এখানেই শেষ নয়  

Reading Time: 6 minutes
একই কেবিনে বসেছিলাম আমরা। পাশাপাশি।একজনের বয়স চল্লিশের কাছাকাছি কিন্তু মাথার চুল পরে যাওয়ায় বয়সটা একটু বেশিই মনে হয়। ভদ্রলোক টুপি ব্যবহার করেন। চুল নিয়ে আক্ষেপ থাকেলও থাকতে পারে। জানালার পাশের সিটটা তার। আমি আর সে মুখোমুখি মানে আমিও জানালার পাশে। হাতের ডানে যিনি তিনি মধ্যে বয়সী এক লোক। নাকটা বোচা, কান দুটো অতিরিক্ত লম্বা। আবছা আলোয় এলিয়েন বলে চালিয়ে দেয়া যেতে পারে। দক্ষিণ কোনে একজন ভদ্রমহিলা। মুখ শ্রী অত ভালো নয়; তবে গায়ের রং নিয়ে অহংকার তিনি করতেই পারেন। ট্রেন চলতে শুরু করেছে, তা প্রায় বিশ মিনিট। অথচ আমাদের মধ্যে কোন কুশল বিনিময় হয়নি। হ্যাট পরা লোকটা একটা ম্যাগাজিন বের করে পড়া শুরু করলেন। পাতা উল্টে পাল্টে দেখছেন আমরা যারা তার বিপরীতে আছি, কাগজের অপর পৃষ্ঠা আমাদের দিকে হা হয়ে আছে। সেখানে অর্ধনগ্ন নারীর ছবি। লোকটার এ নিয়ে কোন বিকার নেই। নারী যাত্রী ইচ্ছে করেই মোবাইলে চ্যাট শুরু করলেন। যিনি এলিয়েনর মতো দেখতে তিনি ঝিমচ্ছেন নাকি ঘুমাচ্ছেন বোঝা মুশকিল। আমার আবার একটু বাঙালীয়ানা স্বভাব। গোয়েন্দাদের মতো এক এক জনকে দেখছি আর তার সম্পর্কে মনে মনে বিশ্লেষণ করছি। আমার এখন খুব জানতে ইচ্ছে করছে ভদ্রমহিলা কেন একা জার্নি করছেন? এই কামরায় দুজন পুরুষও আছে। তারাও একা চলেছেন। ওদের কেউ যদি ইচ্ছে করেও বলতে চায় তিনি কেন একা ভ্রমণ করছেন। আমি কেন আপনারাও আগ্রহ বোধ করবেন না। আমি ভাবছি ভদ্রমহিলার সাথে ইন্ট্রডিউস হবো। কোন স্টেশনে নামবেন জিজ্ঞাসা করবো। তখনই একটা ফোন এলো তার কাছে। 
টানা ত্রিশ মিনিটের মতো তিনি ফোনে কথা চালিয়ে গেলেন। যদিও শেষ বাক্যে উনি বললেন পাবলিক প্লেসে সব কথা বলা যাবে না। রাখি। তাহলে আমাদেরকে সামনে রেখে তিনি এতো কথা বললেনই বা কেন? বুঝলাম না! আমি তার সাথে ইন্ট্রডিউস হওয়ার আগ্রহ হরিয়ে ফেললাম। অনেক কথাই বললেন যা আমাদেরকে নিরবে শুনতে হলো। তবে তার ফোনালাপের একটা বাক্য আমার কানে লেগে রইলো। আমি এ ধরণের কথা পূর্বেও বহুবার শুনেছি। আজকের শুনতে পাওয়াটা ভিন্ন। খুব সাধারণ কথাও কিন্তু অনেক সময়ধরে কান বয়ে নিয়ে যায়। এটা আমার ক্ষেত্রে খুব হয়। আজও হলো। বললেন কৃত্রিম কোন কিছু বেশি দিন টেকে না রে। হ্যাঁ, মনে হলো উনি ওনার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে কথাটা বললেন। ভঙ্গীমা দেখে যতটুকু বুঝলাম গভীর বিশ্বাস থেকে