| 29 মার্চ 2024
Categories
ইতিহাস

ইতিহাস: বিশ্বযুদ্ধের ৬৬টি জানা অজানা তথ্য

আনুমানিক পঠনকাল: 8 মিনিট

১.প্রথম বিশ্ব যুদ্ধে ব্রিটিশ সৈন্যদের শরীর গরম রাখতে কাপড়ের পোশাকের বদলে কাগজের পোশাক দেওয়া হয়েছিলো।

২.প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অসীম বীরত্বের জন্য ১৫৩ জন ভারতীয় ও পাকিস্তানি ভিক্টোরিয়া ক্রস পুরষ্কার জেতেন।যাদের মধ্যে অমর হয়ে আছেন তৎকালীন ভারত এবং বর্তমান পাকিস্তানের সুবেদার খুদাদাদ খান। তিনিই প্রথম এশিয়ান এবং মুসলিম যিনি এই সম্মান লাভ করেন।

৩.প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ই বর্তমান স্নাইপার দের ক্যামোফ্লেজ আবিষ্কার করা হয়।অনেক সময় আর্টিস্টরা স্নাইপার বা স্কাউটদের জন্য নো ম্যানস ল্যান্ডে নকল গাছ কিংবা নকল মৃত ঘোড়া বানিয়ে দিত।যার ফলে সৈনিকরা সেই মরা গাছে বসে স্নাইপিং করতে পারতো কিংবা শত্রুদের গতিবিধির ওপর নজর রাখতে পারতো।ফরাসি আর্টিস্টরা এই জিনিস আবিষ্কার করে।মাঝে মাঝে তো ওগুলো এত বাস্তব মনে হতো যে যুদ্ধ শেষ হবার পরেও তারা কিছুই বুঝতে পারতো না।জার্মানরা ও ওই পদ্ধতি দ্রুত রপ্ত করে নেয়।

৪. Battle of Somme,Battle of Ypres এবং Battle of verdun বিশ্ব যুদ্ধের সব থেকে ক্ষয়ক্ষতি সম্পন্ন যুদ্ধ।শুধু মাত্র সম এর যুদ্ধেই ১০ লাখ মানুষ মারা যায় এবং আহত হয়।

৫. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সর্ব প্রথম কানাডিয়ানরা জার্মানদের ক্লোরিন গ্যাস থেকে বাঁচতে প্রস্রাব দিয়ে রুমাল ভিজিয়ে গ্যাস মাস্ক বানায়।Sounds Funny। কিন্তু এটা জীবন মরণের প্রশ্ন ছিল।

৬. ব্রিটিশরা সর্ব প্রথম যুদ্ধ ট্যাঙ্ক বানায়।অদ্ভুত ব্যাপার হলো।তখন বড় ট্যাঙ্ক গুলোকে ছেলে আর ছোটো ট্যাংক গুলোকে মেয়ে ধরা হতো।

৭. ১৯১৪ সালে জার্মানি আর ব্রিটেনের অনেক সৈন্যরা একসাথে বড়দিন পালন করে। সিগারেটে আর বিভিন্ন উপহার বিনিময় ও হয় তাদের মধ্যে।শুরুটা কিন্তু করে জার্মানরা।

৮. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে শত্রু পক্ষের রেজিমেন্ট ব্যানার ছিল সংগ্রহ করার মত এক অনন্য বস্তু। শত্রুপক্ষের ব্যানার কব্জা করা মানেই বিশাল বড় ব্যাপার।তাই কোনো রেজিমেন্ট হেরে গেলে তারা সাথে সাথে ব্যানার লুকিয়ে ফেলত।

৯.ফ্রান্স এবং মিত্র পক্ষের জন্য প্রায় ৯ লক্ষ মুসলমান যুদ্ধ করে।যার ৭২০০০ মৃত্যু বরণ করেছিলেন ফ্রান্স এর জন্যে।মাত্রই ৫৯৬ জনেরই কবর আছে লরেতে দে ফ্রান্স এ।যেখানে প্রথম বিশ্বধুদ্ধে নিহত ৪০০০০ হাজার সেনাকে কবর দেওয়া হয়।

