Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com

হিম (পর্ব-১৯)

Reading Time: 6 minutes
মাহবুব আলম চৌধুরী যখন চোখ খোলে তখনই সকাল। পৃথিবীর মানুষের নিয়মে সে চলে না। এই এখন, সকাল সাড়ে নয়টায় ঘুম ভাঙলো তার। এখন সে বিছানা গুছিয়ে রেখে স্নানে যাবে। ঠিকঠাক হয়ে নাস্তা করবে। প্রায় সময় বউ নাস্তা বানিয়ে রাখে। এখন মেয়ের পড়ার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। তানিয়া আফরিন টানা বসে  থাকে মেয়ের পাশে, মেয়ের পড়া তৈরি করা দেখে। বেশি আদুরে মেয়ে তার, বায়নাপ্রবণ। পড়তে বসলো তো বসলো। ভালো মানুষের মতো পড়তেই থাকবে অনেকক্ষণ, না বসলে হাতি দিয়ে টেনেও বসানো যাবে না তাকে। স্নান করতে করতে মাহবুবের গত ভোরের কথা মনে পড়ে। দু’জনেই রাত জেগে তৃতীয়বারের মতো থিওডোরাস এঞ্জেলোপুলুসের ইউলিসিস গেজ দেখেছে। তানিয়ার ভালো লাগে, থিওকে মাহবুব চিনেছে তানিয়ার কাছ থেকে। ঢাকার রাইফেল স্কয়ার থেকে প্রায়ই তানিয়া এক গাদা ডিভিডি কিনে আনে৷ আজানের অল্প আগে সিনেমা শেষ হলো। তারপর ওরা একসাথে প্রেম করলো অনেকক্ষণ, তানিয়া প্রায়ই বাৎসায়ন রচিত কামসূত্রের কৌশল কপি করতে চায়, এইজন্য মাহবুবকে ইয়োগা করতে হয় নিয়মিত, ওজন কমিয়েছে সাড়ে তেরো কেজি, শরীরে চর্বি থাকলে ওসব সহস্রাধিক বছর আগের জিনিস কপি করা অসম্ভব, তাছাড়া তখন বাতাস ছিলো বিশুদ্ধ, ফুসফুস একদম তাজা। এইসব শিখিয়ে পড়িয়ে নিতে হয়েছে মাহবুবকে, সে এসবের কিছুই জানতো না। কিছুদিন আগেই তানিয়ার প্ররোচনায় ওকে আজিজ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ করে বিশাল এক ইলাস্ট্রেটেড কামসূত্র আনতে হয়েছে আর বাড়াতে হয়েছে ডায়েট। স্নান করতে করতে সেসব কথা মনে পড়লে দ্বিতীয় আমির ঘন্টা চারেক আগের ঘুম আবার আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠতে চায়, শাওয়ার নিতে নিতে সে বিড়বিড় করে বলে, বাবা ঘুমাও, তোমার অনেক খাটুনি গিয়েছে। 
তানিয়া চাকরি করে একটা এনজিওতে। ভালো পয়সা পায়, মাহবুবের জন্মসূত্রেই অনেক টাকা, তাকে পয়সা উপার্জনের জন্যে কিছু করতে হয় না। ভালো স্কুল কলেজে পড়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো রেজাল্ট করেছে আর তারপর সার্টিফিকেটগুলো কোনো কাজকর্মে আসলো না৷ কোথায় রেখেছে সেসব তাও মনে নেই। বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে মাহবুব আর ওর একটা বোন আছে। বাবা ব্যবসায়ী মানুষ ছিলেন। মাহবুবের সাথে বাবার সম্পর্ক বৈষ্ণব পদাবলীর রাধা কৃষ্ণের মতো, লাভ হেট রিলেশন। প্রাক-বিবাহ জীবনে অনেকগুলো বছর ছাত্র-রাজনীতি শ্রমিক রাজনীতি করেছে। অনেক পয়সা উপর বসে থাকাটা মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। বাবা তখন ছেলের পকেট মানি দিতেন সীমিত। একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত বাবা যেমন দেন। যদিও সামর্থ্য তখনই তাঁর আকাশচুম্বী। শহরের প্রায় সব ধর‍ণের ব্যবসায় তাঁর ভালো অংকের টাকা খাটছে। সব রাজনৈতিক দলের নেতারা নিজেদের পার্টিফান্ডে ভালো অংকের টাকা পান৷ সীমিত পকেটমানিতে ছেলে চালিয়ে দিতো। প্রায় সময় বই নিয়ে বাড়ি ফিরতো জমানো পয়সায়। বইয়ের ব্যাপারটা সে পেয়েছে মায়ের দিক থেকে, গানের ব্যাপারটাও। রবীন্দ্রসঙ্গীতের ব্যাপারে মাহবুবের একটা সহজাত টান ছিলো৷ সাড়ে চার বছর বয়সে সে একদিন খালি গলায় একটা রবীন্দ্রগান গেয়ে সবাইকে চমৎকৃত করে দেয়। আরেকটু বড় হয়ে ছেলে টিউশন করা শুরু করলো। দেখা গেলো, নিজের অফিসের নিচের দিকের কর্মীর ছেলেকে মাহবুব টিউশন দিচ্ছে হাতখরচের জন্য। শ্রেণি জিনিসটা কোনোদিনই মাথা ঘামানোর কারণ ছিলো না তার। মা মাঝে মাঝে অনুযোগ করতেন, অনেক হাঁটাহাঁটির ফলে মাহবুবের শরীর ভেঙে যাচ্ছে৷ বাবা খালি হাসতেন৷ ছেলের এই একরোখা কষ্ট করায় খুশিই হতেন মনে মনে, একমাত্র ছেলে কোনোদিন কোনোকিছুর জন্যে তাঁর কাছে আবদার করেনি, তার সব আবদার মায়ের কাছে৷ স্কুলের উপরের দিকের ক্লাস উঠে জড়ালো রাজনীতিতে। রফিউদ্দিন ফরিদ কাজল, ঢ্যাঙা এক ফর্সা ছেলে আর নিজের কৃষ্ণকাজল ছেলে হলো মানিকজোড়। দাবা থেকে শুরু করে সিনেমা বই একসাথে সবসময়। কাজলের বাবা শহরের বড় একজন আইনজীবী। তাঁর সাথে বন্ধুত্ব আছে, প্যারেন্টস মিটিং এ দেখা হয়েছিলো কয়েকবার। খেটে খাওয়া মানুষের রাজনীতি করতে করতে দুই বন্ধুর চেহারা খেটে খাওয়া মানুষের মতো হয়ে যেতে থাকলো।
ক্লাস এইটে উঠে দুই বন্ধু সেন্ট প্লাসিডসের পক্ষ থেকে বিজ্ঞান মেলায় গেলো সেন্ট স্কলাস্টিকায়। ইন্টারস্কুল সায়েন্স ফেয়ারে সেই প্রথম মাহবুবের সাথে দেখা তানিয়া আফরিনের। কিছুদিন একসাথে ঘোরাও হলো নাইন্টিজের সেই আরো সবুজ শহরে। সেন্ট প্লাসিডস স্কুলের এক বিকেলের কথা মনে পড়ে। ছেলেরা তখন বাস্কেটবল খেলছে। মাহবুব আর তানিয়া হাঁটতে হাঁটতে কবর স্থানের পেছনে। তানিয়া আস্তে চুমু খেলো একটা ওকে, একটু উঁচু হয়ে ঠোঁটে। ঘন্টা বেজে উঠলো তখনই। ওর মাথার ভেতরের কল্পনায় আর বাস্তবের গির্জার ঘন্টার প্রলম্বিত শব্দ। নিয়তির দেবতা বিপন্ন হাসলেন। মাহবুবের জীবনের গতিপথ তখন নির্ধারিত হয়ে গেলো। আর মাহবুব, প্রথম কিশোর, স্কুলের দেয়ালে চেপে আরো কয়েকটি চুমু না খেয়ে পারলো না। কিন্তু তার কয়েকদিন পর তানিয়াকে আর খুঁজে পাওয়া গেলো না। নিজেদের গ্যারেজ ঘরে বসে এলাকার রিক্সাওয়ালাদের সাথে মিটিং করতে দেখেছিলেন একবার নাজমুল- আরেকদিন শুনলেন পাহাড়তলীর রেলওয়ে শ্রমিকদের ছোটোখাটো নেতা হয়ে গেছে ছেলে। কখন যে পড়ে! অথচ কোনো ক্লাসে তো দু’বার থাকে না৷ তিনি নিজে ছিলেন দুইবার, নাজমুল আলম চৌধুরী, ক্লাস টেন। বাবার বন্ধু ওহীদুল আলম সাহেবের বয়স তখন অনেক৷ তিনি বাইরের ঘরে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, খানিক আগে বাবার সাথে দাবা খেলে বাবাকে হারিয়ে দিয়েছেন আর বাবা হেরেও আনন্দিত, কয়েকটা বিস্ময়কর চাল শেখা গেলো বলে। তাঁকে দেখে আলম সাহেব ডেকে বসালেন পাশে, পড়াশোনার কথা জিজ্ঞেস করলেন, এক ক্লাসে দুইবার শুনে একবারও হাসলেন না কিংবা কোন রকম ক্রিটিকের মধ্যে গেলেন না৷ সাথের ঝোলা ব্যাগ থেকে বের করলেন একটি বই। স্কুল কলেজে চৌত্রিশ বছর।  নিজের লেখা বই। তিনি গভীর আনন্দিত হয়েছিলেন বইটি পড়ে। খালি আশু বাবুকে চিহ্নিত করতে সমস্যা হচ্ছিলো। বইটির একটি খুবই ইন্টারেস্টিং চরিত্র আশুবাবু। নাজমুলের ছাত্র জীবন জুড়ে তিনি ভেবেছেন আশুবাবুর কথা। তারপর গ্রাজুয়েশনের সময় বাবার ব্যবসার ভার নিজের কাঁধে এসে পড়লো৷ ভাবনার সমাধান নিজে করা গেলো না৷ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও লেখককে জিজ্ঞেস করে উঠতে পারলেন না৷ তারপর ব্যবসায় ব্যস্ত হয়ে পড়লেন৷ একদিন খাবার টেবিলে হঠাৎ অনেক বছর আগের কথাটা মনে পড়তে ছেলেকে জিজ্ঞেস করলেন। ছেলে তখন বই খুলে পড়তে পড়তে খাচ্ছিলো। অল্পই খায় সে। না খেয়ে মানুষ বাঁচলে বোধহয় তাই করতো, তার সব সময় মনে হয়, কতো তাড়াতাড়ি হাতের বই শেষ করা যায়! বাবার প্রশ্ন শুনে সে খুব সহজভাবে বললো,’ বাবা, উনি সুচরিত চৌধুরীর বাবা আশুতোষ চৌধুরী, লোকসঙ্গীতের একজন দিকপাল সংগ্রাহক। ওহীদুল আলম সাহেব তাঁকে নিয়েই ঘুরে বেড়াতেন৷ আমি তোমার বইটা পড়েছি।’ বাবা হিসেবে গর্ব হয় তাঁর। কিন্তু জিজ্ঞেস না করে পারেন না- ‘মাহবুব, সুচরিত চৌধুরী কে রে?’, মাহবুব হাসে, কিছু বলে না। তিনি বোঝেন, ছেলে এখন আর মুখ খুলবে না৷ কিন্তু উত্তর একদিন পাওয়া যাবে৷ 
ছেলে একদিন আরো কয়েকজন ছেলেমেয়ে নিয়ে অফিসে গেলো। ওদের কি একটা অনুষ্ঠানের জন্য টাকা সংগ্রহ করতে। তিনি ঘেমে যাওয়া ছেলেমেয়েদের বসালেন, ওদের কোনোভাবেই লাঞ্চ করে যাওয়ার জন্য রাজি করানো গেলো না। কালেকশনের টার্গেট নাকি ঠিকঠাক পূর্ণ হবে না৷ তিনি কৌতুহলবশত টার্গেট জেনে মনে মনে বিস্মিত হয়েছিলেন, এতো অল্প টাকা! কিসের জন্য, কোন আদর্শের টানে তারা মানুষের দরজায় দরজায় ঘুরছে! পুরো টাকাটাই দিয়ে দিতে চাইলেন, নিজেরই তো ছেলেমেয়ে ওরা। টাকা আছে, দেবেন না-ই বা কেন কিন্তু ওরা নিলো না। মাহবুব কোণায় বসে মিটিমিটি হাসছিলো,  যাওয়ার আগে সে তার বাবাকে একটা প্যাকেট দিয়ে গেলো। সবাই বেরিয়ে গেলে, নাজমুল প্যাকেট খুললেন। একদিন একরাত, সুচরিত চৌধুরীর বই৷ ভেতরে কাগজের কাগজের ভাঁজ করা টুকরো। ‘বাবা, শুভ জন্মদিন। শুভ পঞ্চাশ। তোমায় ভালোবাসি, তুমি না হলে বেঁচে থাকার এই আনন্দ যন্ত্রণা প্রতি মুহূর্তে ছুঁয়ে যেতো না৷ -মাহবুব।’ সেদিন আর অফিস করেননি তিনি৷ বেরিয়ে পড়েছিলেন, ড্রাইভারকে বলেছিলেন, ইচ্ছেমতো চালাও দেখি। ঘন্টা দুই ঘুরে ইচ্ছে করলো সাবরিনার গান শুনতে। সাবরিনা তার স্ত্রী। বিয়ের আগে খুব ভালো গাইতেন৷ বিয়ের পর একের এক সন্তান পেটের ভেতর নষ্ট হচ্ছিলো। আবার পৃথিবীতে এলেও দুই আড়াই মাসের বেশি বেঁচে থাকছিলো না৷ শেষে এলো এই মাহবুব। জন্মের পর পর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিলো ছেলের। সে আমলে তিনি বিদেশ থেকে চব্বিশ ঘন্টার কম সময়ে বিশেষ ইনকিউবেটর আনালেন৷ ছেলেকে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে সেই যন্ত্র উপহার দিয়ে এসেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। সাবরিনা উলের সোয়েটার বুনছিলেন। বাসায় আর কেউ ছিলো না। রাস্তায় রাস্তায় ব্রাজিল আর্জেন্টিনার পতাকা। সবে আটানব্বই সালের বিশ্বকাপ শেষ হলো। শীত আসবে আর মাস তিনেক পর। দরজা খুলে অসময়ে স্বামীকে দেখে সাবরিনা চমকে যাননি বললে মিথ্যে বলা হবে৷ এই সময়ে তিনি কখনো ঘরে ফেরেন না। দুপুর ঘনিয়েছে মাত্র, বিকেল আসন্ন। মেয়ে পড়ে অপর্ণা চর‍ণে। ফেরেনি এখনো। নাজমুল ঘরে ঢুকেই সাবরিনাকে জড়িয়ে ধরলেন অনেকদিন পর। ‘আরে, ছাড়ো ছাড়ো’, বিস্ময় মিশ্রিত গলা স্ত্রীর। ‘রিনা, আজ অনেকদিন পর মনে হলো আমরা কতদিন পরস্পরের চোখের দিকে তাকাইনি৷’ স্ত্রী  থমকে গেলেন একটু! দুজনে সোফায় বসে কিছু সময় চুপচাপ কেটে গেলো। সোফার একপাশে অর্ধসমাপ্ত উলের সোয়েটার। ‘তোমার কি হয়েছে বলো তো?’ স্ত্রীর কণ্ঠে স্পষ্ট উদ্বেগ। ‘শরীর খারাপ তোমার?’ হাসি পেলো নাজমুলের।  ‘আমি ভুলেই গিয়েছিলাম বুঝলে! মাহবুব মনে করিয়ে দিলো, আমার আজ পঞ্চাশ পূর্ণ হয়েছে।’ রিনার খারাপ লাগলো, কেমন করে ভুলে গেলেন তিনি, গতবছরও তো মনে ছিলো। ‘ছিঃ ছিঃ আমি কেমন করে ভুলে গেলাম! এতো বড়ো একটা দিন আমাদের তো সেলিব্রেট করতে হবে।’ ‘শান্ত হও রিনা’-প্রশান্ত স্বরে বললেন নাজমুল। ‘অনেকদিন তোমার গান শুনি না। তুমি একটা গান শোনালেই আমার দিনের দ্বিতীয় সেরা উপহার আমি পেয়ে যাবো।’ ‘দ্বিতীয় সেরা?’ এখনো চোখ নাচে রিনার। এবার ছেলের উপহারের কথা আস্তে আস্তে বললেন। দুপুরে ড্রাইভারের সাথে লাঞ্চ করেছেন৷ স্যারের এই নিমন্ত্রণে রীতিমত হতচকিত দশা তার। নিজের টিফিন বাক্সের খাবার আরেকজনকে দিয়ে দিয়েছিলো সে। মানুষের সদিচ্ছা থাকলে দুনিয়ার কোনো খাবার নষ্ট হয় না। মেয়ে আসলো স্কুল থেকে- একটা ফুলের তোড়া হাতে। ‘বাবা, শুভ জন্মদিন,’- লেখা কার্ড তোড়ার গায়ে সাঁটা। নাজমুলের নিজেকে কৃতার্থ লাগতে থাকে৷ তাঁর নিজের বিপুল সম্পত্তিকে সন্তানদের স্মরন ক্ষমতার চেয়ে তুচ্ছ লাগে। সাবরিনাকে গান ধরতে হয় তারপর। তিনজন মানুষ পরস্পরের ভালোবাসায় দ্রবীভূত হয়ে থাকে খানিক সময়। 
মাহবুব স্নান ঘর থেকে বেরিয়ে ভাবে, ভাগ্যিস ইউনিভার্সিটির শেষ দিকে এক আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ডিবেট কম্পিটিশনে দেখা হয়ে গিয়েছিলো তানিয়ার সাথে। এক কফিশপে বসে অনেক কথা হলো। তখন সে আট মাসের এক মেয়ের মা। সদ্য ডিভোর্স হয়েছে তার। বাচ্চাটা নষ্ট করতে ইচ্ছে করেনি বলে পৃথিবীতে এনেছে তাকে। সে তানিয়ার হাত ধরে তিন বছর সময় প্রার্থনা করেছিলো। এর মধ্যে একদিন বাবা চলে গেলেন। দূরের জেলাশহরে গিয়েছিলেন একটা কাজে। হোটেলের ঘরে, ঘুমের মধ্যে। মাহবুবের হাতে সবকিছুর দায়িত্ব এসে পড়লো। তানিয়াকে নির্ধারিত সময়ের আগেই ঘরে নিয়ে এলো। কী এক কারণে মা তাকে পছন্দ করতেন না। সেইকারণেই ঢাকাতেই আলাদা বাসা নিতে হলো। মেয়ে আস্তে আস্তে বড় হচ্ছিলো। খুব ভেতরের একটা কষ্ট মাহবুবের, মেয়ে তাকে বাবা ডাকে না৷ 
এখন, বসে বসে, মাহবুব মেয়েকে দেখে, প্রতিদিন দেখেও দেখা শেষ হয় না। কেউ মেনে না নিলেও মাহবুব জানে, এই মেয়ে তার, আত্মজা, তাকে সে ধারণ করে।  

 

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>