চায়ের নানামুখী বিজ্ঞাপন এবং শিল্প-সাহিত্যে চা
হোসাইন মোহাম্মদ জাকি
বিশ শতকের শুরু থেকে বাংলায় চা-সংস্কৃতির দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভের বিষয়টি বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ যদুনাথ সরকারের দৃষ্টি এড়ায়নি। ১৯১১ সালে তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ ‘ইকোনমিকস অব ব্রিটিশ ইন্ডিয়া’তে তিনি লিখেছেন, ‘দ্য হেবিট অব ড্রিংকিং টি ইজ ভেরি রেপিডলি স্প্রেডিং, দ্য নম্বর অব ইটস কনজিউমার প্রোবাবলি ডাবলিং এভরি ফাইভ ইয়ার্স।’ গবেষণায় দেখা যায়, ক্রেতাদের এই চা-মুখী হওয়ার মূলে ছিল নানা ঢঙের নানা রঙের বিজ্ঞাপন।
‘হাতের মুঠোয় পৃথিবীকে ধরা-মহা পুণ্যবান একালের বিজ্ঞাপন-কথা অমৃত সমান।’
ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের এই অমৃত বিজ্ঞাপন-কথার পরতে পরতে গড়ে উঠেছে চা-সাম্রাজ্য। যে কারণে প্রায় দুই শ বছর পর আজ অনেক অকিঞ্চিৎকর মহল্লা চিহ্নিত হয় অমুকের চায়ের দোকানের নামে। শুরুতে অভিজাতদের কেন্দ্র করেই বিজ্ঞাপনগুলো তৈরি হতো। ক্ষমতা, আধিপত্য ও সাংস্কৃতিক প্রভুত্বকে প্রকাশের প্রয়াস ছিল চায়ের বিজ্ঞাপনে। অত্র নিবন্ধের প্রারম্ভিক ছবিটি ১৮৯৭ সালের। রাজকীয় সভার দুই সম্মানিত নেতৃত্ব এখানে বিজ্ঞাপনের বিষয়বস্তু। ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সব অভিজাত ছিল তখন বিজ্ঞাপনের লক্ষ্যবস্তু। ‘এ মুসলিম রইস’ শিরোনামের একটি ছবি সেকালে খ্যাত হয়েছিল। সাদা কুর্তা ও লালরঙা ফেজ টুপি পরিহিত এক মুসলমান অভিজাত যুবকের ছবি ঠাঁই পেয়েছিল এনামেল বিলবোর্ডে। হাতে চায়ের কাপ। নিচে লেখা, ‘থাকলে মায়ের, বাপের আশীর্ব্বাদ/ভালো চা আর কাপড় যায় না বাদ’।








*হোসাইন মোহাম্মদ জাকি: গবেষক