(ফ্রান্সে মুসলিম সেনাদের কবর)

১০. অটোমানরা মরণপণ যুদ্ধ করে তাদের মাতৃভূমি তুর্কি রক্ষা করতে।তাদের ২৫ লাখের ভেতর ১৫ লাখ সেনা মারা যায় বা যুদ্ধাহত হয়।পৃথিবির অনেক জায়গা থেকে মুসলমানরা যোগ দেন অত্তমানদের জন্য লড়াই করতে।

১১.প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ১৯১৫ সালে কাইজার উইলহেলম মুসলমানদের জার্মানির দলে টানার জন্য wünsdorf মসজিদ তৈরি করেন।ওটাই জার্মানির প্রথম মসজিদ।

১২.প্রথম বিশ্ব যুদ্ধে রাশিয়া,ফ্রান্স আর ব্রিটেনের অনেক শিশু কিশোর নিজেদের বয়স লুকিয়ে যুদ্ধে যোগ দেয়।যদিও একজন সৈনিকের বয়স সর্বনিন্ম ১৮ ছিল তবুও অনেক ১৫-১৬ এমনকি ১৩-১৪ বছরের শিশুরাও যুদ্ধে যোগ দিয়েছিল।যারা মূলত উত্তেজনা এবং অ্যাডভেঞ্চার এর গন্ধে গিয়ে ছিল ফ্রন্টগুলোট।তবে সিডনি লুইস বিখ্যাত হয়ে থাকবেন সর্বদা কেননা তিনি সর্ব কনিষ্ঠ সৈনিক ছিলেন।যুদ্ধকালীন সময়ে তার বয়স ছিল ১২ বছর মাত্র।প্রায় ১৯০০০ শিশু সেনা বা বয় সোলজার মারা গিয়ে ছিল।

১৩.এমনও হতো যে ফ্রান্সে হাওয়া গোলাগুলির আওয়াজ ব্রিটেনে শোনা যেত।

১৪.প্রথম বিশ্ব যুদ্ধে ডগফাইট বা বায়ু যুদ্ধে সব থেকে বেশি কিলের রেকর্ড ছিল জার্মানির রেড ব্যারন/দার ফ্রিহের মানফ্রেড ভন রিচট্ হফেন এর।৮০ টি কিল ছিল তার খাতায়। তার দলের নাম ছিল জস্টা ১১।তার দলে ৩২ জন সদস্য ছিল যাদের মধ্যে শুধু একা লোথার ভন রিচ্টফেন বেঁচে ছিলেন যুদ্ধ শেষে।যিনি ছিলেন তার চাচাতো ভাই।১৯১৫-১৯১৮ এর এপ্রিল পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করেন।তার মৃত্যু হয় ১৯১৮ এর ১৮ এপ্রিল।এরপর ও কেউ তার রেকর্ড ভাঙতে পারেনি।

১৫.

ছবিটা বৃটিশদের বিখ্যাত এক প্রোপাগান্ডা পোস্টার।ছবির ব্যাক্তিটি লর্ড কিচেনারের।ছবিটা মোনালিসার মত।যেদিকে তাকাবেন চোখ জোড়া আপনাকে অনুসরণ করবে।


১৬.প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানরা এক রাশিয়ান দুর্গ আক্রমণ করে ক্লোরিন গ্যাস দিয়ে।তিন দিন লাগে গ্যাস পরিষ্কার হতে। তারপর যখন জার্মানরা দুর্গে ঢুকতে যায় হঠাৎ করেই মুখে রক্তে রাঙা রুমাল পেঁচানো ৫০-৬০ জন রাশিয়ান সেনা বেরিয়ে আসে।জার্মান সেনারা ওদের ভুত ভেবে পালিয়ে যায়।