বলেছেন। এরপর কামরাতে চুপচাপ একটা নিস্তব্ধতা নামলো। উনি আবার মোবাইল নিয়ে মগ্ন হয়ে পরলেন। আমি জানালার পাশে বসে গাছ লতাপাতা পেছনে ফেলে যাওয়া দেখছি। বাইরে থেকে এক নাগাড়ে ট্রেন চলার শব্দটাই আমাদের সঙ্গী। এ ছাড়া কেবিনের ভেতর নিরব, যে কোন নিরবতা খুব নিষ্ঠুর। ট্রেনে একটা হুইসেল পরলো। হুইসেলের পর আস্তে আস্তে ট্রেনের গতি কমে এলে; একটা স্টেশানের সেডে ঢুকে পরলো ট্রেন। ট্রেনটা থামলো। আবার কোলাহল। আমি জানালা দিয়ে মানুষ দেখছিলাম। যে কোন স্টেশনে বিচিত্র মানুষের ভীর থাকে। দূরে একটা কুকুরকে রুটি ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাওয়াচ্ছিলেন এক লোক। খেতে পাওয়ার আনন্দে কুকুরটা অনবরত লেজ নাড়াচ্ছিলো। মুগ্ধ হয়ে দেখছিলাম। তার কাছেই কয়েকটি শালিক ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে উড়ে যাচ্ছে আবার ফিরে আসছে। পাখি দেখলেই আমার মনে হয় ওরা ইচ্ছে স্বাধীন! যখন তখন ডানা মেলছে। স্টেশনের লাল দালানের দেয়ালে হেলান দিয়ে বসেছিলেন দু’জন লোক। চেহারায় অভাবের ছাপ স্পষ্ট। ওরাও কুকুরটাকে দেখছিলো। আকষ্মিক একজন হকার এসে আমার মনোযোগ কেড়ে নিলেন।
ট্রেন এই স্টেশন অব্দি আসতে অতিবাহিত হয়েছে এক ঘন্টা। আগেই বলেছি আমরা যারা কেবিনের যাত্রী তাদের মধ্যে কোন আলাপচারিতা বা কুশল বিনিময় হয়নি। প্রায় আট ফিট বাই ছয় ফিট কামরায় আমরা চারজন জলজ্যান্ত মানুষ ভীষণ সম্পর্কহীন। যান্ত্রিক সভ্যতা আমাদের মধ্যে দারুণ শক্তিশালী একটা পর্দা টেনে দিয়েছে। কেউ কাউকে ভেদ করতে চাইছে না। বই লাগবে? একটু আগে আমার বাইরের মনোযোগ কেড়ে নেয়া হকার প্লাটফর্ম থেকে প্রথম কথা বললেন। নেড়েচেড়ে অনেকগুলো বই দেখালেন। বেশির ভাগ ধর্মীয় বই। নাম দেখলেই বুঝতে পারা যায়। যেমন, ‘সতী নারীর পতি সেবা, খোয়াবনামা, কোন খোয়াবের কোন ফজিলত’ এই টাইপের বেশ কিছু বই। এ ছাড়া কিছু ম্যাগাজিনও আছে। আমি বাকীটা পথ ম্যাগাজিনের সাথে কাটিয়ে দেব ভেবে, একটা ম্যাগাজিন কিনে নিলাম। ট্রেনের হুইসেল বাজলো। আবার ট্রেন চলতে আরম্ভ করেছে। আমাদের কেবিনে একজন এ্যাটেনডেন্ট ঢুকে চা নাস্তার অর্ডার নিলেন। আমি কাটলেট অর্ডার করলাম, সাথে চা। কাটলেটে আদা মিশ্রনের ঝাঁল আমার খুব পছন্দ। বললাম যদি নতুন করে বানিয়ে দেয় তাহলে আদার পরিমাণ যেন একটু বেশি করে দেয়। নাস্তা আসার আগে ওয়াশ রুম থেকে ঘুরে এলাম। এসেই দেখি তৈরি খাবার চলে এসেছে। কাটলেট খেতে গিয়ে আদার ঝালে, জিভে