| 19 এপ্রিল 2024
Categories
অনুবাদ অনুবাদিত কবিতা

ফুল, অশ্রু, প্রেম-৩১ নারীর কবিতা (পর্ব-১৬) । মুম রহমান

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট

এমিলি ডিকিনসন [Emily Dickinson]

 

Emily Dickinson

পুরো মার্কিন সাম্রাজ্যে ওয়াল্ট হুইটম্যান আর এমিলি ডিকেনসনকে (১৮৩০-১৮৮৬) সবচেয়ে সেরা কবি মনে করা হয়। হুইটম্যানের মতো এমিলিও মার্কিন লেখক রাল্ফ এমার্সন দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ছিলেন। এছাড়া তার কবিতায় সতের শতকের ব্রিটিশ অধিবাস্তব (Metaphysical) কবিদের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। মৃত্যু, ভালবাসা, প্রকৃতি – এইসবই ছিলো তার কবিতার বিষয়াবলি। অত্যন্ত অন্তরঙ্গ ভঙ্গিতে গৃহস্থালি ভাষায় কাব্য রচনা করতেন তিনি। তার কবিতার সঙ্গে নিজের জীবনাচারের ঘনিষ্ট সহযোগ লক্ষ্য করা যায়। তার কবিতায় বর্ণিত ‘her own society’-এর মতোই এমিলি আপন গহন জগতেই নিহিত থাকতেন। পরিবারের ঘনিষ্ট দুয়েকজন ছাড়া আর কারো সঙ্গে তাকে দেখাও যেতো না কখনো। ২৩ বছর বয়স থেকেই সামাজিকভাবে বিচ্ছিন জীবন যাপন করতেন তিনি। এমনকি কবিতা ছাপানোর ব্যাপারেও তারমধ্যে কখনো কোন আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়নি।


কারণ আমার ঘৃণা করার কোন সময় নাই

আমার কোন সময় নাই ঘৃণা করার, কারণ
কবর আমাকে বাধা দেবে,
এবং জীবন এতো বিশদ নয় যে আমি
শত্রুতা শেষ করে যেতে পারবো।

অন্যত্র ভালোবাসার সময়ও আমার নাই, কিন্তু যেহেতু
কিছু উদ্যম থাকতে হবে
ভালোবাসার সামান্য কিছু মেহনত, আমি ভেবেছিলাম
আমার জন্য যথেষ্ট বড় কাজ।

 

কারণ আমি মৃত্যুর জন্য থামতে পারিনি

কেননা আমি মৃত্যুর জন্য থামতে পারি না
সে দয়া করে আমার জন্য থেমে ছিলো
সে বাহন থেমেছিলো কিন্তু শুধু আমাদের নিজেদের জন্যে
এবং অমরত্বের জন্য।

আমরা ধীরে ধীরে দলে দলে চলেছিলাম, সে কোন ত্বরা জানে না
আর আমি দূরে সরিয়ে রেখেছিলাম
আমার কর্ম এবং আমার অবসরও
তারই সৌজন্যে।

আমার স্কুলটি পার হয়ে গেলাম, যেখানে শিশুরা হুল্লোড় করছে
ঘেরার মধ্যেই ছুটি কাটাচ্ছে
আমরা তাকিয়ে থাকা শস্য মাঠ পেরিয়ে গেলাম
আমরা উদিত সূর্যকে পার হয়ে গেলাম।

কিংবা হয়তো সে-ই পার হয়ে গেলো
শিশির আঁকলো কম্পন আর শীত
কেবল আমার গাউনের পাতলা বুননে
আমার রেশমি পরিধানের গলাবন্ধে।

আমরা থেমে ছিলাম একটা বাড়ির সামনে যেন
মাটির উপরে ফুলে থাকা কিছু
ছাদখানি মোটেও দেখা যায় না
কার্নিশখানি ঝুলে আছে মাটিতেই।

সেই থেকে শতাব্দী পেরিয়ে গেলো আর এখনও
একটি দিনের চেয়ে ছোট করে অনুভব করি
আমি আদিতেই অনুমান করেছিলাম ঘোড়ারা
যাচ্ছিলো অনন্তকালের দিকে।

 


আরো পড়ুন: ফুল, অশ্রু, প্রেম-৩১ নারীর কবিতা (পর্ব-১৫)

‘আমি কেন ভালোবাসবো’ আপনাকে, জনাব?

‘আমি কেন ভালোবাসবো’ আপনাকে, জনাব?
কারণ-
বাতাসের প্রয়োজন নেই ঘাসকে
উত্তর দেয়ার- কোন কারণে কখন সে বয়ে যায়
সে পারে না তার অবস্থান ধরে রাখতে।
কারণ সে জানে- আর
আপনি জানেন না-
আর আমরা জানি না-
যথেষ্টই আমাদের জন্য
এইটুকু প্রজ্ঞাকে ধারণ করা-
এই যে বজ্রবিদ্যুৎ- কখনো চোখকে জিজ্ঞাস করে না
কখন সে থামবে- কখন সে নামবে-
কারণ সে জানে এটা বলা যায় না-
আর কার্যকারণ অতো ধরা যায় না-
বলতে চাই-
সেখানে থাকবে- পছন্দের শৌখিন কাহিনী-
সূর্যোদয়- মহাত্মন- আমাকে চালিত করবে-
কারণ সেই হলো সূর্যোদয়- আর আমি দেখি-
সেইজন্যই- তারপর-
আমি আপনাকে ভালোবাসি-

 

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত