গুপ্তহত্যা…অতঃপর (শেষ পর্ব)

Reading Time: 2 minutes

গত পর্বের পরে…

খালা এতক্ষণে আশ্বস্ত হন। ধীর মনে হয় তার কণ্ঠস্বর।

-হুম। আচ্ছা।

ম্যাজিস্ট্রেট আবার বলেন

-হুম। সময় লাগবে। কিন্তু এভাবে ছাড়া সম্ভব নয়। তাই বিদেশী ফরেনসিক বিভাগের বেশ কিছু নামকরা ডাক্তার কল করা হয়েছে।

ঈমাম সাহেব সাথে যোগ করেন

-কিন্তু আপা

ম্যাজিস্ট্রেট আবার বলেন

ততক্ষণ পর্যন্ত অবধি সিল গালা করে রাখতে নির্দেশ আছে । ডিসি অফিসের তত্ত্বাধানে থাকবে বাড়িটি। তাই আপনারা আজ রাতের মধ্যেই গুছিয়ে নিন। সৎকার শেষ না হওয়া অবধি এ বাড়িতে আপনাদের রাখাটা নিরাপদ মনে করছিনা আমরা।

ছোটখালাকে হতবিহ্বল দেখায়।

-আমরা কোথায় যাব তাহলে?

বাড়িতে হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ে ততক্ষণে রাশেদের বাবা কামাল উদ্দিন সাহেব। রাশেদ দৌড়ে যায়। রাশেদ এরই মধ্যে তার মা বাবাকে জানিয়েছিল সব। বাবা মাকে দেখে খুব সহায় বোধ করে রাশেদ।

-বাবা।

পেছনে দেখতে পায় রাশেদের মা আসছেন।

-মা?

ছোটখালার স্নায়বিক চাপের পরীক্ষার সময় বোধ হয় এতক্ষণে শেষ হয়েছে। আর তিনি নিজেকে ধরে রাখতে পারেননা।

-আপা..

বলে রাশেদের মাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ওঠেন।

-কোনো চিন্তা নেই।আমরা এসে গেছি।

ছোট খালু চিৎকার করে ডাকেন সবাইকে

-কইরে বিনু। কচি । মাসুম । রুনি। সবাই গুছিয়ে নে। আমরা সবাই যাব পাহাড়ে। আমাদের বাড়িতে কটা দিন ঘুরে আসবি চল।

ছোট খালা নির্বোধের মত ফ্যালফ্যাল করে তাকান ঈমাম সাহেব জ্বিন আর ম্যাজিস্ট্রেটের দিকে। ঈমাম সাহেবই কথা বলেন

-যান মা যান। ক’টা দিন ঘুরে আসুন। ততক্ষণে সব আমরা এদিকে সামলে নেব। কিছু ভাববেননা।

-জ্বিনের দিকে এক পলক তাকান ছোট খালা। ইশারা বুঝতে দু’জনের কারো সময় লাগেনা।

লাশের গাড়িগুলো চলতে শুরু করে। সদর দরজা খুলে দেয়া হয়েছে। সাংবাদিকরা ঘিরে ধরে ছোট খালা আর ম্যাজিস্ট্রেটকে। রাশেদ লক্ষ্য করে – হঠাৎ চলতে চলতে শূন্যে মিলিয়ে গেল সেই ফর্সা লম্বা দাড়িওয়ালা লোকটি। ৫০ টি বছর যে আগলে রেখেছিল এই জামিদার বাড়িটি আর তার মানুষগুলোকে। আজ তার ছুটি। আর কেউ দেখেনা। রাশেদ আর বিনু আপা দেখতে পায় ছলছল চোখে সেদিকে তাকিয়ে আছেন ছোটখালা। কি ছিল সেই চোখে। কী ছিল সেই চোখের জলে কেউ জানেনা…..। হয়তো আবার অচিরেই কোনো একদিন দেখা হবে তার সাথে । রাশেদের কেবল এই কথাটিই মনে বেজে ওঠে।

সমাপ্ত

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>