শিক্ষা দিয়ে গেল ডাকসু নির্বাচন
ডাকসু নির্বাচন একটা ইঙ্গিত দিয়ে গেলো যা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নতুন করে ভাবনায় ফেলে দিলো। সাধারণ ছাত্রদের একটা বিরাট অংশ কোনো দলের প্রতি আস্থা বা বিশ্বাস না রেখেই স্বতন্ত্র পরিষদে ডাকসুর ২৫টির মধ্যে ভিপি সহ ২টি এবং ১৮টি হল সংসদের ৬টিতে ভিপি, জিএস,এজিএস সহ অন্যান্য পদে জয় পেয়েছে। মোটকথা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। ঐতিহ্যবাহী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৮বছর ১০মাস পর ডাকসুর এই নির্বাচন নিয়ে তর্ক-বিরোধ থাকলেও যা পরিবর্তন ও পরিস্কার তার ষোলোয়ানা রাজনৈতিক নেতাদের মনে রাখা জরুরী। ডেমোক্রেসি হলো গভর্নমেন্ট অব দ্যা পিপল, বাই দ্যা পিপল, ফর দ্যা পিপল’ এই রাষ্ট্রনৈতিক সংস্কৃতির কথা ভুলে গেলে ফল এমনই হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যখন জোটবদ্ধ হয় ভোটের ফলই না,অন্যান্য জায়গার পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। সুতরাং যারা রাজনীতির সুনীতির চর্চা করবেন কেবল তারাই টিকে থাকবে একথা ভাবার সময় এসেছে এখন। শুধু পার্টি অফিস আর নেতাদের সাথে যোগাযোগ রাখলে সব হবে এই ভাবনার দিন শেষ হতে চলেছে। এটা হচ্ছে মেটামরফোসিস,কালে-যুগে ঘটে যায়। তাই, উচিত রাজনীতিবিদদের, সাধারণ মানুষ,সাধারণ ভোটার উন্নয়নের পাশাপাশি তাদের সাথেই সম্পর্কের আত্মিক মিত্রতা ও মিলন ঘটানো। কারণ, এখন একটা কিশোরও অধিক সচেতন, তারা অনেক কিছু বোঝে, জানে, খবর রাখে। বিশ্ব এখন গ্লোবাল ভিলেজের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ, ওয়েব তৎক্ষনাৎ সংবাদ দিয়ে দেয়। কোনটা সত্য, মিথ্যে আজকের মানুষের তা নিরূপিত করবার সক্ষমতা রয়েছে। হ্যা সাধারণ মানুষের এ জোট, আন্দোলন, দাবী, অধিকার নিয়ে করা কাজ সবটাই শতভাগ সঠিকভাবে করতে পারে বা করবে এমনও নয়, তবু তাদের রাইটস সাধারণ্যে গ্রাহ্য হয় যখন, যুথবদ্ধ কর্মকাণ্ড তখন এমন করেই আসে।
ডাকসুর ইতিহাসে এই প্রথম রাজনৈতিক দলের বাইরে থেকে ভিপি ও হল সংসদে বিজয়লাভ করা।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুমিকা ছিল বাদশাহী। ৫২ থেকে ৭১’, স্বাধীনতার পর ৯০! ঐতিহাসিক ক্ষণে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডের ভুমিকা ছিল অগ্নিময় প্রাগ্রসর। বদলে যাওয়া, বদলে দেওয়ার এ বার্তা রাজনীতির সুনীতির কথায় স্মরণ করে দেয়, এর অন্যথা এমনই, আপন আলোয় অদ্ভুত আন্ধার!