১৭.জার্মানরা মেক্সিকান দের কাছে অনুরোধ করে গোপন বার্তা পাঠায় যাতে তারা আমেরিকা আক্রমণ করে।কিন্তু সেই বার্তা ব্রিটিশ দের কাছে পৌঁছে যায়।

১৮.যুদ্ধ ক্ষেত্রে ওষুধ আর গুরুত্বপূর্ণ চিঠি বহন করত কুকুরেরা।আর পায়েরা প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো চিঠি আদান প্রদানের জন্য।জার্মানরা ওই পায়রাদের ধরতে আবার বাজ পাখি পুষত।

১৯.প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বেশির ভাগ সৈনিক মারা যায় রোগে।

২০.আমেরিকানরা তাদের সৈন্যদের কনডম প্রদান না করায় প্রায় ৪০০ সৈনিক সিফিলিস এ মারা যায়।

২১.প্রথম বিশ্বযুদ্ধে শেল শক এবং ট্রেঞ্চ ফুট ছিল সবচে কমন রোগ।ট্রেঞ্চ ফুট হতো কারণ সৈন্যরা ভেজা পায়েই অনেকক্ষন যুদ্ধ করতো।যার ফলে তাদের পায়ে পচন ধরত।আর শেল শক হতো আর্টিলারি বোম্বিং এর জন্য।

২২.প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কিন্তু চলছিল সার্বিয়া এবং অস্ট্রো- হাঙ্গেরি সাম্রাজ্যের সাথে। জার্মানি, রাশিয়া কিংবা আর যতগুলো দেশ আছে তার সবই ছিল ওই দুই দেশের মিত্র কিংবা শত্রু পক্ষ।

২৩.ইতিহাসে জার্মানরাই প্রথম স্পেশাল ফোর্স তৈরি করে।যার নাম ছিল stromtrüppen। এদের কাজ ছিল ট্রেঞ্চ অ্যাসল্ট বা ট্রেঞ্চ এ হামলা করা।

২৪.জার্মানরা সর্বপ্রথম ফ্লেমথ্রোয়ার তৈরি করে।যা দিয়ে আগুন ছুড়লে প্রায় ১৫০ ফুট সামনে থাকা জিনিস পর্যন্ত ভস্মিভূত করতে পারতো।

২৫.অনেকে মনে করে ট্রেঞ্চ বুঝি লম্বা এক সরল রৈখিক পরিখা।কিন্তু আসলে ট্রেঞ্চ থাকতো আঁকা বাকা।যাতে শত্রু পক্ষ ট্রেঞ্চ এ নেমেই সবাইকে এক লাইনে গুলি করে মারতে না পারে।

২৬.ইউরোপের সব চেয়ে বড়ো ট্রেঞ্চ ছিল অষ্ট্র হাঙ্গেরির সীমানায় রাশিয়ার সাথে।

২৭.কখনো কখনো ট্রেঞ্চ গুলোর মধ্যে এত কম দূরত্ব থাকতো যে তা প্রায় ৫০-৩০ মিটার এর মত হতো।সেই সময় হতো কি রাতে যুদ্ধ বিরতির সময় দুই দল একে অপরকে গালাগালি করা শুরু করতো।রাতভর চলতো মাঝে মাঝে।যে কত বাজে গালি দিতে পারে তার কদর তত বেশি।

২৮.প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পুরুষদের বীর্য দিয়ে চিঠি লেখার ধুম পরে যায়।কারন বীর্য দিয়ে লেখা চিঠির অক্ষর গুলো অদৃশ্য মনে হতো।ওই জিনিস আবিষ্কার করেন এক ব্রিটিশ অফিসার।

