তিনি উৎপলকুমার বসু। তিনি কবিতার পুনর্জাগরণের কারিগর। গতানুগতিক পঞ্চাশের কাব্য আবহে যাঁর কবিতা, সম্পূর্ণ নতুন স্বর-স্বাদ-সুর-সৃজন নিয়ে জেগে উঠেছিল। দ্বিতীয় কাব্য ‘পুরী সিরিজ’এ ছিল সবকিছু ভেঙে কবিতাকে নতুন আঙ্গিকে গড়ে তোলার আয়োজন। যে কাব্য আয়োজন বাংলা কবিতার শরীরে ও আত্মায় নিয়ে এসেছিল এক আমূল পরিবর্তন। কী কী ছিল ‘পুরী সিরিজ’এর আয়োজনে? গঠন বা ভাবের দিকে কবিতা কোন নতুন তালুকের সন্ধান পেয়েছিল? এসব জিজ্ঞাসার উত্তর ওই কৃশকায় বইটিই দিতে পারে। যে বইটির অন্বেষণে আজও বহু আধুনিক কবি ঘুরে বেড়ান। সমকালীন শক্তি চট্টোপাধ্যায় মন্তব্য করেন –‘উৎপল একা পুরী মন্দির সারাবার হাতচিঠি পেয়েছিল”, শঙ্খর ভাষায় বইটি “ভাষার ব্যবহারে, দেখার দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ নতুন এক উদ্ভাসন। এত দিনকার বাংলা কবিতার চিহ্ন এর মধ্যে নেই।” সম্প্রতি কালের জয় গোস্বামী গোটা একটি গ্রন্থ রচনা করলেন ‘পুরী সিরিজের কবি’ নামে। সুতরাং পুরী সিরিজের আয়োজন ও পুনর্জাগরণকে একটু আলোচনা করতেই হয়, নইলে উৎপল চর্চা বৃথা যাবে। গ্রন্থটির উৎসর্গ পত্রে উৎপল বলছেন –
“হস্তচালিত প্রাণ তাঁত সেই আধোজাগ্রত মেশিনলুম আমাদের হুর রে
‘বসন্তে এনেছি আমি হাবা যুবকের হাসি’
ছিল ভালবাসা
ছিল অনিশ্চিত রেলডাক ছিল মেঘের তর্জন
ছিল আঠারো/উনিশ মাইল টিকিট অথচ বেড়ালাম অনেক অনেক অভিজ্ঞতা হল
হস্তচালিত প্রাণ তাঁত সেই আধোজাগ্রত মেশিনলুম আমাদের হুর রে
ছিল উচাটন উট ছিল তানপ্রধান রেডিও আমরা শুনেছিলাম
চিতচোর মনচোর জলে যেতে সই পারবো না লো তখনই তোমার চিঠি এল
পেলাম অনিশ্চিত ডাক পেলাম উপহার সেবার জন্মদিনে রিবনেবাঁধা রবীন্দ্রনাথ
পড়ি নি এখনো সময় কোথা বাবা
যতদিন কালুবাবু জীবিত আছেন চিন্তা নেই বুঝে নেব রক্তকরবী
কখনো না কখনো নিচু গলায় ওঁকেই বলতে শুনব ধন্যবাদ আজ
হস্তচালিত প্রাণ তাঁত সেই আধোজাগ্রত মেশিনলুম আমাদের হুর রে
আজ গন্ধক মেশানো জলে স্নান করে জেলঘুঘুদের আত্মা
আর কি চাইতে পারো কলকাতায় তাঁতকল ছাড়া তুমি চেয়েছ কবিতা”—এটির গঠনে সমস্থ রকম বিরামচিহ্নকে ছুটি দিয়ে কবি বললেন ‘হুর রে’, অর্থাৎ প্রথম বাক্যেই বোঝালেন প্রথাগত বিরামের বাঁধন তিনি মানবেন না। পাঠককে তাঁর অভিজ্ঞতা ও বোধের উপর নির্ভর করে এর যতিপাত নিরূপন করতে হবে। অর্থাৎ উৎপলের কবিতাকে বুঝতে গেলে পাঠককেও সমপরিমাণে সক্রিয় ও সচেতন হতে হবে। আবার গঠনের দিকে একটি পংক্তিকে –“হস্তচালিত প্রাণ তাঁত সেই আধোজাগ্রত মেশিনলুম আমাদের হুর রে”, তিনি ধুঁয়ার মতো ব্যবহার করলেন, কেননা হাতে চালানো প্রাণের তাঁত বা কলকাতায় কলের কারবার আমদের আধোজাগ্রত অবস্থাতেও কার্যকর। সেই যন্ত্রের যাঁতাকলে কবিতা আশা করা নিরর্থক। যেটি শেষ বাক্যে তিনি খোলসা করলেন-“আর কি চাইতে পারো কলকাতায় তাঁতকল ছাড়া তুমি চেয়েছ কবিতা”, কিংবা এটাও বোঝাতে চাইলেন গতানুগতিক বাংলা কবিতা ওই যন্ত্রের নামান্তর। একই বিষয়ের অসংখ্য প্রোডাক্ট। যেখান থেকে কবিতাকে মুক্তি করার জন্যই ওই ‘হুর রে’ ডাক।
একদিকে মেশিনলুম বা হ্যাণ্ডলুমের আওয়াজ অন্যদিকে তানপ্রধান রেডিও স্বর ‘চিতচোর মনচোর’ হলেও কবি জলে যেতে পারবেন না, কেননা পুরনো কবিতার লিরিক তিনি ব্যবহার করবেন না, তারই ইঙ্গিত-“জলে যেতে সই পারবো না লো”, যিনি এই কাব্যের দ্বিতীয় কবিতায় বলছেন –“বাঁশি তুমি ভেঙে ফ্যালো, সে আমাকে বলে না কিছুই”, অর্থাৎ গতানুগতিক বাংলা লিরিকের বাঁশি তিনি বাজাবেন না। কিন্তু একদিকে মেশিন অন্যদিকে রেডিওর তান তাঁকে সবসময় আধোজাগ্রত করে রাখে, চেতন ও অবচেতনের মাঝপর্যায়ে কবি পৌঁছে যান, কলকাতায় গন্ধক (সালফার) আর তাঁতের কারবারে কবিতার মৃত্যু হচ্ছে এ ইশারাও দিয়ে যান। ভাষার ব্যবহারে এসব লাইন বা এরকম বাক্যবন্ধ বাংলা কবিতা খুব একটা দেখেনি। যেমন আর্তুর র্যাঁবো তাঁর ‘নরকে এক ঋতু’ বা a season in hell কাব্যে ভাব/ভরের নতুন আয়োজন করেছিলেম, বাংলা কবিতায় উৎপল ঠিক সেটাই করেছিলেন। তার প্রমাণ বহন করছে ‘বসন্তে এনেছি আমি হাবা যুবকের হাসি’ এই বাক্যটি, যেটি আর্তুর র্যাঁবোর ‘And spring bought me the frightening laugh of the idiot’ এর অনেকটাই বঙ্গরূপ। কবিতা গঠনের ক্ষেত্রে কবি সেই ঋণ স্বীকার স্বরূপ বঙ্গরূপটি কোটেশনের মধ্যে রাখলেন।
এখানে উৎপল বাক্যকে নতুন রূপে পদবিন্যাস করলেন, বিরাম চিহ্নকে মুক্তি দিলেন, আবার ভাষার ক্ষেত্রে নিয়ে এলেন এক অদ্ভুত স্বর। চিতচোর মনচোর বা জলে যেতে সই পারবো না লো’র সাথে হস্তচালিত তাঁতের সময়ের ভাষা –‘ছিল অনিশ্চিত রেলডাক ছিল মেঘের তর্জন’। যা বাংলা কবিতার কথা/ভাষার ধরণটাকেই বদলে দিতে চাইল। এই উৎসর্গ পত্রটি ১৫টি বাক্যাংশের সমষ্টি, যার প্রতিটি বাক্য আরও স্ট্রেচেবল কিংবা পরের বাক্যাংশের সঙ্গে মার্জ হতে পারে। পাঠক একসাথে এই ১৫টি বাক্যাংশকে টেনেও পড়ে যেতে পারেন, এরকম স্বাধীনতা পাঠককে উৎপল দিয়েছেন বা প্রয়োজনে বিরাম নিতে পারেন। আবার ১০ নং বাক্যাংশ বা ১৪ নং বাক্যাংশের পর দুটি স্পেস কবিতাটিকে তিনটি লেয়ার দিয়েছে। যার প্রথম স্তরে আছে মেশিন, রেল, মেঘ, রেডিও হাতছানি। দ্বিতীয় স্তরে আছে তাঁত আর গন্ধকের কারবার। তৃতীয় স্তরে আছে কলকাতায় তাঁতের যান্ত্রিকতা আর সেখান থেকে কবিতাকে পুনর্জাগরিত করার প্রয়াস বা সময়ের আওয়াজে কবিতার মৃত্যুর ইশারা কিংবা কবিতাকে বাঁচিয়ে তোলার গোপন ইচ্ছা।
আরো পড়ুন: উৎপলকুমার বসু’র কবিতাগুচ্ছ
পত্রটি এভাবেই উপর থেকে পরিমান ও ভাবগত ভাবে গভীরে প্রবেশ করতে করতে শেষ চুম্বক বাক্যাংশে গিয়ে যন্ত্রের সাথে কবিতার বাঁচার লড়াইটাও যেন তুলে ধরতে চাইল। এভাবে ১০ থেকে ৪, ৪ থেকে শেষে ১ নং বাক্যাংশে ( উৎসর্গ পত্রটি প্রথম বৃত্ত ১০ বাক্যাংশের, মাঝের বৃত্ত ৪ বাক্যাংশের, শেষের বা চৌম্বক বৃত্তটি একটি পংক্তির) এসে কবিতার ‘আয়োজন পত্রটি’ তুলে ধরল। (যেহেতু এটি পুরী সিরিজের উৎসর্গ পত্র, তাই ধরেই নেওয়া যায় গোটা কাব্যটি কী রকম হবে, এটা তারই আয়োজনের নমুনা। পুরী সিরিজের কবিতাগুলির আয়োজন একেবারে নতুন, সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না, যে কারণে শঙ্খ ঘোষ বলতে বাধ্য হয়েছিলেন বাংলা কবিতার চিহ্ন এর মধ্যে নেই।) কবিতা পেল গঠনগত এক অভিনবত্ব। বা একই কবিতায় থাকল তিনটি কালের একত্র অবস্থান। বর্তমান— (বসন্তে এনেছি, তোমার চিঠি এল), অতীত— (ছিল অনিশ্চিত ডাক, ছিল তানপ্রধান রেডিও), ভবিষ্যত— (জলে যেতে সেই পারবো না লো, নিচু গলায় ওঁকেই বলতে শুনবো) আবার বাক্যপাঠে পাঠকের স্বাধীনতার বিষয়টি একটু দেখা যেতে পারে, যেমন –‘বেড়ালাম অনেক অনেক অভিজ্ঞতা হল’ এই বাক্যাংশটি। পাঠক কোথায় কোথায় বিরাম নিতে পারেন সেটি নিচে রাখা হল—
বেড়ালাম, অনেক অনেক অভিজ্ঞতা হল
বেড়ালাম অনেক, অনেক অভিজ্ঞতা হল
বেড়ালাম অনেক অনেক, অভিজ্ঞতা হল কিংবা ‘হস্তচালিত প্রাণ তাঁত সেই আধোজাগ্রত মেশিনলুম আমাদের হুর রে’— বাক্যটিকে পাঠক পড়তে পারেন এভাবে—
’হস্তচালিত প্রাণ তাঁত, সেই আধোজাগ্রত মেশিনলুম, আমাদের হুর রে’ বা
‘হস্তচালিত প্রাণ-তাঁত, সেই আধোজাগ্রত-মেশিনলুম, আমাদের হুর-রে’— প্রাণের সাথে তাঁত, আধোজাগ্রত’র সাথে মেশিনলুম, আর হুর’এর সঙ্গে ‘রে’ সহজেই এক হতে চায়, সমাসবদ্ধ হবার প্রবণতা এখানে বর্তমান। (উৎপলের কবিতায় সমাসবদ্ধ পদের আধিক্য সহজলভ্য, বিভিন্ন পদকে তিনি হাইফেন সহযোগে সমাসবদ্ধ করেছেন।) সুতরাং উৎপলের বাক্যসৃজন থেকে অনেক কিছুই খুঁজে পাওয়া যায়, যা কবিতার বাঁক বদলে সক্ষম।
আরো পড়ুন: উৎপলকুমার বসু’র সাক্ষাৎকার
ভাবগত দিক দিয়ে দেখলে, এই উৎসর্গ পত্রে অনেক কিছু বর্তমানে না থাকার একটা আভাস আছে। হয়ত অতীতের স্মৃতি সেগুলো, যেগুলো এখন আর নেই। তাইতো তিনি বলছেন –
“ছিল ভালবাসা
ছিল অনিশ্চিত রেলডাক ছিল মেঘের তর্জন
ছিল আঠারো/উনিশ মাইল টিকিট
ছিল উচাটন উট ছিল তানপ্রধান রেডিও”
—যেগুলোর অভাব হয়ত কবি, কলকাতার যান্ত্রিকতায় অনুভব করেছেন। বা TS ELIOT কথিত mixing memory and desire এর একটা ছাপ এখানে পাওয়া যাচ্ছে। স্মৃতির সাথে আকাঙ্খার একটা ‘চিতচোর মনচোর’ বিষয় এখানে লিপ্ত। কিন্তু কলকাতার তাঁত সেই আকাঙ্খাকে কবিতা হতে দিচ্ছে না। উৎপল এখানেই রেখেছেন একটা continues ভাব। হাতে চালানো তাঁত বা মেশিনলুমের ক্রমান্বয়ী গতি যেন কলকাতাকে , মানুষকে পরিচালনা করছে, যাকে নস্যাৎ করতে গিয়েই কবি বলছেন ‘হুর রে’। মেশিনের গতি যেন মানুষের চিন্তা চেতনাকে গ্রাস করে ফেলছে। যান্ত্রিকতায় কবিতার পুর্নজন্ম ঘটছে না বা কবিতায় হয়ে উঠছে যান্ত্রিক। এই যান্ত্রিকতার প্রবাল্য বেশি বলেই কবি ওই ধুঁয়া পদটিকে তিনবার রেখেছেন। আর সেখান থেকে কবিতাকে মুক্ত করতে গিয়ে বাইরের ‘ডাক’কে প্রাধান্য দিচ্ছেন। কী কী সেই ডাক? রেলের ডাক, মেঘের তর্জন বা ডাক, রেডিও ডাক অথবা অনিশ্চিত ডাক। কবি আদৌ নিশ্চিত নন, সেই ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি যান্ত্রিকতাকে অতিক্রম করতে পারবেন কিনা! তাই সে ডাক অনিশ্চিত। তাহলে এখানে একটা টেনশনও কার্যকরী। তাঁর কবিতা সত্যিই কবিতার পুনঃজাগরণ ঘটাতে পারে কিনা এ নিয়ে একটু সংশয় তাঁর ছিলই। তাইতো পুরী সিরিজের ৮ নং কবিতায় তিনি বলছেন-
“শুধু কবিতার যে-কোন ব্যবস্থা তুমি করে যাও। অন্তত এসব লেখা
ব্যবহারযোগ্য কিনা, বসবাসযোগ্য কিনা, না জানালে কৌতুহল থেকে যায়।”
—উৎপলের কবিতা যে আরও তিনদশক ব্যবহারযোগ্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁর কবিতার আয়োজনে এত বিবিধতা ও বহুমাত্রিকতা আছে, যা বাংলা কবিতার নতুন প্রান্ত নির্মাণ করেছে। যা আরও আরও আলোচনা ও চর্চার দাবি রাখে। উৎসর্গ পত্রটির প্রসঙ্গে ফিরে গেলে আমরা দেখি সেখানে সময়ের যান্ত্রিকতার সাথেই আছে গন্ধকের অবস্থান। গন্ধক যা মূলত বারুদ, দেশলাই, কীটনাশক তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। তাহলে সময়ের বিষকেও কবি স্পর্শ করে গেলেন, আত্মআক্ষেপে বললেন ‘কলকাতায় তাঁতকল ছাড়া তুমি চেয়েছ কবিতা’। তাই তিনি রক্তকরবী পড়েন নি, কেননা রক্তকরবীর যান্ত্রিকতা বা স্থবিরতার সময় পেরিয়ে এখন কলকাতায় মেশিনলুমের কারবার। ভাবে রক্তকরবীর সাথে যান্ত্রিকতার মিল থাকলেও উৎপলদের সময়ের যান্ত্রিকতা ছিল আরও ভয়াবহ। উৎপলদের সময়ে ছিল দেশভাগ, বেকারত্ব, মন্বন্তর, কলের কারবার। রক্তকরবীর সময় পেরিয়ে জটিল/অনিশ্চিত জীবনের বাস্তব ঘটনা সেসব। সে কারণেই তিনি রক্তকরবী বুঝে নেওয়ার ভার ‘কালুবাবু’র উপর ছেড়ে দিয়ে, নিজে কলের ও কবিতার সমীকরণ কষেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে উৎপলের ‘হুর রে’ কী কবিতাকে জাগাতে পেরেছিল? তার উত্তর পুরী সিরিজের শেষ কবিতায় ধৃত আছে-“এবার বসন্ত আসছে সম্ভাবনাহীন পাহাড়ে জঙ্গলে এবার বসন্ত আসছে”, পুরী সিরিজের উৎপলীয় বসন্তে বাংলা কবিতার পুর্নজাগরণ ঘটেছিল, সেটি কাব্যটির প্রতিটি শব্দই বলে দেয়। সেখানে অচেনা, অদেখা, অজানা, অচিন্তনীয়, অভাবনীয় উৎপলের কলম।
কবিতাকে পুর্নজাগরিত করতে বারে বারে কবিরা এগিয়ে এসেছেন। স্ববৈশিষ্ঠ্যে কবিতার নতুন কায়া ও হিয়া গঠন করেছেন। মঙ্গলকাব্য, বৈষ্ণবযুগ পেরিয়ে উনবিংশ শতাব্দীর আধুনিকতায় কবিতা বারে বারে জেগে উঠেছে। যার প্রথম ও পুরোধা আধুনিক কবি রবীন্দ্রনাথ। ত্রিশের দশকে জীবনানন্দ। কল্লোল এর পর হাংরি বা কৃত্তিবাসের হাওয়া নিয়ে শঙ্খ – শক্তি – সুনীল – উৎপল। তবে শঙ্খ শক্তিদের থেকে উৎপলের কথনভঙ্গি সম্পূর্ণ আলাদা। ভাববিভাবে যেখানে কবিতা, গদ্য গল্প গান নাটককে জারিত করে এক হতে চায়। বিভিন্ন সাহিত্যিক মাধ্যমের একক আধার হয়ে ওঠে উৎপলের কবিতা। সংকেত, ইশারা, সম্প্রসারণশীলতা, ভ্রাম্যমাণতা নিয়ে উৎপলের কবিতা জেগে ওঠার পালাগান। আঞ্চলিকতা, নাগরিকতা থেকে সময়, সমাজ, মানুষের দৃশ্য শ্রাব্য চলমানতা উৎপলের কবিতার আয়োজন-জাগরণ।
গবেষক, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়