় না। নথিপত্রে প্রাচীন যা পাওয়া যায় তার বেশিভাগই বিভিন্ন উপাসনালয়। সেসকল উপাসনালয়ের কিছু কিছু আজো টিকে আছে। বা বলা যায় অল্পকিছুদিন আগেও কিছু কিছু টিকে ছিল।

সেসবের প্রত্যেকটিই তার নিজস্ব স্থাপত্যশৈলী নিয়ে শত শত বছর ধরে টিকে ছিল বা আছে। শাসকদের পালাবদলে নির্মাণশৈলীতেও এসেছে ভিন্নতা। মোগল শাসকদের প্রতিনিধিরা সকলেই একই অঞ্চল থেকে এ শহরে আসেনি। বিভিন্ন দেশ থেকে আগত এসব মোগল শাসকরা তাদের নিজস্ব রুচিতে এ শহরে নির্মাণ করেছি দালানকোঠা-উপাসনালয়।

তাই মোগল শাসনামলেও স্থাপত্যে ভিন্ন ভিন্ন দেশের স্থাপত্যের ছাপ পাওয়া যায় ভিন্ন ভিন্ন শাসকের সময়ে। বাংলা দোচালা-চারচালা স্থাপত্য থেকে গম্বুজ থেকে মিনার; মেহেরাব থেকে প্যালেস্তারা। আবার মন্দিরের নকশা থেকে গঠনশৈলী পুজার বেদী থেকে মোজাইক সবই সময়ের সাক্ষর বহন করে।

মোগল আমলের শেষ দিকে ও ইংরেজ আমলের সূচনালগ্নে ঢাকার স্থাপত্যনির্মাণে যুক্ত হয় আধুনিক সরঞ্জাম। এসময় নির্মিত শহরের জমিদার, বিদেশী অধিবাসী ও প্রশাসনিক ভবনগুলো সাধারণত ছিল দোতলা বা তিনতলা। বিশাল জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা এসব বাড়িগুলোতে ছোট ছোট থামের ফাঁকে ফাঁকে রডের বা ঢালাই লোহার নিচু গ্রিলের বেষ্টনি দিয়ে ঘেড়া থাকত।

সদর গেইটগুলো বিশাল আকৃতির হলেও এগুলো সাধারণত হতো গ্রিলের। গ্রিলের ফাঁকা অংশ দিয়ে বাইরে থেকে বাড়ির দালান দেখা যেত। বাড়িগুলোর সদর দরজাতেও ছিল ভিন্নতা। কোন কোন বাড়িতে গ্রিলের ফাঁকা ফাঁকা নিচু গেট, কোন কোন বাড়িতে প্রবেশ পথের উপরে দ্বিতীয়তলায় কামরা বা নহবতখানাও দেখা যায়।

আবার কোন কোন বাড়িতে বিশালাকার দ্বিতল বা তৃতল দেখা ছিল। মোগল ও ইংরেজ স্থাপত্য শৈলীর মিশ্রণে নির্মিত এসব দালানকোঠাগুলো শহরের আভিজাত্য প্রকাশ করতো। মোগল শাসনামলে নির্মিত ঢাকার বাড়িগুলোর নকশা অনেকটাই হ্রাস পায় ইংরেজ শাসনামলে নির্মিত বাড়িগুলোতে। প্রশাসনিক ভবন ও বিদেশী অধিবাসীদের বাড়িগুলোতে গাড়ি বারান্দা লক্ষণীয়। বেশ যত্ন নিয়ে নির্মিত এসব বাড়িঘরগুলো স্থায়ীত্বকালও ছিল বেশ দীর্ঘ।

ঢাকার আদি ছোট-বড় প্রায় সব বসতবাড়িতেই আঙিনা লক্ষ্য করা যায়। অপেক্ষাকৃত বড় বাড়িগুলোতে বাড়ির মাঝখানে বিশেষ আঙিনা দেখা মিলত। এই খোলা আঙিনায় গৃহস্থালী সকল কাজের পাশাপাশি পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানও আয়োজন করা হত। যৌথ ও বড় পরিবারগুলোর বাড়িতে একাধিক উঠান থাকত।

নিম্নাঞ্চল হওয়ার কারণে বৃষ্টি ও বন্যার আশঙ্কা থাকায় প্রায় সকল বাড়িই ভূমির সমতল থেকে বেশ কিছুটা উঁচুতে নির্মাণ করা হত। প্রায় সকল বাড়িতেই কয়েকধাপ সিঁড়ি পেড়িয়ে প্রবেশ করতে হত। বাড়ির প্রবেশপথ বেশিরভাগই হত খিলানবিশিষ্ট। অর্ধবৃত্তাকার, ত্রিপত্র, পঞ্চপত্র ও বহুপত্র খিলান বিশিষ্ট এ সকল প্রবেশ পথগুলোর বেশিরভাগই ছিল উন্মুক্ত।