২৯.প্রথম বিশ্বযুদ্ধে শত্রু পক্ষের ট্রেঞ্চ বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া খুব কার্যকরী একটি পদক্ষেপ ছিল।কিন্তু কাজটা অনেক কষ্ট সাধ্য ছিল।মাটির নিচে সুরঙ্গ খুড়ে শত্রু পক্ষের ট্রেঞ্চ এর নিচে যেতে হতো তারপর ডিনামাইট বিছিয়ে দিতে হতো ট্রেঞ্চ এর নিচে। এমনও হতো যে,দুই পক্ষই সুরঙ্গ খুড়ে একই দিন ডিনামাইট ফাটালো।কিংবা সুরঙ্গ খুড়তে গিয়ে দুই পক্ষেরই মোলাকাত হতো।

 

 ২য় বিশ্বযুদ্ধের কিছু জানা অজানা তথ্য

১.হিটলার এর নাৎসি বাহিনীর পতাকাকে বলা হতো “ব্লত ফেহেন” বা Blut Fehen।ওই পতাকা তৈরির পেছনে ইতিহাস আছে।একবার নাৎসি পার্টির কিছু কর্মীকে গুলি করে মারা হয়।হিটলার প্রেসিডেন্ট হবার আগে।তো ওই কর্মীদের গুলি করা হয় এক মিছিলের সময়।সেই কর্মীদের হাতে থাকা একটা পতাকা ওই কর্মীদের রক্তে লাল হয়ে যায়।হিটলার ওই পতাকা সযত্নে রেখে দেন ওই পতাকা তার অফিসে শোভা পেত।তিনি কর্মীদের ত্যাগ স্মরণীয় করে রাখতে চাইছিলেন।যার জন্য বড় বড় অনুষ্ঠানে ওই পতাকা বহন করে নেওয়া হতো।আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে।পতাকাটি যুদ্ধের শেষের দিকে লুকিয়ে ফেলা হয়।এখনও কেউ খুঁজে পায়নি ওই পতাকা।কেউ না।

২.হিটলারের সৎ ভাই এর ছেলে আমেরিকান নেভিতে ছিলেন ২য় বিশ্বযুদ্ধে।তার বংশধররা এখনও থাকেন লং আইল্যান্ড এ।এমনকি লুফট ওয়্যাফে এর প্রধান হেরমান গোয়েরিং এর আপন ভাতিজা ছিলেন আমেরিকান এয়ার ফোর্সে।তারা উভয়ই আমেরিকায় জন্মায়।

৩.স্টালিন গ্রাদের যুদ্ধে জার্মানরা হেরে যায় শীতের কারনে।হিটলারকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল তিনি তার সৈন্যদের জন্য কোনটি পাঠাবেন, গোলা বারুদ,খাবার না শীতের জামা। জী হা,উনি গোলা বারুদ বেছে নেন।

৪.জার্মানরা পোলন্ড দখল করার পর ২২০০০ হাজার লোকের এক গণকবর আবিষ্কার করেন।জার্মানরা এই গণহত্যা দেখে অবাক হয়। কারন তারা এটা করেনি।তারা মিত্র পক্ষকে এই বিষয়ে অবহিত করলে ও তারা জার্মানদের দোষ দেয়।যুদ্ধের পরে রেড আর্মি এক জার্মান অফিসারকে অত্যাচার করে এটা স্বীকার করায় যে তারাই গণহত্যার জন্য দায়ী।কিন্তু আসলে দায়ী ছিল সোভিয়েত কর্তৃপক্ষ।

৫.জার্মানিতে শুধু শুদ্ধ আর্য রক্তের শিশু তৈরির জন্যে এক বুদ্ধি করা হয়েছিল।সেখানে নারী ও পুরুষদের কাজ ছিল শুধু প্রজনন।একে নাৎসি বেবি ফ্যাক্টরি বলা হয়।

৬.সবাই ভাবে,আরে জার্মনরা তো সেই লেভেলের মানুষ!!! কত বড়ো ট্যাঙ্ক আর অর্মড ভেহিকেল তারা বানায়।কিন্তু আসলে যুদ্ধের প্রথম দিকে সব থেকে কম আধুনিক অস্ত্র ছিল জার্মানির কাছে।ফ্রান্স ক্যাম্পেইন এ তাদের সৈন্যরা ঘোড়া ব্যাবহার করছিল।এত ট্যাঙ্ক আর আর্মড ভেহিকেল বানানো হয় সব রাশিয়া,ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের থেকে জব্দ করা ট্যাঙ্ক থেকে।

৭.জার্মানরা গণহত্যা করলেও কিন্তু ধর্ষনের রেকর্ড তাদের ভালো না।রাশিয়ানরা নারীদের যুদ্ধে নিয়ে আসে।অনেক নারীই জার্মানদের হতে বন্দী হতো।কিন্তু জার্মানরা তাদের সাথে ভদ্র আচরণ করতো।যেখানে রাশিয়ান ও মিত্র পক্ষ প্রায় ২৯ লাখ ধর্ষনের জন্য দায়ী।

৮. ১ জন জার্মান সেনা প্রায় সব দিক দিয়েই ১০ জন রাশিয়ান সেনা এবং ৪ জন আমেরিকান সেনার সমান ছিল।

৯.২য় বিশ্বযুদ্ধেও শ্রেষ্ঠ পাইলট ছিল একজন জার্মান।প্রায় ৩০০ এর মত তার কিল রেকর্ড।তার নাম এরিখ হার্টমান।

১০.জাপান ২য় বিশ্বযুদ্ধের আগে চিনে প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ হত্যা করে।আর ধর্ষনের কেস নাই বললাম।

১১.জাপান কোরিয়া দখল করার পর সেখান থেকে হাজার হাজার মেয়ে নিয়ে যায় তাদের সাথে।এদের সাথে চলতো বিকৃত যৌন কর্মকাণ্ড।এদের ডাকা হতো কমফোর্ট ওমেন নামে।

১২.২য় বিশ্বযুদ্ধে নর্মান্ডি ল্যান্ডিং পৃথিবির ইতিহাসে সব থেকে বড় সামরিক উভচর অভিযান।যেখানে ৫০০০ আলজেরিয়ান সৈনিক অংশ নেয় ফ্রান্সের হয়ে।অথচ তাদের নাম প্রায় নেই বললেই চলে।

১৩. জার্মানির এক মেশিন গানার প্রায় ৩০০০ আমেরিকান মারেন নর্মাণ্ডি লান্ডিংয়ের সময়।তাকে বলা হয় বিস্ট অফ ওমাহা।

১৪.একবার জাপানি নেভিদের এক পার্টিতে মাংসের ঘাঁটিতে দেখা দিলে।তারা তাদের বন্দীদের শরীর থেকে মাংস কেটে খায়।ওই বন্দীরা সকলেই আমেরিকান পাইলট ছিলেন ।৯ জন pilot ভূপাতিত হন।৮ জনকেই জাপানিরা ধরে ফেলে।সৌভাগ্বশত,১ জন বেঁচে যায়।যে কিনা পরে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়।উনি জর্জ বুশ সিনিওর।

১৫. নোলান এর Dunkirk দেখেছেন মনে হয়।সেখানে একটা জিনিস কিন্তু দেখানো হয় নি।প্রায় ৫০০০ সেনেগালি সৈন্য মারা গেছিলো সেই যুদ্ধে।

১৬.ফ্রেঞ্চ আর্টিস্টরা পুরো পারী শহরের মত নকল শহর বানান।যাতে জার্মান বোম্বাররা পারীর বদলে সেখানে বোমা ফেলে।কাজ হয় তাতে।