আলাদা করে লালা সিক্রেশন স্বাদ বাড়িয়ে দিল। আহ্ দারুণ, মজে গেলাম। চায়ে চুমুক দিতেই মুখটা বিস্বাদ হয়ে উঠলো। একেবারে পানসে! কাটলেটের আমেজটা আর পরিপূর্ণ থাকলো না। জীবনে ভালো মন্দের ভিতর দিয়েই তো যেতে হয়। সামান্য নাস্তার আবার ভালো-মন্দ, এই প্রশ্নটাই মনের ভেতরে উত্থিত হলো। নিজের মনকে প্রবোধ দিলাম। একটু আগে ক্রয় করা ম্যাগাজিনের পাতা খুললাম। ফিচার, গল্প, ভ্রমণ কাহিনীতে ঠাসা ম্যাগাজিনে একটা ছোট গল্পের দিকে নজর গেল। শুরুটা বেশ। প্রথম কটা লাইন তুলে দিচ্ছি, আমার মনে হয় গল্পেরও একটা স্বাদ আছে। 
একটা তর্জনীর আঙুল। দর্জি পাড়ার সব স্বপ্ন চূর্ণবিচূর্ণ করে দিল মুহূর্তে। মানুষগুলো দেখতে লাগলো যেন ঝড়ের পর দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া অনেকগুলো গাছ। সর্বত্র টানটান উত্তেজনার পরিসমাপ্তি ঘটালো, একটা আঙুল! একটু আগেই দুরুদুরু বুকে কাঁপছিল সবাই। শেষ ওভারের শেষ বল। আজকের ম্যাচের জয় পরাজয় নির্ধারণ করে দেবে। জেতার জন্য দরকার ছিল মাত্র দুই রান। ক্রিজে দাঁড়িয়ে ছিল শেষ দুই ব্যাটসম্যান। দর্জি পাড়ার লিটু আর মিঠু। শেষ বলটা উইকেট ভেঙ্গে দিল। আম্পায়ার তর্জনির আঙুল তুলে দিলেন। হই দিয়ে উঠলো তুলা পট্টির দর্শক। সাথে সাথে দর্জি পাড়া ম্যাচ থেকে ছিটকে গেল। 
কোচ বললেন লিটু হারামজাদা আজকেও উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছে। ম্যাচটা চোখের পলকে হাত ছাড়া। 
ম্যাচ নির্ধারণী শেষ বলটা ছিল নো বল। ক্রিজের অপর প্রান্তে দাঁড়ানো একমাত্র সাক্ষী মিঠু। দর্জি পাড়ার টিমে বেশির ভাগ ছিল গরীব ঘরের সন্তান। আম্পায়ারের রায় কীভাবে ধনীদের পক্ষ নেয়। এই বঞ্চনা সে ক্রিজে দাঁড়িয়ে দেখে এসেছে। বারংবার বলা সত্ত্বেও আম্পায়ারের অন্যায় সিদ্ধান্ত তাকে মেনে নিতে হয়েছে। এই ঘটনায় কিশোর মিঠু বুঝতে পারে বৈষম্য মানব সৃষ্ট। 
এই গল্প আর খেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। ওদের মধ্যে একটা শ্রেণি বোধ গড়ে ওঠে। এভাবে শুরু। এই গল্পের পরতে পরতে চমক। একটা ভুল সিদ্ধান্ত তুলা পট্টির জয়ের পেছনে ভুমিকা রেখেছে। তুলা পট্টিতে যারা থাকে তারা সচ্ছল পরিবারের সন্তান। ওদের ছেলেরা অপুষ্টিতে ভোগে না। ওরা পরাজয়কে জয়ে রূপান্তর করতে পারে সচ্ছলতার জোরে।
