| 19 এপ্রিল 2024
Categories
গীতরঙ্গ

মহামারী সংখ্যা: বাংলার মহামারীর সেকাল ও একাল

আনুমানিক পঠনকাল: 5 মিনিট

কানু হালদার

 

বাংলায় মহামারী বা অতিমারীর ঘটনা নতুন নয়। ব্রিটিশ আমলে ১৮১৭ থেকে ১৮২৪ সালের মধ্যে কলকাতা সন্নিহিত নিম্ন গাঙ্গেয় অঞ্চল থেকে ছড়িয়ে পড়ে ‘এশিয়াটিক কলেরা’। সমগ্র ভারতে প্রায় ২০ লক্ষ লোক মারা যায়। কিছু মহামারী বিশেষজ্ঞ এবং ঐতিহাসিকরা মনে করেন কুম্ভমেলার পুণ্যার্থীদের থেকে সারা বিশ্বে এই মহামারী ছড়িয়ে পড়েছিল। বিশেষ করে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, মধ্য প্রাচ্য, পূর্ব আফ্রিকা, মেডিটারেনিয়ান সমুদ্র সন্নিহিত অঞ্চলে। ১৮২৬ থেকে ১৮৩৭ সালের মধ্যে এর বিস্তার ঘটে চিন, জাপান, পশ্চিম এশিয়া, ইউরোপ, এবং আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে। ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত সর্বমোট সাত বার বিশ্বে অতিমারী কলেরা তাণ্ডব চালায়। ১৯৪৩ সালে কলেরাতে মারা যায় ২ লক্ষ ১৬ হাজার ৪২৮ জন মানুষ।

এরপর ১৮৯৬ সালে ভারতে প্লেগের সংক্রামণ শুরু হলেও বাংলায় ১৮৯৮ এর দিকে প্লেগ ছড়িয়ে পড়ে। কলকাতা, হুগলী, বর্ধমান, মেদিনীপুর, ২৪ পরগণা, ভয়ঙ্কর ভাবে সংক্রামিত হয়। কলকাতার বেনিয়াপুকুর, বড়বাজার, কুমোরটুলি, শ্যামপুকুরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ৩০ শে এপ্রিল প্রশাসন জানায় প্লেগ মহামারীর আকার ধারণ করেছে। তৎকালীন প্লেগ স্যানিটাইজেসন কমিশনার ক্লেমাসো লিখেছেন – প্লেগ গ্রামবাংলার খুব বেশি ক্ষতি করেনি। গুদামজাত পণ্য থেকে ইঁদুরের মাধ্যমে রোগ ছড়িয়ে পড়ে শহরাঞ্চলে। সংক্রামিত জনসংখ্যার নব্বই শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়।

১৯ শতকের অস্থায়ী প্লেগ হাসপাতাল।

১৯ শতকের অস্থায়ী প্লেগ হাসপাতাল।

 ১৯১৮ সালে স্প্যানিশ ফ্লু ভারতে ‘বোম্বে ফিভার’নামে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগের সংক্রমণ বোম্বেতে প্রথম পরিলক্ষিত হয় বলে এরূপ নামকরণ।মনে করা হয় ইউরোপ থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সৈনিকরা জাহাজে ফেরার পর তাদের মাধ্যমেই বন্দর সন্নিহিত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। ২০০০সালে ‘ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল’ এর এক প্রবন্ধে প্রায় ১২ বিলিয়ন লোকের মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হয়। যা ছিল তৎকালীন সমগ্র জনসংখ্যার নিরিখে ৫ শতাংশ।

ব্রিটিশ শাসনে ম্যালেরিয়াতে ভারতে মৃত্যুর হার লাগাম ছাড়া ছিল। ১৯২১ সালে ৭ লক্ষ ৩৭ হাজার ২২৩ জন। ১৯২৯ এ ৩ লক্ষ ৩৫ হাজার ৪১৪ জন। ১৯৩৮ সালে ৪ লক্ষ ১৬ হাজার ৫২১ জন। ১৯৪৪ সালে ৭ লক্ষ ৬৩ হাজার ২২০ জন। ১৯৫৫ সালে আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের আহ্বানে চিকিৎসক কার্ত্তিক বসুর নেতৃত্বে ম্যালেরিয়ার ওষুধ তৈরির কাজ শুরু হয়।