১৭. জার্মনারা জানতই না নর্মন্ডি তে মিত্র পক্ষ আক্রমণ করবে।

১৮.জার্মানির বার্লিনে সর্ব প্রথম প্রবেশ করে মাতাল রেড আর্মি।আর সর্ব প্রথম সোভিয়েতদের পতাকা তোলা হয় ইসমাইল কাদিরভ নামের এক মুসলমান রেড আর্মির সৈনিক দ্বারা।কিন্তু সোভিয়েত সরকার কৃতিত্ব দেয় এক খ্রিস্টান জর্জিয়ান সেনাকে।

বার্লিনে রেড আর্মির পতাকা ওড়াচ্ছেন ইসমাইল।


১৯.অনেক জাপানি যুদ্ধ করে আমেরিকার জন্য। যাদের জন্ম হয় আমেরিকাতেই।

২০.হিটলারের বাহিনীতে শুধু জার্মানিরই না,ব্রিটিশ,আমেরিকান,ফ্রেঞ্চ এমনকি অনেক রুশী নাগরিক যুদ্ধ করে।এদের জন্য ছিল আলাদা আলাদা ডিভিশন।

২১.আপনি কি জানেন,পাঞ্জাবিরা ss বাহিনীতে ঢুকতে পারতো?কারন বিশুদ্ধ আর্য রক্তের ওই ss বাহিনী তে আর্য জাতির লোক হলেই ঢোকা সম্ভব ছিল।আর পাঞ্জাবিরা আর্য।

২২. হিটলারের বাহিনীতে মাউন্টেন ডিভিশন হিসেবে ছিল SS Bosnian Handschar নামের একটি দল।যাদের প্রায় সবাই ছিল মুসলমান।এরা কমিউনিস্ট রাশিয়া আর ইউগোস্লাভিয়া থেকে স্বাধীনতা লাভের জন্য হিটলারের বাহিনীতে যোগ দেয়।

২৩.জার্মানির টাইগার ট্যাঙ্ক একাই ৩৫ টা আমেরিকন Sherman Medium tank এর সাথে যুদ্ধ করতে পারতো।

২৪.সিসিলি জয়ের পর বিস্কারিতে একজন আমেরিকান সার্জেন্ট আর ৩ জন প্রাইভেট ৭৫ জন ইটালিয়ান আর ১৫ জন জার্মান হত্যা করে।যারা সবাই আত্মসমর্পন করেছিল।

২৫.আমেরিকান সৈন্যরা জাপানিদের খুলি,হাত পায়ের হাড় কিংবা নাক কানের মত অংশ কেটে নিজেদের কাছে রেখে দিত সৌভেনীর বা স্বারক হিসেবে।

২৬.নূর ইনায়াত খান নামে এক পাকিস্তানি ফ্রেঞ্চ পুলিশ ইহুদীদের রক্ষায় নিজের প্রাণ দেন।ফ্রান্সের মসজিদগুলো ইহুদীদের ভুয়া মুসলিম আইডি কার্ড দিয়ে জার্মান গেস্টাপো পুলিশদের থেকে বাঁচায়।

২৭. ডের ফূহরের ডের থার্ড রেইখ হিটলার এর সাইন্টিস্টরা যুদ্ধের শেষ পর্যায় ইউরোপ এবং আমেরিকাতে বায়োলজিক্যাল ওয়েপন ব্যাবহার করার পরামর্শ দেন।সেই বায়োলজিকাল ওয়াপনে ছিল মারাত্বক সব রোগের জীবাণু।এতে নিঃসন্দেহে মিত্র পক্ষ শেষ হয়ে যেত।কিন্তু হিটলার এরম করতে কঠোর ভাবে মানা করেন।

২৮ রঙ্গুনে গৌরাঙ্গ নামে এক গুর্খা একাই ২০০ জন জাপানির সাথে লড়াই করেন এবং ৩৫ জনকে হত্যা করেন।

২৯. জার্মানি কিন্তু বিশ্বযুদ্ধ শুরু করতে চায়নি।তাদের লক্ষ ছিল ইউরপের কয়েকটা দেশ দখল করা।কিন্তু মিত্র পক্ষই ইউরোপের এই যুদ্ধকে বিশ্ব যুদ্ধে রূপান্তরিত করে।

৩০.মিসরে জার্মান জেনারেল ডিজার্ট ফক্স এরউইন রোমেলে এর গুপ্তচর ছিলেন ছিলেন অনওয়ার সাদাত। হা,ঠিক ধরেছেন,ইনি পরবর্তীতে মিসরের প্রেসিডেন্ট হন।যাকে পিস মেকার উপাধি দেয় আমেরিকা ও ইসরাইল।

৩১.এটা একটা আশ্চর্যজনক ঘটনা। ফিনল্যান্ড থেকে অনেক ইহুদী পুরুষ জার্মান আর্মিতে যোগ দেয়। আবার অনেকে ফিনল্যান্ডের হয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করেন।একজন তো এর মধ্যে আবার জার্মানি সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অন্যতম সেরা পুরষ্কার iron cross first class মেডেল পান।তারা আসলে ফিনল্যান্ডের প্রতি তাদের অনুগত্য দেখাতে চাইছিল।

৩২.হিটলারকে মারার জন্য অনেক চেষ্টা করা হয় প্রায় ২৪-২৫ বার।এর মধ্যে সব থেকে আলোচিত হচ্ছে ২০ জুলাই প্লট।অনেক উচ্চপদস্থ সামরিক কর্ম কর্তা হিটলারের মৃত্যু চাইতেন। ১৯৪৪ সালের ২০ জুলাই এক সামরিক কর্মকর্তা ক্লাউস ভন স্টুফেনবুরগ হিটলারের টেবিলের নিচে ব্রিফ কেস রেখে দেয়। যাতে বোম ছিল।তিনি বাথরুমে যাবেন বলে উঠে যান এবং হিটলারের সৌভাগ্যক্রমে অন্য এক জেনারেল যখন ওই চেয়ার এ বসে তখন তার পায়ের লাথি খেয়ে  সরে যায় টেবিলের এক পায়ার কাছে।যার ফলে যখন বোম বিস্ফোরিত হয় তখন হিটলার ওই টেবিলের জন্য বেঁচে যান। ৪ জন সামরিক কর্মকর্তা মারা যায়। হিটলার তার হাতে আর নিতম্বে ব্যাথা পায়। তার কানের পর্দা ও ফেটে যায়। তিনি জড়িত থাকা সকল সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসি দেন। আর এর মধ্যে ছিলেন ফিল্ড মার্শাল এরউইন রোমেল। তাকে বিষ পানে বাধ্য করা হয়।

৩৩. মরক্কোর সৈনিকরা মন্টে ক্যাসিনোর যুদ্ধে জয়ের পর ইতালিতে গণ ধর্ষণ চালায়।

৩৪.শুধু মাত্র স্ট্যালিনের ইচ্ছাকৃত গাফিলতির কারণে ২০ লাখ রুশী নাগরিক প্রাণ হারায়।

৩৫.জাপানি অফিসাররা বা সৈনিকরা হারার পর আত্মসমর্পণ না করে আত্মহত্যা করত সম্মান বাঁচতে।

৩৬.তিন জন জাপানি সৈনিক জাপান আত্মসমর্পণের ২০ বছর পরেও যুদ্ধ চালিয়ে যায়।

৩৭.হলিউড ছবি তো দেখেন।হিরো একাই ৫০-৬০ জন গুন্ডা মেরেপিটে বাঁচান সবাইকে।ভাবছেন এসব বাস্তবে হয় নাকি।হ্যা হয়,একজন কানাডিয়ান গুপ্তচর একাই ৪০ জনের একটা জার্মান দলকে হারিয়ে ছোটো এক মফঃসল শহর জার্মান মুক্ত করেন।

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত