অনুভবে বাবা
একেবারে চোখের দেখা। ভালোবাসা লুকিয়ে ফেলতেন বাবা। মুখ ফিরিয়ে চোখের জলে শুষে ফেলতেন তৎক্ষনাৎ নাকি ঢোক গিলে, আবেগ গিলে ফেলতেন! সে এক রহস্য। খুশি প্রকাশ পেতে দিতেন না সবার মাঝে। ভাবখানা এমনই যে পৃথিবী স্বাভাবিক আছে অতএব তিনিও। ভেতরের উথালপাথাল ঢেউ কেউ বুঝে ফেলুক চাইতেন না সহজে। কিন্তু সন্তানের সুখবরে তার মুখোমণ্ডল চকচক করে উঠতো, আভা ছড়িয়ে যেত সমস্ত ঘরে। বলতে পারেন সে আবার হয় কী করে? হ্যাঁ হয়। কোন সুখবর এলে তার চোখের কোনে জল ভর করতো তখন কারণ ছাড়াই উর্দ্ধমুখে তাকিয়ে নিজেকে সামলাতেন। সেই আনন্দাশ্রু শুষে ফেলতেন নীরবে। কেউ যেন টের না পায়। পুরুষ মানুষ বলে কথা! এই প্রকাশ ভঙ্গিতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে উঠি ছোটবেলা থেকে। তারপরও সন্তানের সাফল্য বলে কথা! টলমলে খুশি উছলে পরতো তাঁর শরীরের প্রতিটি ইন্দ্রিয়ে। কাছে ডেকে সন্তানের চুল আলুথালু স্পর্শ করে একটা ভাষার সঞ্চার করতেন। আমরা সেই আদর নিতাম। ফর্মালিন মুক্ত সেই আদর খেতে যে কোন দামী ফাস্টফুডের চেয়ে বহুগুণ ভালো লাগতো আমাদের।
বাবা নেই। সেই আদর মিলিয়ে গেছে দূরে। দেখা যায় না, ছোয়া যায় না, ভালোবাসা বাসা বাঁধে রূপান্তর ঘটে শুধু অনুভবে।
.