১৯৭৪ সালে জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ‘স্মল পক্সে’ মার যায় প্রায় ১৫০০ জন। মূলত বিহার, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের। ভারত সরকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সংক্রামিতের সংখ্যা জানায় ৬১,৪৮২ জন। এই রোগে সমগ্র পৃথিবীর মধ্যে ভারতে সবচেয়ে বেশি সংক্রামিত হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের জানুয়ারি মাসে এই রোগকে নির্মূল করতে‘টার্গেট জিরো’ মিশন চালু করে ভারত সরকার।

১৯৯৪ সালের প্লেগ পূর্বের মহামারীর মত ব্যাপক আকার ধারণ না করলেও দিল্লি, মহারাষ্ট্র,গুজরাট, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশে ২৬ শেআগস্ট থেকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে ৬৯৩ জন সংক্রামিত হয়েছিল এবং ৫৬ জন মারা গিয়েছিল। এ মহামারীর প্রেক্ষিতে ভুলিমিরি রামলিঙ্গস্বামীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠিত হয়।

ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনেই অনাহার ও মহামারীর প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যায়।তার কারণ হিসাবে জাতীয়তাবাদী ঐতিহাসিকেরা ব্রিটিশ শাসনকেই দায়ী করে থাকেন। সাবলটার্ন ঐতিহাসিক ডেভিড আর্নল্ড Touching The Body: Perspective on The Indian Plague. 1896-1900 (1987) এবং Smallpox and Colonial Medicinein Nineteenth-Century India( 1988) প্রবন্ধে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসকেরা ভারতবর্ষের মহামারীর নিয়ন্ত্রণে কি ভূমিকা নিয়েছিল ও তাদের প্রশাসন, জনস্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক সঙ্গতি শিক্ষা এবং রাষ্ট্র পরিচালনার দক্ষতার মতো বিষয়গুলি আলোচিত হয়েছে। অপর প্রখ্যাত ঐতিহাসিক দীপেশ চক্রবর্তীর প্রবন্ধ Community, State and The Body: Epidemics and Popular Culture in Colonial India (1999) প্রবন্ধেও মহামারী রোধে সরকারের ভূমিকা সাধারণ মানুষদের অবস্থান বিশ্লেষিত হয়েছে।

ঔপনিবেশিক সরকারের মহামারী রোধের সদিচ্ছা এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। আর এ কারণেই তাদের ব্যর্থতা। কারণ তাদের উদ্দেশ্য ব্যবসা করে মুনাফা অর্জন এবং এ উদ্দেশ্যে পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা ও ক্ষমতাশালী অনুগত্য শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষা করা। যদিও এরাই ভারতে আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্ম দিয়েছিল। উপমহাদেশের মানুষরা কখনই জনস্বাস্থ্য বিষয়ে আধুনিক ধারণা গ্রহন করতে প্রস্তুত ছিলেন না। ১৮৬০ সালে পাশ্চাত্যের দেশগুলি জীবাণু নিয়ে তাদের গবেষণা প্রকাশ করতে থাকলে ব্রিটিশরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাকে অগ্রাধিকার দিতে শুরু করে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অভ্যাস, দূষণ, সামাজিক দূরত্ব প্রভৃতি বিষয়গুলি সম্বন্ধে সতর্ক হয়ে ওঠে। সরকারি উচ্চ পদাধিকারীরা সাধারণ জনগনের সাথে দূরত্ব তৈরি করে পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি মাথায় রেখে। মেলা বা জনসমাগমে এ উদ্দেশ্যে বাঁশের বেড়া, শৌচালয়ের ব্যবস্থা করা হয়। যা এখনও প্রচলিত আছে। বাংলায় ১৮৬৭ সালে ইউরোপীয় চিকিৎসার ক্লিনিক ছিল ৬১ টি। ১৯০০ সালের মধ্যে এ সংখ্যা ৫০০ তে গিয়ে দাঁড়ায়।ধীরে ধীরে পরিষ্কার পরিছন্নতার বিষয়টি মানুষ গ্রহন করতে শুরু করে। ১৮৯১ সালে হার্ডসন্স সাবানের বিজ্ঞাপন এবং ব্যবহারের উপকারিতা সম্পর্কে বোঝান হয়। জীবাণু ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া জাতি, ধর্ম, বর্ণ, উচু, নীচু ধর্মীয় পরিচয়ের সাথে কোনরূপ সম্পর্কিত নয়। এক মাত্র বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতেই স্বাস্থ্য বিধি মেনে চললেই তার নির্মূল সম্ভব। বর্তমান অতিমারি করোনা রোধের ক্ষেত্রেও পরিছন্নতার বিষয়টি সামনে এসেছে।