দর্জি পাড়ার কোচ বাচ্চু এমন একজন মানুষ যিনি ওদের হীনমন্যতা কাটিয়ে কীভাবে জিততে হয় সেই পথ দেখালেন। তুলা পট্টির কারসাজি তার দলকে সাময়িক পরযুদস্ত করেছে। এটা চিরস্হয়ী জয় নয়। তিনি আবার তিল তিল করে পুরো দলটাকে গড়ে তুললেন। প্রতিরোধ-প্রতিশোধের আগুন জ্বালিয়ে দিলেন। প্রত্যেকটা ছেলেকে পাল্টে দিলেন। পরের বছর টূর্ণামেন্টে দর্জি পাড়া শিরোপা জয় করলো। এই গল্পে যেমন বেদনা আছে, তেমনি একটা আত্মবিশ্বাসের ছোঁয়া আছে, যদি সংকল্প দৃঢ় হয় লক্ষ অর্জনের বার্তা আছে, যা কিনা আমাকেও স্পর্শ করলো। 
ট্রেনটা ততক্ষণে টাঙ্গাইল পৌঁছে গেছে। 
গল্প তো হলো, এবার কেবিনের ভদ্রলোকদের একটু আধটু খবর দেই আপনাদের। টুপিওয়ালা মানে যিনি হ্যাট পরেছিলেন তার একটা ফোন এসেছিল। অশ্রাব্য গালিগালাজ দিয়ে কথা শুরু করলেন। মনে হলো তার প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মচারী কাজে ভুল করেছে। ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের সচরাচর এমন গালিগালাজ হজম করতে হয়। মালিকদের আচরণে খামতি নেই, কোন নর্মস গড়ে না ওঠার ফলাফল। আমি একটু সতর্ক হলাম। এ তো যেন তেন লোক নয়। মুখের ভাষা বলে দেয় বহুত ক্ষমতাবান পুরুষ। বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ছাত্র দেখেছি ক্ষমতার আশপাশে যারা থাকে তাদের হাঁটার ভঙ্গিমা; টাইট জামা কাপড়ে অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বেড়িয়ে আসতে চায়। আমার মুখোমুখি ওনার সাথে যতটুকু কথা বলার চান্স ছিল তাও মাঠে মারা গেলো। এলিয়েনের মতো ভদ্রলোক মুদে যাওয়া চোখ খুললেন। চোখ দুটো আরো লাল হয়ে গেছে। সম্ভবত এলার্জির কারণে। উনি পানির বোতল খুলে একটা ঔষধ সেবন করলেন। আর ভদ্রমহিলা কানে হেড ফোন গুজে ইউটিউবে সিনেমায় মত্ত। সম্ভবত ঐ লোকের গালিগালাজের পর কান দুটো নিরাপদ করেছেন। বুদ্ধি আছে। মেয়েরা সিচুয়েসান বুঝে, সে পরিস্হিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়। যেন, কখন কি করবে, না করবে, বাস্তব জীবন থেকে শিক্ষা নিয়েছে। এখন দুপুর। চারদিকে খাঁ খাঁ রোদ। যমুনা সেতু পূর্ব প্রান্ত দিয়ে ব্রীজের উপর ট্রেনটা কেবল উঠলো। নদী আর উন্মুক্ত আকাশ বহুদূর গড়িয়ে গিয়ে মিলে গেছে। দিগন্ত নামে আমার এক বন্ধু প্রথম পরিচয়ে বলেছিল সমুদ্র আর আকাশ যেখানে মিলে যায় আমি হলেম সেই দিগন্ত। আমি নদী আর আকাশের দিগন্ত দেখছি। চোখ দিগন্ত রেখা স্পর্শ করলো নদী পারাপারের সময় টুকুন। 
যমুনার পশ্চিম প্রান্তে ভদ্রমহিলা নেমে গেলেন। সম্ভবত সিরাজগঞ্জ যাবেন। আমার সেই ঠুমরী গান মনে পরে গেলো; সে শুনলে আমাকে টিজিংয়ের অভিযোগ তুলতে পারে। যমুনায় জল আনতে যাচ্ছ সঙ্গে নেই তো কেউ। যমুনা কন্যার সাথে একটি কথাও হলো না। ভদ্রমহিলা নেমে যাওয়ার পর বয়স্ক ভদ্রলোক হাঁটু মেলে বসলেন। রিলাক্স। 
এই প্রথম একটা বাক্য বিনিময় হলো। কোথায় যাবেন? বললাম রাজশাহী। আপনি? তিনি বললেন শাহাজাদ পুর। আপনার পেশা? শিক্ষকতা করতাম এখন অবসরে। দুমাস পরপর ঢাকাতে যাই ডাক্তার দেখাতে। এখন কেমন বোধ করছেন? একই রকম। কী সমস্যা? হজমের সমস্যা লিভারে চর্বির আস্তর পরেছে। সময় কী ভাবে কাটে? অবসর মানুষের নানা রকম কাজ থাকে একদিন বিদ্যুৎ বিল দেই তো আরেক দিন পানির বিল, পেনশন তুলতে একদিন বাজার সদায় এই করে সময় চলে যায়। ভালোই আছেন তাহলে? না ভালো নেই। কেন? সারা জীবন নীতি নিয়ে চলেছি এখন আর চলতে পারছি না। সে আবার কেমন? একজন নীতি নিয়ে থাকতে চাইলে অসুবিধার কী? বুঝবেন না। কেন? এই ধরুন গতকালের কথাই বলি ডাক্তার দেখাতে গিয়ে সিরিয়াল পরেছে ত্রিশ জনের পরে দেখলাম রাত ১টার উপরে বেজে যাবে বললাম সকালে ট্রেন ধরতে হবে ডাক্তারকে একটু বলে আমাকে আগে দেখার ব্যবস্থা করে দিন। সে বললো সম্ভব না। দেখলাম ১২টা বেজে গেছে তখন সে বললো সিরিয়ালে রুগীদের একজন আসেনি ঐ সময়ে আপনি দেখাতে পারেন। তবে আমাকে একটু খুশি করবেন স্যার। আরো দুইজন আগে দেখাতে চাইছিল দিই নাই। আপনি বয়স্ক মানুষ তাই আপনাকে আগে দিলাম। ডাক্তারকে পাঁচশ টাকা ভিজিট দিয়েছি ঐ লোকের খুশিতে দিয়েছি একশ। এবার ভেবে দেখুন বুড়ো বয়সে আমার কোন নীতি নেই। আমাদের এখানে ১শ থেকে কোটি সাধ্য অনুযায়ী খুশি করে যাচ্ছি। নীতি বিবর্জিত এই সংস্কৃতির আমিও একজন। ডাক্তার কিন্তু জানেন ওখানে এমনটা হয়। দেখা যাবে ক্লিনিকের মালিক যা বেতন দেয় তারচেয়ে খুশির টাকা বেশি। আবার হুইসেল। কামরার দু’জনেই নামবেন। প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 
আমি রাজশাহী যাব। এই কামরাতে আর কোন যাত্রী না উঠলে; বাকীটা পথ আমি এখন একা। আপনারা বলতে পারেন এতোক্ষণ তো বোবার মতোই ছিলাম। না, এতোগুলা লোকের উপস্থিতিতে যদি আমি বলি, আমি একা। আপনারা বিশ্বাস করতেন না। এবার আক্ষরিক অর্থেই আমি একা। আসলে মানুষের মধ্যেও মানুষ বিচ্ছিন্ন, মানসিক আদান প্রদান ছাড়া বড্ড একা! সেটা কখনোই খালি চোখে বিশ্বাসযোগ্য হয় না।
একা, নিঃসঙ্গ যাত্রা এখানেই শেষ নয়, বিশ্লেষণ করার মতো কতগুলো চরিত্র চশমার সামনে লাগে, এই যা পার্থক্য!

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>