অবশ্য কিছু কিছু খিলান পথের উপরে ঢাকাই লোহার কারুকাজ করা গ্রিল বা কাঠের খড়খড়িও দেয়া যেত। গ্রিলের নকশার ফাঁকে ফাঁকে রঙবেরঙের বাহারি কাঁচও দেখা যেত।

শহরের ধনাঢ্য ও জমিদারদের বাড়িগুলো সাধারণত নির্মাণ করা হত নদী, পুকুর বা খালের পাশে। এতে নদীপথের যোগাযোগের সুবিধার পাশাপাশি সনাতন হিন্দু ধর্মীয় বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে বিশেষ সুবিধা হত। নদী পাড়ে বাড়ি নির্মাণের আরেকটি কারণ ছিল অন্দরমহলের নারীদের পর্দা টিকিয়ে রাখা। কারণ বাড়ির সঙ্গে জলাশয় থাকলে গোসল-পুজাসহ নানাবিধ কর্মকাণ্ড বাড়ির গণ্ডির ভেতরের করা যেত।

তখন ঢাকার প্রায় বাড়িতেই ছিল পাত কুয়া। গোসল-রান্না-ধোয়ার কাজ কুয়ার পানি দিয়েই হত। সাধারণত পাত কুয়ার পাশ্বেই কাপড় ও থালা-বাসন ধোয়ার কাজটি করা হত। মূল বাড়ি থেকে শৌচাগার থাকত বেশ কিছুটা দূরে, বিশেষ করে জলাশয়ের আশপাশে। হিন্দু জমিদার বাড়িগুলোতে বেশিভাগই আলাদা মন্দিরও ছিল উল্লেখ করার মতো।

ছোট বড় প্রায় সকল বাড়ির সামনের দেয়ালে বিভিন্ন ধরণের অলংকরণে সজ্জিত থাকত। এ সকল অলংকরণে প্যালেস্তারা, কাঁচের টুকরো ছাড়াও কাঠের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। অলংকরণে ফুল-লতা-পাতার ব্যবহারই ছিল বেশি। এছাড়া জ্যামিতিক নকশাও দেখতে পাওয়া যায় অনেক বাড়ির গায়ে। অনেক বাড়িতেই থাকত গোপন পথ বা গোপন সিঁড়ি।

এ গোপন পথ বা সিঁড়ি কোন কোন বাড়ির প্রবেশ ও বেরুবার পথ ছাড়াও একতলা থেকে অপর তলায় বা ছাদে উঠার ক্ষেত্রেও দেখা যায়। উল্লেখযোগ্য বাড়িগুলোতে প্যালেস্তারা, কাঁচের টুকরো বা খোঁদাই করে বাড়ির নাম ও প্রতিষ্ঠাকাল উল্লেখ থাকত। কিছু কিছু বাড়িতে বাগান, ফোয়ারা, ঝর্ণা, ভাস্কর্য, পুকুরসহ আরো অনেক ধরনের স্থাপনা সৌন্দর্যের নতুন মাত্রা যুক্ত করত।

কিছু কিছু বাড়ির সম্মুখাংশের ছাদের উপর নকশাদ্বার চূড়া লক্ষ্য করা যায়। এ চূড়াগুলো বেশিরভাগই হত ত্রিকোণাকৃতির। শহরের বেশ কিছু বাড়ির ছাদে ছিল আকষর্ণীয় গম্বুজ। অনেক বাড়িতে থাকত ইউরোপীয় স্টাইলের পাথরের ভাস্কর্য, পোট্রেট মূর্তি।

সুলতানী আমলে গম্বুজের মাধ্যমে ছাদ নির্মাণ করা হলেও মোগল আমলে তার পরিবর্তন ঘটে। সে সময় থেকে বাড়ির ছাদ ঢালাই দেয়া হত প্রশস্ত মজবুত বিশাল বিশাল কাঠ ও লোহার স্লিপারের উপর। নির্দিষ্ট দূরত্বে এক সাড়িতে কাঠের থামের নিচে আড়াআড়িভাবে লোহার স্লিপারের দেয়া হত ছাদকে ধরে রাখার জন্য। ছাদের উপর চারপাশে থাকত নিচু রেলিং। এ রেলিংগুলো বর্তমানের মত সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া হত না। বাড়ির ডিজাইন অনুযায়ী ছাদের রেলিঙে বিভিন্ন নকশার খোপ থাকত।

ঢাকার বড় বাড়িগুলোর প্রায় সকল বাসভবনের প্রবেশমুখেই থাকত বসার ঘর বা বৈঠকখানা। বাড়ির এ কামরাটি সাধারণত বাইরের লোকের জন্য ব্যবহৃত হত। তৎকালীন ঢাকার বৈঠকখানাগুলোর উচ্চতা ছিল সাধারণ ঘর থেকে অনেক বেশি ; কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ।

ঢাকার অনেক বাড়িতে এসব বৈঠকখানায় বসত জলসা, গান-বাজনার আসর, বিচার-সালিশ, কবি গান বা মুশায়ারার মত অনুষ্ঠান। বসার ঘর বাইরের লোকদের জন্য ও ভেতরের ঘর ওই বাড়ির বাসিন্দাদের জন্য। বৃষ্টি থেকে বাড়িকে রক্ষা করার জন্য রোদ ছাউনি-বৃষ্টি ছাউনিও থাকত। ঘরের সঙ্গে লাগোয়া বারান্দা থাকত ; সেগুলোই ভেন্টিলেটরের কাজ করত। প্রায় দোতলা বাড়ির সম্মুখ ভাগের দোতলায় থাকত টানা বারান্দা ; কোন কোন বাড়ির দোতলার বারান্দার উপরে ঢালু ছাদ লক্ষ্য করা যায়।

ঢাকার বাড়িগুলোর আরেকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট ছিল ঝুল বারান্দা। বাড়ির সম্মুখস্থ বা রাস্তার দিকের এসব বারান্দাগুলো সাধারণত খুব চওড়া হত না। এ বারান্দাগুলো আয়তকার ও অর্ধবৃত্তার হত ; কোমর পর্যন্ত ইট-সুরকির প্যালেস্তা করা বা ঢালাই লোহার রেলিং ছাড়াও নানারকম নকশা থাকত। বারান্দার উপরের অংশে প্রায়ই থাকত কাঠের নকশা। কোন কোন ক্ষেত্রে বারান্দাগুলো অর্ধবৃত্তাকার ও এত ছোট হত যে মাত্র একজন মানুষ এখানে দাঁড়াত পারত।

বসতবাড়ি, অফিস-আদালত, উপাসনালয় সকল ইমারতের বিশাল বিশাল জানালা-দরজায় দেখা মিলত খড়খড়ি। কোন কোন বাড়ির জানালাও হত দরজা সমান। বিদেশী অধিবাসী ও ধনাঢ্য জমিদারদের বাড়ির জানালাতে কাঁচের ব্যাবহারও দেখা যায়। কোন কোন বাড়িতে দরজা/প্রবেশপথের উপরে অর্ধবৃত্তাকার অংশে নকশাদ্বার ঢালাই গ্রীলের নকশার ফাঁকে ফাঁকে থাকত রঙ-বেরঙের বাহারি কাঁচ। এ কাঁচগুলোর রঙ হত উজ্জল লাল, সবুজ, নীল, হলুদ প্রভৃতি।

বাইরের ঘর থেকে ভেতরের দিকে যাবার পথে একটি অঙ্গন থাকত যার সাথে প্রায়শই একটি বড় হল রুমের করিডোর সংযুক্ত থাকত। অন্দরমহলে যাবার জন্য বহিরাঙ্গনের পাশ থেকেই একটি সংকীর্ণ পথ থাকত বা কখনো কখনো দ্বিতীয় একটি রাস্তার ব্যবহারও লক্ষ্য করা যায়।

নীচের তলায় অঙ্গনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ঘরগুলোর সামনে কখনো কখনো বারান্দা নির্মাণ করা হত। উপরের তলায় থাকত একটা লম্বা বারান্দা। এর যে কোন অবস্থান থেকেই অঙ্গনে ঘটিত কার্যকলাপের উপর নজর রাখা যেত। বাড়ির দৈর্ঘ্যরে উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনে এর ভেতর দিয়ে সিঁড়ির ব্যবস্থা করা হত। বেশিরভাগ বাড়িতেই একাধিক সিঁড়ি লক্ষ্য করা যায়। কোন কোন বাড়ির সিঁড়ি নির্মিত হত সম্পূর্ণ কাঠ দিয়ে। অভিজাত বাড়িগুলোতে লোহার প্যাঁচানো একাধিক সিঁড়িও ছিল।

ঔপনিবেশিক শাসনামলে নির্মিত প্রশাসনিক ভবনগুলো থেকে বাড়ি নির্মাণের বিভিন্ন উপাদান গ্রহণ করা হত। একেকটি বাড়ি তৈরি হত ইউরোপীয় ধরণে অর্থাৎ বাইরে থেকে দেখলে তা ইউরোপীয় বাড়ির মত কিন্তু ভেতরের নির্মাণ শৈলীতে স্বদেশী বাড়ির আঙ্গিক কাঠামো লক্ষ্য করা যায়। এই ধরনের বাড়িগুলোতে ভারতীয় ও ইউরোপীয় নির্মাণ শৈলীর মিশ্রণ সুষ্পষ্ট।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>