ব্রিটিশদের আগমনের পূর্বে মড়ক বা রোগ ব্যাধির বিষয়টিকে রাষ্ট্রের ক্ষমতা এবং ধর্মীয় দৃষ্টি ভঙ্গিতে দেখা হত। কৌটিল্য তাঁর অর্থশাস্ত্রে পাঁচটি দৈব দুর্বিপাকের কথা বলেছেন- অগ্নিকান্ড, বন্যা, ব্যাধি, দুর্ভিক্ষ ও মড়ককে রাজা ও রাজ্য বিনাশকারী হিসাবে বর্ণনা করেছেন। দীপেশ চক্রবর্তীর মতে এই ভাবনার আনুষাঙ্গিকভাবে উনিশ শতকে মহামারী উপলক্ষ্যে জনমানসে যা প্রতিফলিত হয়েছে তাকে ব্রিটিশ শাসনের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমালোচনাই বলা চলে। এভাবেই গুজব লোকাচার লোকবিশ্বাস এর মাধ্যমে মহামারী এবং জনস্বাস্থ্যর ইতিহাস লেখা হয়ে থাকে। ভারতবর্ষীয় প্রেক্ষিতে জনগণের বিশেষ করে ধর্ম এবং সামাজিক অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ঔপনিবেশিক কালেও এ সমস্যাটি ছিল। যা বর্তমান অতিমারি কোভিদ-১৯ মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলছে। এক্ষেত্রে হিন্দু মুসলিম কেউই পিছিয়ে নেই। ভয়ংকর ভাবে গুজব ছড়িয়ে চলছে। মুসলিমদের করোনা হলে কোরান মিথ্যা হয়ে যাবে। মসজিদে নামাজের জন্য জমায়েত করলে করোনা সংক্রামিত হবে না। সুতরাং লকডাউনের নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে কোন এক বিশেষ মুসলিম মতাদর্শের ব্যক্তিরা জমায়েত করতে ভীত হচ্ছে না। পাশাপাশি হিন্দুদের মধ্যে করোনার প্রতিষেধক হিসাবে গরুর মূত্র পান। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পানের মাত্রা এতটাই বেশি ছিল যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হয়েছে। তৎসহ জমায়েত করে রাম লালার মুর্তি প্রতিস্থাপন, শিবরাত্রি উপলক্ষে মেলা, বাদ নেই কোন কিছুই। এর সাথে সাথে আরেকটি বিষয় তাৎপর্যপূর্ণ তাহল সমাজের উচ্চস্তরের বিশেষ করে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের দায়িত্ব জ্ঞানহীন মন্তব্য বর্তমান অতিমারি মোকাবিলায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।

মূলত এসব গুজবে প্রভাবিত হচ্ছে সমাজের নীচু স্তরের জনগণ যারা অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া এবং নিম্নবর্গীয় সমাজের মানুষ। তারা যেহেতু নিজেদের মাহাত্ম্য বুঝতে পারে না তাই তাদের আচার ব্যবহার ও ধর্ম বিশ্বাসের মধ্যদিয়ে চৈতন্যের প্রকাশ ঘটে। আধ্যাত্মিক বা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নিজেদের অবস্থানকে যুক্তিগ্রাহ্য করে তোলে। ফলত বর্তমান করোনা ভাইরাস তাদের কাছে ভিন্ন মাত্রায় আত্মপ্রকাশ করেছে। ঈশ্বরের অভিশাপ বা আল্লার গজব হিসাবে। সাবলটার্ন ঐতিহাসিকেরা দেখিয়েছেন- ধর্ম বিশ্বাস এবং আচারে গ্রাম বাংলায় গোষ্ঠীগত মনোভাবের যে পরিচয় প্রকাশ পেয়েছিল তা সরকারের মহামারী মোকাবিলা বা সংক্রমন প্রতিরোধে নেতিবাচক ভূমিকা রেখেছিল কারণ লোকবিশ্বাস অলৌকিকতা ও নানান সংস্কার নিম্নবর্গকে গুজবে বিশ্বাসী করে তোলে। তা সম্পূর্ণ কায়েমি স্বার্থ রক্ষার্থে। ডেভিড আর্নল্ড দেখিয়েছেন যে ব্রিটিশ সরকারের বসন্ত টিকা দান কর্মসূচিকে নিয়ে গুজবের ফলে কীভাবে এই কার্যক্রম ব্যর্থ হয়। জাত ভাঙানো, ধর্মনাশ, বন্ধ্যাত্ব, নতুন কারখানায় কুলি শ্রমিক বানানো, মৃত্যু নানান গুজব। ১৮৯৬ সালের বোম্বে প্লেগের সময় জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে ব্রিটিশ সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহন করে। একআক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করতে চাইলে ভারতীয়দের সাথে সরকারের দাঙ্গা বেঁধে যায়। তখন হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে খুন করে ফেলা হচ্ছে এ ধরনেরও গুজব ছড়িয়ে পরেযার ফলে হাসপাতাল ও আক্রান্ত হয়। ১৮৯৬ সালে ব্রিটিশ সরকার টিকা দিতে শুরু করলে তা নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়। বলা হয় টিকা নিলে মৃত্যু ঘটবে। এমনকি কোয়ারেন্টাইন এর ব্যাপারটাকেও মানতে চাইনি সাধারণ জনগণ। ১৮৯৭ সালে প্লেগ কমিশনার ডক্ল সি র‍্যান্দ খুন হয়ে যান।

হেস্টিংসের সেনাবাহিনী বুন্দেলখণ্ডে কলেরা দ্বারা আক্রান্ত হলে গুজব ছড়ানো হয় যে জনৈক ব্রাহ্মণের নির্দেশ উপেক্ষা করে রাজা হরদুলকনের স্মৃতিময় স্থানে গো মাংস খাওয়ার ফলে তারা কলেরা’তে আক্রান্ত হয়। মানুষ মহামারিতে মরতে চেয়েছিল এমনটি নয়!মানুষ চিকিৎসাকেন্দ্রে যাওয়ার পরিবর্তে শরণাপন্ন হয়েছে শীতলা দেবী ওলা বিবির থানে। সংক্রমণ ছড়িয়ে গেছে ব্যক্তি থেকে গোষ্ঠীতে, গোষ্ঠী থেকেসমাজে,সমাজ থেকে সর্বত্র।

রাষ্ট্রের প্রতি অবিশ্বাস এবং জনস্বাস্থ্য বিধির উপরে ধর্মীয় সংকীর্ণ মতাদর্শের প্রাধান্য মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছিল বাংলাকে। সাবলটার্ন ঐতিহাসিকেরা ব্রিটিশদের আধুনিক চিকিৎসা এবং সংক্রামক ব্যাধির ক্ষেত্রে তাদের পরিকল্পনাকে মান্যতা দিয়েছিলেন। ভারতবাসী গ্রহন করতে পারেনি তাদের রাজনৈতিক আদর্শ ধর্মীয় চেতনার ঊর্ধ্বে উঠে। যদিও এক্ষেত্রে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সমর্থন পেয়েছিলেন তারা।

 মহামারী বা সংক্রামিত ব্যাধি কখনই সমাজের নিম্নস্তরের কম অর্থনৈতিক ক্ষমতা সম্পন্ন লোক বা গোঁড়া অন্ধ বিশ্বাসী মানুষদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। পৌঁছে গিয়েছে সমাজের প্রতিটি স্তরে, তা সে সেকালেই হোক বা একালে। সময়ের অগ্রগতির সাথে সাথে প্রশাসন, চিকিৎসা, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, রাষ্ট্র পরিচালনার পদ্ধতি জন শিক্ষার প্রসার ঘটেছে তা সত্ত্বেও খামতি রয়ে যাচ্ছে কোভিদ-১৯ মোকাবিলায়। তার প্রথম কারণ দারিদ্রতা,দ্বিতীয় কারণ গোঁড়ামি ও কুসংস্কার। তৃতীয় কারণ রাষ্ট্রের প্রতি অবিশ্বাস।

যদিও এই তিনটি সমস্যার রাতারাতি পরিবর্তন অসম্ভব। তাহলে কি এই সংক্রমণ থেকে আমরা রেহাই পাব না?আমাদের বাচাঁতে পারে এক মাত্র বিজ্ঞান। দ্বিতীয় কোন রাস্তা নেই কিন্তু তার জন্য জনসাধারণকেই বিশ্বাস করতে হবে বিজ্ঞানসম্মত স্বাস্থ্য বিধির উপর। গোঁড়ামি বর্জন করতে হবেএবং প্রশাসনকে সর্বত ভাবে সহযোগীতা করতে হবে।

 আশা রাখি কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলি সদিচ্ছা ও মানবিকতার সাথে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে ভারতবর্ষ থেকে মারণ করোনাকে বিদায় জানাতে বাধ্য করবে।

 

 

(লেখক পরিচিতি: লেখক একজন দলিত রাজনৈতিক আন্দোলন বিষয়ক গবেষক। বাংলার মতুয়াদের রাজনৈতিক আন্দোলন তাঁর কাজের বিষয়। বর্তমানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত।)

 

 

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত