আজ ০৬ নভেম্বর কবি গোলাম মোর্শেদ চন্দনের শুভ জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার তাঁকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।
ঢোল
নিঃসঙ্গরাতের অন্ধকারে জলেরসঙ্গমে জলকেলি
অধরা আকাশ ছুঁয়ে স্তনে ঢালি ঘোল
শতরজ্ঞিসুরে একাকী , আলো অন্ধকার খেলি
বাজাবার কিছু নেই, আজ আমি নিজেই হয়েছি ঢোল ।
সপ্তর্ষি
পূর্ণ-চন্দ্র তার জ্যোৎছনায় মাঠ; আলো-ছায়া সবটুকু জানালায় ঘাট।
পূর্ণিমা গেল ভেসে পাহাড় সমেৎ… অনিন্দ সম্প্রীতি জলে ভরা শ্বেত।
পূর্ণিমা যুদ্ধে আসবে ফেরৎ; সবুজে সবুজ পাঠে মাঠে ছাতা।
সালাম নমস্ত মাতা তোমায় প্রণাম; তোমারে-ই পেলে বাবা ভাসবে যে …শ্যাম…
বাবার ডানগালে তিন কালো তিল; ভুবন ছড়াবে তাঁর জ্যোছনার …বিল… এ কোন প্লাবণ?
তোমাকে-ই রেখা দিয়ে বন্ধনী করে নিয়ে ভাসবে শ্রাবণ…
মাগো মা… …মা… আমার পিতার দ্বি-গুণ; কাঁদবে না দাগগুলো, রে… দেয়া জলহীন নুন ॥
ছুটির ঘন্টা
আজিজ মামা’র সাতটি আঘাতে-ই বিরতিহীন নিরবতায় হেঁটে আসে ক্লাস।
এভাবে-ই একই বিদ্যালয়ে প্রজন্মের পরম্পরা, গ্রহণ বর্জন; বেলটি আজও
হাতুরি সমেৎ
শুধু আজিজ মামারা-ই সময়-বৃক্ষের এক একটি মরাডাল।
আদিতে কোন শিফট ছিল না, ঘণ্টা, হাতুরি, বেল… ; এক-ই জ্যোৎস্না ভাসায়…
একই ধ্বনি সময়ের স্রোত, ইতিহাস কাঁধে করে অনাগত মাঠ নিয়ে চষে…
ছেলেকে দিতে গেলে ফেরিওয়ালা মন অতীত ফেরায় ইতিহাস’র বাঁক।
পিতামহ হয়ে আমাদের… ; একার সন্যাসে আলো… বৈমানিক ঘুম।
কুরুক্ষেত্র জানিয়ে দেয় স্বপ্নের অতীত। দেখি: আঁধারের কথক- ঘুমহীন ঘুমের শরীর।
আগাছা সময় বেহালার সুর, ঢেউ তোলা টেউ। ঘণ্টা থেমে গেলে, থেমে যায় কেউ…
বেলটি সময়ের সংকেত-ধ্বনি… বাজাতে বাজাতে… টুনটুন ছুটির উঠান ভরা
ঘণ্টা
ধ্বনি…
বিচারাদেশ
অনেক খেয়েছি জল ডুবে ডুবে, প্রিয় উপস্থিতি
চান্দার বিলের দোহাই, বর্নি বাওরের কসম…
চার পুরুষের দিব্বি মধুমতি। করফার কইগুলো জানে,
শিং মাগুরেরা জানে তরুর বিল
আমারে জানি আমি।
স্বপ্রণোদিত জবানবন্ধীতে জানাতে এসেছি—
বিগত ও ভবিষ্যতের জবানী দিয়ে বর্তমানকে তুচ্ছ করে।
আমাকে-ই তুলে দিচ্ছি সভায়। পরোয়ানা আমার হাতে।
মুষ্টি উঠিয়ে বলছি—পারলে শুনুন?
কুসুমিত তৃষ্ণাকে খুন করে ফেরারী ছিলাম।
প্রলুব্ধ করেছি প্রণয়হীন পরিণতিকে, আমাকে ঝুলান।
আর আমি ফিরব না আগামীর মাঠে।
অনাগত জঙ্গল চাষের ভার জঙ্গলেরই থাক ।
ক্যানভাস
দেখতে দেখতে জীবনটা হয়ে গেল সাদাকালো ক্যানভাস
যেখানে একদা মৌচাক ছিল,
এখনও পড়ে আছে মোম চোখের পরতে
হারিয়ে যাই পূণিমায় তিথীর আয়োজনে
ভাবতে ভাবতে স্মৃতির শিথানে শুয়ে
বলি- জীবনটা এতছোট কেন ?
আসলে ছোট নয় বরং বহুতল বৃক্ষের সুউচ্চ করোতল
আলোআঁধারির খেলায় তাই ভুলে গেছি তার ব্যস,
অবগাহনের কাল বাজার সদাই শেষ হলে
বোঝা যাবে কতটা কেনাবেচা হল ঘোরের
এবার চলো আমরা নিজেরাই
একটা বাজার হয়ে উঠি, বেচাকেনার
স্রোতের কলরোল
প্রতিযোগীতা শেষ ।বিজয়ীকে দেখা গেল না
তবু ঘিরে রাখল সবাই পড়ন্ত সময় ,
কেঁটে গেল মেঘ বৃষ্টি নামল অঝর ধারায়… ভেতরে ঘাম ।
নামাও বিছানা বালিষ ধরাও ওম সময়কে তুলে রাখ
শোকেচের ভেতর নদীকে নতমুখি হতে বল ,
আসবে জোয়ার চল বহুমুখি করি প্রন্ত বাসনাগুলো
খোলস ছাড়াই ছড়িয়ে দেই বহুমাত্রিক প্রাপ্তির আঁসটে জল
বহুরুপি নদীগুলো মিলিয়ে দেই মোহনায় কলকলিয়ে
দেখি স্রোতের কলরোল থৈ থৈ জলে