অনুবাদ গল্প: ধোঁয়া ।। গুলজার » অনুবাদক: ফজল হাসান
»অনুবাদ : ফজল হাসান
অনেকটা অনুপকারী ঘটনার মতো শুরু হয়েছিল। অল্প সময়ের মধ্যে অগ্নিকুন্ডলীর ধোঁয়া পুরো মফস্বল শহর আচ্ছন্ন করে ফেলেছিল। ভোর চারটায় চৌধুরী ইন্তেকাল করেন। সকাল সাতটা পর্যন্ত চৌধুরানী গভীর শোকে কান্নাকাটি করেছেন। একসময় তিনি নিজেকে সংযত করে মানসিক শক্তি ফিরে পেয়েছেন। চৌধুরানী প্রথম যে ব্যক্তির জন্য খবর দিয়ে লোক পাঠিয়েছিলেন, তিনি ছিলেন মোল্লা খায়রুদ্দীন। কাজের লোককে সতর্ক করে বলা হয়েছিল, সে যেন কিছুতেই মোল্লাকে চৌধুরী সম্পর্কে কোনো কথা না বলে। মোল্লাকে উঠোন দেখিয়ে কাজের লোক চলে যায়। চৌধুরানী এসে মোল্লাকে পথ দেখিয়ে ওপরের তলায় চৌধুরীর শোবার ঘরে নিয়ে যান। শোবার ঘরের মেঝেতে চৌধুরীর মৃতদেহ পড়ে আছে। চৌধুরীর মুখ দেখতে সুশ্রী, কিন্তু দুই টুকরা সাদা কাপড়ের ফাঁকে তার ফ্যাকাশে মুখের শুভ্র ভুরু, দাড়ি এবং লম্বা চুল মানিয়েছে। তবে সারা মুখের ওপর প্রশান্তির ছায়া ফুটে উঠেছে।
তৎক্ষণাৎ মোল্লা উচ্চারণ করেন, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ এবং তারপর তিনি সহানুভূতি জানিয়ে দোয়া-দরুদ পাঠ করেন। মোল্লা ঠিকভাবে বসার আগে চৌধুরানী আলমারি থেকে স্বামীর উইল নিয়ে আসেন এবং পড়ার জন্য মোল্লার হাতে তুলে দেন। উইলের বর্ণনা অনুযায়ী মৃত্যুর পরে চৌধুরীর মৃতদেহ দাফন করার পরিবর্তে যেন পোড়ানো হয়। এ ছাড়া তিনি ইচ্ছা পোষণ করেছেন যে, সেই ছাই যেন পানির সঙ্গে মেশানো হয় এবং সেই পানি যেন তার আবাদি জমিতে সেচকাজে ব্যবহার করা হয়।
উইল পড়া শেষ হলে মোল্লা চুপ মেরে যান। তিনি জানেন, গ্রামের মানুষদের জন্য চৌধুরীর ধর্মীয় কাজে দান-খয়রাতের কথা। তিনি অকৃপণভাবে মুসলমান এবং হিন্দুদের জন্য আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। তার আর্থিক সাহায্যের জন্যই মাটির তৈরি মসজিদ পাকা দালানে রূপান্তরিত হয়েছে। তিনি ইট-সুড়কি এবং চুন-বালুর আস্তর দিয়ে হিন্দুদের জন্য শ্মশান গড়ে দিয়েছেন। বিগত চার বছর তিনি অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু অসুস্থতার পরও তিনি প্রতিবছর রোজার মাসে গরিবদের জন্য মসজিদে ইফতারের আয়োজন করেছিলেন। তার ওপর পুরো তল্লাটের মুসলমানদের অগাধ বিশ্বাস ছিল। অথচ তার উইল পড়ে মোল্লা যারপরনাই বিস্মিত। তিনি ভীত হয়ে পড়েন। কেননা উইল হয়তো লোকজনের মধ্যে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে পারে, এমনকি দেশের হাওয়া-বাতাসও বিষিয়ে তুলতে পারে। হিন্দুরা আরও বেশি হিন্দু হয়েছে এবং মুসলমানেরাও হয়েছে আরও বেশি মুসলমান।
চৌধুরানী বললেন, ‘আমি কোনো ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান চাই না। আমি শুধু চাই, আপনি মৃতদেহ শ্মশানে সৎকার করার ব্যবস্থা করুন। পন্ডিত রাম চন্দ্রকে ডেকে আনতে পারতাম, কিন্তু তার জন্য আমি কাউকে পাঠাইনি। তার কারণ, আমি চাই না এ নিয়ে কোনো গন্ডগোল হোক।’
যাহোক, ঘটনা যা হবার তাই হয়েছে। পন্ডিত রাম চন্দ্রকে ডেকে মোল্লা খায়রুদ্দীন উপদেশ দিয়ে বলেছেন, ‘দয়া করে চৌধুরীর মৃতদেহ শ্মশানে দাহ করার অনুমতি দিবেন না। এলাকায় মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাবে। কেননা চৌধুরী কোনো সাধারণ মানুষ ছিলেন না। বিভিন্ন দিক দিয়ে এলাকার সব ধরনের মানুষের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা ছিল।’
পন্ডিত রাম চন্দ্র আশ্বাস দিয়ে মোল্লাকে বলেছেন যে তিনিও এলাকায় কোনো ধরনের গন্ডগোল দেখতে চান না। জনমানুষের কানে কথাটা পৌঁছার আগেই তিনি তার কাছের মানুষের কাছে ব্যাখ্যা করেন।
যেই স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি হয়েছে, তা ধীরে ধীরে অগ্নিকুন্ডলীর মতো চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়া শুরু করেছে।
‘প্রশ্নটি চৌধুরী বা চৌধুরানীকে নিয়ে নয়, এটি হলো বিশ্বাসকে ঘিরে। প্রশ্নটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে পুরো সমাজ এবং ধর্ম। চৌধুরানীর কতটুকু সাহস যে তিনি চৌধুরীর মৃতদেহ দাফন করার পরিবর্তে সৎকার করার জন্য সম্মতি জানিয়েছেন? তিনি কি ইসলামের শরিয়ত সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন?’
কয়েকজন চৌধুরানীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। চৌধুরানী ধৈর্যের সঙ্গে তাদের বুঝিয়ে বলেন, ‘ভাইসব, এটা অন্তিম ইচ্ছা। মৃতদেহ হয় সৎকার করা হবে, নতুবা দাফন করা হবে। তার শব সৎকার করলে যদি আত্মা শান্তি পায়, তাহলে কেন আপনারা বাধা দিচ্ছেন?’
একজন ভদ্রলোক তীক্ষ্নভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়, ‘আপনি কি ভেবেছেন যে, তাকে পোড়ানোর পরে আপনি শান্তিতে থাকতে পারবেন?’
‘হ্যাঁ,’ চৌধুরানী সংক্ষিপ্ত জবাব দেন, ‘উইল অনুসারে তার মৃতদেহ সৎকার করতে পারলে আমি শান্তিতে থাকতে পারব।’
সেই দিনটি এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে চৌধুরানীর অস্থিরতা বাড়তে থাকে। তিনি আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান চেয়েছেন, কিন্তু সমাধানের পথগুলো একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। চৌধুরীর শেষ ইচ্ছার আড়ালে কোনো ষড়যন্ত্র বা গোপন রহস্য নেই, এমনকি ধর্মীর বিশ্বাস বা গুপ্ত মতবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততাও নেই। বিষয়টি খুবই মামুলি। মৃত্যুর পরে পার্থিব জীবনের সমস্ত চিহ্ন মুছে ফেলাই মানুষের ইচ্ছা।
‘যখন আমার উপস্থিতি আছে, তখন আমি আছি এবং যখন আমার উপস্থিতি নেই, তখন আমি নেই।’
কয়েক বছর আগে চৌধুরী তার ইচ্ছার কথা স্ত্রীকে বলেছিলেন। কিন্তু চৌধুরী জীবিত থাকায় কথাটা তেমন গুরুত্ব পায়নি। একই কথা তিনি উইলে উল্লেখ করেছেন। তার শেষ ইচ্ছা বাস্তবায়ন করার অর্থ হলো স্ত্রীর প্রতি তার ভালোবাসা এবং আনুগত্যের প্রমাণ। কেউ একজন দৃষ্টির আড়ালে চলে গেলেই তাকে দেওয়া সমস্ত প্রতিশ্রুতি সহজে ভোলা সম্ভব নয়।
পন্ডিত রাম চন্দ্রকে বাড়িতে ডেকে আনার জন্য চৌধুরানী বিরুকে পাঠিয়েছেন, কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। তার সহকর্মীরা বলেছে, ‘শোন, অবশ্যই আমরা বৈদিক মন্ত্র পড়ব এবং চৌধুরীকে দাহ করার আগে তিলক পরাব।’
‘আমি বলি, একজন মানুষের মৃত্যুর পরে আপনারা কেমন করে অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত করবেন?’ বিরু প্রতিবাদ করে।
‘দয়া করে তর্ক করো না। পবিত্র গীতা থেকে মন্ত্র পাঠ করা ছাড়া কোনোভাবেই মুখাগ্নি করা সম্ভব নয়। আমরা যদি করি, তাহলে মৃত ব্যক্তির আত্মা শান্তি পাবে না। তখন সেই অস্থির আত্মা এসে আমাদের সবাইকে যন্ত্রণা দিবে। অনেক কিছুর জন্য আমরা সবাই চৌধুরী সাহেবের কাছে ঋণী। আমরা তার বিদেহী আত্মাকে অশান্তিতে রাখতে চাই না।’
বিরু ফিরে যায়।
আরো পড়ুন: গুলজারের গল্প পুরুষ
পন্ডিতের বাড়ি থেকে বিরুকে বেরিয়ে যেতে দেখেছে পান্না। সে মসজিদে গিয়ে সবাইকে বলে দেয়।
মুহূর্তেই উত্তেজনার অগ্নিকুন্ডলীর চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। বেশ অনেকটা সময় ধরে চাপা আগুন নিভে আসছিল। চার কিংবা পাঁচজন বিশ্বস্ত মুসলমান তাদের মতামতের সীমানা অতিক্রম করে। অনেক কিছুর জন্য তারা চৌধুরী সাহেবের কাছে ঋণী এবং কৃতজ্ঞ। দাফন না করে তারা কিছুতেই চৌধুরীর বিদেহী আত্মাকে অশান্তি দিতে চায় না। দাফন করার জন্য সবাই একজোট হয়ে মসজিদের পেছনে গোরস্থানে কবর খোঁড়ার জন্য আদেশ জারি করে।
বিকেলে কয়েকজন মিলে চৌধুরীর বাড়িতে যায়। চৌধুরানীর ওপর তারা চাপ সৃষ্টি করতে বদ্ধপরিকর, তিনি যেন চৌধুরীর উইল নষ্ট করে ফেলেন। উইলের কোনো প্রমাণ না থাকলে বুড়ি কী করবে?
চৌধুরানী লোকজনের অভিসন্ধি বুঝতে পেরেছেন এবং উইল লুকিয়ে ফেলেছেন। যখন লোকজন তাকে ভয় দেখাতে শুরু করে, তখন তিনি বলেন, ‘মোল্লা খায়রুদ্দীনকে জিজ্ঞাসা করুন। তিনি উইল দেখেছেন এবং পড়েছেন।’
‘তিনি যদি অস্বীকার করেন?’
‘উইল পড়েও যদি তিনি কোরান শরিফের ওপর হাত রেখে অস্বীকার করেন, তাহলে আমি দেখাব। অন্যথায়…’
‘অন্যথায় কী ?’
‘অন্যথায় আপনারা আদালতে উইল দেখবেন।’
এটা স্পষ্ট হয়ে উঠে যে ঘটনা আদালত পর্যন্ত গড়াবে। চৌধুরানী হয়তো তার উকিল এবং শহর থেকে পুলিশ ডাকবেন। সম্ভবত তিনি তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এগিয়ে যাবেন, অর্থাৎ পুলিশের উপস্থিতিতে চৌধুরীর মৃতদেহের সৎকার করবেন। কে জানে? তিনি হয়তো তাদের ডেকে আনার জন্য ইতিমধ্যে লোক পাঠিয়েছেন। তা না হলে কেমন করে একজন অমন দৃঢ়তার সঙ্গে কথা বলতে পারে, যখন তার স্বামীর মৃতদেহ বরফে আচ্ছাদিত হয়ে পড়ে আছে?
রাতে আগুনের মতো গুজব ছড়িয়ে পড়ে। কেউ একজন বলেছে, ‘ঘোড়ায় চড়ে একজন শহরের অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছে। অশ্বারোহীর মাথা ঢাকা এবং পাগড়ি দিয়ে মুখ প্যাঁচানো। সে চৌধুরীর বাড়ি থেকে বেরিয়েছে।’
আরেকজন বলেছে যে, সে অশ্বারোহীকে চৌধুরীর আস্তাবল থেকে বেরোতে দেখেছে।
খাদু বলেছে, শুধু তাই নয়। সে চৌধুরীর বাড়ির পেছনের উঠানে কাঠ কাটার শব্দ শুনেছে, এমনকি কাটার পরে একটা গাছও পড়তে দেখেছে।
নিশ্চয়ই চৌধুরানী পেছনের বাগানে স্বামীর মৃতদেহ সৎকার করার আনজাম করেছেন। কালুর রক্ত টগবগ করে ফুটতে শুরু করে।
‘কাপুরুষ! আজ রাতে একজন মুসলমানকে চিতায় দাহ করা হবে। আপনারা সবাই কি বসে থাকবেন এবং সেই আগুন দেখবেন?’
কালু আড্ডা ছেড়ে চলে যায়। কী হবে, যদি মারামারি করা তার পেশা হয়। এ ছাড়া ধর্মবিশ্বাসের মতো একটা কিছু আছে। ‘এমনকি একজনের কাছে ধর্মবিশ্বাসের মতো তার মা-ও প্রিয় নয়।’
চার বা পাঁচজন সঙ্গী নিয়ে কালু মই বেয়ে পেছনের দেয়াল টপকে চৌধুরীর বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। বুড়ি মহিলা স্বামীর মৃতদেহের পাশে একলা বসেছিলেন। চৌধুরানীর কিছু করার আগেই কালুর কুড়ালের কোপ গিয়ে পড়ে তার ওপর।
তারা চৌধুরীর মৃতদেহ তুলে নেয় এবং মসজিদের পেছনে গোরস্থানে নিয়ে যায়। সেখানে একটা নতুন কবর অপেক্ষায় ছিল।
তারা বেরোনোর ঠিক আগের মুহূর্তে রমিজ জিজ্ঞাসা করে, ‘সকালে যখন বুড়ির দেহ খুঁজে পাবে, তখন কী হবে?’
‘সে কি মারা গেছে?’
‘তার দ্বিখন্ডিত মুন্ডু হাঁ করে আছে। সে কি সকাল পর্যন্ত বাঁচবে?’
কালু থমকে দাঁড়ায় এবং বুড়ি মহিলার শোবার ঘরের দিকে তাকায়। পান্না বুঝতে পারে তার মনের অভিসন্ধি।
‘চালিয়ে যান, ওস্তাদ। আমি জানি, আপনি কী ভাবছেন। আমরা সবকিছু সামাল দেব।’
কালু দীর্ঘ কদম ফেলে গোরস্থানের দিকে যায়। রাতের বেলা চৌধুরীর শোবার ঘর থেকে অগ্নিকুন্ডলীর লেলিহান শিখা বেরিয়ে আসে এবং ধোঁয়ায় পুরো মফস্বল শহর ঢেকে যায়। জীবিতকে পোড়ানো হয় এবং দাফন করা হয় মৃতকে।
গল্পসূত্র : ‘ধোঁয়া’ গল্পটি গুলজারের ইংরেজিতে অনূদিত একই শিরোনামের গল্পের অনুবাদ। হিন্দি থেকে গল্পটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন অলোক ভাল্লা। গল্পটি লেখকের ‘রাভি পার অ্যান্ড আদার স্টোরিজ’ ছোটগল্প সংকলন থেকে নেওয়া।
(পাঞ্জাবি: ਗੁਲਜ਼ਾਰ; জন্ম: ১৮ আগস্ট, ১৯৩৪) প্রখ্যাত ভারতীয় কবি, সুরকার ও চলচ্চিত্র পরিচালক।[৩] তিনি মূলত হিন্দী ভাষায় রচনা করেন। তবে উর্দু গজল রচনাতেও তার বিশেষ কৃতিত্ব রয়েছে। তার আসল নাম সাম্পুরাণ সিং কারলা। তৎকালীন অখ- ভারতের পাঞ্জাব (বর্তমানে পাকিস্তান) প্রদেশের ঝিলাম জেলার দিনা শহরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মূলত হিন্দি, উর্দু এবং পাঞ্জাবি ভাষায় সাহিত্য রচনা করলেও ভারতের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় লেখালেখি করেন। ‘টু’ তার একমাত্র উপন্যাস, যা ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পরে শরণার্থীদের করুণ কাহিনি নিয়ে রচিত। তিনি তিনটি কাব্যগ্রন্থ এবং দুটি ছোটগল্প সংকলন রচনা করেন। ‘রাভি পার অ্যান্ড আদার স্টোরিজ’ (১৯৯৭) এবং ‘হাফ এ রুপি স্টোরিজ’ (২০১৩) ইংরেজিতে প্রকাশিত ছোটগল্প সংকলন। তবে ‘রাভি পার অ্যান্ড আদার স্টোরিজ’ থেকে চারটি গল্প নিয়ে ২০০২ সালে প্রকাশিত হয়েছে ‘সীমা অ্যান্ড আদার স্টোরিজ’। কাব্যিক ভাষায় চরিত্র চিত্রণের, বিশেষ করে শব্দ প্রয়োগের জন্য তাকে ‘মাস্টার ওয়ার্ডস্মিথ’ বা ‘শব্দ কারিগর’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
গুলজারের কর্মজীবন শুরু হয়েছে সংগীত পরিচালক হিসেবে। পরবর্তী সময়ে তিনি গীতিকার, চিত্রনাট্যকার এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করেছেন। গীতিকার হিসেবে তিনি ২০০৪ সালে ‘পদ্মভূষণ’ এবং ২০০২ সালে ‘সাহিত্য আকাদেমি’ পুরস্কার অর্জন করেছেন। এ ছাড়া তিনি ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কারসহ একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছেন। হলিউডের বিখ্যাত ‘স্লামডগ মিলিয়নিয়ার’ চলচ্চিত্রের গান ‘জয় হো’ সংগীত রচনার জন্য তিনি একাডেমি অ্যাওয়ার্ড এবং গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডও অর্জন করেছেন। তিনি ১৯৭৩ সালে বলিউডের বিখ্যাত নায়িকা রাখীর সঙ্গে ‘সাত পাকে বাঁধা’ পড়েন।