১৭ জুন ভারত জুড়ে হাসপাতাল ধর্মঘটের ডাক দিল আইএমএ

Reading Time: 2 minutes

দিল্লির এইমসে সমস্ত পরিষেবা বন্ধের ঘোষণা ছিল আগে থেকেই। এনআরএস-এ জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সমর্থন করতে সামিল হল দেশের প্রায় সব রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলি। তার মধ্যেই ১৭ জুন সোমবার সারা দেশের হাসপাতালগুলিতে ধর্মঘটের ডাক দিল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, জরুরি ও রুটিন পরিষেবা চালু থাকবে। তবে আউটডোর এবং অন্যান্য পরিষেবা বন্ধ থাকবে। ফলে সোমবার সারা দেশেই চিকিৎসা পরিষেবায় ব্যাপক প্রভাব পড়তে চলেছে বলে খবর।

অন্য দিকে শুক্রবারের কর্মবিরতিতে কার্যত সামিল হয়েছে গোটা দেশ। উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, কেরল, পঞ্জাব, বিহার, অসম-সহ সব রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। কোথাও কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলন হয়েছে। কোথাও বা রাস্তায় নেমে প্রতিবা মিছিল করেছেন চিকিৎসকরা। ফলে এই সব হাসপাতালে আউটডোর এবং জরুরি পরিষেবা কার্যত বন্ধ। সব মিলিয়ে এনআরএস আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশেই।

বৃহস্পতিবার দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এর চিকিৎসকরা হেলমেট পরে এবং মাথায় ব্যান্ডেজ বেঁধে প্রতীকী প্রতিবাদ করেছিলেন। তবে পরিষেবা সচল ছিল। ওই অবস্থাতেই সব বিভাগে চিকিৎসা করেছিলেন ডাক্তাররা। সেই সঙ্গে বৃহস্পতিবারই ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছিল, আজ শুক্রবার হাসপাতালের সমস্ত পরিষেবা বন্ধ থাকবে। সারা দেশের সব মেডিক্যাল কলেজকেও এক দিনের এই প্রতীকী কর্মবিরতিতে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল এইমস-এর রেসিডেন্ট ডক্টর‌্স অ্যাসোসিয়েশন।

সেই মতোই শুক্রবার এইমস-এর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার নেয়। কার্যত অবরুদ্ধ গোটা হাসপাতাল। আউটডোর, জরুরি পরিষেবা থেকে সমস্ত বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের গেটের বাইরে প্রচুর মানুষ ভিড় জমালেও কেউ পরিষেবা পাননি। এনআরএস কাণ্ডের প্রতিবাদে এ দিন হাসপাতালের রেসিডেন্ট ডক্টর‌্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে যন্তরমন্তরে একটি মিছিলও বের করা হয়। এ দিনের মিছিলেও চিকিৎসকদের মাথায় ছিল প্রতীকী ব্যান্ডেজ।

দিল্লির পাশাপাশি আন্দোলন ছড়িয়েছে মহারাষ্ট্রেও। মহারাষ্ট্র অ্যাসোসিয়েশন অব রেসিডেন্ট ডক্টরস এক দিনের কর্মবিরতি পালন করছে। সরকারি হাসপাতালগুলির আউটডোর-সহ অধিকাংশ পরিষেবা কার্যত বন্ধ। শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবা চালু রাখা হয়েছে বলে সংগঠনের দাবি। যদিও অনেকেরই অভিযোগ, অনেক হাসপাতালেই জরুরি পরিষেবাও মেলেনি। একটি বিবৃতিতে সংগঠনের নেতৃত্ব জানিয়েছেন, ‘‘সকাল আটটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত আমরা আউটডোর, ওয়ার্ড এবং অ্যাকাডেমিক সার্ভিসেস বন্ধ রাখছি। তবে জরুরি পরিষেবায় এর কোনও প্রভাব পড়বে না।’’ প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়েছে নাগপুরেও।

উত্তরপ্রদেশের বড় মেডিক্যাল কলেজ তথা হাসপাতালগুলির মধ্যে অন্যতম বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির অধীন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল সায়েন্সেস (আইএমএস)। এনআরএস-এর আন্দোলনে সমর্থন জানাতে এই মেডিক্যাল কলেজেও পরিষেবা বন্ধ করে কর্মবিরতিতে সামিল হয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্রায় সব পরিষেবা। সংগঠনের রেসিডেন্টস অব আইএমএস (বিএইচইউ)-এর তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, আউটডোর, ইন্ডোর এবং সাধারণ অস্ত্রোপচারের কাজকর্ম বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি পরিষেবা এবং জরুরি অস্ত্রোপচার চালু থাকবে।

কলকাতার আন্দোলনের রেশ ছড়িয়েছে দক্ষিণের দুই রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলঙ্গানাতেও। অন্ধ্র মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া এবং চিকিৎসকরাও এনআরএসের আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে এখানে পরিষেবায় খুব বেশি প্রভাব পড়েনি। চিকিৎসকরা হাসপাতাল ক্যাম্পাসের মধ্যে একটি প্রতিবাদ মিছিল করেন। হাসপাতাল সুপারের দফতরের কাছে গিয়ে শেষ হয় সেই মিছিল। তেলঙ্গানার হায়দরাবাদে নিজাম ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এর চিকিৎসকরাও একটি প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হন।

এর বাইরে আরও বিভিন্ন রাজ্যেও প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়েছে। ছত্তীসগঢ়ের রাইপুরে বি আর আম্বেডকর হাসাপাতালের চিকিৎসকরা পরিষেবা বন্ধ করে ক্যাম্পাসের ভিতরেই মাথায় প্রতীকী ব্যান্ডেজ বেঁধে জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। এছাড়াও কোথাও প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে, কোথাও কালো ব্যাজ পরে পরিষেবা দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কোথাও বা প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে পরিষেবা। বিক্ষোভ-মিছিলও হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের একাধিক মেডিক্যাল কলেজে।

.

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>